দ্রুত-দাদ্‌রা

  • বল দেখি মা নন্দরানী

    বাণী

    	বল দেখি মা নন্দরানী ওগো গোকুলবালা
    (ওমা)	কেমন করে তোদের ঘরে (মা) এলো নন্দলালা।
    	(মা তুই) কোন সাধনায় দধি মথন করে
    	তুললি ননী হৃদয় পাত্র ভরে;
    	তুই সেই নবনি দিয়ে যতন করে
    	(মা তুই) গড়লি কি এই ননীর পুতুল আঁধার চিকনকালা।।
    	অমন রসবিগ্রহ মা গড়তে পারে কে?
    	গোপঝিয়ারি গড়তে পারে কে?
    	গোকুল মেয়ে নস্ তুই মা তুই কুমারের ঝি।
    	(মাগো) তুই নস্ যোগিনী তবু স্বগুণ বলে
    	(মা তুই) শ্রীকৃষ্ণে বাঁধলি উদূখলে
    	(আমায়) সেই যোগ তুই শিখিয়ে দে মা বসেই জপমালা।।
    
  • বল্ সই বসে কেনে একা আনমনে

    বাণী

    বল্ সই বসে কেনে একা আনমনে
    চল সই সই পাতাবি গাঁদা ফুলের সনে।।
    নিয়ে পাথর কুচি, আউস ধানের গুছি
    অজয় নদীর ধারে খেল্‌ব নিরজনে।।
    দেখিস্‌ আস্‌বে ফিরে তোর চাঁদ নতুন চাঁদে,
    চাঁদ-মুখ রেখে ঘরে কে সই রইতে পারে 
    		আঁধার কয়লা খাদে!
    আস্‌বে পোষা কোকিল, ডাকবে মহুল বনে।।
    কিন্‌বে ধেনো জমি এবার টাকা এনে,
    সে আর যেন গয়না কাপড় না কেনে
    তোর বলতে যদি লাজে বাধে মুখে
    আমি বল্‌ব তারে যা তুই ভাবিস মনে।।
    
  • বহে বনে সমীরণ ফুল জাগানো

    বাণী

    বহে বনে সমীরণ ফুল জাগানো
    এসো গোপন সাথি মোর ঘুম ভাঙানো
    এসো আঁধার রাতেরি চাঁদ পাতি মায়ারি ফাঁদ
    এসো এসো মম স্বপন সাধ॥
    হৃদয় তিমিরে এসো হৃদ-সায়র দোল লাগানো
    	সাথি মোর ঘুম ভাঙানো॥
    বনে মোর ফুলগুলি আছে তব পথ চেয়ে
    পরান পাপিয়া পিউ পিউ ওঠে গেয়ে
    তরুণ অরুণ এসো আলোকেরি পথ বেয়ে
    এসো আমার তনু মন প্রাণ হৃদয় রাঙানো
    	এসো ভুবন ভোলানো
    কোথা গোপন সাথি মোর ঘুম ভাঙানো॥
    

  • বাঁকা চোখে চাহে ও কে

    বাণী

    ‌	বাঁকা চোখে চাহে ও কে
    	ওকি ভয়ে, না লাজে, না ভালোবাসায়?
    	বটের ঝুরি ধ’রে হেসে তাকায়
    	দীঘির জলে কভু কল্‌সি ভাসায়॥
    (আমার) পাখি শিকার দেখে তাহার আঁখি ছলছল
    যেন	দুটি ঝিনুক ভরা কাজলা দীঘির জল
    তার	আঁজলা ভরা শাপলা কাঁপে টলমল্ গো
    সে	বাঁকিয়ে জোড়া ভুরু মোরে শাসায়॥
    কভু	এলায়ে গা বাঁধে খোঁপা কোমরে জড়ায় আঁচল
    	মট্‌কায় আঙুল, কভু ঘসে সে পা গো
    কভু	জলে ডোবে কভু সাঁতার কাটে
    	নানান ছলে সে দেরি করে জলের ঘাটে
    মোরে	জানায় যেন ও সে আছে ব’সে
    	কাহার আসার আশায়॥
    
