আদ্ধা

  • আজ বাদল ঝরে মোর একেলা ঘরে

    বাণী

    আজ		বাদল ঝরে		মোর		একেলা ঘরে।
    হায়		কী মনে পড়ে	মন		এমন করে।।
    আজ		এমন দিনে		কোন্ 		নীড়হারা পাখি
    যাও		কাঁদিয়া কোথায়	কোন্ 		সাথীরে ডাকি’।
    তোর		ভেঙেছে পাখা	কোন্ 		আকুল ঝড়ে।।
    আয়		ঝড়ের পাখি		আয়		আমার এ বুকে
    আয়		দিব রে আশয়	মোর		গহন-দুখে।
    আয়		বাঁধিব বাসা		আজ		নূতন ক’রে।।
    
  • আজি মনে মনে লাগে হোরী

    বাণী

    আজি মনে মনে লাগে হোরি
    আজি বনে বনে জাগে হোরি।।
    ঝাঁঝর করতাল খরতালে বাজে
    বাজে কঙ্কন চুড়ি মৃদুল আওয়াজে
    লচকিয়া আসে মুচকিয়া হাসে
    প্রেম-উল্লাসে শ্যামল গোরী।।
    কদম্ব তমাল রঙে লালে লাল
    লাল হলো কৃষ্ঞ ভ্রমর ভ্রমরী
    রঙের উজান চলে কালো যমুনা-জলে
    আবির রাঙা হলো ময়ূর-ময়ূরী।।
    মোর হৃদি-বৃন্দাবন যেন রাঙে
    রাধা শ্যাম-যুগল চরণ-রাগে
    ও চরণ-ধূলি যেন ফাগ হ’য়ে নিশিদিন
    অন্তরে পড়ে মোর ঝরি’।।
    
  • ঐ নন্দন নন্দিনী দয়িতা চির-আনন্দিতা

    বাণী

    ঐ নন্দন নন্দিনী দয়িতা, চির-আনন্দিতা।
    যেন প্রথম কবির প্রথম লেখা কবিতা ॥
    	তব চরণের নূপুরধ্বনি
    	মধুকর গুঞ্জর তোলে যে রণি,
    মন মোর ভোলে হেরি তোমারে যে গো ঐ যে যৌবন-গর্বিতা ॥
    	দোলায় দোদুল দুল তব নৃত্য
    	আবেশে আকুল হয় মোর চিত্ত,
    	নৃত্যশেষে তব পায়ের নূপুর
    	গ্রহ তারকায় রয় আকাশের সুদূর,
    সুরলোক উর্বশী তুমি যে আমার রও চির-অনিন্দিতা ॥
    
  • কেমনে রাখি আঁখি–বারি চাপিয়া

    বাণী

    কেমনে রাখি আঁখি–বারি চাপিয়া
    প্রাতে কোকিল কাঁদে নিশীথে পাপিয়া।।
    এ ভরা ভাদরে আমার মরা নদী
    উথলি’ উথলি’ উঠিছে নিরবধি
    আমার এ ভাঙা ঘটে, আমার এ হৃদিতটে
    চাপিতে গেলে ওঠে দু’কূল ছাপিয়া।।
    নিষেধ নাহি মানে আমার এ পোড়া আঁখি
    জল লুকাবো কত কাজল মাখি’ মাখি’
    ছলনা ক’রে হাসি, অমনি জলে ভাসি
    ছলিতে গিয়া আসি ভয়েতে কাঁপিয়া।।
    

  • নিশি-রাতে রিম ঝিম ঝিম বাদল-নূপুর

    বাণী

    নিশি-রাতে রিম ঝিম ঝিম বাদল-নূপুর
    বাজিল ঘুমের মাঝে সজল মধুর।।
    দেয়া গরজে বিজলি চমকে
    জাগাইল ঘুমন্ত প্রিয়তমকে
    আধো ঘুম-ঘোরে চিনিতে নারি ওরে
    'কে এলো কে এলো' ব'লে ডাকিছে ময়ূর।।
    দ্বার খুলি' পড়শি কৃষ্ণা-মেয়ে আছে চেয়ে'
    	মেঘের পানে আছে চেয়ে —
    কারে দেখি আমি কারে দেখি
    	মেঘলা আকাশ না ঐ মেঘলা-মেয়ে।
    ধায় নদী জল মহাসাগর পানে
    বাহিরে ঝড় কেন আমায় টানে
    জমাট হয়ে আছে বুকের কাছে
    নিশীথ-আকাশ যেন মেঘ ভারাতুর।।
    
  • পরদেশী মেঘ যাও রে ফিরে

    বাণী

    	পরদেশী মেঘ যাও রে ফিরে।
    	বলিও আমার পরদেশী রে।।
    	সে দেশে যবে বাদল ঝরে
    	কাঁদে নাকি প্রাণ একেলা ঘরে,
    বিরহ-ব্যথা নাহি কি সেথা বাজে না বাঁশি নদীর তীরে।।
    বাদল-রাতে ডাকিলে ‘পিয়া পিয়া পাপিয়া’,
    বেদনায় ভ’রে ওঠে নাকি রে কাহারো হিয়া।
    	ফোটে যবে ফুল, ওঠে যবে চাঁদ
    	জাগে না সেথা কি প্রাণে কোন সাধ,
    দেয় না কেহ গুরু গঞ্জনা সে দেশে বুঝি কুলবতী রে।।
    
