নৃত্য-সম্বলিত

  • চারু চপল পায়ে যায়

    বাণী

    চারু চপল পায়ে যায় যুবতী গোরী।।
    আঁচলের পাল তুলে সে চলে ময়ূর-পঙ্খি-তরী।।
    	আয়রে দেখবি যদি
    	ভাদরের ভরা নদী,
    চলে কে বে-দরদি — ভেঙে কূল গিরি-দরি।।
    	মুখে চাঁদের মায়া
    	কেশে তমাল-ছায়া,
    এলোচুলে দুলে দুলে নেচে চলে হাওয়া-পরী।।
    	নয়ন-বাণে মারে প্রাণে
    	চরণ-ছোঁয়ায় জীবন দানে,
    মায়াবিনী যাদু জানে — হার মানে ঊর্বশী অপ্সরী।।
    
  • চিকন কালো ভুরুর তলে কাজল আঁখি দোলে

    বাণী

    চিকন কালো ভুরুর তলে কাজল আঁখি দোলে রে
    যেন বন-লতার কোলে কোয়েল পাখি দোলে রে।।
    	যেন ফুল-ধনুর উজল তীর গো হায়
    	বাদশাজাদীর রঙ মহলে 
    যেন নীলার প্রদীপ জ্বলে দোলে রে দোলে রেদেোলে রে।।
    	সজল শিশির মাখা দু'টি কুসুম গো
    	সুনীল দু'টি কমল -কুড়িঁ
    যেন রূপের সাঁতার -জলে দোলে রে দোলে রে দোলে রে।।
    
  • ছাড় ছাড় আঁচল বঁধু

    বাণী

    ছাড় ছাড় আঁচল, বঁধু, যেতে দাও।
    বনমালী, এমনি ক’রে মন ভোলাও।।
    একা পথে দুপুর বেলা, নিরদয়, একি খেলা।
    তুমি এমনি করে মায়া-জাল বিছাও।।
    পথে দিয়ে বাধা, একি প্রেম সাধা,
    আমি নহি তো রাধা, বঁধু, ফিরে যাও।।
    হে নিখিল নর-নারী, তোমার প্রেম-ভিখারি
    লীলা বুঝিতে নারি তব শ্যাম রাও।।
    
  • জাগো রূপের কুমার

    বাণী

    জাগো রূপের কুমার, কেন অলস ঘুমে কাটাও রাতি।
    হের দুয়ারে দাঁড়ায়ে বধূর সাজে তব জাগার সাথী।।
    আসে বারেবারে সে যে অভিসারে
    তার বুকের ভাষা মুখে কইতে নারে,
    মোরা বাসর ঘরে এলাম জ্বাল্‌তে বাতি।।
    

    নৃত্য-সঙ্গীত, নাটক : সর্বহারা

  • ঝরা ফুল দ’লে কে অতিথি

    বাণী

    ঝরা ফুল দ’লে কে অতিথি
    সাঝেঁর বেলা এলে কানন-বীথি।।
    চোখে কি মায়া ফেলেছে ছায়া
    যৌবন মদির দোদুল কায়া
    তোমার ছোঁয়ায় নাচন লাগে দখিন হাওয়ায়
    লাগে চাদেঁর স্বপন বকুল চাঁপায়,
    কোয়েলিয়া কুহরে কু কু গীতি।।
    
  • টলমল্ টলমল্ টলে সরসী

    বাণী

    টলমল্ টলমল্ টলে সরসী
    জল নিতে এলে কি গো ষোড়শী।।
    হেরিয়া তোমার রাঙা পদতল
    ফুটিল প্রেমের কুমুদ কমল
    খেলিছে চঞ্চল তরঙ্গ-দল ল’য়ে তব কলসি।।
    হেরি’তোমার নীলাম্বরী কাজল-আঁখি
    হলোকাজ্‌লা দীঘির জল সুনীল না-কি!
    হাতেশাপলা মৃণাল দিয়ে বাঁধে রাখি
    নাচেলীলায়িত ঢেউ তব তনু পরশি’।।
    

