কাহার্‌বা

  • বিধুর তব অধর-কোণে মধুর হাসির রেখা

    বাণী

    বিধুর তব অধর-কোণে মধুর হাসির রেখা।
    তারি লাগি' ভিখারি মন ফেরে একা একা।।
    সজাগ হয়ে আছে শ্রবণ, থির হয়েছে অধীর পবন।
    তুমি কথা কইবে কখন গাইবে কুহু কেকা।।
    কখন তুমি চাইবে, প্রিয়া, সলাজ অনুরাগে।
    তিমির-তীরে অরুণ ঊষা তারি আশায় জাগে।
    কেমন ক'রে চাঁদ যে টানে — সিন্ধু জানে, জোয়ার জানে —
    দেখিতে আসি, আসিনিকো দিতে তোমায় দেখা।।
    

    নাটক: ‌‘চক্রব্যূহ’

  • বিরহের অশ্রু সায়রে বেদনার শতদল

    বাণী

    বিরহের অশ্রু সায়রে বেদনার শতদল
    উদাসী অশান্ত বায়ে টলে টলমল টলমল।।
    	তব রাঙা পদতলে, প্রিয়
    	এই শতদলে রাখিয়ো,
    বাজাইও মধুকর বীণা অনুরাগ-চঞ্চল।।
    ঝড় এলো, এলো এলায়ে মেঘের কুন্তল
    তুমি কোথায়, হায়, নিরাশায় ঝরে কমল-দল।
    	কেমনে কাটে তব বেলা
    	কোথা কোন লোকে একেলা;
    দুই কূলে  দুই জন কাঁদি, মাঝে নদী ছলছল।।
    
  • বৃজমে আজ স্যখি ধূম ম্যচাও

    বাণী

    বৃজমে আজ স্যখি ধূম ম্যচাও
    অওরী বৃজবালা ম্যঙ্গল গাও।।
    গুঁথো স্যখিরি স্যব কুসুম-মালা
    দেখ্যন কো চ্যলো নন্দকে লালা
    বৃজকে ঘ্যর ঘ্যর হর‍্যষ মানাও।।
    

    নাটিকাঃ ‘জন্মষ্টমী’

  • বেণুকার বনে কাঁদে বাতাস বিধুর

    বাণী

    বেণুকার বনে কাঁদে বাতাস বিধুর —
    সে আমারি গান, প্রিয় সে আমারি সুর॥
    হলুদ চাঁপার ডালে সহসা নিশীথ কালে
    ডেকে ওঠে সাথি হারা পাখি ব্যথাতুর॥
    নদীর ভাটির স্রোতে শ্রান্ত সাঁঝে
    অশ্রু জড়িত মোর সুর যে বাজে।
    সে সুরের আভাসে আঁখিপুরে জল আসে,
    মনে পড়ে চলে-যাওয়া প্রিয়রে সুদূর॥
    

  • বেদিয়া বেদিনী ছুটে আয়

    বাণী

    বেদিয়া বেদিনী ছুটে আয়,আয়,আয়
    ধাতিনা ধাতিনা তিনা ঢোলক মাদল বাজে
    	বাঁশিতে পরান মাতায়।।
    দলে দলে নেচে নেচে আয় চলে
    আকাশের শামিয়ানা তলে
    বর্শা তীর ধনুক ফেলে আয় আয় রে
    	হাড়ের নূপুর প'রে পায়।।
    বাঘ-ছাল প'রে আয় হৃদয়-বনের শিকারি
    ঘাগরা প'রে প'রে পলার মালা আয় বেদের নারী
    মহুয়ার মধু পিয়ে ধুতুরা ফুলের পিয়ালায়।।
    

  • বেল ফুল এনে দাও চাই না বকুল

    বাণী

    বেল ফুল এনে দাও চাই না বকুল
    চাই না হেনা, আনো আমের মুকুল।।
    গোলাপ বড় গরবী এনে দাও করবী
    চাইতে যূথী আন টগর — কি ভুল।।
    কি হবে কেয়া, দেয়া নাই গগনে;
    আনো সন্ধ্যামালতী গোধূলি-লগনে।
    গিরি-মল্লিকা কই’ চামেলি পেয়েছে সই
    চাঁপা এনে দাও, নয় বাঁধব না চুল।।
    
