ভজন

  • অনাদরে স্বামী পড়ে আছি আমি

    বাণী

    অনাদরে স্বামী প’ড়ে আছি আমি তব কোলে তুলে নাও
    নিয়ে ধরণীর ধূলি আছি আমি ভুলি’ চরণের ধূলি দাও॥
    	বিভবে বিলাসে সংসার কাজে
    	অশান্ত প্রাণ কাঁদে বন্ধন মাঝে
    বৃথা দ্বারে দ্বারে চেয়েছি সবারে এবার তুমি মোরে চাও॥
    	যাহা কিছু প্রিয় জীবনের মম
    	হরিয়া লহ তুমি, লও প্রিয়তম।
    	সূর্যের পানে সূর্যমুখী ফুল
    	যেমন চাহিয়া রয় বিরহ-ব্যাকুল
    তেমনি প্রভু আমার এ মন তোমার পানে ফিরাও॥
    
  • অসুর-বাড়ির ফেরত এ মা

    বাণী

    অসুর-বাড়ির ফেরত এ মা
    শ্বশুর-বাড়ির ফেরত নয়।
    দশভুজার করিস পূজা
    		ভুলরূপে সব জগতময়।।
    নয় গোরী নয় এ উমা
    মেনকা যার খেতো চুমা
    রুদ্রাণী এ, এযে ভূমা
    		এক সাথে এ ভয়-অভয়।।
    অসুর দানব করল শাসন এইরূপে মা বারে বারে,
    রাবণ-বধের বর দিল মা এইরূপে রাম-অবতারে।
    দেব-সেনানী পুত্রে লয়ে মা
    এই বেশে যান দিগ্বিজয়ে
    সেই রূপে মা’র কর্‌রে পূজা
    		ভারতে ফের আসবে জয়।।
    
  • অ্যগ্যর তুম রাধা হোতে শ্যাম

    বাণী

    অ্যগ্যর তুম রাধা হোতে শ্যাম।
    মেরি তরা বস আঠোঁ প্যহর তুম, রট্‌কে শ্যামকা নাম।।
    বন-ফুলকে মালা নিরালি বন্‌ যাতি নাগন কালি
    কৃষ্ঞ-প্রেমকী ভীক্‌ মাঙ্গনে আতে লাখ্‌ যনম্‌।
    তুম, আতে ইস্‌ বৃজধাম।।
    চুপ্‌কে চুপ্‌কে তুম্‌রে হিরদয় ম বসতা বন্‌সীওয়ালা,
    আওর, ধীরে ধীরে উস্‌কী ধূন সে ব্যঢ়তী মন্‌কি জ্বালা।
    পন-ঘটমে ন্যয়্যন বিছায়ে তুম্‌, র‍্যহতে আস্‌ ল্যগায়ে
    আওর, কালেকে সঙ্গ প্রীত ল্যগাকর্‌ হো জাতে বদনাম।।
    
  • আমায় রাখিস্‌নে আর ধ’রে

    বাণী

    আমায় রাখিস্‌নে আর ধ’রে।
    পারের ঠাকুর (ওরে) ডাক দিয়েছে
    এই পারেরই অন্ধকারে মন যে কেমন করে।।
    		আয়ু-রবির অস্ত-পথে
    		এলো এলো ঠাকুর কনক-রথে,
    গোধূলি-রঙ হাসিটি তার ঝরছে চোখের ’পরে।।
    		চোখ দু’টি মোর ভরে’ জলে
    		বলব ঠাকুর নাও গো কোলে,
    রইতে নারি (আমি তোমায় ছেড়ে) রইতে নারি।
    আমার এ প্রাণ (পূজার ফুলের মত)
    		(তোমার) পায়ে পড়ুক ঝ’রে।।
    
  • আমার বিফল পূজাঞ্জলি অশ্রু-স্রোতে যায় যে ভেসে

    বাণী

    আমার বিফল পূজাঞ্জলি অশ্রু-স্রোতে যায় যে ভেসে
    তোমার আরাধিকার পূজা হে বিরহী, লও হে এসে॥
    	খোঁজে তোমায় চন্দ্র তপন
    	পূজে তোমায় বিশ্বভুবন,
    আমার যে নাথ ক্ষণিক জীবন মিটবে কি সাধ ভালবেসে॥
    না দেখা মোর, বন্ধু ওগো কোথায়, তুমি কোথায়, বাঁশি বাজাও একা,
    প্রাণ বোঝে তা অনুভবে নয়ন কেন পায় না দেখা।
    	সিন্ধু যেমন বিপুল টানে
    	তটিনীরে টেনে আনে,
    তেমনি করে তোমার পানে আমায় ডাকো নিরুদ্দেশে॥
    
