ঠুংরী

  • অবুঝ মোর আঁখি বারি

    বাণী

    অবুঝ মোর আঁখি বারি, আমি রোধিতে নারি।।
    গ'লেছে যে-নদী জল, কে তারে রোধিবে বল,
    পাষাণের সে নারায়ণ তবু সে আমারি।।
    
  • আজি পূর্ণশশী কেন মেঘে ঢাকা

    বাণী

    	আজি পূর্ণশশী কেন মেঘে ঢাকা।
    	মোরে স্মরিয়া রাধিকাও হ’ল কি বাঁকা।।
    কেন	অভিমান-শিশিরে মাখা কমল,
    	কাজল-উজল-চোখে কেন এত জল,
    	লহ মুরলী হরি লহ শিখী-পাখা।
    
  • আবার কেন আগের মত

    বাণী

    আবার কেন আগের মত অমন চোখে চাও
    যে বিরহ গেছি ভুলে’, ভুলতে তারে দাও।।
    	শান্ত উদাস আমার আকাশ
    	নাই সেথা আর মেঘের আভাস,
    নির্মল সে-আকাশ কেন বাদল-মেঘে ছাও।।
    	বিপুল ধরার দূর নিরালায়
    	একটুখানি পেয়েছি ঠাঁই,
    নিঠুর, তুমি আবার আগুন জ্বেলো না সেথাও।।
    
  • আমি সূর্যমুখী ফুলের মত দেখি তোমায়

    বাণী

    আমি		সূর্যমুখী ফুলের মত দেখি তোমায় দূরে থেকে
    		দলগুলি মোর রেঙে ওঠে তোমার হাসির কিরণ মেখে’।।
    			নিত্য জানাই পেম-আরতি
    			যে পথে, নাথ, তোমার গতি
    		ওগো আমার ধ্রুব-জ্যোতি সাধ মেটে না তোমায় দেখে’।।
    		জানি, তুমি আমার পাওয়ার বহু দূরে, হে দেবতা!
    		আমি মাটির পূজারিণী, কেমন ক’রে জানাই ব্যথা।
    			সারা জীবন তবু, স্বামী,
    			তোমার ধ্যানেই কাঁদি আমি
    		সন্ধ্যাবেলায় ঝরি যেন তোমার পানে নয়ন রেখে’।।
    

  • এ কোন মায়ায় ফেলিলে আমায়

    বাণী

    এ কোন মায়ায় ফেলিলে আমায়
    	চির জনমের স্বামী-
    তোমার কারণে এ তিন ভুবনে
    	শান্তি না পাই আমি।।
    	অন্তরে যদি লুকাইতে চাই
    এ আগুন আমি কেমনে লুকাই, ওগো অন্তর্যামী।।
    মুখ থাকিতেও বলিতে পারে না বোবা স্বপনের কথা;
    বলিতেও নারি লুকাতেও নারি; তেমনি আমার ব্যথা।
    	যে দেখেছে প্রিয় বারেক তোমায়
    	বর্ণিতে রূপ- ভাষা নাহি পায়
    পাগলিনী-প্রায় কাঁদিয়া বেড়ায় অসহায়, দিবাযামী।।
    

  • এ বাসি বাসরে আসিলে কে গো

    বাণী

    এ বাসি বাসরে আসিলে কে গো ছলিতে।
    কেন পুন বাঁশি বাজালে কাফি ললিতে।। 
    নিশীথ গভীরে কেন আঁখি-নীরে এলে ফিরে ফিরে
    			গোপন কথা বলিতে।।
    দলিত কুসুম-দলে রচিয়াছি শয়ন,
    অন্ধ তিমির রাতি, নিভু নিভু নয়ন;
    মরণ বেলায় প্রিয় আনিলে কি অমিয়,
    এলে কি গো নিঠুর ঝরা ফুল দলিতে।।
    
  • কেন গো যোগিনী বিধুর অভিমানে

    বাণী

    কেন গো যোগিনী! বিধুর অভিমানে।
    যৌবনে মগন গভীর ধ্যানে।।
    হের গো কুসুম ঝরিয়া পায়ে,
    চাহিয়া রহে ধরণীর পানে।।
    