  • বেলা গেল সন্ধ্যা হ’ল

    বাণী

    বেলা গেল সন্ধ্যা হ’ল, (ওরে) এখন খোল আঁখি।
    তুই সোনার খনির কাছে এসে ফিরলি ধূলা-মাখি।।
    	এ সংসারের সার ছেড়ে তুই
    	সং সেজে হায়, বেড়াস নিতুই,
    যে তোরে ধন-রত্ন দিলো তারেই দিলি ফাঁকি।।
    ভুলে রইলি যাদের নিয়ে, তাদের পেলি কোথা হতে,
    তোর যাবার বেলায় কেউ কি সাথি হবে রে তোর পথে।
    	এখনো তুই ডাক একবার
    	নাইরে সীমা তাহার দয়ার,
    সে-ই করবে ক্ষমা, ঘুম পাড়াবে শীতল বুকে রাখি।।
    
  • বেসুর বীণায় ব্যথার সুরে

    বাণী

    বেসুর বীণায়	ব্যথার সুরে বাঁধ্‌ব গো
    পাষাণ-বুকে		নিঝর হয়ে কাঁদব গো।।
    কুলের কাঁটায়	স্বর্ণলতার দুল্‌ব হার,
    ফণীর ডেরায়	কেয়ার কানন ফাঁদ্‌ব গো।।
    ব্যাধের হাতে	শুনব সাধের বঙশী-সুর,
    আস্‌লে মরণ	চরণ ধ’রে সাধব গো।।
    
  • বৈকালী সুরে গাও চৈতালি গান

    বাণী

    বৈকালী সুরে গাও চৈতালি গান, বসন্ত হয় অবসান।
    নহবতে বাজে সকরুণ মূলতান।।
    নীরব আনমনা পিক চেয়ে আছে দূরে অনিমিখ
    ধূলি-ধূসর হলো দিক আসে বৈশাখ অভিযান।।
    চম্পা-মালা রবমলিন লুটায় ফুল-ঝরা বন-বীথিকায়,
    ঢেলে দাও সঞ্চিত প্রাণের মধু-যৌবন দেবতার পায়।
    অনন্ত বিরহ-ব্যথায় ক্ষণিকের মিলন হেথায়
    ফিরে নাহি আসে যাহা যায়-নিমেষের মধুতর গান।।
    
  • ব্যথার আগুনে হৃদয় আমার

    বাণী

    ব্যথার আগুনে হৃদয় আমার
    		জ্বলিছে দিবস রাতি গো।
    কাঁদিতে আসিলে এ তনু শ্মশানে
    		কে তুমি ব্যথার ব্যথী গো॥
    মুছিয়া গিয়াছে চন্দনের লেখা
    খুলে শুকাইয়া গিয়াছে মন্দারের মালা
    নিভেছে আশা দীপ আজি অবেলায়
    		কে তুমি রাতের সাথি গো॥
    

  • ব্যথিত প্রাণে দানো শান্তি

    বাণী

    ব্যথিত প্রাণে দানো শান্তি, চিরন্তন, ধ্রুব-জ্যোতি।
    দুখ-তাপ-পীড়িত-শোকার্ত এই চিত যাচে তব সান্ত্বনা ত্রিভুবন-পতি।।
    বেদনা যাতনা ক্লেশ মুক্ত কর, বিপদ নিবার, সব বিঘ্ন হর,
    আঁধার পথে তুমি হাত ধরো, প্রভু অগতির গতি।।
    সকল গ্লানি হতে হে নাথ বাঁচাও, চিত্তে অটল প্রসন্নতা দাও
    যেন সুখে ও দুখে সদানন্দে থাকি, অবিচল থাকে যেন তব পদে মতি।।
    
  • ব্রজগোপী খেলে হোরী

    বাণী

    ব্রজ–গোপী খেলে হোরী
    খেলে আনন্দ নবঘন শ্যাম সাথে।
    রাঙা অধরে ঝরে হাসির কুম্‌কুম্‌
    অনুরাগ–আবীর নয়ন–পাতে।।
    পিরীতি–ফাগ মাখা গোরীর সঙ্গে
    হোরি খেলে হরি উন্মাদ রঙ্গে।
    বসন্তে এ কোন্ কিশোর দুরন্ত
    রাধারে জিনিতে এলো পিচ্‌কারী হাতে।।
    গোপীনীরা হানে অপাঙ্গ খর শর ভ্রুকুটি ভঙ্গ
    অনঙ্গ আবেশে জর জর থর থর শ্যামের অঙ্গ।
    শ্যামল তনুতে হরিত কুঞ্জে
    অশোক ফুটেছে যেন পুঞ্জে পুঞ্জে
    রঙ–পিয়াসি মন ভ্রমর গুঞ্জে
    ঢালো আরো ঢালো রঙ প্রেম–যমুনাতে।।
    
