কাহার্‌বা

  • নূরজাহান! নূরজাহান!

    বাণী

    নূরজাহান, নূরজাহান!
    সিন্ধু নদীতে ভেসে,
    এলে মেঘলামতীর দেশে, ইরানি গুলিস্তান।।
    নার্গিস লালা গোলাপ আঙ্গুর–লতা
    শিঁরি ফরহাদ সিরাজের উপকথা
    এনেছিলে তুমি তনুর পেয়ালা ভরি’
    বুলবুলি দিলরুবা রবাবের গান।।
    তব প্রেমে উন্মাদ ভুলিল সেলিম, সে যে রাজাধিরাজ –
    চন্দন সম মাখিল অঙ্গে কলঙ্ক লোক–লাজ।
    যে কলঙ্ক লয়ে হাসে চাঁদ নীল আকাশে,
    যাহা লেখা থাকে শুধু প্রেমিকের ইতিহাসে,
    দেবে চিরদিন নন্দন–লোক–চারী
    তব সেই কলঙ্ক সে প্রেমের সম্মান।।
    

    সঙ্গীতালেখ্য : ‌‘পঞ্চাঙ্গনা’

  • নূরের দরিয়ায় সিনান করিয়া

    বাণী

    নূরের দরিয়ায় সিনান করিয়া কে এলো মক্কায় আমিনার কোলে
    ফাগুন-পূর্ণিমা-নিশীথে যেমন আস্‌মানের কোলে রাঙা চাঁদ দোলে।।
    	কে এলো কে এলো গাহে কোয়েলিয়া,
    	পাপিয়া বুল্‌বুল্‌ উঠিল মাতিয়া,
    গ্রহতারা ঝুঁকে করিছে কুর্নিশ হুরপরী হেসে পড়িছে ঢ’লে।।
    	জিন্নাতের আজ খোলা দরওয়াজা পেয়ে
    	ফেরেশ্‌তা আম্বিয়া এসেছে ধেঁয়ে
    	তাহ্‌রীমা বেঁধে ঘোরে দরুদ গেয়ে
    	দুনিয়া টলমল্‌, খোদার আরশ টলে।।
    	এলো রে চির-চাওয়া এলো আখেরি নবী
    	সৈয়দে মক্কী মদনী আল্‌-আরবি,
    	নাজেল হয়ে সে যে ইয়াকুত-রাঙা ঠোঁটে
    	শাহ্‌দতের বাণী আধো আধো বোলে।।
    

  • প’রো প’রো চৈতালি-সাঁজে কুস্‌মি শাড়ি

    বাণী

    প’রো প’রো চৈতালি-সাঁজে কুস্‌মি শাড়ি।
    আজি তোমার রূপের সাথে চাঁদের আড়ি॥
    প’রো ললাটে কাঁচপোকার টিপ,
    তুমি আলতা প’রো পায়ে হৃদি নিঙাড়ি’॥
    প্রজাপতির ডানা-ঝরা সোনার টোপাতে,
    ভাঙা ভুরু জোড়া দিও বাতুল শোভাতে।
    বেল-যূথিকার গ’ড়ে মালা প’রো খোঁপাতে
    দিও উত্তরীয় শিউলি-বোঁটার রঙে ছোপাতে,
    রাঙা সাঁঝের সতিনী তুমি রূপ-কুমারী॥
    
  • পথ চলিতে যদি চকিতে

    বাণী

    পথ চলিতে যদি চকিতে কভু দেখা হয়, পরান-প্রিয়!
    চাহিতে যেমন আগের দিনে তেমনি মদির চোখে চাহিও।।
    		যদি গো সেদিন চোখে আসে জল,
    		লুকাতে সে জল করিও না ছল,
    যে-প্রিয় নামে ডাকিতে মোরে সে-নাম ধরে বারেক ডাকিও।।
    		তোমার বঁধু পাশে (হায়) যদি রয়,
    		মোরও প্রিয় সে, করিও না ভয়,
    কহিব তা’রে, ‘আমার প্রিয়ারে আমারো অধিক ভালোবাসিও’।।‌
    		বিরহ-বিধুর মোরে হেরিয়া,
    		ব্যথা যদি পাও যাব সরিয়া,
    রব না হ’য়ে পথের কাঁটা, মাগিব এ বর মোরে ভুলিও।।
    