  • বাদলা রাতে চাঁদ উঠেছে

    বাণী

    বাদলা রাতে চাঁদ উঠেছে কৃষ্ণ মেঘের কোলে রে।
    ব্রজ পুরে তমাল-ডালের ঝুলনাতে দোলে রে।।
    	নীল চাঁদ আর সোনার চাঁদে
    	বাঁধা বন-মালার ফাঁদে রে
    এই চাঁদ হেসে আরেক চাঁদের অঙ্গে পড়ে ঢ’লে রে।।
    যুগল শশী হেরি গোপী কহে, বাদলা রাতই ভালো রে,
    গোকুল এলো ব্রজে নেমে ধরা হল আলো রে।
    	দেব-দেবীরা চরণ-তলে
    	বৃষ্টি হয়ে পড়ে গ’লে রে,
    বেদ-গাথা সব নূপুর হয়ে রুনুঝুনু বোলে রে।।
    
  • বাঁশি কে বাজায় বনে আমি চিনি

    বাণী

    বাঁশি কে বাজায় বনে আমি চিনি আমি চিনি,
    কলসে কাঁকন চুড়ি তাল দিয়ে কয় গো রিনিঝিনি।
    			আমি চিনি আমি চিনি।।
    বুঝি গো বন পাপিয়া তারেই দেখে
    ‘চোখ গেল, চোখ গেল’ বলে উঠে ডেকে।
    ও বাঁশি বাজলে ‘জলে যাসনে’, (ও বৌ যাস্‌নে)
    বলে ‘ননদিনী’ ‘ননদিনী’।আমি চিনি আমি চিনি।।
    মোর সেই বাঁশুরিয়ায় চেনে পাড়ার পড়শিরা
    চেনে তায় যায় যমুনায় গো যত প্রেমের গরবীরা।
    সে যে মোর ঘর জ্বালানো পর ভুলানো
    আমার কালো বরণ গো, তমালের ডাল দুলানো।
    মন কয় আমায় নিয়ে গো সেই ত খেলে ছিনিমিনি।।
    
  • বাঁশি বাজায় কে কদম তলায়

    বাণী

    বাঁশি বাজায় কে কদম তলায় ওলো ললিতে
    শুনে সরে না পা পথ চলিতে।।
    তার বাঁশির ধ্বনি যেন ঝুরে ঝুরে
    আমারে খোঁজে লো ভুবন ঘুরে
    (ওসে) কি যেন চাহে মোরে বলিতে।।
    আছে গোকুল নগর আরো কত নারী
    কত রূপবতী বৃন্দাবন-কুমারী
    	আছে গোকুল নগরে।
    কেন আমারি নাম লয়ে বংশীধারী
    আসে নিতি-নিতি মোরে ছলিতে।
    সখি নির্মল কুলে মোর কৃষ্ণ -কালি
    কেন লাগালে কালিয়া বনমালী
    আমার বুকে দিল তুষের আগুন জ্বালি
    আরো কত জনম যাবে জ্বলিতে।।
    
  • বিদ্রোহী (দ্বিতীয় খন্ড)