  • বল রাঙা হংসদূতি তা’র বারতা

    বাণী

    		বল রাঙা হংসদূতি তা’র বারতা।
    		দাও তা’র বিরহ-লিপি, বল সে কোথা।।
    		কেমনে কাটে তা’র অলস বেলা
    		আজো কি গাঙের ধারে কাঁদে একেলা,
    		দু’জনের আশা-তরী ডুবিল যথা।।
    		দীপ জ্বালেনি কি কেউ তাহার ঘরে,
    		ভাঙা ঘর বেঁধেছে কি নূতন ক’রে।
    		দেখা হ’লে তা’রে কহিও নিরালায়
    		আমি মরিয়াছি — মোর প্রেম মরেনি, হায়!
    (মোর)	অন্তরে সে আজো অন্তর-দেবতা।।
    
  • ভাঙা মন (আর) জোড়া নাহি যায়

    বাণী

    ভাঙা মন (আর) জোড়া নাহি যায়
    ওগো ঝরা ফুল আর ফেরে না শাখায়।।
    	শীতের হাওয়ায় তুষার হয়ে
    	গলি' খরতাপে বারি যায় ব'য়ে
    গলে নাক' আর হৃদয়-তুষার এ উষ্ণ ছোঁওয়ায় ।।
    	গাঁথি' ফুলমালা নাহি দিয়া গলে
    	শুকালে নিঠুর তব মুঠি-তলে,
    হাসিবে না সে ফুল শত আঁখি-জলে আর সে শোভায়।
    	স্রোতের সলিলে
    	যে বাঁধ বাঁধিলে
    ভাঙিয়ে সে বাঁধ তোমারে ভাসায়।।
    
  • ভাদরের ভরা নদীতে ভাসায়ে

    বাণী

    ভাদরের ভরা নদীতে ভাসায়ে কেতকী পাতার তরণী কে আসে গো।
    বলাকার রঙ পালক কুড়ায়ে বাহি-ছায়া-পথ-সরণী কে আসে গো।।
    		দলি শাপলা শালুক শতদল
    		আসে রাঙায়ে কাহার পদতল,
    নীল লাবনি ঝরায়ে ঢলঢল — ভরাইয়া সারা ধরণী কে আসে গো।।
    		মৃদু মধুর মধুর হাসিয়া
    		সমীরণ সম ভাসিয়া,
    আসে কারে ভালোবাসিয়া — বলো কার মনোহরণী কে আসে গো।
    
  • রহি' রহি' কেন সে-মুখ পড়ে মনে

    বাণী

    রহি' রহি' কেন সে-মুখ পড়ে মনে
    ফিরায়ে দিয়াছি যারে অনাদরে অকারণে।
    উদাসী অলস দুপুরে
    মন উড়ে' যেতে চায় সুদূরে
    যে বন-পথে সে ভিখারির বেশে
    করুণা জাগায়ে ছিল সকরুণ নয়নে।।
    তার বুকে ছিল তৃষ্ণা মোর ঘটে ছিল বারি
    পিয়াসি ফটিকজল জল পাইল না গো
    ঢলিয়া পড়িল হায় জলদ নেহারি।
    তার অহ্জলির ফুল পথ-ধূলিতে
    ছড়ায়েছি-সেই ব্যথা নারি ভুলিতে
    অন্তরালে যারে রাখিনু চিরদিন
    অন্তর জুড়িয়া কেন কাঁদে সে গোপনে।।
    
  • রাখ রাখ রাঙা পায় হে শ্যামরায়

    বাণী

    রাখ রাখ রাঙা পায়, হে শ্যামরায়!
    ভুলে গৃহ স্বজন সবই সঁপেছি তোমায়॥
    সংসার মরু ঘোর, নাহি তরু-ছায়া,
    নব নীরদ শ্যাম, আনো মেঘ-মায়া;
    আনন্দ-নীপবনে নন্দ-দুলাল এসো,
    বাহও উজান, হরি, অশ্রুর যমুনায়॥
    একা জীবন মোর গহন ঘন ঘোর,
    এসো এ বনে বনমালী, গোপ কিশোর,
    কুঞ্জ রচেছি দুখ-শোক তমাল-ছায় -  
    প্রেম-প্রীতির গোপী চন্দন শুকায়ে যায়॥
    দারা সুত প্রিয়জন, হরি হে, নাহি চাই,
    পদ্মা-পলাশ-আঁখি যদি দেখিতে পাই;
    রাখাল-রাজা এসো, এসো হে ঋষিকেশ,
    গোকুলে লহ ডাকি’, অকূলে ভাসি হায়॥
    

  • সুনয়না চোখে কথা ক’য়ে যায়

    বাণী

    সুনয়না চোখে কথা ক’য়ে যায়
    বনের রানী, দুটি ফুলে শুনি
    নয়ন ফাঁকে প্রাণ লুকিয়ে চায়॥
    দেহ দেউলে, দুটি দীপ দুলে
    হেরি সারা অন্তর তায়॥