কাওয়ালি

  • দেখে যা রে দুল্‌হা সাজে সেজেছেন মোদের নবী

    বাণী

    দেখে যারে দুল্‌হা সাজে সেজেছেন মোদের নবী।
    বর্ণিতে সে রূপ মধুর হার মানে নিখিল কবি॥
    আওলিয়া আর আম্বিয়া সব পিছে চলে বরাতি,
    আসমানে যায় মশাল জ্বেলে গ্রহ তারা চাঁদ রবি॥
    হুর পরী সব গায় নাচে আজ, দেয় ‘মোবারকবাদ্’ আলম্,
    আর্‌শ কুর্শি ঝুঁকে পড়ে দেখতে সে মোহন ছবি॥
    আজ আরশের বাসর ঘরে হবে মোবারক রুয়ৎ,
    বুকে খোদার ইশ্ক নিয়ে নওশা ঐ আল-আরবি॥
    
  • নয়নে ঘনাও মেঘ মালবিকা

    বাণী

    নয়নে ঘনাও মেঘ, মালবিকা!
    গগনে জাগাও তব নীরদ-লিখা।।
    বিদ্যুৎ হানে যদি গরজায় বাজ
    সুন্দর মৃত্যুরে নাহি ভয় আজ,
    আমার এ বনে এসো মনোবালিকা।।
    ঝরুক এ শিরে মোর ঘন বরষা
    ফুটিবে কাননে ফুল আছে ভরসা,
    এসো জল-ছল-ছল পথে অভিসারিকা।।
    
  • না মিটিতে সাধ মোর নিশি পোহায়

    বাণী

    		না মিটিতে সাধ মোর নিশি পোহায়।
    		গভীর আঁধার ছেয়ে আজো হিয়ায়।।
    			আমার নয়ন ভ’রে
    			এখনো শিশির ঝরে,
    		এখনো বাহুর ’পরে বঁধূ ঘুমায়।।
    			এখনো কবরী-মূলে
    			কুসুম পড়েনি ঢুলে,
    		এখনো পড়েনি খুলে’ মালা খোঁপায়।।
    			নিভায়ে আমার বাতি
    			পোহাল সবার রাতি,
    (আমি) 	নিশি জেগে’ মালা গাঁথি, প্রাতে শুকায়।।
    
  • নাচিছে নটনাথ শঙ্কর মহাকাল

    বাণী

    নাচিছে নটনাথ, শঙ্কর মহাকাল।
    লুটাইয়া পড়ে দিবা-রাত্রির বাঘছাল
    আলো-ছায়ার বাঘ ছাল।।
    ফেনাইয়া ওঠে নীল-কণ্ঠের হলাহল,
    ছিঁড়ে পড়ে দামিনী অগ্নি-নাগিনী দল।
    দোলে ঈশান-মেঘে ধূর্জটি-জটাজাল।।
    বিষম ছন্দে বোলে ডমরু নৃত্য-বেগে,
    ললাট-বহ্নি দোলে প্রলয়ানন্দে জেগে।
    চরণ-আঘাত লেগে শ্মশানে কঙ্কাল।।
    সে নৃত্য-ভঙ্গে গঙ্গা-তরঙ্গে
    সঙ্গীত দুলে ওঠে অপরূপ রঙ্গে,
    নৃত্য-উছল জলে বাজে জলদ তাল।।
    সে নৃত্য-ঘোরে ধ্যান-নিমীলিত ত্রিনয়ন
    প্রলয়ের মাঝে হেরে নব সৃজন-স্বপন,
    জোছনা-আশিস্ ঝরে উছলিয়া শশী-থাল।।
    

    নাটকঃ ‘আলেয়া’

  • নিরন্ধ্র মেঘে মেঘে অন্ধ গগন

    বাণী

    নিরন্ধ্র মেঘে মেঘে অন্ধ গগন।
    অশান্ত-ধারে জল ঝরে অবিরল,
    		ধরণী ভীত-মগন॥
    ঝঞ্ঝার ঝল্লরী বাজে ঝনন্‌ননন
    দীর্ঘশ্বসি’ কাঁদে অরণ্য শনশন,
    প্রলয় বিষাণ বাজে বজ্রে ঘনঘন —
    মূর্ছিত মহাকাল-চরণে মরণ॥
    শুধিবে না কেহ কি গো এই পীড়নের ঋণ,
    দুঃখ-নিশি-শেষে আসিবে না শুভদিন।
    দুষ্কৃতি বিনাশায় যুগ-যুগ-সম্ভব
    অধর্ম নিধনে এসো অবতার নব,
    ‘আবিরাবির্ম এধি’ ঐ ওঠে রব —  
    জাগৃহি ভগবন্, জাগৃহি ভগবন্॥
    
  • পেয়ে আমি হারায়েছি গো

    বাণী

    পেয়ে আমি হারায়েছি গো আমার বুকের হারামণি।
    গানের প্রদীপ জ্বেলে তা’রেই খুঁজে ফিরি দিন-রজনী।।
    সে ছিল গো মধ্যমণি আমার মনের মণি-মালায়,
    রেখেছিলাম লুকিয়ে তায়, মানিক যেমন রাখে ফণী।।
    স্নিগ্ধ জ্যোতি নিয়ে সে মোর এসেছিল দগ্ধ বুকে,
    অসীম আঁধার হাত্‌ড়ে ফিরি খুঁজি তারি রূপ-লাবণি।।
    হারিয়ে যে যায় হায় কেন সে যায় হারিয়ে চিরতরে,
    মিলন-বেলাভুমে বাজে বিরহেরই রোদন-ধ্বনি।।
    