  • আমার সকল আকাশ ভ'রলো

    বাণী

    আমার সকল আকাশ ভ'রলো তোমার তনুর কমল-গন্ধে
    আমার বন-ভবন ঘিরল মধুর কৃষ্ণ-মকরন্দে।।
    	এলামেলো মলয় বহে
    	বন্ধু এলো, এলো কহে
    উজ্জ্বল হ'ল আমার ভুবন তোমার মুখ-চন্ধে।।
    আমার দেহ-বীণায় বাজে তোমার চরণ-নূপুর-ছন্দ
    সকল কাজে জাগে শুধু অধীর আনন্দ।
    	আমার বুকের সুখের মাঝে
    	তোমার উদাস বেণু বাজে
    তোমার ছোওয়ায় আবেশ জাগে ব্যাকুল বেণীর বন্ধে।।
    
  • আমার সারা জনম কেঁদে গেল

    বাণী

    আমার সারা জনম কেঁদে গেল
    	(কবে) শেষ হবে মোর কাঁদা।
    পথে পথে ঘুরে মরি, পদে পদে বাধা।।
    	বাঁচ্‌তে চাইরে যে ডাল ধরে’
    	সে ডাল অম্‌নি ভেঙে পড়ে,
    সুখের আশায় ছুটে ছুটে দুঃখ হ’ল সাধা।।
    দুঃখী জনের বন্ধু কোথায় দীনের সহায় কোথা,
    (নাই) অসহায়ের তরে বুঝি বিধাতারও ব্যথা।
    	আকুল হয়ে কাঁদি যত
    	বেড়ে ওঠে বোঝা তত,
    আদায় ক’রে ফিরি যেন আমি দুখের চাঁদা।।
    
  • আমি নূতন ক’রে গড়ব ঠাকুর

    বাণী

    আমি নূতন ক’রে গড়ব ঠাকুর কষ্টি পাথর দে মা এনে।
    দিব হাতে বাঁশি মুখে হাসি ডাগর চোখে কাজল টেনে।।
    মথুরাতে আর যাবে না, মা যশোদায় কাঁদাবে না,
    রইবে ব্রজগোপীর কেনা, চলবে রাধার আদেশ মেনে।।
    শ্রীচরণ তার গড়ব না মা, গড়লে চরণ পালিয়ে যাবে
    নাইবা শুনলে নূপুর-ধ্বনি, ঠাকুরকে তো কাছে পাবে।
    চরণ পেলে দেশে দেশে, কুরুক্ষেত্র বাঁধাবে সে —
    গন্ধমালা দিসনে মাগো, ভক্ত ভ্রমর ফেলবে জেনে।।
    	দেখে কখন করবে চুরি
    	একলা ঘরে মরব ঝুরি,
    গন্ধমালা দিসনে মাগো, ভক্ত ভ্রমর ফেলবে জেনে।।
    
  • আমি বাঁধন যত খুলিতে চাই

    বাণী

    আমি	বাঁধন যত খুলিতে চাই জড়িয়ে পড়ি তত।
    	শুভদিন এলো না দিনে দিনে দিন হল হায় গত।।
    		শত দুঃখ অভাব নিয়ে
    		জগৎ আছে জাল বিছিয়ে
    	অসহায় এ পরান কাঁদে জালে মীনের মত।।
    	বোঝা যত কমাতে চাই ততই বাড়ে বোঝা,
    	শান্তি কবে পাব কবে চল্‌ব হয়ে সোজা।
    		দাও ব’লে হে জগৎ-স্বামী
    		মুক্তি কবে পাব আমি?
    কবে	উঠবে ফুটে জীবন আমার ভোরের ফুলের মত।।
    
  • আমি রব না ঘরে

    বাণী

    আমি রব না ঘরে।
    ওমা ডেকেছে আমারে হরি বাঁশির স্বরে।।
    	আমি আকাশে শুনি আমি বাতাসে শুনি
    	ওমা নিশিদিন বাঁশরি বাজায় সে গুণী,
    ওমা তাহারি সুরের সুরধুনী বহে অন্তরে বাহিরে ভুবন ভ’রে।।
    যবে জাগিয়া থাকি,
    হেরি’ শ্রীহরির পদ্ম-পলাশ আঁখি।
    যদি ভুলিয়া কভু আমি ঘুমাই মাগো
    সে-ঘুম ভেঙে দেয় বলে, জাগো জাগো,
    সে শয়নে স্বপনে মোর সাধনা গো —
    আমি নিবেদিতা মাগো তাহারি তরে।।
    
