বাণী

নবীন আশা জাগ্‌ল যে রে আজ!
নূতন রঙে রাঙা তোদের সাজ॥
কোন সে বাণী বাজ্‌ল প্রাণের মাঝ
বাজরে বীনা বাজ, দীপক-তানে বাজ
আপন কাজে পাস্‌ রে কেন লাজ?
এগিয়ে গিয়ে ধর্‌ রে নিজের কাজ।
শির্‌ উচিয়ে দাঁড়া জগৎ-মাঝ!
তোদের কণ্ঠে হানে যেন প্রবল বাজ॥
ফেলে দে রে যা কিছু সব জীর্ণ
রিক্ত যা, হবে তা দীর্ণ।
থাকিস্‌ নে বসে কেউ শীর্ণ
দুন্দুভি-ঢাক বাজুক না রে আজ॥

বাণী

দেখে যারে দুল্‌হা সাজে সেজেছেন মোদের নবী।
বর্ণিতে সে রূপ মধুর হার মানে নিখিল কবি॥
আওলিয়া আর আম্বিয়া সব পিছে চলে বরাতি,
আসমানে যায় মশাল জ্বেলে গ্রহ তারা চাঁদ রবি॥
হুর পরী সব গায় নাচে আজ, দেয় ‘মোবারকবাদ্’ আলম্,
আর্‌শ কুর্শি ঝুঁকে পড়ে দেখতে সে মোহন ছবি॥
আজ আরশের বাসর ঘরে হবে মোবারক রুয়ৎ,
বুকে খোদার ইশ্ক নিয়ে নওশা ঐ আল-আরবি॥

বাণী

এসো এসো রস-লোক বিহারী এসো মধুকর-দল।
এসো নভোচারী — স্বপন-কুমার এসো ধ্যান-নিরমল।।
	এসো হে মরাল কমল-বিলাসী,
	বুলবুল পিক সুর-লোক-বাসী,
এসো হে স্রষ্টা এসো অ-বিনাশী এসো জ্ঞান-প্রোজ্জ্বল।।
	দীওয়ানা প্রেমিক এসো মুসাফির —
	ধূলি-ম্লান তবু উন্নত শির,
আমরা-অমৃত-জয়ী এসো বীর আনন্দ বিহ্বল।।
	মাতাল মানব করি’ মাতামাতি
	দশ হাতে যবে লুটে যশ খ্যাতি,
তোমরা সৃজিলে নব দেশ জাতি অগোচর অচপল।।
	খেল চির-ভোলা শত ব্যথা স’য়ে
	সংঘাত ওঠে সঙ্গীত হ’য়ে,
শত বেদনার শতদল ল’য়ে লীলা তব অবিরল।।
	ভুলি’ অবহেলা অভাব বিষাদ
	ধরণীতে আনো স্বর্গের স্বাদ,
লভি’ তোমাদের পুণ্য প্রসাদ পেনু তীর্থের ফল।।

বাণী

দুপুর বেলাতে একলা পথে,
	ও কে হেলিয়া দুলিয়া চলিয়া যায়।
ক্ষ্যাপা হাওয়াতে উড়িছে আঁচলা,
খোঁপা খুলিয়া খুলিয়া খুলিয়া যায়।।
	ছল ক’রে জল যায় সে আনিতে
	দেখিয়া গুরুজন ঘোমটা দিতে,
ও সে ভুলিয়া ভুলিয়া ভুলিয়া ভুলিয়া যায়।।
	কাহার গলার মালার তরে
	আপন মনে আঁচল ভ’রে,
ফুল তুলিয়া তুলিয়া তুলিয়া তুলিয়া যায়।।
	কার বিরহে পরান দহে
	কিসের নেশায় মদির মোহে,
ও সে ঢুলিয়া ঢুলিয়া ঢুলিয়া ঢুলিয়া যায়।।

বাণী

গান ভুলে যাই, মুখ পানে চাই, সুন্দর হে (সুন্দর মোর!)।
তব নয়ন পানে চাহি’ কণ্ঠের সুর কাঁপে থর থর হে (সুন্দর মোর!)।।
		তোমার অনুরাগে, ওগো বুল্‌বুল্‌
	মোর	গানের লতায় ফোটে কথার ফুল,
অশ্রু হয়ে সেই ফুল তব পায়ে ঝরিতে চায় ঝর ঝর হে।।
এ নহে গান প্রিয়, কান্না এ যে তব বিরহে,
অন্তর-শিলাতলে রোদনের সুরধুনী সুর হয়ে বহে।
		প্রিয়, এ নহে গানের ছন্দ,
		এ যে আনন্দে-বিষাদে মনের দ্বন্দ্ব,
(এ যে) রাগিণীর তলে তব অনুরাগিণীর মর্মের ক্রন্দন-বিলাপ মর্মর হে।।

বাণী

তব	চলার পথে আমার গানের ফুল ছড়িয়ে যাই গো।
তারা	ধুলায় প’ড়ে কেঁদে বলে ‘তোমার পরশ (আল্‌তা) হ’তে চাই গো।।
		ওরা রাঙা হ’য়ে অনুরাগের রসে
		তোমার চরণ-তলে পড়ে খ’সে,
	ওদের দ’লে যেও, নাই যদি হয় বক্ষে তেমার ঠাঁই গো।।
ওরা	বুক পেতে দেয় পায়ের কাছে, অশ্রু-টলমল,
বলে	‘ধূলির পথে চলো না গো, ফুলেরপেথে চল।’
	(তুমি)	চরণ ফেল কেন ভয়ে ভয়ে
		বিরহ মোর ফুটেছে ফুল হ’য়ে,
	কাঁটা আছে আমার বুকে, ফুলে কাঁটা নাই গো।।