    বাণী

    আমি	বন্ধন-হারা কুমারীর বেণী, তন্বী-নয়নে বহ্ণি,
    আমি	ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম, আমি ধন্যি!
    আমি	উন্মন মন উদাসীর,
    আমি	বিধবার বুকে ক্রন্দন-শ্বাস, হা হুতাশ আমি হুতাশীর।
    আমি	বঞ্চিত ব্যথা পথবাসী চির-গৃহহারা যত পথিকের,
    আমি	অবমানিতের মরম-বেদনা, বিষ-জ্বালা, প্রিয়-লাঞ্ছিত বুকে গতি ফের!
    আমি	অভিমানী চির-ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড়,
    	চিত-চুম্বন-চোর-কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম পরশ কুমারীর!
    আমি	গোপন-প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল-ক’রে দেখা অনুখন,
    আমি	চপল মেয়ের ভালোবাসা, তা’র কাঁকন-চুড়ির কন-কন!
    আমি	চির-শিশু, চির-কিশোর,
    আমি	যৌবন-ভীতু পল্লীবালার আঁচড় কাঁচলি নিচোর!
    আমি	উত্তর-বায়ু, মলয়-অনিল, উদাস পূরবী হাওয়া,
    আমি	পথিক-কবির গভীর রাগিণী, বেণু-বীণে গান গাওয়া।
    আমি	আকুল নিদাঘ-তিয়াসা, আমি রৌদ্র-রুদ্র রবি,
    আমি	মরু-নির্ঝর ঝর-ঝর, আমি শ্যামলিমা ছায়া-ছবি!
    আমি	তুরীয়ানন্দে ছুটে চলি, এ কি উন্মাদ, আমি উন্মাদ!
    আমি	সহসা আমারে চিনেছি, আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ!
    আমি	অর্ফিয়াসের বাঁশরী,
    	মহা-সিন্ধু উতলা ঘুমঘুম
    	ঘুম্‌ চুমু দিয়ে করি নিখিল বিশ্বে নিঝ্‌ঝুম
    	মম বাঁশরীর তানে পাশরি’।
    আমি	শ্যামের হাতের বাঁশরী।
    আমি	পরশুরামের কঠোর কুঠার,
    	নিঃক্ষত্রিয় করিব বিশ্ব, আনিব শান্তি শান্ত উদার!
    	মহা-বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত
    আমি	সেই দিন হব শান্ত,
    যবে	উত্‍পীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না —
    	অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না —
    	বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত
    আমি	সেই দিন হব শান্ত।
    আমি	বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদ-চিহ্ন,
    আমি	স্রষ্টা-সূদন, শোক-তাপ হানা খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন!
    আমি	বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দেবো পদ-চিহ্ন!
    আমি	খেয়ালী-বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন!
    আমি	চির-বিদ্রোহী বীর —
    	বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির!
    	শির নেহারি’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!
    বল	বীর -
    	বল উন্নত মম শির!
    বল	বীর, বল বীর।
    
  • বিদ্রোহী (প্রথম খন্ড)

    বাণী

    বল	বীর –
    	বল উন্নত মম শির!
    শির নেহারি’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!
    বল	বীর –
    বল	মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’
    	চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি’
    	ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া
    	খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া,
    	উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাতৃর!
    মম	ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!
    বল	বীর –
    আমি	চির উন্নত শির!
    আমি	চিরদূর্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস,
    	মহা-প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস!
    আমি	মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর,
    আমি	দুর্বার,
    আমি	ভেঙে করি সব চুরমার!
    আমি	অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,
    আমি	দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল!
    আমি	মানি না কো কোন আইন,
    আমি	ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন!
    আমি	ধূর্জটি, আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর
    আমি	বিদ্রোহী, আমি বিদ্রোহী-সুত বিশ্ব-বিধাতৃর!
    বল	বীর –
    	চির-উন্নত মম শির!
    আমি	ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি,
    আমি	পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’।
    আমি	নৃত্য-পাগল ছন্দ,
    আমি	আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ।
    আমি	হাম্বীর, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল,
    আমি	চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’
    	পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’
    	ফিং দিয়া দিই তিন দোল;
    আমি	চপলা-চপল হিন্দোল।
    আমি	তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা,
    করি	শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা,
    আমি	উন্মাদ, আমি ঝঞ্ঝা!
    	ধরি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা
    আমি	মহামারী, আমি ভীতি এ ধরিত্রীর;
    আমি	শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ঞ চির-অধীর!
    বল	বীর –
    আমি	চির উন্নত শির!
    শির নেহারি’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!
    বল	বীর -
    	বল উন্নত মম শির!
    আমি	বেদুঈন, আমি চেঙ্গিস,
    আমি	আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কুর্ণিশ!
    আমি	বজ্র, আমি ঈশান-বিষাণে ওঙ্কার,
    আমি	ইস্রাফিলের শিঙ্গার মহা হুঙ্কার,
    আমি	পিণাক-পাণির ডমরু ত্রিশূল, ধর্মরাজের দন্ড,
    আমি	চক্র ও মহা শঙ্খ, আমি প্রণব-নাদ প্রচন্ড!
    আমি	ক্ষ্যাপা দুর্বাসা, বিশ্বামিত্র-শিষ্য,
    আমি	দাবানল-দাহ, দাহন করিব বিশ্ব।
    আমি	প্রাণ খোলা হাসি উল্লাস, – আমি সৃষ্টি-বৈরী মহাত্রাস,
    আমি	মহা প্রলয়ের দ্বাদশ রবির রাহু গ্রাস!
    আমি	কভূ প্রশান্ত কভূ অশান্ত দারুণ স্বেচ্ছাচারী,
    আমি	অরুণ খুনের তরুণ, আমি বিধির দর্পহারী!
    শির নেহারি’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!
    বল	বীর -
    	বল উন্নত মম শির!
    	উন্নত মম শির!
    	উন্নত মম শির!
    
