খাম্বাজ মিশ্র

  • কিছু নাহি যার তোমারে দিবার

    বাণী

    কিছু নাহি যার তোমারে দিবার কি তার ভিক্ষা লবে!
    তুমি কেঁদে গেলে আমারে শুধুই নীরবে কাঁদিতে হবে।।
    	হেথা একদিন কিশোর বেলায়
    	বেঁধেছিনু ঘর পুতুল-খেলায়,
    সে সাথি আমার ফিরিবে না আর নব বসন্ত-উৎসবে।।
    একদা হেথায় ফুটেছিল হেনা,
    সে-ফুল আবার ফুটিবে হেথায় সে তো আর আসিবে না
    	ওগো ভিখারি কি দিব তোমায়
    	শূন্য দেউলে কুসুম শুকায়,
    ক্ষমিও আমার শত অপরাধ, ভিখারিনী আমি ভবে।।
    
  • কী দশা হয়েছে মোদের দেখ্ মা উমা আনন্দিনী

    বাণী

    কী দশা হয়েছে মোদের দেখ্ মা উমা আনন্দিনী।
    তোর বাপ হয়েছে পাষাণ গিরি, মা হয়েছে পাগলিনী।।
    	(মা)	এ দেশে আর ফুল ফোটে না
    		গঙ্গাতে আর ঢেউ ওঠে না
    তোর হাসি-মুখ দেখলে যে মা পোহায় না মোর নিশীথিনী।।
    আর যাবি না ছেড়ে মোদের বল্ মা আমায় কন্ঠ ধরি
    সুর যেন তার না থামে আর বাজালি তুই যে বাঁশরি।।
    	(মা)	না পেলে তুই শিবের দেখা
    		রইতে যদি নারিস্ একা,
    আমি শিবকে বেঁধে রাখব মা গো হয়ে শিব-পূজারিণী।।
    
  • কুহু কুহু কুহু কুহু কোয়েলিয়া

    বাণী

    কুহু কুহু কুহু কুহু কোয়েলিয়া
    কুহরিল মহুয়া-বনে
    চমকি জাগিনু নিশীথ শয়নে।।
    শূন্য ভবনে মৃদুল সমীরে
    প্রদীপের শিখা কাঁপে ধীরে ধীরে
    চরণ-চিহ্ন রাখি দলিত কুসুমে
    	চলিয়া গেছ তুমি দূর-বিজনে।।
    বাহিরে ঝরে ফুল আমি ঝুরি ঘরে
    বেণু-বনে সমীরণ হাহাকার করে
    ব’লে যাও কেন গেলে এমন ক’রে
    	কিছু নাহি ব’লে সহসা গোপনে।।
    
  • তোমার কুসুম বনে আমি আসিয়াছি ভুলে

    বাণী

    তোমার কুসুম বনে আমি আসিয়াছি ভুলে।
    তবু মুখপানে প্রিয় চাহ মুখ তুলে।।
    দেখি সে-দিনের সম, ওগো ভুলে-যাওয়া স্মৃতি মম
    তব ও-নয়নে আজো ওঠে কি-না দুলে।।
    ওগো ভুল ক’রে আসিয়াছি, জানি ভুলেছ, তুমিও
    তবু ক্ষণেকের তরে সে-ভুল ভেঙো না প্রিয়।
    তীর্থে এসেছি মম দেবীর দেউলে।।
    তোমার মাধবী-রাতে, আসিনি আমি কাঁদাতে
    কাঁদিতে এসেছি একা বিদায়-নদীর কূলে।।

  • ধানের ক্ষেতের ঢেউ লেগে আজ

    বাণী

    ধানের ক্ষেতের ঢেউ লেগে আজ প্রাণের বাঁধন ভাঙল রে!
    আমার মনের পুঞ্জিত মেঘ অরুণ-রঙে রাঙল রে।।
    	নাচ ভুলেছে বনের কেকা
    	দ্বন্দ ভুলে’ হলাম একা,
    ময়ূরকণ্ঠী শুভ্র-হংস-মালার পরশ লাগল রে।।
    মেহেদি ফুলের মঞ্জরি মোর মন কেবলি রঙ লুকায়,
    শিলায় দলি’ রূপের কলি, আল্‌তা হবো তাহার পায়।
    	জ্বাল দীপালি খোল রে দুয়ার
    	আসে শারদ-জ্যোতির জোয়ার,
    আবার আনন্দিনীর আগমনের কৃপার আশা জাগল রে।।
    