  • কোয়েলা কুহু কুহু ডাকে

    বাণী

    কোয়েলা কুহু কুহু ডাকে।
    নব মুকুলিত আমের শাখে।।
    	যাহার দরশ লাগি’
    	একেলা কুটীরে জাগি,
    মোর সাথে পাখিও কি ডাকিছে তাহাকে।।
    চাঁদিনী নিভে যায় আমার চোখে,
    চাঁদে মনে পড়ে চাঁদের আলোকে।
    	কুহু স্বর প্রাণে মম
    	বাজিতেছে তার সম,
    চাঁদিনী নিশীথ মোর বিষাদ-মেঘে ঢাকে।।
    
  • গাগরী ভরণে চলে চপলা

    বাণী

    গাগরী ভরণে চলে চপলা ব্রজনারী
    যৌবন-লাবনি অঙ্গে বিথারি’।
    কাজল-কালো নয়ন গরল মাখানো বাণ,
    চকিত চাহনি হানে চতুরা শিকারী।।
    চঞ্চল-অঞ্চল উড়ায়ে সাঁজের বায়
    আধো আলো আধো ছায়া লুকোচুরি খেলে যায়,
    রাঙা তপন হেসে লুকায় লতার পাশে কাঁদে দরশ-ভিখারি।।
    
  • গুণ্ঠন খোলো পারুল মঞ্জরী

    বাণী

    গুণ্ঠন খোলো পারুল মঞ্জরী।
    বল গো মনের কথা বনের কিশোরী।।
    চৈতালী চাঁদের তিথি যে ফুরায়
    কাঁদিয়া কোয়েলিয়া পরদেশে যায়,
    মধুমাখা নাম তব, মধুকর গায় মৃদুল গুঞ্জরী।।
    বনমালী নিতি আসি' ভাঙায় ঘুম
    বনদেবী গাহে জাগো দুলালী কুসুম,
    কত মল্লিকা বেলি বকুল চামেলি
    বিলায়ে সুবাস হের গিয়াছে ঝরি'।।
    
  • ছল্‌কে গাগরি গোরী ধীরে

    বাণী

    ছল্‌কে গাগরি গোরী ধীরে ধীরে যাও,
    পলকে পরান নিতে বারেক ফিরে চাও।।
    	যৌবন-ভার-নত
    	ক্ষীণ তনু সহে কত,
    পরানের বিনিময়ে তব ভার মোরে দাও।।
    ঝলকে বিজলি-জ্বালা মদির নয়ন তলে
    পতঙ্গ পোড়ে অনলে তবু সে পড়ে না জলে,
    নয়নে চাহিয়া দহি, নয়ন ফিরায়ে দাও।।
    
  • জানি পাব না তোমায় হে প্রিয় আমার

    বাণী

    জানি পাব না তোমায় হে প্রিয় আমার
    			এ জীবনে আর॥
    		এ আমার ললাট লেখা
    		আমি রব চির একা
    নিমেষের দিয়ে দেখা কাঁদাবে আবার॥
    		তুব হে জীবন স্বামী
    		তোমারি আশায় আমি
    আসিব এ ধরণীতে যুগে যুগে অনিবার॥
    
  • জোছনা-হসিত মাধবী নিশি

    বাণী

    জোছনা-হসিত মাধবী নিশি আজ।
    পর পর প্রিয়া বাসন্তি-রাঙা সাজ।।
    রাঙা কমল-কলি দিও কর্ণ-মূলে
    পর সোনালি চেলি নব সোনাল্ ফুলে,
    স্বর্ণলতার প’র সাতনরী-হার আজি উৎসব-রাত,
    		রাখ রাখ গৃহ-কাজ।।
    পর কবরী-মূলে নব আমের মুকুল
    হাতে কাঁকন পর গেঁথে অতসীর ফুল,
    দূরে গাহুক ডাহুক পাখি সখি, মুখর নিলাজ।।
    
  • তরুণ-তমাল-বরণ এসো

    বাণী

    তরুণ-তমাল-বরণ এসো শ্যামল আমার।
    ঘন শ্যাম তুলি বুলায়ে মেঘ-দলে এসো দুলায়ে আঁধার।।
    কাঁদে নিশীথিনী তিমির কুন্তলা
    আমারি মত সে উতলা,
    এসো তরুণ দুরন্ত ভাঙি’ হৃদয় দুয়ার।।
    তপ্ত গগনে ঘনায়ে ঘন দেয়া
    ফুটায়ে কদম কেয়া,
    আমার নয়ন-যমুনায় এসো জাগায়ে জোয়ার।।
    