  • ব্রজপুর-চন্দ্র পরমসুন্দর কিশোর লীলা-বিলাসী

    বাণী

    ব্রজপুর-চন্দ্র পরমসুন্দর, কিশোর লীলা-বিলাসী
    	সখি গো, আমি তা’রই চিরদাসী।
    অমৃত-রস-ঘন শ্যামল শোভন, প্রেম-বৃন্দাবন-বাসী॥
    	চাঁচর চিকুরে শিখী-পাখা যার,
    	গলে দোলে বন-কুসুম হার
    ললাটে তিলক, কপোলে অলক অধরে মৃদু মৃদু হাসি॥
    	মকর কুন্ডল দোলে শ্রবণে,
    	বোলে মণি-মঞ্জরি রাতুল চরণে
    চির অশান্ত, চপল কান্ত বিশ্ব সে রূপ-পিয়াসি॥
    	বক্ষে শ্রীবৎস কৌস্তুভ শোভে,
    	করে মুরলী ভোলে মধুর রবে,
    পীত বসনধারী সেই মাধবে যেন যুগে যুগে ভালবাসি॥
    
  • ভালোবাসায় বাঁধব বাসা

    বাণী

    উভয়ে	: 	ভালোবাসায় বাঁধব বাসা
    			আমরা দু'টি মাণিক-জোড়।
    			থাকব বাঁধা পাখায় পাখায়
    			মাখামাখি প্রেম-বিভোর।। 
    পুরুষ		:	আমার বুকে যত মধু
    স্ত্রী		:	আমার বুকে ঢালবে বঁধু
    পুরুষ		:	আমি 	কাঁদব যখন দুখে
    স্ত্রী		:	আমি 	মুছাব সে নয়ন-লোর।।
    পুরুষ		:	আমি	যদি কভু মনের ভুলে
    				তোমায় প্রিয় থাকি ভুলে,
    স্ত্রী		:	আমি	রইব তাতেই ফুলের মালায়
    			লুকিয়ে যেমন থাকে ডোর।
    উভয়ে	:	মোরা	নীল গগনের নীল স্বপনে
    			চির-কালের চাঁদ-চকোর।। 
    
  • ভুবনময়ী ভবনে এসো

    বাণী

    ভুবনময়ী ভবনে এসো সীমার মাঝে এসো অসীমা।
    ভক্ত মনের মাধুরী দিয়ে গড়িয়াছি মা তোমার প্রতিমা।।
    	চিন্ময়ী গো ধর মৃন্ময়ীরূপ
    	কত যুগ মাগো জ্বলিবে পূজাধূপ
    মানসপটে বোধন ঘটে হও চির আসীনা করুণাময়ী মা।।
    সে কোন অতীতে সুদূর ত্রেতায় এসেছিলে মা অশিব নাশিনী
    আসিলে না আর ধূলির ধরায় দিলে না মা বর অমৃত ভাষিণী।
    	কত যুগ গেল কত বরষ মাস
    	কত বিফল পূজা কত কাঁদন হুতাশ
    জাগ যোগমায়া যোগনিদ্রা ভোল পুন বিশ্বে প্রচার হোক্‌ তব মহিমা।।
    
  • ভুল করিলে বনমালী এসে বনে ফুল-ফোটাতে

    বাণী

    ভুল করিলে বনমালী এসে বনে ফুল-ফোটাতে।
    বুলবুলি সে ফুলও ফোটায় বন-মাতানোর সাথে সাথে।।
    		আঘাত দিলে, দিলে বেদন
    		রাঙাতে হায় পারলে না মন,
    প্রেমের কুঁড়ি ফুটলো না তাই, পড়লো ঝ’রে নিরাশাতে।।
    আমায় তুমি দেখলে নাকো, দেখলে আমার রূপের মেলা
    হায় রে দেহের শ্মশান-চারী, শব নিয়ে মোর করলে খেলা,
    শয়ন-সাথী হ’লে আমার, রইলে নাকো নয়ন-পাতে।।
    