  • তোমার মহাবিশ্বে কিছু হারায় না তো কভু

    বাণী

    তোমার মহাবিশ্বে কিছু হারায় না তো কভু।
    আমরা অবোধ, অন্ধ মায়ায় তাই তো কাঁদি প্রভু।।
    তোমার মতই তোমার ভুবন
    চির পূর্ণ, হে নারায়ণ!
    দেখতে না পায় অন্ধ নয়ন তাই এ দুঃখ প্রভু।।
    ঝরে যে ফল ধূলায় জানি, হয় না তাহা (কভু) হারা,
    ঐ ঝরা ফলে নেয় যে জনম তরুণ তরুর চারা —
    তারা হয় না কভু হারা।
    হারালো (ও) মোর প্রিয় যারা,
    তোমার কাছে আছে তারা;
    আমার কাছে নাই তাহারা — হারায়নিক’ তবু।।
    
  • দিল দোলা ওগো দিল দোলা

    বাণী

    	দিল দোলা ওগো দিল দোলা
    কোন	দখিন হাওয়া গজল-গাওয়া
    		কুসুম-ছাওয়া বনে।
    ওঠে	চমকি চমকি পরান ক্ষণে ক্ষণে।।
    	ফুল-বঁধুদের মধু যেচে' বেড়ায় হিয়া নেচে' নেচে'
    	দেখেছিলাম স্বপনে যায় পেয়েছি তায় আজকে জাগরণে।।
    	কুল ছাপিয়ে মন-তটিনী নটিনীর বেশে, দুলে' দুলে' যায় ভেসে'।
    	বস-ভুষণ আজি শাসন নাহি মানে খুশির তুফানে।
    চাই	কুঞ্জপথে ঝ'রে যেতে ঝরা ফুলের সনে।।
    

  • দূর দ্বীপবাসিনী

    বাণী

    দূর দ্বীপ–বাসিনী, চিনি তোমারে চিনি।
    দারুচিনির দেশের তুমি বিদেশিনীগো, সুমন্দভাষিণী।।
    	প্রশান্ত সাগরে
    	তুফানে ও ঝড়ে
    শুনেছি তোমারি অশান্ত রাগিণী।।
    বাজাও কি বুনো সুর পাহাড়ি বাঁ‍শিতে?
    বনান্ত ছেয়ে যায় বাসন্তী–হাসিতে।
    	তব কবরী–মূলে
    	নব এলাচীর ফুল দুলে
    		কুসুম–বিলাসিনী।।
    
  • নতুন খেজুর রস এনেছি মেটে কলস ভ'রে

    বাণী

    নতুন খেজুর রস এনেছি মেটে কলস ভ'রে
    ভিন গাঁ হতে এনে গো রস-পিয়াসি
    ও আমার রস-পিয়াসি রসিক জনের তরে।।
    	মিঠে রোদে শীতের দিনে
    	তরুণ-বঁধূ লও গো কিনে
    ফাগুন-হাওয়া বইবে প্রাণে, ওগো হালকা নেশার ঘোরে।।
    মলিন মুখে দিয়ে দেখ নলিন খেজুর-গুড়
    বাহির-ভিতর হবে তাহার মিষ্টিতে ভরপুর
    	ওগো মিষ্টিতে ভরপুর।
    	মোর তনুর চেয়ে অনেক বেশি
    	মধুর এ রস ও বিদেশি,
    রস না পিয়েও ঝিমিয়ো না গো নেশায় অমন ক'রে।।
    

  • নাইয়া ধীরে চালাও তরণী

    বাণী

    	নাইয়া! ধীরে চালাও তরণী
    	একে ভরা ভাদর তায় বালা মাতোয়ালা মেঘলা রজনী।।
    	হায় পারে নেওয়ার ছলে নিলে মাঝ নদীতে
    	যৌবন-নদী টলমল নারি রোধিতে
    ঐ	ব্যাকুল বাতাস হরি’ নিল লাজ বাস
    তায়	চঞ্চল-চিত যে তুমি চাহ বধিতে
    	পায়ে ধরি ছাড়, বঁধু আমি পরের ঘরের ঘরণী।।
    	তরঙ্গ ঘোর রঙ্গ করে, অঙ্গে লাগে দোল্
    	একি এ নেশার ঘোরে তনু মন আঁখি লোল্।
    	দুলিছে নদী দুলে বায়ু দুলিছে তরী
    	কেমনে থির রাখি মোর চিত উতরোল ।
    	ওঠে ডিঙি পান্‌সি ভরি’ বারি কি করি কিশোরী রমণী।।
    
