বাণী

জগতে আজিকে যারা
আগে চলে ভয়-হারা
ডেকে যায় আজি তারা,
		চল্‌ রে সুমুখে চল।
পিছু পানে চেয়ে’ মিছে
প’ড়ে আছি সব নীচে,
চাস্‌নে রে তোরা পিছে
		অগ্র-পথিক দল।।
চলার বেগে উঠবে জেগে বনে নূতন পথ
বর্তমানের পানে মোদের চল্‌বে অরুণ-রথ,
অতীত আজি পতিত রে ভাই, রচ্‌ব ভবিষ্যৎ।
স্বর্গ মোরা আন্‌ব, না হয় যাব রসাতল।।
	রইব না পিছে প’ড়ে
	অতীতের কঙ্কাল ধ’রে,
বইবে নব জীবন-স্রোত যৌবন-চঞ্চল।
বিশ্ব-সভাঙ্গনে সকল জাতির সনে
বসিব সম-আসনে গৌরব-উজ্জ্বল।।

বাণী

মোরা		ঝঞ্ঝার মত উদ্দাম, মোরা ঝর্ণার মত চঞ্চল।
মোরা		বিধাতার মত নির্ভয়, মোরা প্রকৃতির মত সচ্ছল।।
			আকাশের মত বাঁধাহীন,
মোরা			মরু সঞ্চার বেদুঈন,
(মোরা)		বন্ধনহীন জন্ম–স্বাধীন, চিত্ত মুক্ত শতদল।।
মোরা		সিন্ধু–জোয়ার কল–কল
মোরা		পাগলা–ঝোরার ঝরা জল
			কল–কল–কল্ ছল–ছল–ছল্ কল–কল–কল্ ছল–ছল–ছল্
মোরা		দিল–খোলা খোলা প্রান্তর,
মোরা		শক্তি অটল মহীধর
			হাসি গান শ্যাম উচ্ছল
মোরা		বৃষ্টির জল বনফল খাই, শয্যা শ্যামল বন–তল।।

বাণী

শ্যামলা বরণ বাংলা মায়ের রূপ দেখে যা, আয় রে আয়
গিরি–দরি, বনে–মাঠে, প্রান্তরে রূপ ছাপিয়ে যায়।।
ধানের ক্ষেতে, বনের ফাঁকে, দেখে যা মোর কালো মা–কে
ধূলি–রাঙা পথের বাঁকে বৈরাগিনী বীণ বাজায়।।
ভীরু মেয়ে পালিয়ে বেড়ায় পল্লীগ্রামে এক্‌লাটি
বিজনমাঠে গ্রাম সে বসায় নিয়ে কাদা, খড়, মাটি
কালো মেঘের ঝারি নিয়ে করুণা–বারি ছিটায়।।
কাজলা–দীঘির পদ্মফুলে যায় দেখা তার পদ্ম–মুখ
খেলে বেড়ায় ডাকাত–মেয়ে বনে লয়ে বাঘ–ভালুক
ঝড়ের সাথে নৃত্যে মাতে বেদের সাথে সাপ নাচায়।।
নদীর স্রোতে পাথর নুড়ির কাঁকন চুড়ি বাজে তার
সাঁঝের বারান্দাতে দাঁড়ায় টীপ প’রে সন্ধ্যা–তারার।
ঊষার গাঙে ঘট ভরিতে যায় সে মেয়ে ভোর বেলায়।
হরিত শস্যে লুটায় আঁচল ঝিল্লিতে নূপুর বাজে
ভাটিয়ালি গায় ভাটির স্রোতে গায় বাউল মাঠের মাঝে (মা)।
গঙ্গা–তীরে শ্মশান–ঘাটে কেঁদে কভু বুক ভাসায়।।

বাণী

দ্বৈত	:	শ্রী রঘুপতি রাম
		লহ প্রণাম শ্রী রঘুপতি রাম
		নব দূর্বাদল শ্যাম অভিরাম।
স্ত্রী	:	সুরাসুর কিন্নর যোগী ঋষি নর
পুরুষ	:	চরাচর যে নাম জপে অবিরাম॥
স্ত্রী	:	সরযূ নদীর জল ছল ছল কান্তি
পুরুষ	:	ঢল ঢল অঙ্গ ললাটে প্রশান্তি
স্ত্রী	:	নাম স্মরণে টোটে শোক তাপ ভ্রান্তি
দ্বৈত	:	পদারবিন্দে মূরছিত কোটি কাম॥
স্ত্রী	:	জানকী বল্লভ সুঠাম অঙ্গ
পুরুষ	:	পরশে নিমেষে হয় হরধনু ভঙ্গ
দ্বৈত	:	রাবণ ভয় হরে যাঁহার নাম॥
স্ত্রী	:	পিতৃ সত্যব্রত পালনকারী
পুরুষ	:	চির বল্কলধারী কাননচারী
দ্বৈত	:	প্রজারঞ্জন লাগি সর্বসুখ ত্যাগী
		যে নামে ধরা হল আনন্দধাম॥

বাণী

বহিছে সাহারায় শোকেরই 'লু' হাওয়া
দোলে অসীম আকাশ আকুল রোদনে।
নূহের প্লাবন আসিল ফিরে যেন,
ঘোর অশ্রু-শ্রাবণ ধারা ঝরে সঘনে।।
'হায় হোসেনা' 'হায় হোসেনা' বলি'
কাঁদে গিরি নদী, কাঁদে বনস্থলী
কাঁদে পশু ও পাখী তরুলতার সনে।।
ফকির বাদশাহ গরীব ওমরাহে
কাঁদে তেমনি আজো তাঁরি মর্সিয়া গাহে,
বিশ্বে যাবে মুছে মুছিবে না এ আঁসু,
চিরকাল ঝরিবে কালের নয়নে।।
সেই সে কারবালা সেই ফোরাত নদী
কুল-মুসলিম-হৃদে গাহিছে নিরবধি,
আসমান জমীন রহিবে যতদিন
সবে কাঁদিবে এমনি আকুল কাঁদনে।।

বাণী

তব মাধবী-লীলায় কর মোরে সঙ্গী (হে বন-লক্ষ্মী)।
তব অপাঙ্গে হইব ভ্রুভঙ্গি।।
মোরে জ্বালায়ে জ্বালো
তব বাসরে আলো,
মোরে নূপুর করি’ বাঁধ চরণে তারি —
	নাচে তোমার সভায় যে কুরঙ্গী।।
তব রূপের দেশে
এনু বাউল বেশে,
যেন ফিরে নাহি যাই
আঁখি-প্রসাদ পাই —
	হব কেশে তব বেণীর ভুজঙ্গী।।