করুণ কেন অরুণ আঁখি
বাণী
করুণ কেন অরুণ আঁখি দাও গো সাকি দাও শারাব হায় সাকি এ আঙ্গুরী খুন নয় ও হিয়ার খুন–খারাব।। আর সহে না দিল্ নিয়ে এই দিল–দরদির দিল্লাগী, তাইতে চালাই নীল পিয়ালায় লাল শিরাজি বে–হিসাব।। হারাম কি এই রঙিন পানি আর হালাল এই জল চোখের? নরক আমার হউক মঞ্জুর বিদায় বন্ধু!লও আদাব।। দেখ্ রে কবি, প্রিয়ার ছবি এই শারাবের আর্শিতে, লাল গেলাসের কাঁচ্–মহলার পার হ’তে তার শোন্ জবাব্।।
কত সে-জনম কত সে-লোক
বাণী
কত সে-জনম কত সে-লোক পার হয়ে এলে, হে প্রিয় মোর। নিভে গেছে কত তপন-চাঁদ তোমারে খুঁজিয়া, হে মন চোর।। কত গ্রহে, প্রিয়, কত তারায় তোমারে খুঁজিয়া ফিরেছি, হায়! চাহ এ নয়নে হেরিবে তায়, সে-দূর স্মৃতির স্বপন-ঘোর।। আজো অপূর্ণ কত সে-সাধ অভিমানী তাহে সেধো না বাদ! না মিটিতে সাধ, স্বপন-চাঁদ, মিলনের নিশি ক’রো না ভোর।।
কোন্ সুদূরের চেনা বাঁশির
বাণী
কোন্ সুদূরের চেনা বাঁশির ডাক শুনেছিস্ ওরে চখা? ওরে আমার পলাতকা! তোর প’ড়লো মনে কোন্ হানা–ঘর, স্বপন-পারের কোন্ অলকা? ওরে আমার পলাতকা।। তোর জল ভ’রেছে চপল চোখে, বল কোন্ হারা–মা ডাক্লো তোকে রে ঐ গগন–সীমায় সাঁঝের ছায়ায় — হাতছানি দেয় নিবিড় মায়ায় — উতল পাগল! চিনিস্ কি তুই চিনিস্ ওকে রে? যেনবুক–ভরা ও’ গভীর স্নেহে ডাক দিয়ে যায়, ‘আয়, ওরে আয় আয় আয়, কোলে আয় রে আমার দুষ্টু খোকা! ওরে আমার পলাতকা।।‘ দখিন হাওয়ায় বনের কাঁপনে — দুলাল আমার! হাত–ইশারায় মা কি রে তোর ডাক দিয়েছে আজ? এতদিনে চিনলি কি রে পর ও আপনে! নিশি ভোরেই তাই কি আমার নামলো ঘরে সাঁঝ? ধানের শীষে, শ্যামার শিষে — যাদুমণি! বল্ সে কিসে রে, তুই শিউরে চেয়ে ছিঁড়্লি বাঁধন! চোখ ভরা তোর উছলে কাঁদন রে! তোরে কে পিয়ালো সবুজ স্নেহের কাঁচা বিষে রে! যেন আচম্কা কোন্ শশক–শিশু চম্কে ডাকে হায়, ‘ওরে আয় আয় আয় — বনে আয় ফিরে আয় বনের সখা। ওরে চপল পলাতকা।।