বাণী

আমি বুকের ভিতর থাকি তবু ওরা ডাকে দেখা দাও ব’লে।
ওরা চিনিতে পারে না কত রূপে আমি দেখা দিই কত ছলে।।
চোর চোর খেলি মনে বসে, ওরা বনে যায় খুঁজিতে;
কোলে থাকি আমি খোকা হয়ে, ওরা মন্দিরে যায় পূজিতে।
মোরে পাষাণ করিয়া ফেলে রাখে, ওরা আঁধার দেউল তলে।।
(ওরা ডাকিয়া লয় না কোলে গো আমি কোল্ যে বড় ভালবাসি।)
			কেশবে ডাকিয়া লয় না কোলে।।
ওরা দেবতা ভাবিয়া পূজা দেয় যাহা, আমি তাহা নাহি খাই;
লুকায়ে ভিখারি সাজিয়া ওদের পাতের অন্ন চাই।
ওরা প্রভু ব’লে মোরে দূরে রাখে, তাই কেঁদে দূরে যাই চ’লে।
(ওরা গোপাল বলিয়া ডাকে না মোরে, কেন বুকে বেঁধে রাখে না।)
আমি তাই দূরে যাই চ’লে, কেশবে ডাকিয়া লয় না কোলে।।

নাটক : ‌‘অন্নপূর্ণা’

বাণী

জয় বাণী বিদ্যাদায়িণী
জয় বিশ্বলোক-বিহারিণী।।
	সৃজন-আদিম তমঃ অপসারি'
	সহস্রদল কিরণ বিথারি'
আসিলে মা তুমি গগন বিদারি' মানস-মরাল-বাহিনী।।
	ভারতে ভারতী মূক তুমি আজি
	বীণাতে উঠিছে ক্রন্দন বাজি'
ছিন্ন চরণ-শতদলরাজি কহিছে বিষাদ-কাহিনী।।
	ঊর মা আবার কমলাসীনা, (মাগো)
	করে ধর পুনঃ সে রুদ্রবীণা
নব সুর তানে বানী দীনাহীনা জাগাও অমৃতভাষিণী
			মা জাগাও অমৃতভাষিণী।।

বাণী

শঙ্কর অঙ্গলীনা যোগ মায়া শঙ্করী শিবানী।
বালিকা-সম লীলাময়ী নীল-উৎপল-পাণি।।
	সজল-কাজল-ঝর্না
	মুকত বেণী অপর্ণা,
তিমির বিভাবরী স্নিগ্ধা শ্যামা কালিকা ভবানী।।
প্রলয় ছন্দময়ী চন্ডী শব্দ-নূপুর-চরণা,
শাম্ভবী শিব-সীমন্তিনী শঙ্করাভরণা।
	অম্বিকা দুঃখহারিণী
	শরণাগত-তারিণী,
জগদ্ধাত্রী শান্তিদাত্রী প্রসীদ মা ঈশানী।।

বাণী

মাঠে আমার ফল্‌ল ফসল মনের ফসল কই
শূন্য মনে আল্লা তোমার পানে চেয়ে রই।।
আরব মরুভূমে নবীজীরে পাঠাইলে
আমার মনের মরুভূমি বিফল রাখিলে,
গরীব ব’লে আমি কি গো বান্দা তব নই।।
চাই না যশ মান আমি চাহি না দৌলৎ,
আমি চাহি শুধু — তোমার নামেরি সরবত
যে যাহা চায় তুমি নাকি তারে তাহাই দাও
আমার মানত পূর্ণ ক’রে পরান বাঁচাও,
আমি যেন আল্লা নামের তস্‌বি শুধু বই।।

বাণী

ব্রজবাসী মোরা এসেছি মথুরা, দ্বার ছেড়ে দাও দ্বারী।
মথুরার রাজা হ’য়েছে মোদের কানাই গোঠ বিহারী।।
[মথুরার রাজা হয়েছে হায় তোমাদের রাজা হয়েছে ভাই —
কানাই গোঠ বিহারী, দ্বার ছেড়ে দাও দ্বারী।]*
রাজ-দণ্ড কেমন মানায় শোভিত যে হাতে বাঁশি
[শোভিত যে হাতে বাঁশি]*
মুকুট মাথায় কেমন দেখায় শিরে শিখী-পাখা ধারী।।
[সে শিরে শিখী-পাখা ধারী
দ্বার ছেড়ে দাও দ্বারী।]*
শ্যামলী ধেনুর দুগ্ধের ক্ষীর এনেছি কানুর লাগিয়া
পাঠায়েছে তারে মথিয়া নবনী, যশোদা-নিশীথ জাগিয়া,
বনমালী লাগি নব-নীপ-মালা আনিয়াছি হের [মোরা] গাঁথিয়া,
কুড়ায়ে এনেছি ফেলে এসেছিল যে বাঁশরি বনচারী।।
ব্রজের দুলাল রাখাল ব’সেছে রাজার আসন ’পরে,
সারা গোকুলের এনেছি আশিস তাই রে তাহার তরে।
পাঠায়েছে গোপী-চন্দন তাই রাই অনুরাগ ভরে
(পাঠায়েছে রাই অনুরাগ ভরা গোপী চন্দন,
পাঠায়েছে রাই [তাই] হরির লাগিয়া হরি চন্দন।)
নয়ন-যমুনা ছানিয়া এনেছি আকুল অশ্রুবারি।।
[দ্বার ছেড়ে দাও দ্বারী।।]*

* রেকর্ডে গীত

বাণী

এসো এসো তব যাত্রা-পথে
শুভ বিজয়-রথে ডাকে দূর-সাথি।
মোরা তোমার লাগি’, হেথা রহিব জাগি’
তব সাজায়ে বাসর জ্বালি’ আশার বাতি।।
হের গো বিকীর্ণ শত শুভ চিহ্ন পথ-পাশে নগর-বাটে,
স-বৎসা ধেনু গো-ক্ষুর-রেণু উড়ায়ে চলে দূর মাঠে।
দক্ষিণ-আবর্ত-বহ্নি, পূর্ণ-ঘট-কাঁখে তম্বী,
দোলে পুষ্প-মালা, ঝলে’ শুক্লা রাতি।।
হের পতাকা দোলে দূর তোরণ-তলে, গজ তুরগ চলে।
শুক্লা ধানের হের মঞ্জরী ঐ, এসো কল্যাণী গো,
		আনো নব-প্রভাতী।।

নাটক : ‘সাবিত্রী’