বাণী

ওরে এ কোন্ স্নেহ-সুরধুনী নামলো আমার সাহারায়।
বক্ষে কাঁদার বান ডেকেছে, আজ হিয়া কূল না হারায়।।
কণ্ঠে চেপে শুষ্ক তৃষা
মরুর সে-পথ তপ্ত সীসা,
চ’লতে একা পাইনি দিশা ভাই,
বন্ধ নিঃশ্বাস — একটু বাতাস্!
এক ফোঁটা জল জহর-মিশা! মিথ্যা আশা, নাই সে নিশানা’ই
হঠাৎ ও-কার ছায়ার মায়া রে —
যেন ডাক-নাম আজ গাল্-ভরা ডাক ডাকছে কে ঐ মা-হারায়।।
লক্ষ যুগের বক্ষ-ছায়া তুহিন্ হ’য়ে যে ব্যথা আর কথা ছিল ঘুমা,
কে সে ব্যথায় বুলায় পরশ রে?
ওরে গলায় তুহিন্ কাহার কিরণ-তপ্ত সোহাগ-চুমা?
ওরে ও-ভূত, লক্ষ্মী-ছাড়া
হতভাগা বাঁধন-হারা,
কোথায় ছুটিস্! একটু দাঁড়া, হায়!
ঐ ত তোরে ডাক্‌ছে স্নেহ
হাতছানি দেয় ঐ ত গেহ,
কাঁদিস্ কেন পাগল-পারা তায়?
এত ডুক্‌রে’ কিসের তিক্ত কাঁদন তোর?
অভিমানী! মুখ ফেরা দেখ্ যা পেয়েছিস্ তা’ও হারায়!
হায়, বুঝ্‌বে কে যে স্নেহের ছোঁওয়ায় আমার বাণী রা’ হারায়।।

বাণী

ঘুম টুটেছে ফুল-কলিদের রঙ লেগেছে ফুলবনে।
দখিনা বাতাস আভাসে জানায় আগমনী তার মোর মনে।।
	মন উচাটন, মনে রয় না রয় না
	তার বিনা, কথা আর, কয় না কয় না,
নয়নে ঘুম আর সয় না সয় না — শুধাই তা’র কথা জনে জনে।।
রাঙা রঙের ছোঁয়া লাগে লাজ-রাঙা মোর মনে।
নিশীথ-রাতে পলাশ-বনে মিল্‌ব কি বঁধুর সনে।।

বাণী

	মায়ের চেয়েও শান্তিময়ী মিষ্টি বেশি মেয়ের চেয়ে
	চঞ্চলা এই লীলাময়ী মুক্তকেশী কালো মেয়ে।।
সে	মিষ্টি যত দুষ্টু তত এই কালো মেয়ে
	গিরিঝর্ণা সম এলো ধেয়ে এই পাবর্তী মেয়ে
	করুণা অমৃত ধারায় ভুবন ছেয়ে এলো এই কালো মেয়ে।।
	মাকে চোখে চোখে রাখি
	যদি কভু দেয় সে ফাঁকি
	আমি ভয়ে ভয়ে থাকি গো
	এই মায়াময়ী মেয়ে নিয়ে ভয়ে ভয়ে থাকি গো।
আমি	বহু সাধ্য-সাধনাতে পেয়েছি এই মা-কে রে
	কোটি জনম তপস্যাতে পেয়েছি এই মা-কে রে
	কোথায় রাখি, আমি কাঙালিনী
	কোথায় রাখি স্বর্গের এই রত্ন পেয়ে
আমি	কোথায় রাখি স্বর্গের এই রত্ন পেয়ে।।

বাণী

তুমি	এলে কে গো চির-সাথী অবেলাতে
যবে	ঝুরিছে সন্ধ্যামণি আঙিনাতে।
ওগো	কে এলে গো চির-সাথী অবেলাতে।।
	রোদের দাহে এলে স্নিগ্ধ-বাস ফুল-রেণু
	নিঝুম প্রাণে এলে বাজায়ে ব্যাকুল বেণু
ওগো	চাঁদের তিলক এলে আঁধার রাতে।
ওগো	কে এলে গো চির-সাথী অবেলাতে।।
	ফুল ঝরার বেলা এলে মোর শেষ অতিথি
	কাঁদে হা হা স্বরে রিক্ত কানন-বীথি।
	এলে রে মরুভূমে পিয়াসি চকোর মোর
	শুক্লাতিথির শেষে কাঁদিতে এলে চকোর।
(তুমি)	আসিলে জীবন-সাঁঝে ঘুম ভাঙাতে।
ওগো	কে এলে গো চির সাথী অবেলাতে।।

বাণী

ঘর ছাড়াকে বাঁধতে এলি কে মা অশ্রুমতী!
লীলাময়ী মহামায়া দাক্ষায়ণী সতী।।
	কে মাগো তুই কার দুলালী
	যোগীন্দ্রেরও যোগ ভুলালি,
তোর ছোঁওয়াতে স্নিগ্ধ হ’ল শিবের তপের জ্যোতি।।
সৃষ্টিরে তোর বাঁচাতে মা করিস্ কতই রঙ্গ,
তোর মায়াতে শঙ্করেরও ধ্যান হ’ল তাই ভঙ্গ।
	শুদ্ধ শিবে মুগ্ধ ক’রে
	চঞ্চলা তুই গেলি স’রে,
হরের যদি জ্ঞান হরিস্ মা মোদের কোথায় গতি।
আমরা যে তোর মায়ায় অন্ধ জীবন দুর্বল মতি —
		ওমা কোথায় মোদের গতি।।

‘সতী’

বাণী

এলো শিবানী-উমা এলো এলোকেশে।
এলো রে মহামায়া দনুজদলনী বেশে।।
এলো আনন্দিনী গিরি-নন্দিনী
রবে না কেহ আর বন্দী-বন্দিনী,
শক্তি প্রবাহ বহিল মৃতদেশে।।
এলো রে বরাভয়া ভয় হরিতে,
শ্মশান কঙ্কালে বজ্র গড়িতে।
এলো মা অন্নদা, আয় রে ভিখারি
বর চেয়ে নে যার যে অধিকারী
মুক্তি বন্যায় ভারত যাক্ ভেসে।।