লাউনি

  • আবির-রাঙা আভীরা নারী সনে

    বাণী

    আবির-রাঙা আভীরা নারী সনে কৃষ্ণ কানাই খেলে হোলি।
    হোরির মাতনে চুড়ি ও কাঁকনে উঠিছে কল-কাকলি।।
    শ্যামল তনু হ’ল রাঙা আবিরে রেঙে,
    ইন্দ্রধনু-ছটা যেন কাজল মেঘে,
    				রাঙিল রঙে নীল চোলি।।
    লহু লহু হাসে মুহু মুহু ভাসে রাঙা কুঙ্কুম ফাগের রাগে,
    দোঁহে দুহু ধরি’ মারে পিচকারি চাঁদ-মুখে কলঙ্ক জাগে।
    অঙ্গে অপাঙ্গে অনঙ্গ-রঙ্গিমা ইঙ্গিতে উঠিছে উছলি’।।
    
  • আমি যেদিন রইব না গো

    বাণী

    আমি যেদিন রইব না গো লইব চির-বিদায়।
    চিরতরে স্মৃতি আমার জানি মুছে যাবে হায়।।
    এই ধরণীর খেলা-ঘরে, মনে রাখে কে কারে
    দুলে সাগর চাঁদ-সোহাগে, মরু মরে পিপাসায়।।
    রবি যবে ওঠে নভে, চাঁদে কে মনে রাখে
    এ কূল ভাঙে ও কূল গড়ে, মানুষের মন নদীর প্রায়।
    মোর সমাধির বুকে প্রিয়, উঠবে তোমার বাসর ঘর,
    হায়, অসহায় ভিখারি মন, কাঁদে তবু সেই ব্যথায়।।
    
  • এলো শ্যামল কিশোর তমাল-ডালে

    বাণী

    এলো শ্যামল কিশোর তমাল-ডালে বাঁধে ঝুলনা।
    সুনীল শাড়ি পরো ব্রজনারী পরো নব নীপ-মালা অতুলনা।।
    	ডাগর চোখে কাজল দিও,
    	আকাশী রং প'রো উত্তরীয়,
    নব-ঘন-শ্যামের বসিয়া বামে দুলে দুলে ব'রলা, 'বঁধু, ভুলো না'।।
    	নৃত্য-মুখর আজি মেঘলা দুপুর,
    	বৃষ্ট্রির নূপুর বাজে টুপুর টুপুর।
    	বাদল-মেঘের তালে বাজিছে বেণু,
    	পান্ডুর হ'ল শ্যাম মাখি' কেয়া-রেণু,
    বাহুতে দোলনায় বাঁধিবে শ্যামরায় ব'লো, 'হে শ্যাম, এ বাঁধন খুলো না'।।
    
  • কাজরি গাহিয়া এসো গোপ-ললনা

    বাণী

    কাজরি গাহিয়া এসো গোপ-ললনা।
    শ্রাবণ-গগনে দোলে মেঘ-দোলনা।।
    পর সবুজ-ঘাগরি চোলি নীল ওড়না,
    মাখো অধরে মধুর হাসি, চোখে ছলনা।।
    কদম-চন্দ্রহার প’রে এসো চন্দ্রাবলী
    তমাল-শাখা-বরণা এসো বিশাখা-শ্যামলী,
    বাজায় করতাল দূরে তাল-বনা।।
    লাবনি-বিগলিতা এসো সকরুণ ললিতা
    যমুনা-কূলে এসো ব্রজবধূ কুল-ভীতা,
    অলকে মাখিয়া নব জল-কণা।।
    
  • গুল–বাগিচার বুলবুলি আমি

    বাণী

    গুল–বাগিচার বুলবুলি আমি রঙিন প্রেমের গাই গজল।
    অনুরাগের লাল শারাব মোর আঁখি ঝলে ঝলমল (হায়)।।
    	আমার গানের মদির ছোঁয়ায়
    	গোলাপ কুঁড়ির ঘুম টুটে যায়,
    সে গান শুনে প্রেমে–দীওয়ানা কবির আঁখি ছলছল (হায়)।।
    লাল শিরাজীর গেলাস হাতে তন্বী সাকি পড়ে ঢুলে,
    আমার গানের মিঠা পানির লহর বহে নহর–কূলে।
    ফুটে ওঠে আনারকলি নাচে ভ্রমর রং–পাগল (হায়)।।
    	সে সুর শুনে দিশেহারা
    	ঝিমায় গগন ঝিমায় তারা,
    চন্দ্র জাগে তন্দ্রাহারা বনের চোখে শিশির জল (হায়)।।
    