  • পথহারা পাখি কেঁদে ফিরে একা

    বাণী

    পথহারা পাখি কেঁদে ফিরে একা
    আমার জীবনে শুধু আঁধারের লেখা।।
    বাহিরে অন্তরে ঝড় উঠিয়াছে
    আশ্রয় যাচি হায় কাহার কাছে
    	বুঝি দুখ-নিশি মোর
    	হবে না হবে না ভোর
    ফুটিবে না আশার আলোক রেখা।।
    

    নাটকঃ ‘সিরাজদ্দৌলা’

  • পথিক বন্ধু এসো এসো পাপড়ি ছাওয়া পথ বেয়ে

    বাণী

    পথিক বন্ধু এসো এসো পাপড়ি ছাওয়া পথ বেয়ে।
    মন হয়েছে উতলা গো তোমার আসার পথ চেয়ে।।
    	আকাশ জুড়ে আলোর খেলা
    	বসুন্ধরায় ফুলের মেলা
    রঙিন মেঘের ভাসলো ভেলা তোমারই আসার আভাস পেয়ে।।
    সাধ জাগে ঐ পথে তোমার পেতে রাখি মন প্রাণ
    চলতে গিয়ে দলবে তা’রে চরণ ছোঁয়া করিবে দান।
    	তোমার ধ্যানে, হে রাজাধিরাজ
    	সাজ ভুলেছি ভুলেছি কাজ
    আসবে তুমি সেই খুশিতে আছে আমার মন ছেয়ে।।
    
  • পথে পথে কে বাজিয়ে চলে বাঁশি

    বাণী

    পথে পথে কে বাজিয়ে চলে বাঁশি
    হ’ল বিশ্ব-রাধা ঐ সুরে উদাসী।।
    শুনে ঐ রাখালের বেণু
    আসে ছুটে আলোক-ধেনু,
    ঐ নীল গগনে রাঙা মেঘে ওড়ে গো-খুর রেণু,
    ওসে শ্যাম-পিয়ারী গোপ-ঝিয়ারি গ্রহ তারার রাশি।।
    	সেই বাঁশির অন্বেষণে
    	যত মন-বধু যায় বনে,
    তাদের প্রেম যমুনায় বান ডেকে যায় কুল খোয়ায় গোপনে।
    তারা রাস দেউলে রসের বাউল আনন্দ-ব্রজবাসী।।
    
  • পরজনমে যদি আসি এ ধরায়

    বাণী

    পরজনমে যদি আসি এ ধরায়।
    ক্ষণিক বসন্ত যেন না ফুরায়॥
    মিলনে নাহি যেন রহে অবসাদ১
    ক্ষয় নাহি হয় যেন চৈতালি-চাঁদ,
    কণ্ঠ-লগ্ন মোর প্রিয়ার বাহু
    খুলিয়া২ না পড়ে যেন, নিশি না পোহায়॥
    বাসি নাহি হয় যেন রাতের মালা,
    ভরা থাকে যৌবন-রস-পেয়ালা।
    জীবনে না রহে যেন মরণ-স্মৃতি
    পুরাতন নাহি হয় প্রেম-প্রীতি,
    রবে অভিমান রহিবে না বিরহ,
    ফিরে যেন আসে প্রিয়া মাগিয়া বিদায়॥
    

    ১. মিলনে যেন নাহি আসে অবসাদ, ২. ঢলিয়া

  • পরদেশী বঁধু ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি

    বাণী

    পরদেশী বঁধু! ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি
    যদি গো নিশীথে গো ঘুমাইয়া থাকি।
    	আমি ঘুমাইয়া থাকি
    	ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি।।
    যদি দীপ নেভে গো কুটিরে
    বাতায়ন-পানে চাহি' যেয়ো না গো ফিরে',
    নিভেছে আঁখি শিখা প্রাণ আছে বাকি
    	আজো প্রাণ আছে বাকি
    	ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি।।
    
  • পরি জাফরানি ঘাগরি চলে শিরাজের পরী

    বাণী

    পরি’ জাফরানি ঘাগরি চলে শিরাজের পরী
    ইরানি কিশোরী হেসে’ হেসে’।।
    চপল চটুল রঙ্গে রঙ্গিলা নৃত্য বিভঙ্গে
    চলিছে সহেলি এলোকেশে।।
    পাপিয়া পিয়া পিয়া ডকে শাখে — পিয়া পিয়া পিয়া পিয়া
    কাহারে ভালোবেসে।।
    মনে সে শিরাজির নেশা লাগায়
    আঁখি-ইঙ্গিতে গোলাপ ফোটায়।
    তারি সুরে রহি’ রহি’ বিরহীর রবাব ঝুরে
    বুলবুলি পথ ভুলি’ ইহারি লাগি’ এলো এ দেশে।।
    
