বাণী

		আজ নিশীথে অভিসার তোমারি পথে প্রিয়তম।
		বনের পারে নিরালায় দিও হে দেখা নিরুপম।।
		সুদূর নদীর ধারে নিরালাতে বালুচরে
		চখার তরে যথা একা চখি কেঁদে মরে
		সেথা সহসা আসিও গোপন প্রিয় স্বপন সম।।
		তোমারি আশায় ঘুরি শত গ্রহে শত লোকে,
(ওগো) 	আমারি বিরহ জাগে বিরহী চাঁদের চোখে,
		আকুল পাথার নিরাশার পারায়ে এসো প্রাণে মম।।

বাণী

আমি দ্বার খুলে আর রাখব না, পালিয়ে যাবে গো।
জানবে সবে গো, নাম ধরে আর ডাকব না।।
	এবার পূজার প্রদীপ হয়ে
	জ্বলবে আমার দেবালয়ে,
জ্বালিয়ে যাবে গো — আর আঁচল দিয়ে ঢাকব না।।
হার মেনেছি গো, হার দিয়ে আর বাঁধব না।
দান এনেছি গো, প্রাণ চেয়ে আর কাঁদব না।
	পাষাণ, তোমায় বন্দী ক’রে
	রাখব আমার ঠাকুর ঘরে,
রইব কাছে গো — আর অন্তরালে থাকব না।।

বাণী

	আজ যুগের পরে ঘরে১ ফিরে মায়ের কথা পড়লো মনে।
	শূন্য ঘরে মন বসে না গুমরে মরে হিয়ার বনে।।
		আজো সে ঘর সবাই আছে,
		মা কেবলই নেই গো কাছে, — 
	ঐ দাওয়া আর ঐ কানাচে আজো মায়ের স্বরটি রনে।।
	যত্ন কারুর সইতে নারি, কণ্ঠ ছিঁড়ে কান্না আসে;
	ওষ্ঠ চেপে যায় না রাখা, রূপ যে তোমার চক্ষে ভাসে!
		পাইনি মাগো সাতটি বরষ
		একটুকু ক্ষীণ স্নেহের পরশ, — 
(ও মা)	‘বুনো’ তোমার হ’ল না বশ চল্‌লো ফিরে ফের বিজনে।
	হার্‌লো স্নেহ বাঁধন-হারার বাঁধ্‌তে নিয়ে ডোর-সৃজনে।।

১. ঘরকে

বাণী

আনন্দ-দুলালী ব্রজ-বালার সনে
			নন্দ-দুলাল খেলে হোলি!
রঙের মাতন লেগে যেন শ্যামল মেঘে
			খেলেছে রাঙা বিজলি।।
রাঙা মুঠি-ভরা রাঙা আবির-রেণু
রাঙিল পীত-ধড়া শিখি-পাখা বেণু
			রাঙিল শাড়ি কাঁচলি।।
লচকিয়া আসে মুচকিয়া হাসে
মারে আবির পিচকারি,
চাঁদের হাট তোরা দেখে যা রে দেখে যা
রঙে মাতোয়ালা নর-নারী!
শিরায় শিরায় সুরার শিহরণ
			রঙ্গে অঙ্গে পড়ে ঢলি।।

বাণী

	আকাশে আজ ছড়িয়ে দিলাম প্রিয়।
	আমার কথার ফুল গো,
	আমার গানের মালা গো —
			কুড়িয়ে তুমি নিও।।
	আমার সুরের ইন্দ্রধনু
	রচে আমার ক্ষণিক তনু,
	জড়িয়ে আছে সেই রঙে মোর
			অনুরাগ অমিয়।।
আমার	আঁখি-পাতায় নাই দেখিলে
			আমার আঁখি-জল,
আমার	কণ্ঠের সুর অশ্রুভারে
			করে টলমল।
	আমার হৃদয়-পদ্ম ঘিরে
	কথার ভ্রমর কেঁদে ফিরে,
	সেই ভ্রমরের কাছে আমার
			মনের মধু পিও।।

গীতি আলেখ্য: ‌‘আকাশবাণী’

বাণী

আন্ গোলাপ-পানি, আন্ আতরদানি গুলবাগে।
সহেলি গো কিছু নাহি ভালো লাগে
বেদুঈন ছেলের বাঁশি কারে ডাকে
			কেঁদে’ কেঁদে’ অনুরাগে।।
	মরুযাত্রীদের উটের সারি
	যেমন চাহে তৃষার বারি
তেমনি মম পিয়াসি পরান যেন কার —
			প্রেম-অমৃত বারি মাগে।।
চাঁদের পিয়ালাতে জোছনা-শিরাজি ঝ’রে যায়
আমারি হৃদয় কেন গো সে-মধু নাহি পায়,
হায়, হায়, বাদাম গাছের আঁধার বনে
নিঃশ্বাস ওঠে যেন বুল্‌বুলির শিসের সনে,
বিরহী মোর কোথায় কাঁদে কোন্ মদিনাতে —
ফোরাত নদীর রোদন১ সম বুকে ঢেউ জাগে।।

১. স্রোতের

সঙ্গীতালেখ্য : ‌‘কাফেলা’ (মরুদেশের সঙ্গীত)