    ১. বনের পাতায়

  • জোছনা-হসিত মাধবী নিশি

    বাণী

    জোছনা-হসিত মাধবী নিশি আজ।
    পর পর প্রিয়া বাসন্তি-রাঙা সাজ।।
    রাঙা কমল-কলি দিও কর্ণ-মূলে
    পর সোনালি চেলি নব সোনাল্ ফুলে,
    স্বর্ণলতার প’র সাতনরী-হার আজি উৎসব-রাত,
    		রাখ রাখ গৃহ-কাজ।।
    পর কবরী-মূলে নব আমের মুকুল
    হাতে কাঁকন পর গেঁথে অতসীর ফুল,
    দূরে গাহুক ডাহুক পাখি সখি, মুখর নিলাজ।।
    
  • ঝরাফুল-বিছানো পথে এসো

    বাণী

    ঝরাফুল-বিছানো পথে এসো বিজন-বাসিনী।
    জোছনায় ছড়ায়ে হাসি এসো সুচারু-হাসিনী।।
    	এসো জড়ায়ে তব তনুতে
    	গোধূলী রামধনুতে,
    পাপিয়া-পিক-কূজনে গাহিয়া মধু-ভাষিণী।।
    	ছন্দ-দোদুল্ গতি
    	এসো নোটন্ কপোতী,
    বহায়ে মনের মরুতে আনন্দ-মন্দাকিনী।।
    
  • ঝর্‌ল যে-ফুল ফোটার আগেই

    বাণী

    ঝর্‌ল যে-ফুল ফোটার আগেই তারি তরে কাঁদি, হায়!
    মুকুলে যার মুখের হাসি চোখের জলে নিভে যায়।।
    হায় যে-বুলবুল গুল্‌বাগিচায় গোলাপ কুঁড়ির গাইত গান,
    আকুল ঝড়ে আজ সে প'ড়ে পথের ধূলায় মূরছায়।।
    সুখ-নদীর উপকূলে বাঁধিল যে সোনার ঘর,
    আজ কাঁদে সে গৃহ-হারা বালুচরে নিরাশায়।।
    যাবার যারা, যায় না তারা — থাকে কাঁটা, ঝরে ফুল।
    শুকায় নদী মরুর বুকে, প্রভাত আলো মেঘে ছায়।।
    
  • তব যাবার বেলা ব’লে যাও

    বাণী

    তব যাবার বেলা ব’লে যাও মনের কথা।
    কেন কহিতে এসে চলে যাও চাপিয়া ব্যথা।।
    কেন এনেছিলে ফুল আঁচলে দিতে কাহারে,
    কেন মলিন ধূলায় ছড়ালে সে ফুল অযথা।।
    পরি’ খয়েরী শাড়ি আসিলে সাঁঝের আঁধারে,
    ওকি ভুল সবই ভুল, নয়নের ও-বিহ্বলতা।।
    তুমি পুতুল ল’য়ে খেলেছ বালিকা-বেলা,
    বুঝি আমারে ল’য়ে তেমনি খেলিলে খেলা।
    তব নয়নের জল সে কি ছল, জানাইয়া যাও,
    এই ভুল ভেঙ্গে দাও সহে না এ নীরবতা।।
    

    ১. পিলু-সিন্ধু — কাহার্‌বা ২. যাও

  • হারানো হিয়ার নিকুঞ্জ পথে

    বাণী

    হারানো হিয়ার নিকুঞ্জপথে কুড়াই ঝরা ফুল একেলা আমি।
    তুমি কেন হায় আসিলে হেথায় সুখের স্বরগ হইতে নামি।।
    	চারিপাশে মোর উড়িছে কেবল
    	শুকনো পাতা মলিন ফুল–দল,
    বৃথাই কেন হায় তব আঁখিজল ছিটাও অবিরল দিবস–যামী।।
    	এলে অবেলায় পথিক বেভুল
    	বিঁধিছে কাঁটা নাহি যবে ফুল,
    কি দিয়ে বরণ করি ও চরণ নিভিছে জীবন, জীবন–স্বামী।।