  • নাচন লাগে ঐ তরুলতায় পাতায় ফুলে

    বাণী

    নাচন লাগে ঐ তরুলতায় পাতায় ফুলে।
    ফুল-সৌখিন দখিন হাওয়া নাচে দু’লে দু’লে।।
    নাচে অথির-মতি রঙিন-পাখা প্রজাপতি,
    বন দুলায়ে মন ভুলায়ে, ঝিল্লি-নূপুর বাজায়ে
    নাচে বনে নিশীথিনী এলোচুলে।।
    মৃণাল-তনু কমল নাচে এলোখোঁপায় নীল জলে,
    ঝুমুর ঝুমুর ঘুমুর বাজে নির্ঝর পাষাণ-তলে।
    বাদ্ল হাওয়ায় তাল্‌বনা ঐ বাজায় চটুল্ দাদ্‌রা তাল,
    নদীর ঢেউ-এ মৃদঙ বাজে, পান্‌সি নাচে টাল্‌মাটাল্।
    নেচে চেনে গ্রহতারা দিশাহারা নটরাজের নাট-দেউলে।।
    
  • নাহি কেহ আমার ব্যথার সাথী

    বাণী

    নাহি কেহ আমার ব্যথার সাথী,
    জ্বলি পিল্‌সুজে একা মোমের বাতি।
    পতঙ্গ সুখি, পুড়ে এক নিমেষে –
    পুড়িয়া মরি আমি সারা রাতি।।
    আসে যে সুখের দিনে বন্ধু রূপে,
    অসময়ে যায় স’রে চুপে চুপে।
    	উড়ে গেছে অলি
    	ফুল ঝরেছে বলি’ – 
    কাঁদি একাকী কণ্টক-শয্যা পাতি’।।
    কেহ কারো নয় তবু প্রাণ কাঁদে
    চকোর চাহে যেন সুদূর চাঁদে,
    শুধু বেদনা পাই প্রেম-মোহে মাতি’।।
    
  • নীপ-শাখে বাঁধো ঝুলনিয়া

    বাণী

    	নীপ-শাখে বাঁধো ঝুলনিয়া,
    	কাজল-নয়না শ্যামলিয়া॥
    	মেঘ-মৃদঙ্গ তালে শিখী নাচে ডালে-ডালে।
    	মল্লার গান গাহিছে পবন পূরবিয়া॥
    	কেতকী কেশরে কুন্তল করো সুরভি,
    পরো	কদম মেখলা কটি-তটে রূপ-গরবী।
    	নব-যৌবন জল-তরঙ্গে,
    	পায়ে পাঁয়জোর বাজুক রঙ্গে
    	কাজরি ছন্দে নেচে চল করতালি দিয়া॥
    
  • পিও পিও হে প্রিয় শরাব পিও

    বাণী

    	পিও পিও হে প্রিয় শরাব পিও
    	চোখে রঙের নেশা লেগে সব অবসাদ হোক রমনীয়।।
    	জীবনের নহবতে বাজুক সানাই
    	আঁধার এ দুনিয়ায় জ্বলুক রোশনাই
    আজি	আবছা আলোয় যারে লাগবে ভালো
    	তারি গলায় চাঁদের মালা পরায়ে দিও।।
    আজি	লেগে অনুরাগে রঙ শিরাজির
    	প্রাণে প্রাণে লহর বহুক রস-নদীর
    সেই	মধুর ক্ষনে বঁধু নিরজনে
    	ভালোবাসি' দুটি কথা মোরে বলিও।।
    
