একতাল

  • ব্রজগোপাল শ্যাম সুন্দর

    বাণী

    ব্রজগোপাল শ্যাম সুন্দর
    যশোদা দুলাল শিশু নটবর॥
    নন্দ নন্দন নয়নানন্দ
    চরণে মধুর সৃজন ছন্দ
    ভুবন মোহন কৃষ্ণচন্দ্র
    অপরূপ রূপ হেরে চরাচর॥
    কোটি গ্রহতারা চরণে নূপুর
    ওঙ্কার ধ্বনি বাঁশরির সুর।
    বঙ্কিম আঁখি বাঁকা শিখীপাখা
    বাঁকা শ্রীচরণ ভঙ্গিমা বাঁকা
    কৃষ্ণময় শ্রীঅঙ্গ ডাকা
    করাল মধুর প্রভু গিরিধর॥
    
  • ভরিয়া পরান শুনিতেছি গান

    বাণী

    ভরিয়া পরান শুনিতেছি গান আসিবে আজি বন্ধু মোর!
    স্বপন মাখিয়া সোনার পাখায় আকাশে উধাও চিত-চকোর।।
    		হিজল-বিছানো বন-পথ দিয়া
    		রাঙায়ে চরণ আসিবে গো পিয়া।
    নদীর পারে বন-কিনারে ইঙ্গিত হানে শ্যাম কিশোর।।
    		চন্দ্রচূড় মেঘের গায়
    		মরাল-মিথুন উড়িয়া যায়,
    নেশা ধরে চোখে আলো-ছায়ায় বহিছে পবন গন্ধ-চোর।।
    

  • ভারত শ্মশান হ’ল মা তুই শ্মশানবাসিনী ব’লে

    বাণী

    ভারত শ্মশান হ’ল মা, তুই শ্মশানবাসিনী ব’লে।
    জীবন্ত-শব নিত্য মোরা, চিতাগ্নিতে মরি জ্ব’লে।।
    আজ হিমালয় হিমে ভরা,
    দারিদ্র্য-শোক-ব্যাধি-জরা,
    নাই যৌবন, যেদিন হতে শক্তিময়ী গেছিস্ চ’লে।।
    (মা) ছিন্নমস্তা হয়েছিস্ তাই হানাহানি হয় ভারতে,
    নিত্য-আনন্দিনী, কেন টানিস্ নিরানন্দ পথে?
    শিব-সীমন্তিনী বেশে
    খেল্ মা আবার হেসে হেসে,
    ভারত মহাভারত হবে, আয় মা ফিরে মায়ের কোলে।।
    
  • মাগো আমি তান্ত্রিক নই

    বাণী

    মাগো আমি তান্ত্রিক নই তন্ত্র মন্ত্র জানি না মা।
    আমার মন্ত্র যোগ-সাধনা ডাকি শুধু শ্যামা শ্যামা।।
    	যাই না আমি শ্মশান মশান
    	দিই না পায়ে জীব বলিদান,
    খুঁজতে তোকে খুজি না মা অমাবস্যা ঘোর ত্রিযামা।।
    ঝিল্লী যেমন নিশীথ রাতে একটানা সুর গায় অবিরাম
    তেমনি করে নিত্য আমি জপি শ্যামা তোমারি নাম।
    	শিশু যেমন অনায়াসে
    	জননীরে ভালোবাসে,
    তেমনি সহজ সাধনা মোর তাতেই পাব তোর দেখা মা।।
    
  • মায়ের আমার রূপ দেখে যা

    বাণী

    মায়ের আমার রূপ দেখে যা মা যে আমার কেবল জ্যোতি।
    (মার) কৌশিকি রূপ দেখ্ রে চেয়ে, মা, শুদ্ধা মহা স্বরস্বতী।।
    	পরম শুভ্র জ্যোতির্ধারায়
    	নিখিল বিশ্ব যায় ডুবে যায়।
    কোটি শ্বেতশতদলে বিরাজে মা বেদবতী।।
    সপ্তসর্গ সপ্ত পাতাল শুদ্ধ হয়ে উঠল নেয়ে
    সাত্ত্বিকি মোর জগন্মাতার জ্যোতির্সুধার প্রসাদ পেয়ে।
    	নৃত্যময়ী শব্দময়ী কালী
    	এলো শান্ত কল্যাণ-দীপ জ্বালি’
    দেখ রে পরমাত্মায় সব জননী সে জ্যোতিষ্মতী।।
    
  • মোরা ছিনু একেলা হইনু দু’জন

    বাণী

    	মোরা ছিনু একেলা, হইনু দু’জন।
    	সুন্দরতর হ’ল নিখিল ভুবন।।
    আজি	কপোত-কপোতী শ্রবণে কুহরে,
    	বীণা বেণু বাজে বন-মর্মরে।
    	নির্ঝর-ধারে সুধা চোখে মুখে ঝরে,
    	নূতন জগৎ মোরা করেছি সৃজন।।
    	মরিতে চাহি না, পেয়ে জীবন-অমিয়া!
    	আসিব এ কুটিরে আবার জনমিয়া।
    	আরো চাই আরো চাই অশেষ জীবন।।
    আজি	প্রদীপ-বন্দিনী আলোক-কন্যা,
    	লক্ষ্মীর শ্রী লয়ে আসিল অরণ্যা,
    	মঙ্গল-ঘটে এলো নদীজল-বন্যা,
    	পার্বতী পরিয়াছে গৌরী-ভূষণ।।
    
