বাণী

		বন্ধু রে, বন্ধু — পরান বন্ধু
আমার	দূরের বন্ধু আছে আমার ঐ গাঙের পারের গাঁয়ে।
		ঝরা-পাতর পত্র আমার যায় ভেসে তার পায়ে।।
			জানি জানি আমার দেশে
			আমার নেয়ে আসবে ভেসে,
ওরে		চির ঋণী আছে সে যে আমার প্রেমের দায়ে।।
		নূতন আশার পাল তু সে আসবে ফিরে ঘরে
		ফুটেছে তাই কাশ-কুসুমের হাসি শুকনো চরে।
			পিদমি জ্বেলে তারি আশায়
			গহীন গাঙের স্রোতে ভাসায়
ওরে		ঐ পিদিমের পথ ধ'রে সে আসবে সোনার নায়ে।।

বাণী

	আমি নহি বিদেশিনী।
(ঐ)	ঝিলের ঝিনুক, বিলের শালুক ছিল মোর সঙ্গিনী।।
		ঐ বাঁধা-ঘাট, ঐ বালুচর
		মাটির প্রদীপ, ঐ মেটে ঘর,
	চেনে মোরে ঐ তুলসীতলার নববধূ ননদিনী।।
	‘বৌ কথা কও’ পাখি,
	বাদ্‌লা নিশীথে মনের নিভৃতে আজও যায় মোরে ডাকি’।
		এত কালো চোখ এলোকেশ-ভার
		এত শ্যাম-মেঘ আছে কোথা আর,
(ঐ)	পদ্ম-পুকুরে মোরে স্মরি’ ঝুরে সখি মোর কমলিনী।।

পাশ্চাত্য সুর

বাণী

শাওন–রাতে যদি স্মরণে আসে মোরে
বাহিরে ঝড় বহে, নয়নে বারি ঝরে।।
ভুলিও স্মৃতি মম, নিশীথ–স্বপন সম
আঁচলের গাঁথা মালা ফেলিও পথ ‘পরে।।
ঝুরিবে পূবালি বায় গহন দূর–বনে,
রহিবে চাহি’ তুমি একেলা বাতায়নে।
বিরহী কুহু–কেকা গাহিবে নীপ–শাখে
যমুনা–নদীপারে শুনিবে কে যেন ডাকে।
বিজলী দীপ–শিখা খুঁজিবে তোমায় প্রিয়া
দু’ হাতে ঢেকো আঁখি যদি গো জলে ভরে।।

বাণী

আমারে চরণে দিও ঠাঁই
ও চরণ বিনা, ওহে গিরিধারী! কামনা কিছুই নাই।।
ব্যথিত হৃদয় হতে আকুল মরম বাণী,
থেকে থেকে ভেসে আসে, ফিরে এসো এসো রানী।
ফিরিতে পারি না আর অসীমে মিশিয়া যাই —
তুমি ফিরে যাও সখা আমাতে আর আমি নাই।।

বাণী

দূর আরবের স্বপন দেখি বাংলাদেশের কুটির হ'তে।
বেহোশ হয়ে চলেছি যেন কেঁদে কেঁদে কা'বার পথে।।
হায় গো খোদা, কেন মোরে
পাঠাইলে হায় কাঙ্গাল ক'রে;
যেতে নারি প্রিয় নবীর মাজার শরীফ জিয়ারতে।।
স্বপ্নে শুনি নিতুই রাতে - যেন কা'বার মিনার থেকে
কাঁদছে বেলাল ঘুমন্ত সব মুসলিমেরে ডেকে ডেকে।
ইয়া এলাহি ! বল সে কবে
আমার স্বপন সফল হ'বে,
গরিব ব'লে হব কি নিরাশ, মদিনা দেখার নিয়ামতে।।

বাণী

রেশমি রুমালে কবরী বাঁধি’ —
নাচিছে আরবি নটিনী বাঁদি।।
বেদুঈনী সুরে বাঁশি বাজে
রহিয়া রহিয়া তাঁবু মাঝে,
সুদূরে সে-সুরে চাহে ঘোম্‌টা তুলিয়া শাহজাদী।।
যৌবন-সুন্দর নোটন কবুতর নাচিছে মরু-নটী
গাল যেন গোলাপ কেশ যেন খেজুর-কাঁদি।।
চায় হেসে হেসে চায় মদির চাওয়ায়,
দেহের দোলায় রং ঝ’রে যায় ঝর্‌ঝর্‌,
ছন্দে দুলে ওঠে মরু মাঝে আঁধি।।