হোরি

  • আজকে দোলের হিন্দোলায়

    বাণী

    আজকে দোলের হিন্দোলায়
    	আয় তোরা কে দিবি দোল্‌।
    ডাক দিয়ে যায় দ্বারে ঐ
    	হেনার কুঁড়ি আমের বোল্।।
    আগুন-রাঙা ফুলে ফাগুন লালে-লাল,
    কৃষ্ণ-চূড়ার পাশে রঙন অশোক গালে-গাল,
    লোল্ হয়ে পড়িল ঐ রাতের জোছনা-আঁচল।।
    হতাশ পথিক পথ-বিভোল্,
    	ভোল্ আজি বেদনা ভোল্, —
    টোল খেয়ে যাক নীল আকাশ
    	শুনে তোদের হাসির রোল
    দ্বার খু’লে দেখ্ — ফুলেল রাত
    	ফুলে ফুলে ডামাডোল্।।
    
  • আজি নন্দদুলালের সাথে

    বাণী

    আজি নন্দদুলালের সাথে
    	ঐ খেলে ব্রজনারী হোরি।
    কুঙ্কুম-আবির হাতে
    	দেখ, খেলে শ্যামল খেলে গোরী।।
    থালে রাঙা ফাগ,
    নয়নে রাঙা রাগ,
    ঝরিছে রাঙা সোহাগ
    	রাঙা পিচ্‌কারি ভরি।।
    পলাশ শিমুলে ডালিম ফুলে
    	রঙনে অশোকে মরি মরি।
    ফাগ-আবির ঝরে তরুলতা চরাচরে,
    	খেলে কিশোর কিশোরী।।
    
  • আজি মনে মনে লাগে হোরী

    বাণী

    আজি মনে মনে লাগে হোরি
    আজি বনে বনে জাগে হোরি।।
    ঝাঁঝর করতাল খরতালে বাজে
    বাজে কঙ্কন চুড়ি মৃদুল আওয়াজে
    লচকিয়া আসে মুচকিয়া হাসে
    প্রেম-উল্লাসে শ্যামল গোরী।।
    কদম্ব তমাল রঙে লালে লাল
    লাল হলো কৃষ্ঞ ভ্রমর ভ্রমরী
    রঙের উজান চলে কালো যমুনা-জলে
    আবির রাঙা হলো ময়ূর-ময়ূরী।।
    মোর হৃদি-বৃন্দাবন যেন রাঙে
    রাধা শ্যাম-যুগল চরণ-রাগে
    ও চরণ-ধূলি যেন ফাগ হ’য়ে নিশিদিন
    অন্তরে পড়ে মোর ঝরি’।।
    
  • আনন্দ-দুলালী ব্রজ-বালার সনে

    বাণী

    আনন্দ-দুলালী ব্রজ-বালার সনে
    			নন্দ-দুলাল খেলে হোলি!
    রঙের মাতন লেগে যেন শ্যামল মেঘে
    			খেলেছে রাঙা বিজলি।।
    রাঙা মুঠি-ভরা রাঙা আবির-রেণু
    রাঙিল পীত-ধড়া শিখি-পাখা বেণু
    			রাঙিল শাড়ি কাঁচলি।।
    লচকিয়া আসে মুচকিয়া হাসে
    মারে আবির পিচকারি,
    চাঁদের হাট তোরা দেখে যা রে দেখে যা
    রঙে মাতোয়ালা নর-নারী!
    শিরায় শিরায় সুরার শিহরণ
    			রঙ্গে অঙ্গে পড়ে ঢলি।।
    
  • আবির-রাঙা আভীরা নারী সনে

    বাণী

    আবির-রাঙা আভীরা নারী সনে কৃষ্ণ কানাই খেলে হোলি।
    হোরির মাতনে চুড়ি ও কাঁকনে উঠিছে কল-কাকলি।।
    শ্যামল তনু হ’ল রাঙা আবিরে রেঙে,
    ইন্দ্রধনু-ছটা যেন কাজল মেঘে,
    				রাঙিল রঙে নীল চোলি।।
    লহু লহু হাসে মুহু মুহু ভাসে রাঙা কুঙ্কুম ফাগের রাগে,
    দোঁহে দুহু ধরি’ মারে পিচকারি চাঁদ-মুখে কলঙ্ক জাগে।
    অঙ্গে অপাঙ্গে অনঙ্গ-রঙ্গিমা ইঙ্গিতে উঠিছে উছলি’।।
    
  • আয় গোপিনী খেলবি হোরি ফাগের রাঙা

    বাণী

    আয় গোপিনী খেলবি হোরি ফাগের রাঙা পিচ্‌কারিতে
    আজ শ্যামে লো করব ঘায়েল আবির হাসির টিট্‌কারিতে।।
    রঙে রাঙা হয়ে শ্যাম আজ হবে যেন রাই কিশোরী
    যমুনা জল লাল হবে আজ আবির ফাগের রঙে ভরি
    কপালে কলঙ্ক মোদের ধুয়ে যাবে রঙ ঝারিতে।।
    গুরুজনার গঞ্জনা আজ
    সইব না লো মানব না লাজ
    কূল ভুলে গোকুল পানে ভেসে যাব রাঙা গীতে।।
    
