দ্বৈত-সঙ্গীত

  • ফুল বীথি এলে অতিথি

    বাণী

    স্ত্রী:		ফুল বীথি এলে অতিথি
    		চম্পা মঞ্জরি-কুঞ্জে পড়ে ঝরি' চঞ্চল তব পায়।
    পুরুষ:	কুড়ায়ে সেই ঝরা ফুল, চাঁপার মুকুল
    		গেঁথেছি মোহন-মালিকা পরাব বলিয়া তোমার গলায়।।
    স্ত্রী:		হে রূপ-কুমার, সুন্দর প্রিয়তম
    		এলে যে ফিরিয়া দাসীরে স্মরিয়া জীবন সফল মম।
    পুরুষ:	পরো কুন্তলে ধরো অঞ্চলে
    		অমিলন প্রেম-পারিজাত,
    স্ত্রী:		কি হবে লয়ে সে ফুল-মালা যাহা নিশি ভোরে শুকায়।
    পুরুষ:	মোছ মোছ আঁখিধার লহ বাহুর হার ভোলে অতীত ব্যথায়।
    উভয়ে:	বিরহ অবসানে মিলন মধুর প্রিয়
    		এ মিলন নিশি যেন আর না পোহায়।।
    

  • বিদেশি অতিথি সিন্ধু পারে

    বাণী

    পুরুষ 	: 	বিদেশি অতিথি সিন্ধু পারে পথহারা ফিরি দ্বারে দ্বারে।
    স্ত্রী 		: 	বাইরে হিম ঝরে ঝিম্ ঝিম্ ঝিম্ বন্ধু এসো এপারে।।
    পুরুষ 	: 	তোমারে বুঝি না বুঝি বা আধেক
    স্ত্রী 		: 	নয়নের ভাষা বঁধু সব দেশে এক,
    পুরুষ 	: 	তুমি ঊষা, ল’য়ে তুষার কর খেলা — ভোরবেলা।
    স্ত্রী 		: 	পুবের তপন সম রাঙাও জীবন মম তোমার কিরণধারে।।
    পুরুষ 	: 	তব কণ্ঠে সুর শুনি হায় সকরুণ স্মৃতি জাগায়,
    স্ত্রী 		: 	বিদেশি চেরী-কুসুমের মালিকা লহ গলায়।
    উভয়ে	:	চল যাই যেথা নাই দেশের বন্ধন
    			নাহি গো ক্রন্দন,
    			নিরুদ্দেশের পথে প্রেম অভিসারে।।
    
  • বেয়ান বলি ও বেয়ান ঠাকরুন

    বাণী

    পুরুষ	:	(বেয়ান, বলি ও বেয়ান ঠাকরুন)
    		বেয়ান তোমার আলু চেরা চোখে আমি মরে আছি
    স্ত্রী	:	বেয়াই আমি তাইতো তোমার গোদা পায়ে শরণ যাচি।
    		ও তোমার গোদা পায়ে শরণ যাচি।
    পুরুষ	:	(বলি ও বয়ান তোমার)
    		দাঁতে ছাতা গালে ছুলি গলায় পেটে কোলাকুলি
    		আমি দেখেই ছুটি কাছা খুলি
    		(আমি) দেখেই ছুটি ও আমার কাছা খুলে গো
    		দেখেই ছুটি হরিবোল বোলে রে
    		দেখেই ছুটি ও হরিবোল বোলে রে
    		আমি কাছা খুলে বাহু তুলে দেখেই ছুটি।
    স্ত্রী	:	(বলি ও বেয়াই, ও কাছা তো নয়) এ যে লেজুড়েরি কাছাকাছি।
    পুরুষ	:	(বলি ও বেয়ান ঠাকরুন তোমার)
    		ফোকলা দাঁতে প্রেমের বুলি শুনেই কাঁধে নিলেম ঝুলি।
    স্ত্রী	:	(বুঝি গৌর নামের ঝুলি, বলি ও বেয়াই উঁ)
    		বেয়াই নিয়ে এবার যাবে রাঁচি
    		যাবে রাঁচি গৌর হে ওহে গৌর (যাবে রাঁচি)
    		কাছা খুলে বাহু তুলে যাবে রাঁচি (তুমি)।
    পুরুষ	:	(বলি ও বেয়ান)
    		ভাগলপুরি বিবির মতন নাদুস নুদুস কি সে গঠন
    স্ত্রী	:	(বলি ও হামদো বুড়ো) তুমি মাম্‌দো ভূত যে চামড়া খেকো
    		ও আমায় করতে এলে আমড়া গাছি।
    
