বাণী

ফুল-ফাগুনের এলো মরশুম বনে বনে লাগল দোল্।
কুসুম-সৌখিন দখিন হাওয়ার চিত্ত গীত-উতরোল।।
অতনুর ঐ বিষ-মাখা শর নয় ও-দোয়েল শ্যামার শিস্,
ফোটা ফুলে উঠ্‌ল ভ’রে কিশোরী বনের নিচোল।।
গুল্‌বাহারের উত্তরী কার জড়াল তরু-লতায়,
মুহু মুহু ডাকে কুহু তন্দ্রা-অলস, দ্বার খোল।
রাঙা ফুলে ফুল্ল-আনন দোলে কানন-সুন্দরী,
বসন্ত তার এসেছে আজ বরষ পরে পথ-বিভোল্।

বাণী

ফিরে এলো সেই কৃষ্ণাষ্টমী তিথি, হে শঙ্খচক্রধারী!
তোমার মাভৈঃ অভয় আকাশবাণী, কেন নাহি শুনি? হে মুরারি!!
	সেই ঘনঘটা দুর্যোগ-নিশি
	নিরাশা-আঁধারে ঢাকা দশদিশি;
গগনে তেমনি ঘোর দুন্দুভি বাজে, ঝরে তেমনি অশ্রু-বারি।।
আজো মানুষের আত্মা তেমনি কাঁদে আশা-যমুনার দুই পারে,
এ-পারে দেবকী ও-পারে যশোদা আজো ডাকে মুক্তির বিধাতারে।
	আবার প্রেমের বংশী বাজাও,
	এই হানাহানি হিংসা ভুলাও,
আর্ত-কলির গানের এ শেষ-কলি দাও শেষ করে ব্যথাহারী।।

বাণী

ফুলে পুছিনু, বল, বল ওরে ফুল!
কোথা পেলি এ সুরভি, রূপ এ অতুল?
‌'যার রূপে উজালা দুনিয়া, কহে গুল,
দিল সেই মোরে এই রূপ এই খোশবু।
		আল্লাহু আল্লাহু।।
'ওরে কোকিল, কে তোরে দিল এ সুর,
কোথা পেলি পাপিয়া এ কন্ঠ মধুর?
কহে কোকিল পাপিয়া, আল্লাহ গফুর,
তাঁরি নাম গাহি 'পিউ পিউ' কুহু কুহু —
		আল্লাহু আল্লাহু।।
'ওরে রবি-শশী, ওরে গ্রহ-তারা
কোথা পেলি এ রওশনী জ্যোতি ধারা?'
কহে, আমরা তাহারি রূপের ইশারা
মুসা, বেহুঁশ হলো হেরি' যে খুবরু
		আল্লাহু আল্লাহু।।
যারে আউলিয়া আম্বিয়া ধ্যানে না পায়
কূল-মখলুক যাঁহার মহিমা গায়,
যে নাম নিয়ে এসেছি এইদুনিয়ায়,
নাম নিতে নিতে মরি এই আরজু
		আল্লাহু আল্লাহু।।

বাণী

	ফিরদৌসের শিরনি এলো ঈদের চাঁদের তশতরিতে।
	লুট ক’রে নে বনি আদম ফেরেশ্‌তা আর হুরপরীতে।।
		চোখের পানি হারাম আজি
		চলুক খুশির আতস বাজি,
(তার)	মউজ লাগুক দূর সেতারা জোহরা আর মোশ্‌তরিতে।।
	দুশমনে আজ দোস্ত মেনে নে তারে তুই বক্ষে টেনে
	হস্‌নে নারাজ দরাজ হাতে দৌলত তোর বিলিয়ে দিতে।।

বাণী

ফিরিয়া এসো এসো হে ফিরে
বঁধু এ ঘোর বাদলে নারি থাকিতে একা।
হায় গগনে মনে আজি মেঘের ভিড়
	যায় নয়ন-জলে মুছে কাজল-লেখা।।
ললাটে কর হানি’ কাঁদিছে আকাশ
শ্বসিছে শন-শন হুতাস বাতাস।
তোমারি মত ঝড় হানিছে দ্বারে কর,
	খোঁজে বিজলি তোমারি পথ-রেখা।।
মেঘেরে সুধাই তুমি কোথায়
কাঁদন আমার বাতাসে ডুবে যায়!
ঝড়ের নূপুর পরি’ রাঙা পায়
	শ্যামল-সুন্দর দাও দেখা।।

বাণী

ফাগুন-রাতের ফুলের নেশায় আগুন জ্বালায় জ্বলিতে আসে।
যে-দীপশিখায় পুড়িয়া মরে পতঙ্গ ঘোরে তাহারি পাশে।।
অথই দুখের পাথার-জলে, সুখের রাঙা কমল দোলে
কূলের পথিক হারায় দিশা দিবস নিশা তাহারি বাসে।।
সুখের আশায় মেশায় ওরা বুকের সুধায় চোখের সলিল
মণির মোহে জীবন-দহে বিষের ফণির গরল-শ্বাসে।
বুকের পিয়ায় পেয়ে হিয়ায় কাঁদে পথের পিয়া লাগি’
নিতুই নূতন স্বর্গ মাগি’ নিতুই নয়ন জলে ভাসে।।