  • শঙ্কর অঙ্গলীনা যোগ মায়া

    বাণী

    শঙ্কর অঙ্গলীনা যোগ মায়া শঙ্করী শিবানী।
    বালিকা-সম লীলাময়ী নীল-উৎপল-পাণি।।
    	সজল-কাজল-ঝর্না
    	মুকত বেণী অপর্ণা,
    তিমির বিভাবরী স্নিগ্ধা শ্যামা কালিকা ভবানী।।
    প্রলয় ছন্দময়ী চন্ডী শব্দ-নূপুর-চরণা,
    শাম্ভবী শিব-সীমন্তিনী শঙ্করাভরণা।
    	অম্বিকা দুঃখহারিণী
    	শরণাগত-তারিণী,
    জগদ্ধাত্রী শান্তিদাত্রী প্রসীদ মা ঈশানী।।
    
  • শূণ্য এ বুকে পাখি মোর আয়

    বাণী

    শূন্য এ–বুকে পাখি মোর আয় ফিরে আয় ফিরে আয়!
    তোরে না হেরিয়া সকালের ফুল অকালে ঝরিয়া যায়।।
    		তুই নাই ব’লে ওরে উন্মাদ
    		পান্ডুর হ’ল আকাশের চাঁদ,
    কেঁদে নদী–জল করুণ বিষাদ ডাকে: ‘আয় ফিরে আয়’।।
    		গগনে মেলিয়া শত শত কর
    		খোঁজে তোরে তরু, ওরে সুন্দর!
    তোর তরে বনে উঠিয়াছে ঝড় লুটায় লতা ধূলায়!
    		তুই ফিরে এলে, ওরে চঞ্চল
    		আবার ফুটিবে বন ফুল–দল
    ধূসর আকাশ হইবে সুনীল তোর চোখের চাওয়ায়।।
    
  • স্নিগ্ধ শ্যাম কল্যাণ রূপে রয়েছ

    বাণী

    স্নিগ্ধ শ্যাম কল্যাণ রূপে রয়েছ মোদেরে ঘেরি
    তব অনন্ত করুণা ও স্নেহ নিশিদিন নাথ হেরি।।
    	তব চন্দন-শীতল কান্তি
    	সৌম্য-মধুর তব১ প্রশান্তি
    জড়ায়ে রয়েছে ছড়ায়ে রয়েছে অঙ্গে ত্রিভুবনেরই।।
    বাহিরে তুমি বন্ধু স্বজন আত্মীয় রূপী মম
    অন্তরে তুমি পরমানন্দ প্রিয় অন্তরতম।
    	নিবেদন করে তোমাতে যে প্রাণ
    	সেই জানে তুমি কত মহান
    যেমনি সে ডাকে সড়া দাও তাকে তিলেক কর না দেরি।।
    

    ১. চির

  • স্বদেশ আমার জানি না তোমার

    বাণী

    স্বদেশ আমার! জানি না তোমার শুধিব মা কবে ঋণ।
    দিনের পরে মা দিন চ’লে যায় এলো না সে শুভদিন।।
    		খাই দাই আর আরামে ঘুমাই
    		পাগলের যেন ব্যথা-বোধ নাই
    ললাট-লিখন বলিয়া এড়াই ভীরুতা, শক্তি ক্ষীণ।
    অভাগিনী তুমি, সন্তান তব সমান ভাগ্যহীন।।
    কত শতাব্দী করেছি মা পাপ মানুষেরে করি ঘৃণা
    জানি মা মুক্তি পাব না তাহার প্রায়শ্চিত্ত বিনা।
    		ক্ষুদ্র ম্লেচ্ছ কাঙাল ভাবিয়া
    		রেখেছি যাদেরে চরণে দাবিয়া
    তাদের চরণ-ধূলি মাখি যদি আসিবে সে শুভদিন
    নূতন আলোকে জাগিবে পুলকে জননী ব্যথা-মলিন।।
    

  • স্বপনে দেখেছি ভারত-জননী

    বাণী

    স্বপনে দেখেছি ভারত-জননী
    			তুই যেন রাজরাজেশ্বরী।
    নবীন ভারত! নবীন ভারত!
    			স্তব-গান ওঠে ভুবন ভরি’।।
    শস্যে ফসলে ডেকেছে মা বান
    মাঠে ও খামারে ধরে নাকো ধান
    মুখভরা হাসি, হসিভরা প্রাণ
    			নদী ভরা যেন পণ্যতরী।।
    পড়ুয়ারা পড়ে বকুল-ছায়ে
    সুস্থ সবল আদুল গায়ে
    মেয়েরা ফিরিছে মুক্ত বায়ে
    			কল-গীতে দিক মুখর করি’।
    ভুলিয়া ঈর্ষা ভোগ আসক্তি
    ধরার ক্লান্ত অসুর-শক্তি
    এসেছে শিখিতে প্রেম ও ভক্তি
    			নব-ভারতের চরণ ধরি’।।
    
  • হে গোবিন্দ ও অরবিন্দ চরণে

    বাণী

    হে গোবিন্দ, ও অরবিন্দ চরণে শরণ দাও হে।
    বিফল জনম কাটিল কাঁদিয়া, শান্তি নাহি কোথাও হে।।
    	জীবন-প্রভাত কাটিল খেলায়,
    	দুপুর ফুরাল মোহের মেলায়।
    ডাকিব যে নাথ সন্ধ্যা-বেলায়, ডাকিতে পারিনি তাও হে।।
    এসেছি দুঃখ-জীর্ণ পথিক মৃত্যু-গহন রাতে।
    কিছু নাহি প্রভু সম্বল, শুধু জল আছে আঁখি-পাতে।।
    	সন্তান তব বিপথগামী,
    	ফিরিয়া এসেছে হে জীবন-স্বামী।
    পাপী তাপী তবু সন্তান আমি ধূলা মুছে-কোলে নাও হে।।