  • ভুলে রইলি মায়ায় এসে ভবে

    বাণী

    দ্বৈত	:	ভুলে রইলি মায়ায় এসে ভবে
    		তুই ভুলবি ভুলের খেলা কবে॥
    স্ত্রী	:	নিবু নিবু তোর জীবন-বাতি শেষ হলো সুখ-রাতি,
    পুরুষ	:	রাত পোহালে সুখের সাথী সঙ্গে নাহি রবি॥
    স্ত্রী	:	যাঁর কৃপায় তুই রইলি সুখে ডাক্‌লি না রে তারে
    পুরুষ	:	তুই কি নিয়ে হায় তাহার কাছে যাবি পরপারে।
    স্ত্রী	:	জমালি যা তুই জীবন ভ’রে পিছু প’ড়ে রবে
    পুরুষ	:	দারাসুত লবে বিভব রতন পাপের বোঝা নাহি লবে॥
    স্ত্রী	:	স্রোতের মতো সময যে যায় নিয়ে শরণ প্রভুর পায়
    পুরুষ	:	কৃপা-সিন্ধুর কৃপা পেলে ত’রে যাবি তুই তবে॥
    
  • মন নিয়ে আমি লুকোচুরি খেলা খেলি

    বাণী

    পুরুষ		:	মন নিয়ে আমি লুকোচুরি খেলা খেলি প্রিয়ে।
    স্ত্রী		:	ধরিতে পারি না পেতে তাই প্রেম ফাঁদ —
    			তুমি মেঘ আমি চাঁদ, ফের গো কাঁদিয়ে।।
    পুরুষ		:	মন্দ বায় আমি গন্ধ লুটি শুধু —
    			চাই না আমি সে মধু;
    স্ত্রী		:	চাইনে চাইনে বঁধু —
    			তাহে নাই সুখ নাই, আমি পরশ যে চাই।
    পুরুষ		:	স্বপন-কুমার ফিরি যে আমি মন ভুলিয়ে।।
    উভয়ে	:	চল তবে যাই মোরা স্বপনের দেশে
    			জোছনায় ভেসে —
    			নন্দন-পারিজাত ফুল ফুটিয়ে।।
    
  • মেরে শ্রীকৃষ্ণ ধরম শ্রীকৃষ্ণ করম

    বাণী

    মেরে শ্রীকৃষ্ণ ধরম শ্রীকৃষ্ণ করম শ্রীকৃষ্ণহি তন-মন-প্রাণ।
    সব্‌সে নিয়ারে পিয়ারে শ্রীকৃষ্ণজী নয়নুঁকে তারে সমান॥
    দুখ সুখ সব শ্রীকৃষ্ণ মাধব কৃষ্ণহি আত্মা জ্ঞান
    কৃষ্ণ কণ্ঠহার আঁখকে কাজর কৃষ্ণ হৃদয়মে ধ্যান
    শ্রীকৃষ্ণ ভাষা শ্রীকৃষ্ণ আশা মিটায়ে পিয়াস উয়ো নাম (মেরে)
    স্বামী-সখা-পিতা-মাতা শ্রীকৃষ্ণজী ভ্রাতা-বন্ধু-সন্তান॥
    
  • মোর মন ছুটে যায় দ্বাপর যুগে

    বাণী

    উভয়		:	মোর মন ছুটে যায় দ্বাপর যুগে দূর দ্বারকায় বৃন্দাবনে।
    স্ত্রী+উভয়ে	:	মোর মন হ’তে চায় ব্রজের রাখাল খেলতে রাখাল-রাজার সনে॥
    স্ত্রী		:	রূপ ধরে না বিশ্বে যাহার
    			দেখতে সাধ যায় কিশোর-রূপ তার
    পুরুষ		:	কেমন মানায় নরের রূপে অনন্ত সেই নারায়ণে॥
    স্ত্রী		:	সাজ্‌ত কেমন শিখী-পাখা বাজ্‌ত কেমন নূপুর পায়ে,
    পুরুষ		:	থির কেমনে থাক্‌ত ধরা নাচ্‌ত যখন তমাল-ছায়ে।
    উভয়		:	মা যশোদা বাঁধ্‌ত যখন কাঁদ্‌ত ভগবান কেমনে॥
    স্ত্রী		:	সাজ্‌ত কেমন বন-মালায় বিশ্ব যাহার অর্ঘ্য সাজায়;
    পুরুষ		:	যোগী-ঋষি পায় না ধ্যানে গোপ-বালা কেমনে পায়।
    উভয়		:	তেম্‌নি ক’রে কালার প্রেমে সব খোয়াব এই জীবনে॥
    
