বাণী

তোমার ফুলের মতন মন।
ফুলের মত সইতে নার একটু অযতন।।
	ভুল ক’রে এই কঠিন ধরায়
	তুমি কেন আসিলে হায়,
একটি রাতের তরে হেথায় ফুলের জীবন।।
	গাঁথ্‌বে মালা প’রবে গলায়
	অর্ঘ্য দেবে দেবতা-পায়,
ফেলে দেবে পথের ধূলায় মিট্‌লে প্রয়োজন।।

বাণী

তব মাধবী-লীলায় কর মোরে সঙ্গী (হে বন-লক্ষ্মী)।
তব অপাঙ্গে হইব ভ্রুভঙ্গি।।
মোরে জ্বালায়ে জ্বালো
তব বাসরে আলো,
মোরে নূপুর করি’ বাঁধ চরণে তারি —
	নাচে তোমার সভায় যে কুরঙ্গী।।
তব রূপের দেশে
এনু বাউল বেশে,
যেন ফিরে নাহি যাই
আঁখি-প্রসাদ পাই —
	হব কেশে তব বেণীর ভুজঙ্গী।।

বাণী

তোমারি প্রকাশ মহান, রে নিখিল দুনিয়া জাহান্!
তোমারি জ্যোতিতে রওশন্ নিশিদিন জমিন ও আস্‌মান্‌।।
নিভিল কোটি তপন চাঁদ তোমারে খুঁজিয়া প্রভু,
কত দাউদ ঈশা মুসা করিল তব জয়গান।।
তোমারে কত নামে হায় ডাকিছে বিশ্ব শিশুর প্রায়,
কত নামে পূজে তোমায় ফেরেশতা হুর পরী ইনসান্।।

বাণী

তোমার নূরের রওশনি মাখা নিখিল ভুবন, অসীম গগন।
তোমার অনন্ত জ্যোতির ইশারা গ্রহ-তারা-চন্দ্র-তপন।।
	তোমার রূপের ইঙ্গিত খোদা
	ফুটিছে বনের কুসুমে সদা,
তোমার নূরের ঝলক হেরি’ মেঘে বিজলি চমকে যখন।।
	প্রাণের খুশি শিশুর হাসি
	মধুর তোমার রূপ দেয় প্রকাশি’,
তোমার জ্যোতির সমুদ্রে খোদা আলোর ঝিনুক মোর এ দু’টি নয়ন।।
	ধানের খেতে নদী-তরঙ্গে
	দুলে তোমার রূপ মধুর ভঙ্গে,
নিতি দেখা দাও হাজার রঙ্গে অরূপ নিরাকার তুমি নিরঞ্জন।।

বাণী

তুমি যদি রাধা হতে শ্যাম,
আমারি মতন দিবস-নিশি জপিতে শ্যাম-নাম।।
কৃষ্ণ-কলঙ্কেরি জ্বালা, মনে হ’ত মালতীর মালা
চাহিয়া কৃষ্ণ-প্রেম জনমে জনমে আসিতে ব্রজধাম।।
কত অকরুণ তব বাঁশরির সুর
তুমি হইলে শ্রীমতী ব্রজ-কুলবতী বুঝিতে নিঠুর।
তুমি যে-কাঁদনে কাঁদায়েছ মোরে
আমি কাঁদাতাম তেমনি ক’রে
বুঝিতে, কেমন লাগে এই গুরু-গঞ্জনা
এ প্রাণ-পোড়ানি অবিরাম।।

বাণী

তোমার আকাশে উঠেছিনু চাঁদ, ডুবিয়া যাই এখন।
দিনের আলোকে ভুলিও তোমার রাতের দুঃস্বপন।।
	তুমি সুখে থাক আমি চলে যাই,
	তোমারে চাহিয়া ব্যথা যেন পাই,
জনমে জনমে এই শুধু চাই — না-ই যদি পাই মন।।
ভয় নাই রাণী রেখে গেনু শুধু চোখের জলের লেখা,
জলের লিখন শুকাবে প্রভাতে, আমি চলে যাব একা!
	ঊর্ধ্বে তোমার প্রহরী দেবতা,
	মধ্যে দাঁড়ায়ে তুমি ব্যথাহতা, —
পায়ের তলার দৈত্যের কথা ভুলিতে কতক্ষণ।।