কাহার্‌বা

  • পরজনমে যদি আসি এ ধরায়

    বাণী

    পরজনমে যদি আসি এ ধরায়।
    ক্ষণিক বসন্ত যেন না ফুরায়॥
    মিলনে নাহি যেন রহে অবসাদ১
    ক্ষয় নাহি হয় যেন চৈতালি-চাঁদ,
    কণ্ঠ-লগ্ন মোর প্রিয়ার বাহু
    খুলিয়া২ না পড়ে যেন, নিশি না পোহায়॥
    বাসি নাহি হয় যেন রাতের মালা,
    ভরা থাকে যৌবন-রস-পেয়ালা।
    জীবনে না রহে যেন মরণ-স্মৃতি
    পুরাতন নাহি হয় প্রেম-প্রীতি,
    রবে অভিমান রহিবে না বিরহ,
    ফিরে যেন আসে প্রিয়া মাগিয়া বিদায়॥
    

    ১. মিলনে যেন নাহি আসে অবসাদ, ২. ঢলিয়া

  • পরদেশী বঁধু ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি

    বাণী

    পরদেশী বঁধু! ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি
    যদি গো নিশীথে গো ঘুমাইয়া থাকি।
    	আমি ঘুমাইয়া থাকি
    	ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি।।
    যদি দীপ নেভে গো কুটিরে
    বাতায়ন-পানে চাহি' যেয়ো না গো ফিরে',
    নিভেছে আঁখি শিখা প্রাণ আছে বাকি
    	আজো প্রাণ আছে বাকি
    	ঘুম ভাঙায়ো চুমি' আঁখি।।
    
  • পরি জাফরানি ঘাগরি চলে শিরাজের পরী

    বাণী

    পরি’ জাফরানি ঘাগরি চলে শিরাজের পরী
    ইরানি কিশোরী হেসে’ হেসে’।।
    চপল চটুল রঙ্গে রঙ্গিলা নৃত্য বিভঙ্গে
    চলিছে সহেলি এলোকেশে।।
    পাপিয়া পিয়া পিয়া ডকে শাখে — পিয়া পিয়া পিয়া পিয়া
    কাহারে ভালোবেসে।।
    মনে সে শিরাজির নেশা লাগায়
    আঁখি-ইঙ্গিতে গোলাপ ফোটায়।
    তারি সুরে রহি’ রহি’ বিরহীর রবাব ঝুরে
    বুলবুলি পথ ভুলি’ ইহারি লাগি’ এলো এ দেশে।।
    
  • পলাশ ফুলের গেলাস ভরি

    বাণী

    পলাশ ফুলের গেলাস ভরি’ পিয়াব অমিয়া তোমারে প্রিয়া
    চাঁদিনী রাতের চাঁদোয়া তলে বুকের আঁচল দিব পাতিয়া।।
    নয়ন-মণির মুকুরে তোমার দুলিবে আমার সজল ছবি
    সবুজ ঘাসের শিশির ছানি মুকুতা মালিকা দিব গাঁথিয়া।।
    		ফিরোজা আকাশ আবেশে ঝিমায়
    		দীঘির বুকে কমল ঘুমায়
    নীরব যখন পাখির কূজন আমরা দু’জন রব জাগিয়া।।
    
  • পলাশ-মঞ্জরি পরায়ে দে লো মঞ্জুলিকা

    বাণী

    পলাশ-মঞ্জরি পরায়ে দে লো মঞ্জুলিকা
    আজি রসিয়ার রাসে হবো আমি নায়িকা লো মঞ্জুলিকা।।
    কৃষ্ণচূড়ার সাথে রঙ্গনে অশোকে
    বুলালো রঙের মোহন তুলিকা লো মঞ্জুলিকা।।
    	মাদার শিমুল ফুলে
    	রঙিন পতাকা দোলে
    জ্বলিছে মনে মনে আগুন শিখা লো মঞ্জুলিকা।।
    
  • পল্লু ছোড়ো সাজান ঘর যানা

    বাণী

    পল্লু ছোড়ো সাজান ঘর যানা রে
    জারা ন্যায়নো সে ন্যায়না মিলানা রে।
    মাটি পরে শরাবো সে পিনেসে গাগারিয়া
    সুবাহ হো গ্যায়ি করুঁ কিয়া বাহানা রে।।
    বড়া পেয়ার হ্যায় তু্নে পানঘাটসে আনে কা
    জারা ধীরে সে বীণ বাজানা রে।।
    সাড়ি তেরি হ্যায় পল রাঙ্গীন আঁখিয়া টুটেগা
    জারা সিনে সে আঁচাল হাঠানা রে।।
    