  • রাধাকৃষ্ণ নামের মালা

    বাণী

    দ্বৈত	:	রাধাকৃষ্ণ নামের মালা
    		জপ দিবানিশি নিরালা॥
    পুরুষ	:	অগতির গতি গোকুলের পতি
    স্ত্রী	:	শ্রীকৃষ্ণে ভক্তি দেয় যে শ্রীমতী
    পুরুষ	:	ভব-সাগরে কৃষ্ণ নাম ধ্রুবজ্যোতি
    দ্বৈত	:	সেই কৃষ্ণের প্রিয়া ব্রজবালা॥
    স্ত্রী	:	পাপ-তাপ হবে দুর হরির নামে
    		শ্রীমতী রাধা যে হরির বামে
    পুরুষ	:	ঐ নাম জপি’ যাবি গোলকধামে
    দ্বৈত	:	সেই রাধা নাম হবে দুঃখ জ্বালা॥
    স্ত্রী	:	সাধনে সিদ্ধ হবে রাধা ব’লে ডাকো
    পুরুষ	:	কৃষ্ণ-মূরতি হৃদি-মন্দিরে রাখো
    দ্বৈত	:	জপ রে যুগল নাম রাধাশ্যাম
    		এই আঁধার জগৎ হবে আলো॥
    
  • সই কই লো আমার ঘর নিকোবার

    বাণী

    স্ত্রী	:	সই কই লো আমার ঘর নিকোবার ন্যাতা।
    পুরুষ	:	আহা ন্যাতা নয় গো শীতের কাঁথা এই যে আমি হেথা॥
    স্ত্রী	:	সই-লো ওলো সই, আমার ছাই ফ্যালবার ভাঙাদ কুলো কই ?
    পুরুষ	:	কুলোর বাতাস চুলোর ছাই
    		স্বামী বলো কিম্বা ভাই, (ওলো) এই যে তোমার আমি।
    উভয়ে	:	মিলেছি রাজ যোটক দুয়ে
    পুরুষ	:	গিঁটে বাত ওরে বাবা রে বাবা গিঁটে বাত
    স্ত্রী	:	আর ফিকের ব্যথা, ওরে মা রে, মা আর ফিকের ব্যথা॥
    		ওলো সই বাপের বাড়ি যাব আমি এ ঘরে রব না,
    পুরুষ	:	দেখো পুরুষের রাগ করে আনাগোনা
    		আমিও যাব শ্বশুর বাড়ি, ওরে রেমো নিয়ে আয় ব্যাগ ছাতা।
    উভয়ে	:	নথে এবং নাথে এম্‌নি যুদ্ধ।
    পুরুষ	:	গুঁতোগুতি
    স্ত্রী	:	জড়াজড়ি
    পুরুষ	:	ছাতা-ছড়ি
    স্ত্রী	:	খুনতি-বেড়ী
    উভয়ে	:	হাতা॥
    
  • সুদূর সিন্ধুর ছন্দ উতল

    বাণী

    সুদূর সিন্ধুর ছন্দ উতল
    আমরা কলগীতি চঞ্চল॥
    তুফান ঝঞ্ঝা কল্লোল ছলছল
    ঊর্ধ্বে আমি ঝড় বহি শন্‌শন্‌
    মম বক্ষে তব মঞ্জির তোলে গো রণন্
    আনন্দ চিত্তে মেতে উঠি নৃত্যে
    গুরু গুরু গুরু বাজে বাদল মাদল॥
    তুমি গগন তলে উঠি মেঘের ছলে
    জল-বিম্বমালা বালা পরাও গলে।
    তুমি বাদল হাওয়ায় কর আদন যখন
    মোরে কান্না পাওয়ায়।
    ধুলি গৈরিক ঝড়ে সাগর নীলাম্বরী
    জড়াইয়া অপরূপ করে ঝলমল॥
    

  • হেলে দুলে চলে বন-মালা গলে

    বাণী

    হেলে দুলে চলে বন-মালা গলে গোঠ-বিহারী বনে বনমালী সাজে।
    বঙ্কিম শিখী পাখা শোভিত অলক চন্দন তিলক ললাটে রাজে।।
    	পথের ধুলি হরি চরণ পরশে
    	হল সুরভিত হরি-চন্দন হরষে,
    নিখিল-ভক্ত-প্রাণ চরণে নূপুর হয়ে রুমু ঝুমু বাজে।।
    	তৃণ নাহি পরশে উচাটন ধেনু সব
    	বংশী-বট-তলে শোনে শ্যাম বেণুরব,
    অপরূপ অভিনব প্রেম অনুভব, জাগে ব্রজ-গোপীকার প্রাণের মাঝে।।