বাণী

শক্তের তুই ভক্ত শ্যামা (তোরে) যায় না পাওয়া কেঁদে।
(তাই) শাক্ত সাধক রাখে তোরে ভক্তি-ডোরে বেঁধে।।
(মা) শাক্ত বড় শক্ত ছেলে
(সে) জানে দড়ি আলগা পেলে
যাবি পালিয়ে চোখে ধূলা দিয়ে মায়া জালে বেঁধে।।
(তুই) সুরাসুরে ভুলিয়ে রাখিস্‌ ইন্দ্রত্বের মোহে,
(ওমা) গুণের কিছু ঘাট নাই তোর নির্গুণ তাই কহে।
তোর মায়াতে ভুলে গিয়ে,
বিষ্ণু ঘুমান লক্ষী নিয়ে
(তোর) অন্ত খুঁজে শিব হয়েছেন ভবঘুরে বেদে।।

বাণী

আজি	ঘুম নহে, নিশি জাগরণ।
	চাঁদেরে ঘিরি’ নাচে ধীরি ধীরি তারা অগণন।।
	প্রখর-দাহন দিবস-আলো,
	নলিনী-দলে ঘুম তখনি ভালো।
	চাঁদ চন্দন চোখে বুলালো
		খোলো গো নিঁদ-মহল-আবরণ।।
	ঘুরে ঘুরে গ্রহ, তারা, বিশ্ব, আনন্দে
	নাচিছে নাচুনি ঘূর্ণির ছন্দে।
	লুকোচুরি-নাচ মেঘ তারা মাঝে
	নাচিছে ধরণী আলোছায়া-সাজে,
	ঝিল্লির ঘুমুর ঝুমুঝুমু বাজে
		খুলি’ খুলি’ পড়ে ফুল-আভরণ।।

বাণী

তোরা দেখে যা আমিনা মায়ের কোলে
মধু পূর্ণিমারি সেথা চাঁদ দোলে
যেন ঊষার কোলে রাঙা-রবি দোলে।।
কূল মখ্‌লুকে আজি ধ্বনি ওঠে, কে এলো ঐ
কলেমা শাহাদাতের্‌ বাণী ঠোঁটে, কে এলা ঐ
খোদার জ্যোতি পেশানিতে ফোটে, কে এলো ঐ
আকাশ-গ্রহ-তারা পড়ে লুটে, কে এলা ঐ
পড়ে দরুদ ফেরেশ্‌তা, বেহেশ্‌তে সব দুয়ার খোলে।।
মানুষে মানুষের অধিকার দিল যে-জন
‘এক আল্লাহ্‌ ছাড়া প্রভু নাই’ কহিল যে-জন,
মানুষের লাগি’ চির-দীন্‌ বেশ ধরিল যে-জন
বাদশা ফকিরে এক শামিল করিল যে-জন
এলো ধরায় ধরা দিতে সেই সে নবী
ব্যথিত-মানবের ধ্যানের ছবি
আজি মাতিল বিশ্ব-নিখিল্‌ মুক্তি-কলোরোলে।।

বাণী

সুবল সখা! এই দেখ্ এই পথে তাহার, সোনার নূপুর আছে পড়ে,
	বৃন্দাবনের বনমালী গেছে রে ইে পথ ধরে।
	হরি চন্দন গন্ধ পথে পথে পাই
	ঝরা ফুলে ছেয়ে আছে বনবীথি তাই।
	ভ্রমে ভ্রমর শ্রীচরণ-চিহ্ন ঘিরে
	রাঙ্গা কমল ভ্রমে, ভ্রমে শ্রীচরণ-চিহ্ন ঘিরে।
	ভাসে বাঁশির বেদন তার মৃদু সমীরে।
	তারে খুঁজবো কোথায় — সেই চোরের রাজায় খুঁজবো কোথায়?
	তারে খুঁজলে বনে, মনে লুকায়, চোরের রাজায় খুঁজবো কোথায়?
	সুবল রে —
	শ্রীদাম দেখেছে তারে রাখাল দলে,
	গোপিনীরা দেখিয়াছে যমুনা-জলে।
	বাঁশরি দেখেছে তারে কদম শাখায়
	কিশোরী দেখেছে তারে ময়ূর পাখায়।
	বৃন্দা এসেছে দেখে রাজা মথুরায়,
	যশোদানন্দ বলে কোলে সে ঘুমায়।
	জানি না কোথায় সে দে রে দেখায়ে দে কোথা ঘনশ্যাম
	কবে বুকে পাব তারে, মুখে জপি যাঁর নাম।।

বাণী

মুরলী শিখিব ব'লে এসেছি কদম্ব তলে
মুরলীধারী মুরলী শিখাও হে
কোন সুরে মধু-মাধবী ফোটে
কোন সুরে রাধা নাম ওঠে
মাধব হে! বাঁশির কোন সুরে
উদাসী করে প্রাণ দাসী করে, মাধব হে —
দেহ ময়ুর নাচে কোন সুর শুনিয়া
মন-পাপিয়া গেয়ে ওঠে পিয়া পিয়া
মোরে শিখাও সে সুর হে —
যে সুরে তুমি নাচিবে, পিয়া ব'লে ডাকিবে
মোরে শিখাও সে সুর হে বঁধু
যে সুরে কেবল তব সাথে ভাব হয় অভাব রয় না
আমি সেই সুর শিখিব
যে সুর কৃষ্ণ ছাড়া কোন কথা কয় না
কেন ছলছল চোখে চাও
মুরলী শিখাও কেন হাত কাপে রসময়।
যে সুর তোমার অধর পরশ লাগে
সেই বেনু যেন চিরদিন রাধারই রয় বেনু শিখাও হে
মোর দেহ মন ধায় যেন ধেনু সম তব পানে বেণু শিখাও হে।।

বাণী

কাণ্ডারি গো কর কর পার এই অকূল ভব-পারাবার।
তোমার চরণ-তরী বিনা, প্রভু পারের আশা নাহি আর।।
	পাপের তাপের ঝড় তুফানে
	শান্তি নাহি আমার প্রাণে।
আমি যেদিকে চাই দেখি কেবল নিরাশারি অন্ধকার।।
	দিন থাকতে আমার মতো
		কেউ নাহি সম্ভাষে,
	হে প্রভু তোমায়
		কেউ নাহি সম্ভাষে
	দিন ফুরালে খাটে শুয়ে
		এই ঘাটে সবাই আসে।
	লয়ে তোমারি নামের কড়ি
	সাধু পেল চরন-তরী
সে কড়ি নাই যে কাঙ্গালের হও হে দীনবন্ধু তার॥