  • কুমকুম আবির ফাগের ল’য়ে কালিকা

    বাণী

    কুমকুম আবির ফাগের ল’য়ে কালিকা।
    খেলিছে ‘রসিয়া’ হোরি ব্রজ-বালিকা।।
    	হোরির অনুরাগে
    	যমুনায় দোলা লাগে,
    মাধব সনে ঐ খেলে মাধবিকা।।
    	রঙের গাগরিতে
    	রঙিলা ঘাগরিতে,
    রঙের মাতন লাগায় নাগর-নাগরিকা।।
    	জেগেছে রঙের নেশা
    	মাধবী মধু-মেশা,
    মনের বনে দোলে রাঙা ফুল-মালিকা।।
    
  • দোল ফাগুনের দোল লেগেছে

    বাণী

    দোল ফাগুনের দোল লেগেছে, আমের বোলে দোলন-চাঁপায়।
    মৌমাছিরা পলাশ-ফুলের গেলাশ ভ’রে মউ পিয়ে যায়।।
    		শ্যামল পাতার কোলে কোলে
    		আবির-রাঙা কুসুম দোলে,
    দোয়েল শ্যামা লহর তোলে কৃষ্ণচূড়ার ফুলেল শাখায়।।
    বন-গোপিনী ফুল ছুঁড়ে ঐ খেলে হোরী দখিন-বায়ে,
    হলদে পাখি দোদুল দুলে সোনাল শাখায় আদুল গায়ে।
    		ভাঁট-ফুলের ঐ নাট-দেউলে
    		রঙিন প্রজাপতি দুলে,
    মন ছুটে যায় দূর গোকুলে, বৃন্দাবনে প্রেম যমুনায়।।
    
  • ব্রজগোপী খেলে হোরী

    বাণী

    ব্রজ–গোপী খেলে হোরী
    খেলে আনন্দ নবঘন শ্যাম সাথে।
    রাঙা অধরে ঝরে হাসির কুম্‌কুম্‌
    অনুরাগ–আবীর নয়ন–পাতে।।
    পিরীতি–ফাগ মাখা গোরীর সঙ্গে
    হোরি খেলে হরি উন্মাদ রঙ্গে।
    বসন্তে এ কোন্ কিশোর দুরন্ত
    রাধারে জিনিতে এলো পিচ্‌কারী হাতে।।
    গোপীনীরা হানে অপাঙ্গ খর শর ভ্রুকুটি ভঙ্গ
    অনঙ্গ আবেশে জর জর থর থর শ্যামের অঙ্গ।
    শ্যামল তনুতে হরিত কুঞ্জে
    অশোক ফুটেছে যেন পুঞ্জে পুঞ্জে
    রঙ–পিয়াসি মন ভ্রমর গুঞ্জে
    ঢালো আরো ঢালো রঙ প্রেম–যমুনাতে।।
    
  • শ্যামের সাথে চল সখি খেলি সবে হোরি

    বাণী

    শ্যামের সাথে চল সখি খেলি সবে হোরি।
    রঙ নে, রঙ দে, মদির আনন্দে, আয় লো বৃন্দাবনী গোরী।।
    আয় চপল যৌবন-মদে মাতি অল্প-বয়সী কিশোরী।।
    রঙ্গিলা গালে তাম্বুল-রাঙা ঠোঁটে হিঙ্গুল রঙ লহ ভরি;
    ভুরু-ভঙ্গিমা সাথে রঙ্গিম হাসি পড়ুক মুহু মুহু ঝরি’।।
    আগুন-রাঙা ফুলে ফাগুন লাগে লাল,
    কৃষ্ণচূড়ার পাশে অশোক গালে-গাল।
    আকুল করে ডাকি’ বকুল বনের পাখি,
    যমুনার জল লাল হ’ল আজ আবির, ফাগের রঙে ভরি।।১
    

    ১. শ্যাম অঙ্গ আজি রঙে রঙে রাঙা হয়ে কি শোভা ধরেছে মরি! মরি!

  • হোরির রঙ লাগে আজি গোপিনীর তনু মনে

    বাণী

    হোরির রঙ লাগে আজি গোপিনীর তনু মনে।
    অনুরাগে-রাঙা গোরীর বিধু-বদনে॥
    ফাগের লালী আনিল কে,
    কাজল-কালো চোখে
    কামনা-আবির ঝরে রাঙা নয়নে॥
    অশোক রঙন ফুলের আভা জাগে ডালিম-ফুলী গালে,
    নাচিছে হৃদয় আজি রসিয়ার নাচের তালে।
    তাম্বুলীরাঙা ঠোঁটে ফাগুনের ভাষা ফোটে,
    (তার) প্রাণের খুশির রং লেগেছে রাঙা বসনে॥