  • এসো নূপুর বাজাইয়া যমুনা নাচাইয়া

    বাণী

    এসো নূপুর বাজাইয়া যমুনা নাচাইয়া
    			কৃষ্ণ কানাইয়া হরি।
    মাখি’গোখুর ধূলিরেণু গোঠে চরাইয়া ধেনু
    			বাজায়ে বাঁশের বাঁশরি।।
    গোপী চন্দন চর্চিত অঙ্গে
    প্রাণ মাতাইয়া প্রেম তরঙ্গে
    বামে হেলায়ে ময়ুর পাখা দুলায়ে তমাল শাখা
    			দীপবনে, দাঁড়ায়ে ত্রিভঙ্গে।
    এসো লয়ে সেই শ্যাম-শোভা ব্রজ বধু মনোলোভা
    			সেই পীত বসন পরি’।।
    এসো গগনে ফেলি নীল ছায়া
    আনো পিপাসিত চোখে মেঘ মায়া।
    এসো মাধব মাধবী তলে
    এসো বনমালী বন-মালা গলে
    এসো ভক্তিতে প্রেমে আঁখি জলে
    এসো তিলক লাঞ্ছিত সুর নর বাঞ্ছিত
    			বামে লয়ে রাই কিশোরী।।
    
  • এসো প্রাণে গিরিধারী বন-চারী

    বাণী

    এসো প্রাণে গিরিধারী বন-চারী
    	গোপীজন-মনোহরী।
    	চঞ্চল গোকুল-বিহারী।।
    লহ নব প্রীতির কদম-মালা
    আনন্দ-চন্দন, প্রেম-ফুল-ডালা
    নয়নে আরতি-প্রদীপ জ্বালা
    	অঞ্জলি লহ আঁখি-বারি।।
    প্রণয়-বিহ্বলা প্রাণ-রাধিকা
    পরেছে তব নাম কলঙ্ক-টিকা।
    অথির অনুরাগ গোপ-বালিকা
    	চাহে পথ তোমারি।।
    
  • এসো মুরলীধারী বৃন্দাবন-চারী

    বাণী

    এসো মুরলীধারী বৃন্দাবন-চারী গোপাল গিরিধারী শ্যাম।
    তেমনি যমুনা বিগলিত-করুণা কুলু কুলু কুলু স্বরে ডাকে অবিরাম।।
    	কোথায় গোকুল-বিহারী শ্রীকৃষ্ণ
    	চাহিয়া পথ পানে ধরণী সতৃষ্ণ,
    ডাকে মা যশোদায় নীলমণি আয় আয় ডেকে যায় নন্দ শ্রীদাম।।
    ডাকে প্রেম-সাধিকা আজো শত রাধিকা গোপ-কোঙারি,
    এসো নওল-কিশোর কুল-লাজ-মান-চোর ব্রজ-বিহারী।
    পরি’ সেই পীতধড়া, সেই বাঁকা শিখী চূড়া বাজায়ে বেণূ
    আরবার এসো গোঠে, খেল সেই ছায়া-বটে চরাও ধেনু
    কদম তমাল-ছায়ে এসো নূপুর পায়ে ললিত বঙ্কিম ঠাম।।
    
  • এসো হৃদি-রাস-মন্দিরে এসো

    বাণী

    এসো হৃদি-রাস-মন্দিরে এসো হে রাসবিহারী কালা।
    মম নয়নের পাতে রাখিয়াছি গেঁথে অশ্রু-যূথীর মালা।।
    	আমি	ত্যাজিয়াছি কবে লাজ-মান-কুল
    		বহি’ কলঙ্ক এসেছি গোকুল,
    আমি ভুলিয়াছি ঘর শ্যাম নটবর কর মোরে গোপবালা।।
    		আমার কাঁদন-যমুনার নদী
    	শ্যাম হে ভাঁটি টানে শুধু বহে নিরবধি,
    তারে বাঁশরির তানে বহাও উজানে ভোলাও বিরহ-জ্বালা।।
    
  • ও কে উদাসী বেণু বাজায়

    বাণী

    ও কে উদাসী বেণু বাজায়
    ডাকে করুণ সুরে আয় আয়।।
    ও সে বাঁধন হারা বাহির বিলাসী
    	গৃহীরে করে সে পরবাসী
    	রস যমুনায় উজান বহায়।।
    মম মনের ব্রজে ওসে কিশোর রাখাল
    যেন বাজায় বাঁশি শুনি অনাদিকাল
    তার সরল বাঁশি তার তরল তাল
    	অন্তরে গরল-সুধা মেশায়।।
    