  • ভাই হয়ে ভাই চিনবি আবার গাইব কি আর

    বাণী

    		ভাই হয়ে ভাই চিনবি আবার গাইব কি আর এমন গান!
    সেদিন	দুয়ার ভেঙে আসবে জোয়ার মরা গাঙে ডাকবে বান।।
    তোরা		স্বার্থ-পিশাচ যেমন কুকুর তেমনি মুগুর পাস রে মান।
    সেই		কলজে চুঁয়ে গলছে রক্ত দলছে পায়ে ডলছে কান।।
    ওরে		তোরা করিস লাঠালাঠি সিন্ধু-ডাকাত লুটছে ধান!
    তাই		গোবর-গাদা মাথায় তোদের কাঁঠাল ভেঙে খায় শেয়ান।।
    ছিলি		সিংহ ব্যাঘ্র, হিংসা-যুদ্ধে আজকে এমন ক্ষিন্ন প্রাণ।
    মুখের		গ্রাস ঐ গিলছে শেয়াল, তোমরা শুয়ে নিচ্ছ ঘ্রাণ।।
    তোরা		বাঁদর ডেকে মানলি সালিশ ভাইকে দিতে ফাটলো প্রাণ!
    সালিশ	নিজেই, ‘খা ডালা সব’, বোকা তোদের এই দেখান।।
    তোরা		নাক কেটে নিজ পরের যাত্রা ভঙ্গ করিস বুদ্ধিমান
    তোদের	কে যে ভালো কে যে মন্দ সব শিয়ালই এক সমান।।
    শুনি		আপন ভিটের কুকুর রাজা, তার চেয়েও হীন তোদের প্রাণ।
    তাই		তোদের দেশ এই হিন্দুস্থানে নাই তোদেরই বিন্দু স্থান।।
    আজ		সাধে ভারত-বিধাতা কি চোখ বেঁধে ঐ মুখ লুকান!
    তোরা		বিশ্বে যে তার রাখিসনে ঠাঁই কানা গরুর ভীন বাথান।।
    তোরা		করলি কেবল অহরহ নীচ কলহের পরল পান।
    আজ		বুঝলি নে হায় নাড়ি-ছেড়া মায়ের পেটের ভায়ের টান।।
    
  • মহুয়া বনে লো মধু খেতে সই

    বাণী

    মহুয়া বনে লো মধু খেতে, সই,
    বাহিরে চাঁদ এলো, ঘরে মোর চাঁদ কই।।
    আমার নাচের সাথী কোথা পাইনে দেখা
    সরে না পা ওলো নাচতে একা
    সে বিনে সখী লো আমি আমার নই।।
    মিছে মাদলে তাল হানে মাদলিয়া,
    সে কি গেল বিদেশ, মোরে না বলিয়া।
    দূরে বাঁশি বাজে পলাশ পিয়াল বনে,
    বুঝি ঐ বঁধু মোর, যেন লাগে মনে
    সে মোরে ভুলে নাচে কাহার সনে?
    সে যে জানতো না সজনী কভু আমি বৈ।।
    
  • মহুল গাছে ফুল ফুটেছে নেশার ঝোঁকে ঝিমায়

    বাণী

    মহুল গাছে ফুল ফুটেছে নেশার ঝোঁকে ঝিমায় পবন
    গুনগুনিয়ে ভ্রমর এলো, (ওলো) ভুল করে তোর ভোলালো মন।।
    	আঁউরে গেছে মুখখানি ওর
    	কর লো বাতাস খুলে আঁচর
    চাঁদের লোভে এলো চকোর (ও তুই) মেঘে ঢাকিসনে লো নয়ন।।
    	কেশের কাঁটা বিধে পাখায়
    	রাখলো ওরে বেঁধে শাখায়
    মৌটুসি মৌ মদের মিঠায় (ও তুই) কপটে কর নিকট আপন।।
    

