বাণী

তোমার নূরের রওশনি মাখা নিখিল ভুবন, অসীম গগন।
তোমার অনন্ত জ্যোতির ইশারা গ্রহ-তারা-চন্দ্র-তপন।।
	তোমার রূপের ইঙ্গিত খোদা
	ফুটিছে বনের কুসুমে সদা,
তোমার নূরের ঝলক হেরি’ মেঘে বিজলি চমকে যখন।।
	প্রাণের খুশি শিশুর হাসি
	মধুর তোমার রূপ দেয় প্রকাশি’,
তোমার জ্যোতির সমুদ্রে খোদা আলোর ঝিনুক মোর এ দু’টি নয়ন।।
	ধানের খেতে নদী-তরঙ্গে
	দুলে তোমার রূপ মধুর ভঙ্গে,
নিতি দেখা দাও হাজার রঙ্গে অরূপ নিরাকার তুমি নিরঞ্জন।।

বাণী

তরুণ-তমাল-বরণ এসো শ্যামল আমার।
ঘন শ্যাম তুলি বুলায়ে মেঘ-দলে এসো দুলায়ে আঁধার।।
কাঁদে নিশীথিনী তিমির কুন্তলা
আমারি মত সে উতলা,
এসো তরুণ দুরন্ত ভাঙি’ হৃদয় দুয়ার।।
তপ্ত গগনে ঘনায়ে ঘন দেয়া
ফুটায়ে কদম কেয়া,
আমার নয়ন-যমুনায় এসো জাগায়ে জোয়ার।।

বাণী

তিলক দিলে কি শ্যাম ত্রিলোক ভুলাতে?
কে দিল বনমালী বনমালা গলাতে?
আঁখি যেন ঢলঢল আধফোটা শতদল
কে শিখাল ও চাহনি গোপিনী ছলিতে?

বাণী

তুমি	ভোরের শিশির রাতের নয়ন-পাতে।
তুমি	কান্না পাওয়াও কাননকে গো ফুল-ঝরা প্রভাতে॥
তুমি	ভৈরবী সুর উদাস বিধুর
	অতীত দিনের স্মৃতি সুদূর,
তুমি	ফোটার আগে ঝরা মুকুল বৈশাখী হাওয়াতে॥
তুমি	কাশের ফুলের করুণ হাসি মরা নদীর চরে
তুমি	শ্বেত-বসনা অশ্রুমতী উৎসব-বাসরে।
তুমি	মরুর বুকে পথ-হারা
	গোপন ব্যথার ফল্গুধারা,
তুমি	নীরব বীণা বাণীহীনা সঙ্গীত-সভাতে॥

বাণী

তুই জগত-জননী শ্যামা আমি কি মা জগত ছাড়া,
কোন দোষে মা তুই থাকিতে আমি চির মাতৃহারা।।
পুত্র অপরাধী ব'লে মা কি তারে নেয় না কোলে,
মা শাসন করে মারে-ধরে তবু কাছ ছাড়া করে না তারা।
কোন দোষে মা তুই থঅকিতে আমি চির মাতৃহারা।।
ছেলের চোখে ঠুলি দিয়ে কি মা নিজেরে লুকিয়ে রাখে
ছেলের দুঃখে মা উদাসীন দেখিনি তো এমন মাকে।
মাতৃস্নেহ পেলে শ্যামা এমন মন্দমতি হতেম না মা
তুই যাহারে হানিস হেলা তার কে মোছাবে নয়ন-ধারা
কোন দোষে মা তুই থাকিতে আমি চির মাতৃহারা।।

বাণী

		তোমায় কূলে তুলে বন্ধু আমি নামলাম জলে।
আমি		কাঁটা হয়ে রই নাই বন্ধু তোমার পথের তলে॥
আমি		তোমায় ফুল দিয়েছি কন্যা তোমার বন্ধুর লাগি’
		যদি আমার শ্বাসে শুকায় সে ফুল তাই হলাম বিবাগী।
		আমি বুকের তলায় রাখি তোমায় গো, ওরে শুকায়নি ক’ গলে॥
(ওই)		যে-দেশ তোমার ঘর্‌ রে বন্ধু সে দেশ হতে এসে,
আমার	দুখের তরী দিছি ছেড়ে, (বন্ধু) চলতেছে সে ভেসে।
এখন		যে-পথে নাই তুমি বন্ধু গো, তরী সেই পথে মোর চলে॥