লোকগীতি

  • উপল নুড়ির কাঁকন চুড়ি বাজে

    বাণী

    উপল নুড়ির কাঁকন চুড়ি বাজে
    	বাজে ঘুমতি নদীর জলে।
    বুনো হাঁসের পাখার মত মন যে ভেসে চলে
    	সেই ঘুমতি নদীর জলে।।
    মেঘ এসেছে আকাশ ভ'রে —
    যেন শ্যামল ধেনু চরে
    নাগিনীর সম বিজলি-ফনা তুলে
    	নাচে,নাচে নাচে রে।
    	মেঘ-ঘন গগন তলে।।
    পাহাড়িয়া অজগর ছুটে আসে ঝর্‌ ঝর্‌ বেনো-জল্‌
    দিয়ে করতালি প'রে পিয়াল পাতার মাথালি
    ছিটায় জল,গেঁয়ো কিশোরীর দল।
    রিনিক,ঝিনিক,বাজে চাবি আঁচলে
    কাল নাগিনীর মত পিঠে বেনী দোলে
    তীর-ধনুক হাতে বন-শিকারির সাথে
    	মন ছুটে যায় বনতলে।।
    
  • ও কালো বউ জল আনিতে যেয়ো না

    বাণী

    ও কালো বউ! জল আনিতে যেয়ো না আর বাজিয়ে মল।
    তোমায় দেখে শিউরে ওঠে কাজ্‌লা দীঘির কালো জল।
    		ওগো কাজ্‌লা দীঘির কালো জল।।
    	দেখে তোমার কালো আঁখি
    	কালো কোকিল ওঠে ডাকি’
    তোমার চোখের কাজল মাখি’ হয় সজল ঐ মেঘ-দল
    		ওগো হয় সজল ঐ মেঘ-দল।।
    	তোমার কালো রূপের মায়া
    	দুপুর রোদে শীতল ছায়া
    কচি অশথ্‌ পাতায় টলে ঐ কালো রূপ টলমল।।
    	ভাদর মাসের ভরা ঝিলে
    	তোমার রূপের আদর মিলে গো —
    তোমার তনুর নিবিড় নীলে আকাশ করে টলমল।
    		ঐ আকাশ করে টলমল।।
    
  • ও বন্ধু! দেখলে তোমায় বুকের মাঝে

    বাণী

    ও বন্ধু! দেখ্‌লে তোমায়, বুকের মাঝে জোয়ার-ভাঁটা খেলে।
    আমি এক্‌লা ঘাটে কুলবধূ কেন তুমি এলে
    			বন্ধু, কেন তুমি এলে।।
    ও বন্ধু, আমার অঙ্গে কাঁটা দিয়ে ওঠে বাজাও যখন বাঁশি
    আমি খিড়্‌কি দুয়ার দিয়ে বন্ধু, জল ভরিতে আসি
    ভেসে’ নয়ন-জলে ঘরে ফিরি ঘাটে কলস ফেলে।।
    আমার পাড়ায়, বন্ধু, তোমার নাম যদি নেয় কেউ
    বুকে আমার দুলে ওঠে পদ্মা নদীর ঢেউ বন্ধু পদ্মা নদীর ঢেউ।
    	ওগো ও চাঁদ, এনো না আর
    	দু’কূল-ভাঙা এমন জোয়ার
    কত ছল ক’রে জল লুকাই চোখের কাঁচা কাঠে আগুন জ্বেলে।।
    
  • কত নিদ্রা যাও রে কন্যা

    বাণী

    কত নিদ্রা যাও রে কন্যা		জাগো একটু খানি
    যাবার বেলায় শুনিয়া যাই		তোমার মুখের বাণী।।
    নিশীথিনীর ঘুম ভেঙে যায়	চন্দ্র যখন হেসে তাকায় গো
    চাতাকিনী ঘুমায় কি গো		দেখলে মেঘের পানি।।
    ফুলের কুঁড়ি চোখ মেলে চায়	যেই না ভ্রমর বোলে (রে কন্যা)
    বসন্ত আসিলে রে কন্যা		বনের লতা দোলে (রে কন্যা)
    যারা আছে প্রাণে প্রাণে		জাগে তারা ঘুম না জানে
    আমি যখন রইব না গো		(তখন) জাগবে তুমি জানি।।
    
