বাণী

যবে		তুলসীতলায় প্রিয় সন্ধ্যাবেলায় তুমি করিবে প্রণাম,
তব		দেবতার নাম নিতে ভুলিয়া বারেক প্রিয় নিও মোর নাম।।
		একদা এমনি এক গোধূলি বেলা
		যেতেছিলে মন্দির-পথে একেলা,
		জানি না কাহার ভুল তোমার পূজার ফুল
				আমি লইলাম —
সেই		দেউলের পথ সেই ফুলেরই শপথ
প্রিয়,		তুমি ভুলিলে হায় আমি ভুলিলাম।।
		পথের দুঁধারে সেই কুসুম ফোটে — হায় এরা ভোলেনি,
		বেঁধেছিলে তরু শাখে লতার যে ডোর হের আজো খোলেনি।
		একদা যে নীল নভে উঠেছিল চাঁদ
ছিল		অসীম আকাশ ভরা অনন্ত সাধ,
আজি		অশ্রু-বাদল সেথা ঝরে অবিরাম।।

বাণী

ওগো	চৈতী রাতের চাঁদ, যেয়ো না
	সাধ না মিটিতে যেতে চেয়ো না।।
হের	তরুলতায় কত আশার মুকুল,
ওগো	মাধবী-চাঁদ আজো ফোটেনি ফুল,
তুমি	যেয়ো না, প্রিয় যেয়ো না —
ঝরা	মুকুলে বনবীথি ছেয়ো না
তুমি	যেয়ো না, প্রিয় যেয়ো না, ওগো যেয়ো না।।
আজো	ফুলের নেশায় পাগল দখিন হাওয়া
আজো	বোলেনি পাপিয়া 'পিয়া পিয়া' গাওয়া
তুমি	এখনি বিদায়-গীতি গেয়ো না
তুমি	যেয়ো না, প্রিয় যেয়ো না।।

বাণী

ঝুলে কদমকে ডারকে ঝুলনা পে কিশোরী কিশোর।
দেখে দোউ এক এককে মুখকো চন্দ্রমা চকোর,
য্যায়সে চন্দ্রমা চকোর হোকে প্রেম নেশা বিভোর।।
মেঘ মৃদং বাজে ওহি ঝুলনাকে ছন্দ্‌ মে
রিম্‌ঝিম্‌ বাদর বরসে আনন্দ্‌ মে,
দেখনে যুগল শ্রীমুখ চন্দকো গগন ঘেরি ঘনঘটা ঘোর।।
নব নীর বরসনে কো চাতকিনী চায়
ওয়সে গোপী ঘনশ্যাম দেখ তৃষ্ণা মিটায়,
সব দেবদেবী বন্দনা গীত গায় — 
ঝরে বরসামে ত্রিভুবনকি প্রেমাশ্রুলোর।।

বাণী

আয় ঘুম আয়!
সাপিনীর দংশনে যেমন অবশ তনু —
তেমনি ঢলিয়া পড় মায়া-নিদ্রায়।।
সংসার অহিফেন বিষ পিয়ে হায়
যেমন অচেতন জীব অসাড়ে ঘুমায়,
যেমন পাতাল তলে ঘুমায় দৈত্যদলে
তেমনি ঘুমাও জড় পাষাণের প্রায়।।

নাট্যগীতি : ‘দেবী দুর্গা’

বাণী

দুলে চরাচর হিন্দোল-দোলে
বিশ্বরমা দোলে বিশ্বপতি-কোলে।।
গগনে রবি-শশী গ্রহ-তারা দুলে,
তড়িত-দোলনাতে মেঘ ঝুলন ঝুলে।
	বরিষা-শত-নরী
	দুলিছে মরি মরি,
	দুলে বাদল-পরী
		কেতকী-বেণী খোলে।।
নদী-মেঘলা দোলে, দোলে নটিনী ধরা,
দুলে আলোক নভ-চন্দ্রাতপ ভরা।
করিয়া জড়াজড়ি দোলে দিবস-নিশা,
দোলে বিরহ-বারি, দোলে মিলন-তৃষা।
	উমারে লয়ে বু’কে
	শিব দুলিছে সুখে,
	দোলে অপরূপ
		রূপ-লহর তোলে।।

বাণী

ওরে ও-স্রোতের ফুল!
ভেসে ভেসে হায় এলি অসহায় কোথায় পথ-বেভুল।।
	কোল্ খালি ক’রে কোন্ লতিকার
	নিভাইয়া নয়নের জ্যোতি কা’র,
বনের কুকুম অকূল পাথারে খুঁজিয়া ফিরিস্ কূল।।
ভবনের স্নেহ নারিল রাখিতে ঠেলে ফেলে দিল যা’রে,
সারা ভুবনের স্নেহ কি কখনো তাহারে ধরিতে পারে।
	জল নয়, তোর জননী যে ভুঁই
	অভিমানী! সেথা চল্ ফিরে তুই,
ধূলিতেও যদি ঝরিস্ সেথায় স্বর্গ সেই অতুল।।