  • পিও পিও হে প্রিয় শরাব পিও

    বাণী

    	পিও পিও হে প্রিয় শরাব পিও
    	চোখে রঙের নেশা লেগে সব অবসাদ হোক রমনীয়।।
    	জীবনের নহবতে বাজুক সানাই
    	আঁধার এ দুনিয়ায় জ্বলুক রোশনাই
    আজি	আবছা আলোয় যারে লাগবে ভালো
    	তারি গলায় চাঁদের মালা পরায়ে দিও।।
    আজি	লেগে অনুরাগে রঙ শিরাজির
    	প্রাণে প্রাণে লহর বহুক রস-নদীর
    সেই	মধুর ক্ষনে বঁধু নিরজনে
    	ভালোবাসি' দুটি কথা মোরে বলিও।।
    
  • পিয়া গেছে কবে পরদেশ

    বাণী

    পিয়া গেছে কবে পরদেশ পিউ কাঁহা ডাকে পাপিয়া,
    দোয়েল শ্যামার শিসে তারি হুতাশ উঠিছে ছাপিয়া।।
    	পাতারি আড়ালে মুখ ঢাকি'
    	মুহুমুহু কুহু ওঠে ডাকি,
    বাজে ধ্বনি তারি উহু উহু বিরহী পরাণ ব্যাপিয়া।।
    	'বউ কথা কও' পাখি ডাকে —
    	কেন মনে প'ড়ে যায় তাকে,
    কথা কও বউ — ডাকিত সে মোরে, নিশীথ উঠিত কাঁপিয়া।।
    
  • পিয়া পিয়া পিয়া পাপিয়া পুকারে

    বাণী

    পিয়া পিয়া পিয়া পাপিয়া পুকারে।
    চোখ গেল বিরহিণীর বধূর মনের কথা —
    	কাঁদিয়া বেড়ায় বাদল-আঁধারে॥
    প্রথম বিরহ অল্প-বয়সী
    ভুলি’ গৃহকাজ রহে বাতায়নে বসি’,
    পাখির পিয়া-স্বর বুকে তার তোলে ঝড় —  
    	অঞ্চলে আঁখি-জল মোছে বারে বারে ॥
    পরেনি বেশ, বাঁধেনি কেশ ম্লান-মুখী দীপালিকা,
    নীরব দেহে যেন শুকায়ে যায় ওগো মালতীর মালিকা।
    বনের বিহঙ্গ ছাড়ি’ বিহগীরে
    যায় না বিদেশে, রহে সুখ-নীড়ে,
    বলো কেমনে, ওগো প্রেমের বিধাতা —
    	বিরহ-দাহ সহি’ হিয়ার মাঝারে ॥
    
  • পুবান হাওয়া পশ্চিমে যাও কাবার পথে বইয়া

    বাণী

    		পুবান হাওয়া পশ্চিমে যাও কাবার পথে বইয়া
    		যাও রে বইয়া এই গরিবের সালামখানি লইয়া।।
    		কাবার জিয়ারতের আমার নাই সম্বল ভাই
    		সারা জনম সাধ ছিল যে মদিনাতে যাই (রে ভাই)
    		মিটল না সাধ, দিন গেল মোর দুনিয়ার বোঝা বইয়া।।
    (তোমার)	পানির সাথে লইয়া যাও রে আমার চোখের পানি
    		লইয়া যাও রে এই নিরাশের, দীর্ঘ নিশাসখানি।
    		নবীজীর রওজায় কাঁদিও ভাই রে আমার হইয়া।।
    		মা ফাতেমা হজরত আলীর মাজার যথায় আছে
    আমার	সালাম দিয়া আইস তাদের পায়ের কাছে (রে ভাই!)
    		কাবায় মোনাজাত করিও আমার কথা কইয়া।।
    
  • পূবালী পবনে বাঁশি বাজে রহি' রহি'