  • কাণ্ডারি গো কর কর পার

    বাণী

    কাণ্ডারি গো কর কর পার এই অকূল ভব-পারাবার।
    তোমার চরণ-তরী বিনা, প্রভু পারের আশা নাহি আর।।
    	পাপের তাপের ঝড় তুফানে
    	শান্তি নাহি আমার প্রাণে।
    আমি যেদিকে চাই দেখি কেবল নিরাশারি অন্ধকার।।
    	দিন থাকতে আমার মতো
    		কেউ নাহি সম্ভাষে,
    	হে প্রভু তোমায়
    		কেউ নাহি সম্ভাষে
    	দিন ফুরালে খাটে শুয়ে
    		এই ঘাটে সবাই আসে।
    	লয়ে তোমারি নামের কড়ি
    	সাধু পেল চরন-তরী
    সে কড়ি নাই যে কাঙ্গালের হও হে দীনবন্ধু তার॥
    
  • কুসুম ফুলের মালা গেঁথে

    বাণী

    কুসুম ফুলের মালা গেঁথে দুলিয়ে দিছি গলে।
    অশ্রু দিয়ে গাঁথা মালা রইলো বুকের তলে।।
    বন্ধু আমার আস্‌বে যখন ফিরে’ বিজয় রথে
    মরা ফুলের সাথে আমি রইবো প’ড়ে পথে,
    যাবার বেলা চরণ দিয়ে যাবে আমায় দ’লে।।
    তাহার প্রিয়ার মুখে দেবো আমার হাসি ল’য়ে
    রইব না গো তাহার সুখে পথের কাঁটা হ’য়ে,
    তা’র বাসরে আলো দেবো প্রদীপ হ’য়ে জ্ব’লে।।
    
  • বন্ধু পথ চেয়ে চেয়ে

    বাণী

    বন্ধু	পথ চেয়ে চেয়ে
    	আকাশের তারা পৃথিবীর ফুল গণি
    বন্ধু	ফুল পড়ে ঝরে,তারা যায় মরে
    	(ফিরে) এলো না হৃদয়-মণি।।
    	কত নদী পেল খুঁজিয়া সাগর
    	আমিই পাই না তোমার খবর
    বন্ধু	সকলেরি চাঁদ ওঠে রে আমারি চির আঁধার রজনী।।
    		যমুনার জলও শুকায় রে বন্ধু
    		আমার শুকায় না আঁখি-বারি
    	এত কান্দন কাঁদিলে গোকূলে হতাম-ব্রজ-কুমারী
    		বন্ধু হতাম রাধা প্যারী।
    	মহা পারাবার তারও আছে পার
    	আমার দুখের পার নাহি আর
    বন্ধু	মণি না পাইনু বৃথায় পুষিনু কাল-বিরহের ফণি
    		পুষিনু কাল-বিরহের ফণি।।
    
  • মেঘ-বরণ কন্যা থাকে মেঘলামতীর দেশে

    বাণী

    মেঘ-বরণ কন্যা থাকে মেঘলামতীর দেশে (রে)
    সেই দেশে মেঘ জল ঢালিও তাহার আকুল কেশে।।
    	তাহার কালো চোখের কাজল
    	শাওন মেঘের চেয়ে শ্যামল
    চাউনিতে তার বিজলি ছড়ায় চমক বেড়ায় ভেসে (রে)।।
    সে ব’সে থাকে পা ডুবিয়ে ঘুমতী নদীর জলে
    কভু দাঁড়িয়ে থাকে ছবির মত একলা তরু-তলে (রে)।
    	কদম ফুলের মালা গেঁথে
    	ছড়িয়ে সে দেয় ধানের ক্ষেতে
    তারে দেখতে পেলে আমার কথা (তারে) কইও ভালোবেসে।।