  • পলাশ ফুলের গেলাস ভরি

    বাণী

    পলাশ ফুলের গেলাস ভরি’ পিয়াব অমিয়া তোমারে প্রিয়া
    চাঁদিনী রাতের চাঁদোয়া তলে বুকের আঁচল দিব পাতিয়া।।
    নয়ন-মণির মুকুরে তোমার দুলিবে আমার সজল ছবি
    সবুজ ঘাসের শিশির ছানি মুকুতা মালিকা দিব গাঁথিয়া।।
    		ফিরোজা আকাশ আবেশে ঝিমায়
    		দীঘির বুকে কমল ঘুমায়
    নীরব যখন পাখির কূজন আমরা দু’জন রব জাগিয়া।।
    
  • পলাশ-মঞ্জরি পরায়ে দে লো মঞ্জুলিকা

    বাণী

    পলাশ-মঞ্জরি পরায়ে দে লো মঞ্জুলিকা
    আজি রসিয়ার রাসে হবো আমি নায়িকা লো মঞ্জুলিকা।।
    কৃষ্ণচূড়ার সাথে রঙ্গনে অশোকে
    বুলালো রঙের মোহন তুলিকা লো মঞ্জুলিকা।।
    	মাদার শিমুল ফুলে
    	রঙিন পতাকা দোলে
    জ্বলিছে মনে মনে আগুন শিখা লো মঞ্জুলিকা।।
    
  • পল্লু ছোড়ো সাজান ঘর যানা

    বাণী

    পল্লু ছোড়ো সাজান ঘর যানা রে
    জারা ন্যায়নো সে ন্যায়না মিলানা রে।
    মাটি পরে শরাবো সে পিনেসে গাগারিয়া
    সুবাহ হো গ্যায়ি করুঁ কিয়া বাহানা রে।।
    বড়া পেয়ার হ্যায় তু্নে পানঘাটসে আনে কা
    জারা ধীরে সে বীণ বাজানা রে।।
    সাড়ি তেরি হ্যায় পল রাঙ্গীন আঁখিয়া টুটেগা
    জারা সিনে সে আঁচাল হাঠানা রে।।
    
  • পিও পিও হে প্রিয় শরাব পিও

    বাণী

    	পিও পিও হে প্রিয় শরাব পিও
    	চোখে রঙের নেশা লেগে সব অবসাদ হোক রমনীয়।।
    	জীবনের নহবতে বাজুক সানাই
    	আঁধার এ দুনিয়ায় জ্বলুক রোশনাই
    আজি	আবছা আলোয় যারে লাগবে ভালো
    	তারি গলায় চাঁদের মালা পরায়ে দিও।।
    আজি	লেগে অনুরাগে রঙ শিরাজির
    	প্রাণে প্রাণে লহর বহুক রস-নদীর
    সেই	মধুর ক্ষনে বঁধু নিরজনে
    	ভালোবাসি' দুটি কথা মোরে বলিও।।
    
  • পিয়া গেছে কবে পরদেশ

    বাণী

    পিয়া গেছে কবে পরদেশ পিউ কাঁহা ডাকে পাপিয়া,
    দোয়েল শ্যামার শিসে তারি হুতাশ উঠিছে ছাপিয়া।।
    	পাতারি আড়ালে মুখ ঢাকি'
    	মুহুমুহু কুহু ওঠে ডাকি,
    বাজে ধ্বনি তারি উহু উহু বিরহী পরাণ ব্যাপিয়া।।
    	'বউ কথা কও' পাখি ডাকে —
    	কেন মনে প'ড়ে যায় তাকে,
    কথা কও বউ — ডাকিত সে মোরে, নিশীথ উঠিত কাঁপিয়া।।
    