    বাণী

    পূবালী পবনে বাঁশি বাজে রহি' রহি'।
    ভবনের বধূরে ডাকে বনের বিরহী।।
    রতন হিন্দোলা নীপ ডালে বাঁধা',
    দোলে দোলে, বলে যেন 'রাধা রাধা',
    দুরু দুরু বুকে বাজে গুরু গুরু দেয়া
    কেয়া ফুল আনে সোম-সুগন্ধ বহি'।।
    চোখে মাখি সজল কাজলের ছলনা
    অভিসারিকার সাজে সাজে গোপ-ললনা।
    বৃষ্টির টিপ ফেলে ননদীর নয়নে
    কদম-কুঞ্জে চলে গোপন চরণে,
    মিলন বিরহ শোক তার বুকে
    কাঁদে 'রাধা-শ্যাম রাধা-শ্যাম' কহি।।
    
  • প্রজাপতি প্রজাপতি

    বাণী

    	প্রজাপতি! প্রজাপতি!
    কোথায় পেলে ভাই এমন রঙ্গীন পাখা,
    টুকটুকে লাল–নীল ঝিলিমিলি আঁকা–বাঁকা।।
    	তুমি টুলটুলে বন-ফুলে মধু খাও
    	মোর বন্ধু হয়ে সেই মধু দাও
    ওই পাখা দাও সোনালী –রূপালী পরাগ মাখা।।
    মোর মন যেতে চায় না পাঠশালাতে
    প্রজাপতি! তুমি নিয়ে যাও সাথী ক’রে তোমার সাথে।
    	তুমি হাওয়ায় নেচে নেচে যাও
    আজতোমার মত মোরে আনন্দ দাও
    এই জামা ভাল লাগে না, দাও জামা ছবি–আঁকা।।
    
  • প্রণমামী শ্রীদুর্গে নারায়ণী গৌরী

    বাণী

    প্রণমামী শ্রীদুর্গে নারায়ণী গৌরী শিবে সিদ্ধি বিধায়িনী
    মহামায়া অম্বিকা আদ্যাশক্তি ধর্ম-অর্থ-কাম মোক্ষ-প্রদায়িনী।।
    শুম্ভ নিশুম্ভ বিমর্দিনী চন্ডী নমো নমঃ দশপ্রহরণ ধারিণী
    দেবী সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়-বিধাত্রী জয় মহিষাসুর সংহারিণী।
    			জয় দুর্গে, জয় দুর্গে।।
    যুগে যুগে দনুজ দলনী মহাশক্তি যোগনিদ্রা মধুকৈটভ নাশিনী
    বেদ-উদ্ধারিণী মণি-দীপ বাসিনী শ্রীরাম অবতারে বরাভয় দায়িনী।
    			জয় দুর্গে, জয় দুর্গে।।
    
  • প্রভু তোমারে খুঁজিয়া মরি ঘুরে ঘুরে

    বাণী

    প্রভু তোমারে খুঁজিয়া মরি ঘুরে ঘুরে বৃথা দূরে চেয়ে থাকি
    তুমি অন্তরতম আছ অন্তরে নয়নেরে দিয়ে ফাঁকি॥
    	তুমি কাছে থাকি খেল লুকোচুরি
    	তাই বাহিরে চাহিয়া দেখিতে না পাই
    যেমন আঁখির পল্লব নাথ দেখিতে পায় না আঁখি॥
    মোরা ভাবি তুমি কত দূরে বুঝি গ্রহ তারকার পারে
    বুকে যে ঘুমায় তারে খুঁজি বনে প্রান্তরে দ্বারে দ্বারে।
    	বাহিরে না পেয়ে ফিরি যবে ঘরে
    	দেখি জেগে আছ তুমি মোর তরে
    যত ডাকি তত লুকাও হে চোর মোর বুকে মুখ রাখি॥
    
  • প্রভু রাখ এ মিনতি ত্রিভুবন-পতি

    বাণী

    (প্রভু)		রাখ এ মিনতি ত্রিভুবন-পতি তব পদে মতি।
    		আঁখির আগে যেন সদা জাগে তব ধ্রুব-জ্যোতি।।
    			সংসার মরুমাঝে তুমি মেঘ-মায়া,
    			বিষাদ-শোক তাপে তুমি তরু-ছায়া,
    		সান্ত্বনা দাতা তুমি দুঃখ ত্রাতা অগতির গতি।।
    		জননীর মত আছ ঊর্ধ্বে জাগি
    		জলে স্থলে শূন্যে অগণিত তব দান মোদের লাগি১।
    			ঝঞ্ঝার মাঝে তব বিষাণ বাজে,
    			সহসা ঢলি পড় বনে ফুল-সাজে,
    		কোমলে কঠোরে হে প্রভু বিরাজে তব মহাশক্তি।।
    

