বাণী

তুই কে ছিলি তাই বল?
কোন কাননের পুষ্পরানী কোন সরসীর জল।।
তুই কি ছিলি কবিতা আর আমি চরণ তা'রি
তুই কি ছিলি পিয়াসি শুক আমি আতুর সারী
তুই কি দুঃখী দুয়োরানী আমি চোখের জল।।
	কোন বরষার সিক্ত প্রাতে
	কোন শরতের জোছনা রাতে
কোন জগতের অরুণ ঊষার প্রথম দেখা বল।।
নতুন মোদের নতুন ক'রে পরিচয়ের পালা
কন্ঠে মোদের মিলন-বাণী হাতে মিলন-মালা
মোরা এক বিরহীর দু'টি চোখের ঝরা দু'টি মুক্তাফল।।

বাণী

তরুণ প্রেমিক প্রণয় বেদন জানাও জানাও বেদিল প্রিয়ায়।
ওগো বিজয়ী নিখিল হৃদয় কর কর জয় মোহন মায়ায়।।
নহে ঐ এক হিয়ার সমান হাজার কাবা হাজার মস্‌জিদ;
কি হবে তোর কাবার খোঁজে, আশয় খোঁজ তোর হৃদয় ছায়ায়।।
প্রেমের আলোয় যে দিল্‌ রোশন, যেথায় থাকুক সমান তাহার —
খোদার মস্‌জিদ মুরত–মন্দির ঈসাই–দেউল ইহুদ–খানায়।।
অমর তার নাম প্রেমের খাতায় জ্যোতির্লেখায় রবে লেখা,
দোজখের ভয় করে না সে, থাকে না সে বেহেশ্‌ত্‌ আশায়।।

বাণী

ত্রিংশ কোটি তব সন্তান ডাকে তোরে
ভুলে আছিস দেশ জননী কেমন ক’রে॥
ব্যথিত বুকে মাগো তোমার মন্দির গড়ি
করি পূজা আরতি মাগো যুগ যুগ ধরি’
ধূপ পুড়িয়া মাগো চন্দন শুকায়ে যায়
এসো মা এসো পুন রানীর মুকুট প’রে॥
দুঃখের পসরা মা আর যে বহিতে নারি
কাঁদিয়া কাঁদিয়া শুকায়েছে আঁখি-বারি
এ গ্লানি লাজ মাগো সহিতে নাহি পারি
বিশ্ব বন্দিতা এসো দুখ-নিশি-ভোরে॥
অতীত মহিমা ল’য়ে এসো মহিমাময়ী
হীনবল সন্তানে কর মা ভুবনজয়ী
দুখ তপস্যা মা কবে তব হবে শেষ
আয় মা নব আশা রবির প্রদীপ ধ’রে॥

বাণী

তুমি বহু জনমের সাধ মিটালে এ বিরহীরে কাঁদাইয়া।
কভু অবহেলা, কভু অনাদর কভু সে আদর দিয়া।।
	ভিক্ষা পেয়েও দাঁড়াইয়া থাকে দ্বারে
	ক্ষমা করো তুমি তারে,
ভিখারির মন নাহি ভরে যদি হাতের ভিক্ষা নিয়া।।
ধনীর প্রাসাদে গেল না ভিখারি তোমার কুটিরে এসে,
ভিক্ষা-পাত্র তুলিয়া ধরিল কেন আঁখি-জলে ভেসে’।
	জানে না কে তারে পথ দেখাইল,
	কোন্ সুন্দর যেন বলে দিল;
আপনারে দিতে সব কিছু নিয়া
	জাগিছে রে তোর (চিরজনমের) প্রিয়া।।

বাণী

তোমার আমার এই বিরহ সইব কত আর
রইবে কত আড়াল টেনে গ্রহ-তারকার।।
	তৃষিত মোর হৃদয় যাচে
	এসো আমার বুকের কাছে
যেমন দূরের চাঁদকে ডাকে ব্যাকুল পারাবার।।
হাত চাহে মোর ব'সো কাছে করবো সেবা তব,
নয়ন বলে নয়ন পাতায় রাখবো হে বল্লভ।
	হে নাথ তোমার তীর্থ পথে
	এ প্রাণ চাহে ধূলি হ'তে
ঘুচবে কবে মোদের মাঝে অসীম অন্ধকার।।

বাণী

তোমার সৃষ্টি মাঝে হরি হেরিতে যে নিতি পাই তোমায়।
তোমার রূপের আবছায়া ভাসে গগনে, সাগরে, তরুলতায়॥
চন্দ্রে তোমার মধুর হাসি, সূর্যে তোমার জ্যোতি প্রকাশ;
করুণা সিন্ধু তব আভাস বারি-বিন্দুতে হিমকণায়॥
ফোটা ফুলে হরি, তোমার তনুর গোপী-চন্দন গন্ধ পাই,
হাওয়ায় তোমার স্নেহের পরশ অন্নে তোমার প্রসাদ খাই।
রাসবিহারী তোমার রূপ গোলে, দুঃখ শোকের হিন্দোলে,
তুমি, ঠাঁই দাও যবে ধর কোলে মোর বন্ধু স্বজন কেঁদে ভাসায়॥