বাণী

	ওমা ত্রিনয়নী! সেই চোখ দে যে-চোখ তোরে দেখতে পায়।
	সে নয়ন-তারায় কাজ কি তারা যে-তারা লুকায় মা তারায়।।
আমি 	চাইনে সে-চোখ যে-চোখ দেখে মায়া
	অনিত্য এই সংসারেরই ছায়া,
	যে-দৃষ্টি দেখে নিত্য তোরে সেই দৃষ্টি দে আমায়।।
ওমা 	নিবিয়ে দে এই নয়ন-প্রদীপ দেখায় যাহা দুঃখ শোক,
	এই আলেয়া পথ ভুলিয়ে যায় মা নিয়ে নরক-লোক।
	তোর সৃষ্টি চির-আনন্দময় নাকি
	দেখব সে-লোক, দে মোরে সেই আঁখি,
	দেখে না রোগ-মৃত্যু-জ্বরা তোর সন্তান সেই দৃষ্টি চায়।।

বাণী

ও ভাই হাজি! কোন্ কাবা ঘর হজ করিয়া এলে।
গিয়ে কি ভাই খোদায় পাওয়ার পথের দিশা পেলে।।
খোদার ঘরের দিদার পেয়ে বল কেমন ক’রে
ফিরে এলে দুনিয়াদারীর এই না-পাক ঘরে,
কেউ বলেছে কি কোন্ কাবাতে গেলে খোদায় মেলে।।
খেলেছিলেন নবীজী যে-মক্কা মদিনায়
বেহোঁশ হয়ে পড়নি কি পৌঁছিয়া সেথায়,
কেমন ক’রে ফিরে এলে সেই মদিনা ফেলে
এই দুনিয়ার কারবালাতে অধিক তৃষা আরো
এনেছ কি আব্হায়াতের পানি? দিতে পারো?
মোর আঁধার ঘরে দিতে পারো নূরের চেরাগ জ্বেলে?

বাণী

ওরে ভবের তাঁতি! হরিনামের এঁড়ে গরু কিনিস্‌নে।
তুই মূলে শেষে হাবাত্ হবি ঠাকুরকে তুই চিনিস্‌নে।
		রসিক ঠাকুরকে তুই চিনিস্‌নে।।
তুই খাচ্ছিস্ বেশ ভবের তাঁত বু’নে
চালিয়ে মাকু, ঘুরিয়ে টাকু, তাঁতের গান শু’নে
(ও তুই) সুখে খাবি আয়েশ পাবি
ঐ গরু কেনার টাকাতে তুই জরু আনার জিনিসনে।।
পরমার্থের কিনলে এঁড়ে, অর্থ যাবে ছেড়ে
তোর ঘাড়েরই লাঙল তোকে শেষে আসবে তেড়ে!
কুল যাবে তোর, যাবে জাতি মান
(এই গো-কুলের এঁড়ে এনে) যাবে জাতি মান,
দুঃখ অভাব শোক এসে তোর ধরবে রে দুই কান
শেষে কি কান খোয়াবি কানা হবি ভ’জে কানাই শ্রীকৃষ্ণে।।

বাণী

ওকে ট'লে ট'লে চলে একলা গোরী
নব-যৌবনা নীল-বাসনা কাঁখে গাগরি।।
মদির মন্দ বায় অঞ্চল দোলে
খোঁপা খুলে দোলে আকুল কবরী।
তারে ছল ছল দূরে ডাকে নদী
তা'রিনাম যপে পাপিয়া নিরবধি
ডাকে বনের কিশোর বাজায়ে বাঁশরি।।

বাণী

ও মেঘের দেশের মেয়ে।
কোথা হ’তে এলি রে তুই কেয়াপাতার খেয়া বেয়ে।।
	ধারা নূপুর রুন্‌ঝুনিয়ে
	কানে কদম দুল দুলিয়ে
ফুল কুড়াতে এলি কি তুই মোর কাননে ধেয়ে।।
পূব-হাওয়াতে উড়ছে আঁচল নীলাম্বরী,
তুমি বুঝি ভাই রূপকাহিনীর মেঘ্লা-পরী।
তোর	কণ্ঠে বাজে যে গান মধুর
	তারি’ তালে নাচে ময়ূর,
মেঘ-মাদলের সাথে ওঠে আমারও মন গেয়ে।।

বাণী

ও ভাই	খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি
		আমার দেশের মাটি।।
			এই দেশেরই মাটি জলে
			এই দেশেরই ফুলে ফলে
		তৃষ্ণা মিটাই মিটাই ক্ষুধা পিয়ে এরি দুধের বাটি।।
			এই মায়েরই প্রসাদ পেতে
			মন্দিরে এর এঁটো খেতে
		তীর্থ ক’রে ধন্য হতে আসে কত জাতি।
ও ভাই	এই দেশেরই ধূলায় পড়ি’
		মানিক যায় রে গড়াগড়ি
ও ভাই	বিশ্বে সবার ঘুম ভাঙালো এই দেশেরই জিয়ন-কাঠি।।
			এই মাটি এই কাদা মেখে
			এই দেশেরই আচার দেখে
		সভ্য হ’লো নিখিল ভুবন দিব্য পরিপাটি।
ও ভাই	সন্ন্যাসিনী সকল দেশে
		জ্বাল্‌লো আলো ভালোবেসে
মা		আঁধার রাতে এক্‌লা জাগে আগ্‌লে রে এই শ্মশান-ঘাঁটি।।