বাণী

আমি	সন্ধ্যামালতী বনছায়া অঞ্চলে
	লুকাইয়া রই ঘন পল্লব তলে ॥
	বিহগের গীতি ভ্রমরের গুঞ্জন, নীরব হয় যখন –
আমি	চাঁদেরে তখন পূজা করি আঁখি-জলে ॥
আমি	লুকাইয়া কাঁদি বনের শকুন্তলা
	মনের কথা এ জনমে হ’ল না বলা।
গভীর নিশীথে বন-ঝিল্লির সুরে, ডাকি দূর বন্ধুরে –
আমি	ঝ’ড়ে পড়ি যবে প্রভাতে সবার হৃদয় মুকুল খোলে ॥

বাণী

ও ভাই	আমার এ না’ যাত্রী না লয় ভাঙা আমার তরী।
আমি		আপনারে ল’য়ে রে ভাই এপার ওপার করি।।
আমি		এই জলেরি আয়নাতে ভাই দেখেছিলাম তায়
এখন		আয়না আছে প’ড়ে রে ভাই আয়নার মানুষ নাই।
তাই		চোখের জলে নদীর জলে রে আমি তারেই খুঁজে মরি।।
আমি		তারি আশে তরী নিয়ে ঘাটে ব’সে থাকি
আমার	তারির নাম ভাই জপমালা, তারেই কেঁদে ডাকি।
আমার	নয়ন-তারা লইয়া গেছে রে নয়ন নদীর জলে ভরি’।।
ঐ		নদীর জলও শুকায় রে ভাই, সে জল আসে ফিরে
আর		মানুষ গেলে ফিরে নাকি দিলে মাথার কিরে।
আমি		ভালোবেসে গেলাম ভেসে গো আমি হলাম দেশান্তরী।।

বাণী

		আহার দেবেন তিনি রে মন জিভ দিয়াছেন যিনি।
		তোরে সৃষ্টি ক'রে তোর কাছে যে আছেন তিনি ঋণী।।
		সারা জীবন চেষ্টা ক'রে,ভিক্ষা-মুষ্টি আনলি ঘরে
(ও মন)	তাঁর কাছে তুই হাত পেতে দেখ কি দান দেন তিনি।।
		না চাইতে ক্ষেতের ফসল পায় বৃষ্টির জল
		তুই যে পেলি পুত্র-কন্যা তোরে কে দিল তা বল।
		যাঁর করুণায় এত পেলি,তাঁরেই কেবল ভুলে গেলি
(তোর)	ভাবনার ভার দিয়ে তাঁকে ডাক রে নিশিদিন-ই।।

বাণী

চম্পা-বনে বেণু বাজে — বাজে বাজে।
কে গো চঞ্চল? এলে মনোহর সাজে —
		কিশোর নাটুয়ার সাজে।।
আঁখি মেলিয়া চাহে মালতীর কলি
ভবন-শিখী নাচে ‘কে গো’ বলি’,
ছড়ায় সমীরণ ফুল-অঞ্জলি —
		তোমার পথ-মাঝে।।
নূপুর শুনি বনে নাচে কুরঙ্গ
মানস-গঙ্গায় জাগে-তরঙ্গ,
সরসীতে কমলিনী থরথর অঙ্গ —
		রক্তিম হ’ল লাজে।।
লুকায় ফুলধনু মেঘের কোলে
রাখিয়া কপোল চাঁদের কপোলে,
		হেরে তরুণ রসরাজে।।

১. মনোহর

বাণী

কোন্ অজানা জনে দিব প্রাণ মোর।
নেবে আমার মালা সে-কোন কিশোর।।
কাহার লাগি’ একেলা জাগি
কোথা সে আমার প্রেম-অনুরাগী,
কোন্ কাননে রয় সে বনমালী চোর।।
পরি’ বধূর সাজ ভুলিয়া কুল লাজ
বৃথা আছি ব’সে কোথা হৃদয়-রাজ,
মম যৌবন-নিশি জেগে হল ভোর।।

বাণী

বৃন্দাবনী কুমকুম আবির রাগে যেন মোর অন্তর বাহির রাঙ্গে।।
		রস-যমুনা যেন বহে
		কভু মধুর মিলনে কভু বিধুর বিরহে,
রস-তৃষাতুরা ব্রজ-নাগরী যেন গাগরিতে সেই রস মাগে।।
যেন মোর কুঞ্জ-দুয়ারে,
ভাব-বিলাসিনী শ্রীমতী আসে অভিসারে।
		যেন মোর নিবিড় ধ্যানে
		মুরলী-ধ্বনি শুনি কানে,
বিরহের বরষায় আশা-নীপ-শাখায় যেন ঝুলনের দোলা লাগে।।