বাণী

নিশীথ-স্বপন তোর ভু’লে যা নিশি-শেষে।
বাদল-অবসানে আকাশ উঠেছে হেসে।।
চখার পাশে আসে বিরহ-রাতের চখি
আঁধার লুকাল ঐ দূর বনে এলোকেশে।।
শরম-রাঙা গালে জাগিল কুমারী ঊষা,
তরুণ অরুণ ঐ এসো রাঙা বর-বেশে।।

বাণী

(ওরে)		হতভাগী রক্ত-খাগী, কোথায় ছিলি বল্!
(তোর)		দেখে ছিরি ভয়ে মরি চোখে আসে জল।।
			বেণী খুলে এলোকেশে
			বেড়াস্ এ কোন্ পাগল-বেশে,
		চাঁদকে ফেলে নীল আকাশে আন্‌লি কোন্ অনল।।
		(কপালে জ্বাল্‌লি কোন্ অনল)
(ঐ)		সদ্য ফোঁটা পদ্মফুলে কে মাখাল কালি?
		মা আমরি কপাল মন্দ কারে দিব গালি।
			রাজ-দুলালী আদর পেয়ে
			সাজ্‌লি ছি ছি নাগর মেয়ে,
(তোর)		চিন্‌তে পারি, গৌরী দেখে রাঙা পদতল।।

বাণী

দীনের হতে দীন দুঃখী অধম যেথা থাকে
ভিখারিনী বেশে সেথা দেখেছি মোর মাকে
		মোর অন্নপূর্ণা মাকে॥
অহংকারের প্রদীপ নিয়ে স্বর্গে মাকে খুঁজি
মা ফেরেন ধূলি পথে যখন ঘটা করে পূজি
ঘুরে ঘুরে দূর আকাশে প্রণাম আমার ফিরে আসে
যথায় আতুর সন্তানে মা কোল বাড়ায়ে ডাকে॥
নামতে নারি তাদের কাছে সবার নীচে যারা
তাদের তরে আমার জগন্মাতা সর্বহারা।
অপমানের পাতাল তলে লুকিয়ে যারা আছে
তোর শ্রীচরণ রাজে সেথা নে মা তাদের কাছে
আনন্দময় তোর ভুবনে আনব কবে বিশ্বজনে
আমি দেখব জ্যোতির্ময়ী রূপে সেদিন তমসাকে
		আমার অন্নপূর্ণা মাকে॥

বাণী

ফিরিয়া যদি সে আসে আমার খোঁজে ঝরা গোলাবে।
আনিয়া সমাধি পাশে আমার বিদায় বাণী শোনাবে।।
	বলিও তারে এখানে এসে
	ডাকে যেন মোর নাম ধ’রে সে,
রবাব যবে কাঁদিবে রমলা সুরের কোমল রেখাবে।।
	তৃষিত মরুর ধুসর গগন
	যেমন হেরে মেঘের স্বপন,
তেমনি দারুণ তিয়াসা লয়ে কাটিল আমার বিফল জীবন —
একটি ফোঁটা আঁখি–জল ঝরে যেন তার হাতের শরাবে।।

বাণী

ও কে বিকাল বেলা ব’সে নিরালা বাঁধিছে কেশ।
হেরি’ আর্শিতে নিজেরই চারু-মুখ (চোখে) জাগে আবেশ।।
বসনের শাসন নাই অঙ্গে তাহার
উথ্‌লে পড়ে মুক্ত-দেহে যৌবন-জোয়ার,
খুলে’ খুলে’ পড়ে কেশের কাঁটা বেণীর লেশ।।
আঙুলগুলি নাচের ভঙ্গিতে,
খেলে বেড়ায় বেণীর বিনুনিতে।
কভু বাঁকায় ভুরু কভু বাঁকায় গ্রীবা
ঠিক্‌রে পড়ে আয়নায় রূপের বিভা,
জাগে সহসা গালে তা’র সিঁদুর-ডিবার রঙের রেশ।।

বাণী

	সন্ধ্যা হলো ঘরকে চলো, ও ভাই মাঠের চাষি
	ভাটিয়ালি সুরে বাজে রাখাল ছেলের বাঁশি।।
	পিদিম নিয়ে একলা জাগে একলা ঘরের বধূ
	হৃদয়-পাতে লুকিয়ে রেখে সারা দিনের মধু;
	পথ চেয়ে সে বসে আছে কাজ হয়েছে বাসি রে তার
		কাজ হয়েছে বাসি।
(যে)	মন সারাদিন ছিল পড়ে হালের গরুর পানে,
	দিনের শেষে ঘরের জরু সেই মনকে টানে
	সেথা মেটে ঘরের দাওয়ায় লুটায় রে
	মেটে ঘরের দাওয়ায় লুটায় কালো চোখের হাসি রে ভাই
		কালো চোখের হাসি।
	পুবান হাওয়া ঢেউ দিয়ে যায় আউশ ধানের ক্ষেতে,
	এই ফসলের দেখব স্বপন শুয়ে শুয়ে রেতে;
		ও ভাই শুয়ে শুয়ে রেতে
	সকাল বেলা আবার যেন মাঠে ফিরে আসি রে
		এই মাঠে ফিরে আসি।।