বাণী

	প্রিয়তম হে, বিদায়
আর	রাখিতে নারি, আশা-দীপ নিভে যায় দুরন্ত বায়।।
	কত ছিল বলিবার, হায় হ’লো না বলা
	ঝুঁরিতেছে চামেলির বন উতলা
যেন	অনন্ত দিনের দিকে হায় হায়।।
কে	কাঁদে দিকে দিকে হায় হায়।।
	রহিল ছড়ানো মোর প্রাণের তিয়াস হুতাস পবনে;
	জড়ানো রহিল মোর করুণ প্রীতি ধূসর গগনে।
	তুমি মোরে স্মরিও
যদি	এই পথে কোনদিন চলিতে প্রিয়
	নিশিভোরে ঝরা ফুল দ’লে যাও পায়।।

বাণী

	পদ্মদীঘির ধারে ধারে ঐ সখি লো কমল-দীঘির পারে।
	আমি জল নিতে যাই সকাল সাঁঝে সই,
সখি, 	ছল ক'রে সে মাছ ধরে, আর, চায় সে বারে বারে।।
	মাছ ধরে সে, বঁড়শী আমার বুকে এসে বেঁধে,
			ওলো সই বুকে এসে বেঁধে,
আর,	চোখের জল কলসি আমার সই, আমি ভরাই কেঁদে কেঁদে
				সই যত দেখি তা'রে।।
	ছিপ নিয়ে যায় মাছ জলে তার (ওলো সই) তাকায় না তা’র পানে
	মন ধরে না মীন ধরে সে সখি লো সেই জানে।
	মন-ভিখারি মীন-শিকারি মুখের পানে চায়,
			সখি লো চোখের পানে চায়,
আমি	বঁড়শী-বেঁধা মাছের মত (গো)
			সখি ছুটিয়া মরি হায়, অকূল পাথারে।।

বাণী

পিউ পিউ পিউ বোলে পাপিয়া
বুকে তারি পিয়ারে চাপিয়া।।
বাতাবি নেবুর ফুলেলা কুঞ্জে
মাতাল সমীরণ প্রলাপ গুঞ্জে
ফুলের মহলায় চাঁদিনী শিহরায়
নদীকূলে ঢেউ ওঠে ছাপিয়া।।
এমনি নেবু ফুল এমনি মধুরাতে
পরাতো বঁধু মোর বিনোদ খোঁপাতে,
বাতায়নে পাখি করিত ডাকাডাকি
মনে পড়ে তায় উঠি কাঁপিয়া।।

বাণী

প্রদীপ কি জ্বলিল আবার।
দিন কি গো শেষ হল মোর নিরাশার।।
বিরহ দাহন কি গো ফুরালো
বৈকালি বায়ে তনু জুড়ালো,
উঠিবে কি চাঁদ আর রবে না আঁধার।।
সে কি গো রাধারে ত্যজিয়া ব্রজপথে
আরোহিবে মথুরার রথে,
যমুনায় আবার কি বহিবে জোয়ার।।

বাণী

পথ চলিতে যদি চকিতে কভু দেখা হয়, পরান-প্রিয়!
চাহিতে যেমন আগের দিনে তেমনি মদির চোখে চাহিও।।
		যদি গো সেদিন চোখে আসে জল,
		লুকাতে সে জল করিও না ছল,
যে-প্রিয় নামে ডাকিতে মোরে সে-নাম ধরে বারেক ডাকিও।।
		তোমার বঁধু পাশে (হায়) যদি রয়,
		মোরও প্রিয় সে, করিও না ভয়,
কহিব তা’রে, ‘আমার প্রিয়ারে আমারো অধিক ভালোবাসিও’।।‌
		বিরহ-বিধুর মোরে হেরিয়া,
		ব্যথা যদি পাও যাব সরিয়া,
রব না হ’য়ে পথের কাঁটা, মাগিব এ বর মোরে ভুলিও।।

বাণী

পিয়া পিয়া পিয়া পাপিয়া পুকারে।
চোখ গেল বিরহিণীর বধূর মনের কথা —
	কাঁদিয়া বেড়ায় বাদল-আঁধারে॥
প্রথম বিরহ অল্প-বয়সী
ভুলি’ গৃহকাজ রহে বাতায়নে বসি’,
পাখির পিয়া-স্বর বুকে তার তোলে ঝড় —  
	অঞ্চলে আঁখি-জল মোছে বারে বারে ॥
পরেনি বেশ, বাঁধেনি কেশ ম্লান-মুখী দীপালিকা,
নীরব দেহে যেন শুকায়ে যায় ওগো মালতীর মালিকা।
বনের বিহঙ্গ ছাড়ি’ বিহগীরে
যায় না বিদেশে, রহে সুখ-নীড়ে,
বলো কেমনে, ওগো প্রেমের বিধাতা —
	বিরহ-দাহ সহি’ হিয়ার মাঝারে ॥