    নাটকঃ ‌‘মহুয়া’

  • মাদল বাজিয়ে এলো বাদলা মেঘ

    বাণী

    মাদল বাজিয়ে এলো বাদলা মেঘ এলোমেলো
    মাতলা হাওয়া এলো বনে।
    ময়ূরী নাচে কালো জামের গাছে
    পিয়া পিয়া বন-পাপিয়া
    ডাকে গো আপন মনে।।
    বেত-বনের আড়ালে ডাহুকী ডাকে,
    ডাকে না এমন দিনে কেহ আমাকে,
    বেণীর বিনুনী খুলে পড়ে
    একলা মন টেকে না ঘরের কোণে।।
    জঙ্গল পাহাড় কাঁপে বাজের আওয়াজে,
    বুকের মাঝে তবু নূপুর বাজে।।
    ঝিঁঝিঁ তার ডাক ভুলে
    ঝিম্ ঝিম্ ঝিম্ বৃষ্টির বাজ্‌না শোনে।।
    
  • যেতে নারি মদিনায় আমি হে প্রিয় নবী

    বাণী

    যেতে নারি মদিনায়, আমি নারি, হে প্রিয় নবী
    আমারই ধ্যানে এসো প্রাণে এসো আল-আরবি।।
    তপ্ত যে নিদারুণ আরবের সাহারা গো
    শীতল হৃদে মম রাখিব তোমারই ছবি।।
    ভালবাস যদি না মরুভূ ধূসর গো
    জ্বালায়ে, হৃদি মম করিব সাহারা গোবি।।
    হে প্রিয়তম, গোপনে তব তরে আমি কাঁদি
    তোমারে দিয়াছি মোর, দুনিয়া আখের সবই।।
    

  • রসুল নামের ফুল এনেছি রে

    বাণী

    রসুল নামের ফুল এনেছি রে (আয়) গাঁথবি মালা কে
    এই মালা নিয়ে রাখবি বেঁধে আল্লা তালাকে॥
    	অতি অল্প ইহার দাম
    	শুধু আল্লা রসুল নাম
    এই মালা প’রে দুঃখ শোকের ভুলবি জ্বালাকে॥
    এই ফুল ফোটে ভাই দিনে রাতে (ভাইরে ভাই) হাতের কাছে তোর
    ও তুই কাঁটা নিয়ে দিন কাটালি রে তাই রাত হ’ল না ভোর।
    	এর সুগন্ধ আর রূপ র’য়ে যায়
    	নিত্য এসে তোর দরজায় রে
    পেয়ে ভাতের থালা ভুললি রে তুই চাঁদের থালাকে॥
    
  • রাঙামাটির পথে লো

    বাণী

    	রাঙামাটির পথে লো মাদল বাজে, বাজে বাঁশের বাঁশি,
    	বাঁশি বাজে বুকের মাঝে লো, মন লাগে না কাজে লো,
    	রইতে নারি ঘরে ওলো প্রাণ হলো উদাসী লো।।
    	মাদলীয়ার তালে তালে অঙ্গ ওঠে দুলে লো,
    	দোল লাগে শাল পিয়াল বনে, নোটন খোঁপার ফুলে লো,
    	মহুয়া বনে লুটিয়ে পরে মাতাল চাঁদের হাসি লো।।
    	চোখে ভালো লাগে যাকে, তারে দেখবো পথের বাঁকে,
    তার 	চাঁচড় কেশে বেঁধে দেবো ঝুমকো জবার ফুল
    তার 	গলার মালার কুসুম কেড়ে করব কানের দুল।
    তার 	নাচের তালের ইশারাতে বলবো ভালোবাসি লো।।
    
  • লাল টুক্‌টুক্‌ মুখে হাসি মুখখানি টুলটুল

    বাণী

    লাল টুক্‌টুক্‌ মুখে হাসি মুখখানি টুলটুল।
    বিনি পানে রঙ দেখে যায় লাল-ঝুঁটি বুলবুল।।
    দেখতে আমার, খুকুর বিয়ে
    সূয্যি ওঠেন উদয় দিয়ে,
    চাঁদ ওঠে ঐ প্রদীপ নিয়ে গায় নদী কুল্‌কুল্‌।।
    

