বাণী

মেঘ-বরণ কন্যা থাকে মেঘলামতীর দেশে (রে)
সেই দেশে মেঘ জল ঢালিও তাহার আকুল কেশে।।
	তাহার কালো চোখের কাজল
	শাওন মেঘের চেয়ে শ্যামল
চাউনিতে তার বিজলি ছড়ায় চমক বেড়ায় ভেসে (রে)।।
সে ব’সে থাকে পা ডুবিয়ে ঘুমতী নদীর জলে
কভু দাঁড়িয়ে থাকে ছবির মত একলা তরু-তলে (রে)।
	কদম ফুলের মালা গেঁথে
	ছড়িয়ে সে দেয় ধানের ক্ষেতে
তারে দেখতে পেলে আমার কথা (তারে) কইও ভালোবেসে।।

বাণী

সকাল হ'ল শোন রে আজান
	ওঠ রে শয্যা ছাড়ি'
তুই মসজিদে চল দ্বীনের কাজে
	ভোল দুনিয়াদারি।।
ওজু করে ফেল রে ধুয়ে
	নিশীথ রাতের গ্লানি
সিজদা করে জায়নামাজে
	ফেল রে চোখের পানি;
খোদার নামে সারাদিনের
	কাজ হবে না ভারী।।
নামাজ প'ড়ে দু'হাত তুলে
	প্রার্থনা কর তুই -
ফুল-ফসলে ভ'রে উঠুক
	সকল চাষির ভূঁই
সকল লোকের মুখে হোক
	আল্লার নাম জারী।।
ছেলে-মেয়ে সংসার-ভার
	সঁপে দে আল্লারে
নবীজীর দোয়া ভিক্ষা কর
	কর রে বারে বারে;
তোর হেসে নিশি প্রভাত হবে
	সুখে দিবি পাড়ি।।

বাণী

মোরা এক বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু-মুসলমান।
মুসলিম তার নয়ন-মণি, হিন্দু তাহার প্রাণ।।
	এক সে আকাশ মায়ের কোলে
	যেন রবি শশী দোলে,
এক রক্ত বুকের তলে, এক সে নাড়ির টান।।
এক সে দেশের খাই গো হাওয়া, এক সে দেশের জল,
এক সে মায়ের বক্ষে ফলাই একই ফুল ও ফল।
	এক সে দেশের মাটিতে পাই
	কেউ গোরে কেউ শ্মাশানে ঠাঁই
এক ভাষাতে মা’কে ডাকি, এক সুরে গাই গান।। 

নাটিকাঃ‘পুতুলের বিয়ে’

বাণী

	শ্যামা বড় লাজুক মেয়ে কেবলই সে লুকাতে চায়।
	আলো-আঁধার পর্দা টেনে বালিকা সে পালিয়ে বেড়ায়।।
		নিখিল ভুবন আছে তারে ঘিরে
		আমার মেয়ে তবু বসন খুঁজে ফিরে,
	তারে যে দেখে সে এক নিমেষে তারি মাঝে লয় হয়ে যায়।।
	তাই কেবলি সে লুকাতে চায়।।
	কোটি শিব ব্রহ্মা হরি অনন্তকাল গভীর ধ্যানে,
তার	সে লুকোচুরি খেলায় পায় না দিশা পায় না মনে।
		রবি শশী গ্রহতারার ফাঁকে
		যে দেখেছে পালিয়ে যেতে মাকে,
(সে)	আপনাকে আর পায় না খুঁজে মায়াবিনীর মহামায়ায়।।

বাণী

রহি' রহি' কেন আজো সেই মুখ মনে পড়ে।
ভুলিতে তা'য় চাহি যত, তত স্মৃতি কেঁদে মরে।।
দিয়েছি তাহারে বিদায় ভাসায়ে নয়ন-নীরে,
সেই আঁখি-বারি আজো মোর নয়নে ঝরে।।
হেনেছি যে অবহেলা পাষাণে বাঁধিয়া হিয়া,
তারি ব্যথা পাষাণ সম রহিল বুকে চাপিয়া।
সেই বসন্ত ও বরষা আসিবে গো ফিরে ফিরে,
আসিবে না আর ফিরে অভিমানী মোর ঘরে।।

বাণী

	গগনে খেলায় সাপ বরষা-বেদিনী।
	দূরে দাঁড়ায়ে দেখে ভয়-ভীতা মেদিনী।।
	দেখায় মেঘের ঝাপি তুলিয়া
	ফনা তুলি’ বিদ্যুৎ-ফণি ওঠে দুলিয়া,
	ঝড়ের তুব্‌ড়িতে বাজে তার অশান্ত রাগিণী।।
	মহাসাগরে লুটায় তার সর্পিল অঞ্চল
	দিগন্তে দুলে তার এলোকেশ পিঙ্গল
	ছিটায় মন্ত্রপূত ধারাজল অবিরল তন্বী-মোহিনী।।
	অশনি-ডমরু ওঠে দমকি’
	পাতালে বাসুকি ওঠে চমকি’
তার 	ডাক শুনে ছুটে আসে নদীজল যেন পাহাড়িয়া নাগিনী।।