  • বকুল বনের পাখি ডাকিয়া আর ভেঙ্গো না ঘুম

    বাণী

    বকুল বনের পাখি ডাকিয়া আর ভেঙ্গো না ঘুম
    বকুল বাগানে মম, ফুরায়েছে ফুলের মরশুম॥
    ওগো, প্রিয় মোর দূর বিদেশে কারে আর ডাকিছ পাখি
    খুলিয়া পড়িছে হাতের, মলিন মালতী রাখি।
    নিভিয়া গিয়াছে প্রদীপ রেখে গেছে স্মৃতির ধূম॥
    ষোড়শী বাসন্তিকার রঙ দেহে মোর হয়েছে ম্লান।
    খেলার সাথী পরদেশে, কারে দিই এ প্রীতির কুম্‌কুম্‌॥
    
  • শ্যামলা বরণ বাংলা মায়ের রূপ দেখে যা

    বাণী

    শ্যামলা বরণ বাংলা মায়ের রূপ দেখে যা, আয় রে আয়
    গিরি–দরি, বনে–মাঠে, প্রান্তরে রূপ ছাপিয়ে যায়।।
    ধানের ক্ষেতে, বনের ফাঁকে, দেখে যা মোর কালো মা–কে
    ধূলি–রাঙা পথের বাঁকে বৈরাগিনী বীণ বাজায়।।
    ভীরু মেয়ে পালিয়ে বেড়ায় পল্লীগ্রামে এক্‌লাটি
    বিজনমাঠে গ্রাম সে বসায় নিয়ে কাদা, খড়, মাটি
    কালো মেঘের ঝারি নিয়ে করুণা–বারি ছিটায়।।
    কাজলা–দীঘির পদ্মফুলে যায় দেখা তার পদ্ম–মুখ
    খেলে বেড়ায় ডাকাত–মেয়ে বনে লয়ে বাঘ–ভালুক
    ঝড়ের সাথে নৃত্যে মাতে বেদের সাথে সাপ নাচায়।।
    নদীর স্রোতে পাথর নুড়ির কাঁকন চুড়ি বাজে তার
    সাঁঝের বারান্দাতে দাঁড়ায় টীপ প’রে সন্ধ্যা–তারার।
    ঊষার গাঙে ঘট ভরিতে যায় সে মেয়ে ভোর বেলায়।
    হরিত শস্যে লুটায় আঁচল ঝিল্লিতে নূপুর বাজে
    ভাটিয়ালি গায় ভাটির স্রোতে গায় বাউল মাঠের মাঝে (মা)।
    গঙ্গা–তীরে শ্মশান–ঘাটে কেঁদে কভু বুক ভাসায়।।
    

  • সুনয়না চোখে কথা ক’য়ে যায়

    বাণী

    সুনয়না চোখে কথা ক’য়ে যায়
    বনের রানী, দুটি ফুলে শুনি
    নয়ন ফাঁকে প্রাণ লুকিয়ে চায়॥
    দেহ দেউলে, দুটি দীপ দুলে
    হেরি সারা অন্তর তায়॥
    
  • সৈয়দে মক্কী মদনী আমার নবী মোহাম্মদ

    বাণী

    সৈয়দে মক্কী মদনী আমার নবী মোহাম্মদ
    করুণা-সিন্ধু খোদার বন্ধু নিখিল মানব-প্রেমাস্পদ।।
    আদম নূহ, ইব্রাহিম দাউদ সোলেয়মান মুসা আর ঈসা,
    সাক্ষ্য দিল আমার নবীর, সবার কালাম হ'ল রদ।
    যাঁহার মাঝে দেখল জগৎ ইশারা খোদার নূরের,
    পাপ-দুনিয়ায় আনলো যে রে, পুণ্য বেহেশতী সনদ।।
    হায় সিকান্দর খুঁজল বৃথাই আব-হায়াত এই দুনিয়ায়
    বিলিয়ে দিল আমার নবী, সে সুধা মানব সবায়।
    হায় জুলেখা মজল ঐ ইউসুফেরই রূপ দেখে,
    দেখলে মোদের নবীর সুরত, যোগীন হত ভসম মেখে'।
    শুনলে নবীর শিঁরিন জবান, দাউদ মাগিত মদদ।।
    ছিল নবীর নূর পেশানিতে, তাই ডুবল না কিস্তি নূহের
    পুড়ল না আগুনে হযরত ইব্রাহিম সে নমরুদের
    হায়, দোজখ আমার হারাম হ'ল পিয়ে কোরানের শিঁরিন শ্যহদ।।