  • বকুল তলে ব্যাকুল বাঁশি কে বাজায়

    বাণী

    বকুল তলে ব্যাকুল বাঁশি কে বাজায়
    যে বাঁশরি শুনে কিশোরী সহসা যেন গো যৌবন পায়॥
    রয় না মন ঘরে সেই বাঁশির সুরে
    	দূরে ভেসে যেতে চায়
    পরান ঘুরে মরে তাহার রাঙা পায়॥
    তারি নূপুর শুনি নিশিদিনই প্রাণে মোর
    নিশীথ রাতে আসে পাশে বসে মনোচোর।
    তারে কি মালা দিব অশ্রু-মুক্তা গাঁথা
    বিছাবো পথে কি তার মরা ফুল ঝরা পাতা
    	প্রাণের দীপালি জ্বালি তারি আশায়॥
    
  • বনে মোর ফুটেছে হেনা চামেলি যূথী বেলি

    বাণী

    বনে মোর ফুটেছে হেনা চামেলি যূথী বেলি।
    এসো এসো কুসুম সুকুমার শীতের মায়া-কুহেলি অবহেলি’॥
    পরানে দেয় দোলা দেয় দোলা দুল্ দোলায়
    (পরানে দেয় দোলা দেয় দোলা দেয় দোলন্)
    	উতলা দখিন হাওয়া
    কোকিল কুহরে কুহু কুহু স্বরে মদির স্বপন-ছাওয়া।
    হাসে গীত-চঞ্চল, জোছনা-উজল মাধবী রাতি
    	এসো এসো যৌবন সাথি
    ফুল-কিশোর, হে চিতচোর, দেবতা মোর।
    	মম লাজ অবগুণ্ঠন ঠেলি’॥
    
  • বহে বনে সমীরণ ফুল জাগানো

    বাণী

    বহে বনে সমীরণ ফুল জাগানো
    এসো গোপন সাথি মোর ঘুম ভাঙানো
    এসো আঁধার রাতেরি চাঁদ পাতি মায়ারি ফাঁদ
    এসো এসো মম স্বপন সাধ॥
    হৃদয় তিমিরে এসো হৃদ-সায়র দোল লাগানো
    	সাথি মোর ঘুম ভাঙানো॥
    বনে মোর ফুলগুলি আছে তব পথ চেয়ে
    পরান পাপিয়া পিউ পিউ ওঠে গেয়ে
    তরুণ অরুণ এসো আলোকেরি পথ বেয়ে
    এসো আমার তনু মন প্রাণ হৃদয় রাঙানো
    	এসো ভুবন ভোলানো
    কোথা গোপন সাথি মোর ঘুম ভাঙানো॥
    

  • বাঁকা শ্যামল এলো বন-ভবনে

    বাণী

    বাঁকা শ্যামল এলো বন-ভবনে
    তার বাঁশির সুর শুনি পবনে॥
    	রাঙা সে চরণের নূপুর-রোলে রে
    	আকুল এ হৃদয় পুলকে দোলে রে
    সে নূপুর শুনি’ নাচে ময়ূর কদম তমাল-বনে॥
    	বুঝি সেই শ্যামের পরশ লাগিল
    	আমার চরণে তাই নাচন জাগিল —
    ঘিরি শ্যামে দখিন-বামে নেচে বেড়াই আপন মনে॥
    	এলো মাধবী চাঁদ গগন আঙিনায়
    	জোয়ার এসেছে তাই হৃদয় যমুনায়
    খুলিয়া গলার মালা পরাব শ্যামেরি বরণে॥
    
  • বাঁশিতে সুর শুনিয়ে নূপুর রুনঝনিয়ে

    বাণী

    বাঁশিতে সুর শুনিয়ে নূপুর রুনঝনিয়ে
    	এলে আজি বাদলপ্রাতে।
    কদম কেশর ঝুরে পুলকে তোমার পায়ে,
    তমাল বিছায়ে ছায়া শ্যামল আদুল গায়ে।
    অলকা পথ বাহি আসিলে মেঘের নায়ে,
    নাচের তালে বাজিয়া ওঠে চুড়ি কাঁকন হাতে।।
    ধানি রঙের শাড়ি ফিরোজা রঙ উত্তরীয়
    প'রেছি এ শ্রাবণ দোলাতে দুলিতে প্রিয়।
    কেশের কমল-কলি, বনমালী, তুলিয়া আদরে
    চাঁচর চিকুরে আপনি পরিও
    তোমার রূপের কাজল পরায়ো আমার আঁখি পাতে।।