  • পিয়া পিয়া পিয়া পাপিয়া পুকারে

    বাণী

    পিয়া পিয়া পিয়া পাপিয়া পুকারে।
    চোখ গেল বিরহিণীর বধূর মনের কথা —
    	কাঁদিয়া বেড়ায় বাদল-আঁধারে॥
    প্রথম বিরহ অল্প-বয়সী
    ভুলি’ গৃহকাজ রহে বাতায়নে বসি’,
    পাখির পিয়া-স্বর বুকে তার তোলে ঝড় —  
    	অঞ্চলে আঁখি-জল মোছে বারে বারে ॥
    পরেনি বেশ, বাঁধেনি কেশ ম্লান-মুখী দীপালিকা,
    নীরব দেহে যেন শুকায়ে যায় ওগো মালতীর মালিকা।
    বনের বিহঙ্গ ছাড়ি’ বিহগীরে
    যায় না বিদেশে, রহে সুখ-নীড়ে,
    বলো কেমনে, ওগো প্রেমের বিধাতা —
    	বিরহ-দাহ সহি’ হিয়ার মাঝারে ॥
    
  • পুবান হাওয়া পশ্চিমে যাও কাবার পথে বইয়া

    বাণী

    		পুবান হাওয়া পশ্চিমে যাও কাবার পথে বইয়া
    		যাও রে বইয়া এই গরিবের সালামখানি লইয়া।।
    		কাবার জিয়ারতের আমার নাই সম্বল ভাই
    		সারা জনম সাধ ছিল যে মদিনাতে যাই (রে ভাই)
    		মিটল না সাধ, দিন গেল মোর দুনিয়ার বোঝা বইয়া।।
    (তোমার)	পানির সাথে লইয়া যাও রে আমার চোখের পানি
    		লইয়া যাও রে এই নিরাশের, দীর্ঘ নিশাসখানি।
    		নবীজীর রওজায় কাঁদিও ভাই রে আমার হইয়া।।
    		মা ফাতেমা হজরত আলীর মাজার যথায় আছে
    আমার	সালাম দিয়া আইস তাদের পায়ের কাছে (রে ভাই!)
    		কাবায় মোনাজাত করিও আমার কথা কইয়া।।
    
  • পুষ্পধনুর ইঙ্গিতে হায় হারানো

    বাণী

    পুষ্পধনুর ইঙ্গিতে হায় হারানো হিয়ার বনে,
    মন দেয়া-নেয়া খেলা চলে নিরজনে।
    মায়া-মৃগ যেন রচিত ছলনার কায়া,
    বাঁধা পড়িল নিজে? একি রে প্রেমের মায়া।।
    দু’জনে রচিত মিলন-স্বর্গ ধূলিতলে রমণীয়,
    দু’জনের কাছে বন্দী দু’জনে প্রিয়তমা আর প্রিয়।
    আঁখির মিলনে সারা দিন-যামী ক্লান্ত না হয় আঁখি,
    আঁখির কুলায় চলে গো আঁখির পাখি।
    দু’জনে কুজনে একটি গানের কলি,
    অনাহত সুরে বারে বারে যায় বলি’।।
    

    মিশ্র সুর

  • পূবালী পবনে বাঁশি বাজে রহি' রহি'

    বাণী

    পূবালী পবনে বাঁশি বাজে রহি' রহি'।
    ভবনের বধূরে ডাকে বনের বিরহী।।
    রতন হিন্দোলা নীপ ডালে বাঁধা',
    দোলে দোলে, বলে যেন 'রাধা রাধা',
    দুরু দুরু বুকে বাজে গুরু গুরু দেয়া
    কেয়া ফুল আনে সোম-সুগন্ধ বহি'।।
    চোখে মাখি সজল কাজলের ছলনা
    অভিসারিকার সাজে সাজে গোপ-ললনা।
    বৃষ্টির টিপ ফেলে ননদীর নয়নে
    কদম-কুঞ্জে চলে গোপন চরণে,
    মিলন বিরহ শোক তার বুকে
    কাঁদে 'রাধা-শ্যাম রাধা-শ্যাম' কহি।।
    
  • প্রজাপতি প্রজাপতি

    বাণী

    	প্রজাপতি! প্রজাপতি!
    কোথায় পেলে ভাই এমন রঙ্গীন পাখা,
    টুকটুকে লাল–নীল ঝিলিমিলি আঁকা–বাঁকা।।
    	তুমি টুলটুলে বন-ফুলে মধু খাও
    	মোর বন্ধু হয়ে সেই মধু দাও
    ওই পাখা দাও সোনালী –রূপালী পরাগ মাখা।।
    মোর মন যেতে চায় না পাঠশালাতে
    প্রজাপতি! তুমি নিয়ে যাও সাথী ক’রে তোমার সাথে।
    	তুমি হাওয়ায় নেচে নেচে যাও
    আজতোমার মত মোরে আনন্দ দাও
    এই জামা ভাল লাগে না, দাও জামা ছবি–আঁকা।।