    নাটিকাঃ ‘পুতুলের বিয়ে’

  • শঙ্কাশূন্য লক্ষ কন্ঠে বাজিছে শঙ্খ ঐ

    বাণী

    শঙ্কাশূন্য লক্ষ কন্ঠে বাজিছে শঙ্খ ঐ
    পুণ্য-চিত্ত মৃত্যু তীর্থ-পথের যাত্রী কই।।
    আগে জাগে বাধা ও ভয়
    ও ভয়ে ভীত নয় হৃদয়
    জানি মোরা হবই হব জয়ী।।
    জাগায়ে প্রাণে প্রানে নব আশা, ভাষাহীন মুখে ভাষা
    হে নবীন আন নব পথের দিশা নিশি শেষের ঊষা
    কেহ না দেশে মানুষ তোমরা বৈ।।
    স্বর্গ রচিয়া মৃত্যুহীন চল ওরে কাঁচা চল নবীন
    দৃপ্ত চরণে নৃত্য দোল জাগায়ে মরুতে রে বেদুইন!
    'নাই নিশি নাই' জাগে শুভ্র দীপ্ত দিন।
    নাই ওরে ভয় নাই জাগে ঊর্দ্ধে দেবী জননী শক্তিময়ী।।
    
  • শহীদী ঈদগাহে দেখ্‌ আজ জমায়েত ভারি

    বাণী

    শহীদী ঈদগাহে দেখ্‌ আজ জমায়েত ভারি।
    হবে দুনিয়াতে আবার ইসলামী ফর্‌মান জারি।।
    তুরান ইরান হেজাজ মেসের হিন্দ মোরক্কো ইরাক,
    হাতে হাত মিলিয়ে আজ দাঁড়ায়েছে সারি সারি।।
    ছিল বেহোঁশ যারা আঁসু ও আফসোস ল’য়ে।
    তুইও আয় এই জমাতে ভুলে যা’ দুনিয়াদারী।।
    ছিল জিন্দানে যারা আজকে তারা জিন্দা হ’য়ে,
    ছোটে ময়দানে দারাজ-দিল্‌ আজি শমশের ল’য়ে।
    তকদির বদলেছে আজ উঠেছে তকবির তারি।।
    
  • শ্যামলা বরণ বাংলা মায়ের রূপ দেখে যা

    বাণী

    শ্যামলা বরণ বাংলা মায়ের রূপ দেখে যা, আয় রে আয়
    গিরি–দরি, বনে–মাঠে, প্রান্তরে রূপ ছাপিয়ে যায়।।
    ধানের ক্ষেতে, বনের ফাঁকে, দেখে যা মোর কালো মা–কে
    ধূলি–রাঙা পথের বাঁকে বৈরাগিনী বীণ বাজায়।।
    ভীরু মেয়ে পালিয়ে বেড়ায় পল্লীগ্রামে এক্‌লাটি
    বিজনমাঠে গ্রাম সে বসায় নিয়ে কাদা, খড়, মাটি
    কালো মেঘের ঝারি নিয়ে করুণা–বারি ছিটায়।।
    কাজলা–দীঘির পদ্মফুলে যায় দেখা তার পদ্ম–মুখ
    খেলে বেড়ায় ডাকাত–মেয়ে বনে লয়ে বাঘ–ভালুক
    ঝড়ের সাথে নৃত্যে মাতে বেদের সাথে সাপ নাচায়।।
    নদীর স্রোতে পাথর নুড়ির কাঁকন চুড়ি বাজে তার
    সাঁঝের বারান্দাতে দাঁড়ায় টীপ প’রে সন্ধ্যা–তারার।
    ঊষার গাঙে ঘট ভরিতে যায় সে মেয়ে ভোর বেলায়।
    হরিত শস্যে লুটায় আঁচল ঝিল্লিতে নূপুর বাজে
    ভাটিয়ালি গায় ভাটির স্রোতে গায় বাউল মাঠের মাঝে (মা)।
    গঙ্গা–তীরে শ্মশান–ঘাটে কেঁদে কভু বুক ভাসায়।।