    গজলের সুরে কৃষ্ঞপ্রেম

  • ভুলে রইলি মায়ায় এসে ভবে

    বাণী

    দ্বৈত	:	ভুলে রইলি মায়ায় এসে ভবে
    		তুই ভুলবি ভুলের খেলা কবে॥
    স্ত্রী	:	নিবু নিবু তোর জীবন-বাতি শেষ হলো সুখ-রাতি,
    পুরুষ	:	রাত পোহালে সুখের সাথী সঙ্গে নাহি রবি॥
    স্ত্রী	:	যাঁর কৃপায় তুই রইলি সুখে ডাক্‌লি না রে তারে
    পুরুষ	:	তুই কি নিয়ে হায় তাহার কাছে যাবি পরপারে।
    স্ত্রী	:	জমালি যা তুই জীবন ভ’রে পিছু প’ড়ে রবে
    পুরুষ	:	দারাসুত লবে বিভব রতন পাপের বোঝা নাহি লবে॥
    স্ত্রী	:	স্রোতের মতো সময যে যায় নিয়ে শরণ প্রভুর পায়
    পুরুষ	:	কৃপা-সিন্ধুর কৃপা পেলে ত’রে যাবি তুই তবে॥
    
  • ভেসে আসে সুদূর স্মৃতির সুরভি

    বাণী

    ভেসে আসে সুদূর স্মৃতির সুরভি হায় সন্ধ্যায়
    রহি’ রহি’ কাঁদি’ ওঠে সকরুণ পূরবী, আমারে কাঁদায়।।
    কা’রা যেন এসেছিল, এসে ভালোবেসেছিল।
    ম্লান হ’য়ে আসে মনে তাহাদের সে-ছবি, পথের ধুলায়।।
    কেহ গেল দ’লে – কেহ ছ’লে, কেহ গলিয়া নয়ন নীরে
    যে গেল সে জনমের মত গেল চলিয়া এলো না, এলো না ফিরে।
    কেহ দুখ দিয়া গেল কেহ ব্যথা নিয়া গেল
    কেহ সুধা পিয়া গেল কেহ বিষ করবী তাহারা কোথায় আজ
    				তাহারা কোথায়।।
    
  • ভেসে যায় হৃদয় আমার মদিনা পানে

    বাণী

    ভেসে যায় হৃদয় আমার মদিনা পানে।
    আসিলেন রসুলে-খোদা প্রথম যেখানে।।
    উঠিল যেখানে রণি’, প্রথম তকবির ধ্বনি
    লভিনু মণির খনি যথায় কোরানে।।
    যথা হেরা গুহার আঁধারে প্রথম
    ইসলামের জ্যোতি লভিল জনম,
    করে অঝোর ধারায় যথা খোদার রহম,
    ভাসিল নিখিল ভুবন যাহার তুফানে।।
    লাখো আম্বিয়া আউলিয়া বাদশা ফকির
    যথা যুগে যুগে আসি’করিল ভিড়
    তারি ধূলাতে লুটাবো আমি নোয়া’ব শির;
    নিশিদিন শুনি তাঁরি ডাক আমার পরানে।।
    
  • ভোর হোল ওঠ্ জাগ্ মুসাফির

    বাণী

    ভোর হোল ওঠ্ জাগ্ মুসাফির আল্লা-রসুল বোল্‌
    গাফ্‌লিয়াতি ভোল্ রে অলস্ আয়েশ আরাম্ ভোল্॥
    	এই দুনিয়ার সরাইখানায়
    	জনম্ গেল ঘুমিয়ে হায়
    ওঠ রে সুখ-শয্যা ছেড়ে মায়ার বাঁধন খোল্॥
    দিন ফুরিয়ে এলো যে রে দিনে দিনে তোর
    দীনের কাজে অবহেলা কর্‌লি জীবন ভোর।
    	যে দিন আজো আছে বাকি
    	খোদারে তুই দিস্‌নে ফাঁকি
    আখেরে পার হবি যদি পুল্ সেরাতের পোল্॥