বাণী

ঐ	সর্ষে ফুলে লুটালো কার হলুদ-রাঙা উত্তরী।
	উত্তরী-বায় গো —
ঐ	আকাশ-গাঙে পাল তুলে যায় নীল সে পরীর দূর-তরী।।
তা’র	অবুঝ বীণার সবুজ সুরে
	মাঠের নাটে পুলক পুরে,
ঐ	গহন বনের পথটি ঘু’রে — আস্‌ছে দূরে কচিপাতা দূত্ ওরি।।
	মাঠ-ঘাট তার উদাস চাওয়ায় হুতাশ কাঁদে গগন মগন
	বেণুর বনে কাঁপ্‌চে গো তার দীঘল শ্বাসের রেশটি সঘন।।
তার	বেতস-লতায় লুটায় তনু
	দিগ্বিলয়ে ভুরুর ধনু,
সে	পাকা ধানের হীরক-রেণু
	নীল নলিনীর নীলিম-অণু — মেখেছে মুখ-বুক্‌-ভরি।।

বাণী

		কে নিবি মালিকা এ মধু যামিনী,
		আয় লো যুবতী কুল কামিনী॥
আমার		বেল ফুলের মালা গুণ জানে গো,
		পরবাসী বঁধুকে ঘরে আনে গো।
আমার		মালার মায়ায় ভালোবাসা পায়
কেঁদে		কাটায় রাতি যে অভিমানিনী॥
আমি		রূপের দেশের মায়া পরী,
(সেই)		আমার মালার গুণে কুরূপা যে সে হয় সুন্দরী।
যে		চঞ্চলে অঞ্চলে বাঁধিতে চায়,
যার		নিঠুর বঁধু সদা পালিয়ে বেড়ায়।
আমার		মালার মোহে ঘরে রহে সে
ফোটে		মলিন মুখে হাসির সৌদামিনী॥

বাণী

বাজ্‌ল কি রে ভোরের সানাই নিদ্‌-মহলার আঁধার-পুরে
শুন্‌ছি আজান গগন-তলে আঁধার-রাতের মিনার-চূড়ে।।
সরাই-খানার্‌ যাত্রীরা কি
‘বন্ধু জাগো’ উঠ্‌ল হাঁকি’?
নীড় ছেড়ে ঐ প্রভাত-পাখি
			গুলিস্তানে চল্‌ল উড়ে’।।
তীর্থ-পথিক্‌ দেশ-বিদেশের
আর্‌ফাতে আজ জুট্‌ল কি ফের,
‘লা শরীক আল্লহু’ মন্ত্রের
			নাম্‌ল কি বান পাহাড় ‘তূরে’।।
আজকে আবার কা’বার পথে
ভিড় জমেছে প্রভাত হ’তে,
নামল কি ফের্ হাজার স্রোতে
			‘হেরার’ জ্যোতি জগৎ জুড়ে।।
আবার ‘খালেদ’ ‘তারেক’ ‘মুসা’
আনল কি খুন-রঙিন ভূষা,
আস্‌ল ছুটে’ হাসীন ঊষা
			নও-বেলালের শিঁরিন সুরে।।

বাণী

নন্দ দুলাল নাচে নাচে রে হাতে সরের নাড়ু নিয়ে নাচে
ব্রজের গোপাল নাচে নাচে রে হাতে সরের নাড়ু নিয়ে নাচে
ওসে হাতের নাড়ু মুখে ফেলে, আড় চোখে চায় হেলে দুলে
যথায় গোপীর ক্ষীর নবনী দইয়ের হাঁড়ি আছে॥
শূন্য দু হাত শূন্যে তুলে দেয় সে করতালি বলে তাই তাই তাই
নন্দ পিতায় কয় ইশারায় নাই ননী নাই
নন্দ ধরতে গেলে যায় পিছিয়ে
মুচকি হেসে যায় এগিয়ে যশোমতীর কাছে রে॥
কহে শিউরে উঠে শিমুল ফুল নাচ রে গোপাল নাচ নাচ রে
	নাচ রে গোপাল নাচ
সারা গায়ে ঘুঙুর বেঁধে নাচে ডুমুর গাছ রে
	নাচ রে গোপাল নাচ
শিমুল গায়ে নাচে সুখে কাঁটা দিয়ে ওঠে ফুল ফোটে মরা গাছে॥
	নাচ ভুলে সে থমকে দাঁড়ায়
	মার চোখে জল দেখতে সে পায় রে
ননী মাখা দু হাত দিয়ে চোখ মুছিয়ে লুকায় বুকের কাছে॥

বাণী

তোমার নামে একি নেশা হে প্রিয় হজরত।
যত চাহি তত কাঁদি, আমার মেটে না হসরত।।
কোথায় আরব কোথায় এ হিন্দ্
নয়নে মোর নাই তবু নিন্দ
প্রাণে শুধু জাগে (তোমার) মদিনার ঐ পথ।।
কে বলে তুমি গেছ চলে হাজার বছর আগে
আছ লুকিয়ে তুমি প্রিয়তম আমার অনুরাগে।
মোর অন্তরের হেরা গুহায়
আজো তোমার ডাক শোনা যায়
জাগে আমার মনের কাবা ঘরে তোমারি সুরত —
	হজরত তোমারি সুরত।।
যারা দোজখ হতে ত্রাণের তরে তোমায় ভালোবাসে
আমার এ প্রেম দেখে তারা কেউ কাঁদে কেউ হাসে।
তুমি জান হে মোর স্বামী, শাফায়াৎ চাহি না আমি
আমি শুধু তোমায় চাহি তোমার মুহব্বত
	হজরত তোমার মুহব্বত।।

বাণী

এ ঘনঘোর রাতে
ঝুলন দোলায় দুলিবে মম সাথে।।
এসো নব জলধর শ্যামল সুন্দর
জড়ায়ে রাধার অঙ্গ বাঁশরি লয়ে হাতে।।