  • প্রভু রাখ এ মিনতি ত্রিভুবন-পতি

    বাণী

    (প্রভু)		রাখ এ মিনতি ত্রিভুবন-পতি তব পদে মতি।
    		আঁখির আগে যেন সদা জাগে তব ধ্রুব-জ্যোতি।।
    			সংসার মরুমাঝে তুমি মেঘ-মায়া,
    			বিষাদ-শোক তাপে তুমি তরু-ছায়া,
    		সান্ত্বনা দাতা তুমি দুঃখ ত্রাতা অগতির গতি।।
    		জননীর মত আছ ঊর্ধ্বে জাগি
    		জলে স্থলে শূন্যে অগণিত তব দান মোদের লাগি১।
    			ঝঞ্ঝার মাঝে তব বিষাণ বাজে,
    			সহসা ঢলি পড় বনে ফুল-সাজে,
    		কোমলে কঠোরে হে প্রভু বিরাজে তব মহাশক্তি।।
    

    ১. দোলে কালো নিশার কোলে / আলো-উষসী / তিমির তলে তব তিলক জ্বলে / ঐ পূর্ণ শশী।

  • প্রিয় এমন রাত যেন যায় না বৃথাই

    বাণী

    প্রিয় এমন রাত যেন যায় না বৃথাই
    পরি চাঁপা ফুলের শাড়ি খয়েরিটিপ,
    জাগি বাতায়নে জ্বালি আঁখি প্রদীপ,
    মালা চন্দন দিয়ে মোর থালা সাজাই।।
    তুমি আসিবে বলে সুদূর অতিথি
    জাগে চাঁদের তৃষা লয়ে কৃষ্ণা তিথি,
    কভু ঘরে আসিকভু বাহিরে চাই।।
    আজি আকাশে বাতাসে কানাকানি,
    জাগে বনে বনে নবফুলের বাণী,
    আজি আমার কথা যেন বলিতে পাই।।
    
  • মাধবী-তলে চল মাধবিকা-দল

    বাণী

    মাধবী-তলে চল মাধবিকা-দল
    		আইল সুখ-মধুমাস।
    বহিছে খরতর থরথর মরমর
    		উদাস চৈতী-বাতাস।।
    পিককুল কলকর অবিরল ভাষে,
    মদালস মধুপ পুষ্পল বাসে।
    		বেণু-বনে উঠিছে নিশাস।।
    তরুণ নয়ন সম আকাশ আনীল,
    তট-তরু-ছায়া ধরে নীর নিরাবিল
    		বুকে বুকে স্বপন-বিলাস।।
    
  • রেশমি চুড়ির তালে

    বাণী

    রেশমি চুড়ির তালে কৃষ্ণচূড়ার ডালে
    ‘পিউ কাহাঁ পিউ কাহাঁ’ ডেকে ওঠে পাপিয়া।।
    	আঙিনায় ফুল-গাছে
    	প্রজাপতি নাচে,
    ফেরে মুখের কাছে আদর যাচিয়া।।
    	দুলে দুলে বনলতা
    	কহিতে চাহে কথা,
    বাজে তারি আকুলতা — কানন ছাপিয়া।।
    	শ্যামলী-কিশোরী মেয়ে
    	থাকে দূর নভে চেয়ে,
    কালো মেঘ আসে ধেয়ে — গগন ব্যাপিয়া।।
    
  • শুক্লা জোছনা তিথি ফুল্ল পুষ্পবীথি

    বাণী

    শুক্লা জোছনা তিথি, ফুল্ল পুষ্পবীথি গন্ধ-বন-গীতি আকুল উপবন।
    চিত্ত স্মপ্নাতুর, তঙ্গ চুর চুর মাগে হৃদি-পুর সুন্দর-পরশন।।
    	চন্দন-গন্ধিত মন্দ দখিনা-বায়
    	নন্দন-বাণী ফুলে ফুলে ক’য়ে যায়,
    তনুমন জাগে রাঙা অনুরাগে, মনে লাগে আজ (আজি মাধবী) বাসর-জাগরণ।।
    

    নাটকঃ ‘সাবিত্রী’

  • হাওয়াতে নেচে’ নেচে' যায় ঐ তটিনী

    বাণী

    হাওয়াতে নেচে’ নেচে’ যায় ঐ তটিনী।
    পাহাড়ের পথ-ভোলা কিশোরী নটিনী।।
    		তরঙ্গ আঁচল দুলায়ে
    		বনভূমির মন ভুলায়ে,
    চলেছে চপল পায়ে একাকিনী উদাসিনী।।
    এঁকে বেঁকে থম্‌কে গিয়ে,
    হরিণীরে চম্‌কে দিয়ে।
    ছুটিয়া যায় সুদূরে
    আয় আয় বলি, ডাকে কে কুলের বধূরে,
    নেচে চলে পথ বেভুল ঘর-ছাড়া বিবাগিনী।।
    
  • হে মদিনাবাসী প্রেমিক ধর

    বাণী

    হে মদিনাবাসী প্রেমিক ধর হাত মম॥
    জ্বলওয়া দেখালে দিল হরিলে বন্ধু হলো বেগানা
    হেসে হেসে সংসার কহে দীওয়ানা এ দীওয়ানা॥
    বিরহের এ রাত একেলা কেঁদে হলো ভোর
    হৃদয়ে মোর শান্তি নাহি কাঁদে পরান মোর॥
    দুখের দোসর কেউ নাহি মোর নাই ব্যথী ব্যথার
    তোমায় ভুলে ভাসি অকূলে পার করো সরকার॥