    ১. দোলে কালো নিশার কোলে / আলো-উষসী / তিমির তলে তব তিলক জ্বলে / ঐ পূর্ণ শশী।

  • প্রভু সংসারেরি সোনার শিকল

    বাণী

    প্রভু সংসারেরি সোনার শিকল বেঁধো না আর পায়
    তোমার প্রেম ডোরে ত্রিভুবন স্বামী বাঁধ হে আমায়॥
    সারা জীবন বোঝা বয়ে, এসেছি আজ ক্লান্ত হয়ে
    জুড়াতে হে শান্তি দাতা তোমার শীতল ছায়॥
    হে নাথ যতদিন শক্তি ছিল বোঝা বহিবার
    হাসি মুখে বয়েছি নাথ তোমার দেওয়া ভার।
    শেষ হল আজ ভবের খেলা, কি দান দেব যাবার বেলা
    তোমার নামের ভেলায় যেন এ দীন তরে যায়॥
    
  • প্রিয় এমন রাত যেন যায় না বৃথাই

    বাণী

    প্রিয় এমন রাত যেন যায় না বৃথাই
    পরি চাঁপা ফুলের শাড়ি খয়েরিটিপ,
    জাগি বাতায়নে জ্বালি আঁখি প্রদীপ,
    মালা চন্দন দিয়ে মোর থালা সাজাই।।
    তুমি আসিবে বলে সুদূর অতিথি
    জাগে চাঁদের তৃষা লয়ে কৃষ্ণা তিথি,
    কভু ঘরে আসিকভু বাহিরে চাই।।
    আজি আকাশে বাতাসে কানাকানি,
    জাগে বনে বনে নবফুলের বাণী,
    আজি আমার কথা যেন বলিতে পাই।।
    
  • প্রিয় কোথায় তুমি কোন গহনে

    বাণী

    প্রিয় কোথায় তুমি কোন গহনে
    কোন ধ্রুবলোকে কোন দূর গগনে।।
    খোঁজে কানন তোমায় মেলি' কুসুম-আঁখি,
    'তুমি কোথায়' বলি' ডাকে বনের পাখি।
    আছ ঠকুর হয়ে কোন দেবালয়ে
    কোন শ্রাবন-মেঘে দখিনা পবনে।।
    সিন্ধু-বুকে মুখে লুকায়ে নদী
    'তুমি কোথায়' বলি' কাঁদে নিরবধি।
    	জ্বালি' তারার বাতি
    	খোঁজে আঁধার রাতি,
    তোমায় খুঁজিয়া নিভিল জ্যোতি মোর নয়নে।।
    

  • প্রিয় তব গলে দোলে যে হার কুড়িয়ে পাওয়া

    বাণী

    প্রিয়	তব গলে দোলে যে হার কুড়িয়ে পাওয়া
    সে যে	হার নহে, হৃদয় মোর হারিয়ে যাওয়া।।
    	তোমারি মতন যেন কাহার সনে
    	সেদিন পথে চোখাচোখি হল গোপনে
    মন	চকিতে হরিল যে সেই চকিত চাওয়া।।
    ছিল	চৈতালি সাঁঝ, তাহে পথ নিরালা
    ছিনু	একেলা আমি, চলে একেলা বালা
    বহে	ঝিরিঝিরি ধীরি-ধীরি চিতী হাওয়া
    	চাহিল সে মুখে মোর ঘোমটা তুলে
    তার	নয়নে ও ঘটে জল উঠিল দুলে
    	চেয়ে দেখি মোর আঁখি সলিল ছাওয়া।।
    
  • প্রিয় তুমি কোথায় আজি কত সে দূর

    বাণী

    প্রিয়	তুমি কোথায় আজি কত সে দূর।
    প্রাণ	কাঁদে ব্যথায় বিরহ-বিধুর।।
    	স্বপন-কুমারী, স্বপনে এসে
    	মিশাইলে কোন্ ঘুমের দেশে
    	তড়িত-শিখা ক্ষণিক হেসে
    	লুকালে মেঘে আঁধারি’ হৃদি-পুর।।
    	আপনা নিয়ে ছিনু একেলা
    	কোন্ সে কূলে ভিড়ালে ভেলা
    	জীবন নিয়ে মরণ-খেলা
    	খেলিতে কেন আসিলে নিঠুর।।
    	ঊষার গাঙে গাহন করি’
    	দাঁড়ালে নভে রঙের পরী
    	প্রেমের অরুণ উদিল যবে
    	মিশালে নভে, হে লীল-চতুর।।