  • না মিটিতে সাধ মোর নিশি পোহায়

    বাণী

    		না মিটিতে সাধ মোর নিশি পোহায়।
    		গভীর আঁধার ছেয়ে আজো হিয়ায়।।
    			আমার নয়ন ভ’রে
    			এখনো শিশির ঝরে,
    		এখনো বাহুর ’পরে বঁধূ ঘুমায়।।
    			এখনো কবরী-মূলে
    			কুসুম পড়েনি ঢুলে,
    		এখনো পড়েনি খুলে’ মালা খোঁপায়।।
    			নিভায়ে আমার বাতি
    			পোহাল সবার রাতি,
    (আমি) 	নিশি জেগে’ মালা গাঁথি, প্রাতে শুকায়।।
    
  • নিশুতি রাতের শশী গো

    বাণী

    নিশুতি রাতের শশী গো।
    ঘুমায় সকলে নিশীথ নিঝুম
    হরিল কে নয়নেরই ঘুম,
    কার অভিসারে জাগো গগন-পারে —
    চাঁদ ভুলানো সে-কোন্ রূপসী।।
    লুকায়ে হেরি আমি অভিসার তব
    তারকারা হেরে লুকায়ে নীরব,
    কপট ঘুম ভেঙে হের হাসিছে সব —
    দূর অলকার বাতায়নে বসি’।।
    

    নাটকঃ ‘সাবিত্রী’

  • পেয়ে কেন নাহি পাই হৃদয়ে মম

    বাণী

    পেয়ে কেন নাহি পাই হৃদয়ে মম
    হে চির-সুদূর প্রিয়তম॥
    		তুমি আকাশের চাঁদ
    আমি	পাতিয়া সরসী-ফাঁদ
    জনম	জনম কাঁদি কুমুদীর সম॥
    		নিখিলের রূপে রূপে
    		দেখা দাও চুপে চুপে
    এলে না মূরতি ধরি তুমি নিরুপম॥
    

  • ফুলমালিনী এনেছ কি মালা

    বাণী

    ফুলমালিনী! এনেছ কি মালা।
    এনেছ কি মালা, ভরি’, তনু-ডালা।।
    এনেছ পসারিণী নয়ন-পাতে
    প্রেমসুধা-রস মালারই সাথে,
    অধরের অনুরাগ রাঙা-পেয়ালা।।
    এনেছ প্রীতির মালতী বকুল,
    রসে টলমল রূপের মুকুল।
    গাঁথ পরান মম তব ফুলহারে
    মালার বিনিময়ে লহ আমারে,
    বৃথা না যায় শুভ লগ্ন নিরালা।।
    
  • বঁধু তোমার আমার এই যে বিরহ এক জনমের নহে

    বাণী

    বঁধু, তোমার আমার এই যে বিরহ এক জনমের নহে।
    তাই যত কাছে পাই তত এ হিয়ায় কি যেন অভাব রহে।।
    	বারে বারে মোরা কত সে ভুবনে আসি
    	দেখিয়া নিমেষে দুইজনে ভালোবাসি,
    দলিয়া সহসা মিলনের সেই মালা (কেন) চলিয়া গিয়াছি দোঁহে।।
    আমরা বুঝি গো বাঁধিব না ঘর, অভিশাপ বিধাতার।
    শুধু চেয়ে থাকি, কেঁদে কেঁদে ডাকি, চাঁদ আর পারাবার
    		যেন চাঁদ আর পারাবার।
    	মোদের জীবন-মঞ্জরি দুটি হায়!
    	শতবার ফোটে শতবার ঝ'রে যায়;
    আমি কাদি ব্রজে (বঁধু), তুমি কাঁদ মথুরায়, মাঝে অপার যমুনা বহে।।
    

  • বরণ করেছি তারে সই

    বাণী

    বরণ করেছি তারে সই বারণ ক’রো না
    মরম সঁপেছি তারে নিতে মরণ যাতনা।।
    	গোপনে সঁপেছি মন
    	গোপনে করি যতন,
    কাঁদে প্রাণ তারি তরে, মিলিতে বাসনা।।