বাণী

যাদের তরে এ সংসারে খাটনু জনম ভর,
তাদের কেউ হবে না হে নাথ মরণ-সাথি মোর।।
	শত পাপ শত অধর্ম ক’রে
বিভব রতন আনলেম ঘরে
সে সকল ভাগ বাটোয়ারা ক’রে খাবে পাঁচ ভুত চোর।।
জীবনে তোমার লই নাই নাম তোমাতে হয় নাই মতি
মরণ-বেলায় তাই কাঁদি প্রভু কি হবে মোর গতি।
	চেয়ে দেখি আজ  যাবার বেলায়
	কর্ম কেবল মোর সাথে যায়
তরিবার আর না দেখি উপায় বিনা পদতরী তোর।।

বাণী

যমুনা-সিনানে চলে তন্বী মরাল-গামিনী।
লুটায়ে লুটায়ে পড়ে পায়ে বকুল কামিনী।।
	মধু বায়ে অঞ্চল
	দোলে অতি চঞ্চল,
কালো কেশে আলো মেখে খেলিছে মেঘ দামিনী।।
	তাহারি পরশ চাহি’
	তটিনী চলেছে বাহি,’
তনুর তীর্থে তারি আসে দিবা ও যামিনী।।

বাণী

যুগ যুগ ধরি লোকে-লোকে মোর
		প্রভুরে খুঁজিয়া বেড়াই;
সংসারে গেহে , প্রীতি ও স্নেহে
	আমার স্বামী বিনে নাই সুখ নাই।।
তার	চরণ পাবার আশা ল'য়ে মনে
	ফুটিলাম ফুল হয়ে কত বার বনে,
		পাখি হয়ে তার নাম
		শত বার গাহিলাম
	তবু হায় কভু তার দেখা নাহি পাই।।
	গ্রহ তারা হয়ে খুঁজেছি আকাশে,
	দিকে দিকে ছুটেছি মিশিয়া বাতাসে,
		পর্বত হয়ে নাম
	কোটি যুগ ধিয়ালাম,
	নদী হয়ে কাঁদিলাম খুঁজিয়া বৃথাই।।

বাণী

যাই গো চ'লে যাই না-দেখা লোকে
	জানিতে চির অজানায়।
নিরুদ্দেশের পথে মানস-রথে স্বপন ঘুমে
	মন যথা চ'লে যায়।।
সাগর-জলে পাতাল-তলে তিমিরে
অজানা মায়া আছে চিরদিন সে-দেশ ঘিরে —
মেঘলোক পারায়ে চাঁদের বুকে গ্রহ-তারায়।।
যাই হিমগিরি-চূড়াতে, মেরুর তুষারে,
আকাশের দ্বার খুলে' হেরিতে ঊষারে।
রামধনু ওঠে যথা পরীরা খেলে
যে-দেশ হইতে আসে এ জীবন, যেখানে হারায়।।

বাণী

যাবার বেলায় মিনতি আমার (শুধু) রাখিও মনে
ডাক দিও গো সাঁঝের ছায়ে সাঙ্গোপনে।।
যখন সন্ধ্যাবধূ আঁকবে রঙের আলপনা
আমার হিয়া দুলবে তখন তোমার প্রদীপ সনে
যখন নিরালাতে গাঁথবে মালা আনমনে।।
(আমি) রইব ঘিরে তোমার মালার গন্ধ সনে (প্রিয় আমার)
আমি দুলিয়ে যাব অলক তব মৃদু পবনে
ওগো একটি মালা গলায় নিও আমার স্মরণে।।

বাণী

যে পাষাণ হানি বারে বারে তুমি আঘাত করেছ, স্বামী,
সে পাষাণ দিয়ে তোমার পূজায় এ মিনতি রাখি আমি।।
	যে আগুন দিলে দহিতে আমারে
	হে নাথ, নিভিতে দিইনি তাহারে;
আরতি প্রদীপ হয়ে তারি বিভা বুকে জ্বলে দিবা-যামী।।
তুমি যাহা দাও প্রিয়তম মোর তাহা কি ফেলিতে পারি,
তাই নিয়ে তব অভিষেক করি নয়নে দিলে যে বারি।
	ভুলিয়াও মনে কর না যাহারে,
	হে নাথ, বেদনা দাও না তাহারে,
ভুলিতে পারো না মোরে, ব্যথা দেওয়া ছলে, তাই নিচে আসো নামি'।।