  • ও মন চল অকুল পানে

    বাণী

    	ও মন চল অকুল পানে, মাতি হরিপ্রেম-গুণগানে।
    	নদী যেমন ধায় অকূলে কূল যত তায় টানে।।
    তুই	কোন্ পাহাড়ে ঠেক্‌লি এসে কোন্‌ পাথারের জল
    	হরির প্রেমে গ’লে এবার সেই অসীমে চল্,
    তুই	স্রোতের বেগে দুল্‌বি রে কূল-বাধা যদি হানে।।
    	এ পারের সব যাত্রী যাবে তোর বুকে ওপারে
    	তোর কূলে শ্যাম বাজিয়ে বাঁশি আস্‌বে অভিসারে,
    	শ্যামের ছবি ধর্‌বি বুকে মাত্‌বি প্রেম-তুফানে।।
    
  • ওগো ও আমার কালো

    বাণী

    ওগো ও আমার কালো —
    গহন বনে বুকের মাঝে জ্বালো তুমি জ্বালো
    		ওগো আমার আলো গো।।
    	কাজলা মেঘের অন্তরালে
    	তোমার রূপের মানিক জ্বলে
    আমার কালো মনের তলে জ্বালাও তুমি আলো গো।।
    একলা ব’সে দিন যেন মোর কাটে
    কইতে কথা বুক যে আমার ফাটে গো
    আঁধার যখন আসবে ঘিরে জ্বালবে তুমি আলো গো।।
    
  • ওগো নন্দ দুলাল নাচে ছন্দতালে

    বাণী

    দ্বৈত	:	ওগো নন্দ দুলাল নাচে ছন্দতালে
    স্ত্রী	:	মধু মঞ্জির বোলে মণি কুন্তল দোলে
    পুরুষ	:	চন্দন লেখা শোভে চারুভালে॥
    স্ত্রী	:	রস যমুনায় জাগে ঢেউ উতরোল
    পুরুষ	:	ব্রজগোপিকার প্রাণে লাগে তারি হিল্লোল
    দ্বৈত	:	রাস পূর্ণিমা রাতে শিখী নাচে সাথে সাথে
    		ফুল দোলে কুঞ্জেরই বকুল ডালে॥
    স্ত্রী	:	নাচে নন্দ দুলাল বাজে মোহন বেণূ
    পুরুষ	:	অঙ্গের লাবনিতে আলো করে অবনিতে
    দ্বৈত	:	হাসিতে ঝরায় ফুল পরাগ রেণু।
    স্ত্রী	:	রাঙা পায়ে রুমুঝুমু বাজে মধুর
    পুরুষ	:	জীবন মরণ তার যুগল নূপুর
    দ্বৈত	:	মুগ্ধ তারকা শশী রাতের দেউলে বসি
    		আরতি প্রদীপ শিখা নিত্য জ্বালে॥
    
  • ওরে দেখে যা তোরা নদীয়ায়

    বাণী

    ওরে দেখে যা তোরা নদীয়ায়
    গোরার রূপে এলো ব্রজের শ্যামরায়॥
    	মুখে হরি হরি বলে
    	হেলে দুলে নেচে চলে
    নরনারী প্রেমে গলে ঢলে পড়ে রাঙা পায়॥
    ব্রজে নূপুর পরি নাচিত এমনি হরি
    কূল ভুলিয়া সবে ছুটিত এমন করি
    শচীমাতার রূপে কাঁদিছে মা যশোদা
    বিষ্ণু প্রিয়ার চোখে কাঁদে কিশোরী রাধা
    নহে নিমাই নিতাই ও যে কানাই বলাই
    শ্রীদাম সুদাম এলো জগাই মাধাই-এ হায়॥
    আজ এসেছে ভূবন ভুলাতে অসি নাই বাঁশি নাই
    ও ভাই এবারে শূন্য হাতে এসেছে ভুবন ভুলাতে।
    ও ভাই লীলা পাগল এলো প্রেমে মাতাতে
    ডুবু ডুবু নদীয়া বিশ্ব ভাসিয়া যায়॥
    
  • ওরে মথুরা-বাসিনী মোরে বল্

    বাণী

    ওরে মথুরা-বাসিনী, মোরে বল্।
    কোথায় রাধার প্রাণ — ব্রজের শ্যামল।।
    		আজও রাজ-সভা মাঝে
    	(সে)	আসে কি রাখাল-সাজে?
    আজও তার বাঁশি শুনে যমুনার জল হয় কি উতল।।
    পায়ে নূপুর কি পরে শিরে ময়ূর-পাখা,
    আছে শ্রীমুখে কি অলকা তিলক আঁকা।
    		রাধা রাধা ব’লে কি গো
    		কাঁদে সেই ময়া-মৃগ?
    নারায়ণ হয়েছে সে তোদের মথুরা এসে মোদের চপল।।