কাহার্‌বা

  • মুখে তোমার মধুর হাসি হাতে কুটিল ফাঁসি

    বাণী

    মুখে তোমার মধুর হাসি হাতে কুটিল ফাঁসি।
    সুন্দর চোর, চিনি তোমায় তবু ভালোবাসি।।
    	শত ব্রজে কেঁদে মরে
    	শত রাধা তোমার তরে,
    কত গোকুল ডুবলো অকূল আঁখির নীরে ভাসি'।।
    কত নারীর মন গেঁথে, নাথ, পরলে বন-মালা,
    যমুনাতে ডুবালে শ্যাম কত কুলের বালা।
    	দেখাও আসল হাত দু'খানি-
    	করাল গদার চক্রপাণি,
    তব এ দু'টি হাত ছলনা, নাথ, বাজাও যে হাতে বাঁশি।।
    

  • মুসাফির মোছ্‌ রে আঁখি–জল

    বাণী

    মুছাফির! মোছ্ রে আঁখি-জল
    		ফিরে চল আপনারে নিয়া
    আপনি ফুটেছিল ফুল
    		গিয়াছে আপ্‌নি ঝরিয়া।।
    রে পাগল! একি দুরাশা,
    জলে তুই বাঁধ্‌বি রে বাসা!
    মেটে না হেথায় পিয়াসা
    		হেথা নাই তৃষা-দরিয়া।।
    বরষায় ফুটল না বকুল
    পউষে ফুট্‌বে কি সে ফুল (রে)
    এ পথে ঝরে সদা ভুল
    		নিরাশার কানন ভরিয়া।।
    রে কবি! কতই দেয়ালি
    জ্বালিলি তোর আলো জ্বালি’
    এলো না তোর বনমালী
    		আধাঁর আজ তোরই দুনিয়া।।
    

  • মৃদুল মন্দে মঞ্জুল ছন্দে

    বাণী

    মৃদুল মন্দে			মঞ্জুল ছন্দে
    মরাল মদালস			নাচে আনন্দে।।
    তরঙ্গ হিন্দোলে		শতদল দোলে
    শিশু অরুণে জাগায়		অমা-যামিনীর কোলে
    শুষ্ক কানন ভরে		বকুল গন্ধে।।
    নন্দন-উপহার			ধরণীর ক’রে
    শুভ্র পাখায় শুভ		আশিস ঝরে।
    মিলন, বসন্তের		দূত আগমনী
    কণ্ঠে সুমঙ্গল			শঙ্খের ধ্বনি
    কুহু কেকা গাহে		মধুর ছন্দে।।
    

    নাটকঃ ‘সাবিত্রী’

  • মেঘ-বরণ কন্যা থাকে মেঘলামতীর দেশে

    বাণী

    মেঘ-বরণ কন্যা থাকে মেঘলামতীর দেশে (রে)
    সেই দেশে মেঘ জল ঢালিও তাহার আকুল কেশে।।
    	তাহার কালো চোখের কাজল
    	শাওন মেঘের চেয়ে শ্যামল
    চাউনিতে তার বিজলি ছড়ায় চমক বেড়ায় ভেসে (রে)।।
    সে ব’সে থাকে পা ডুবিয়ে ঘুমতী নদীর জলে
    কভু দাঁড়িয়ে থাকে ছবির মত একলা তরু-তলে (রে)।
    	কদম ফুলের মালা গেঁথে
    	ছড়িয়ে সে দেয় ধানের ক্ষেতে
    তারে দেখতে পেলে আমার কথা (তারে) কইও ভালোবেসে।।
    
  • মেঘ-মেদুর গগন কাঁদে হুতাশ পবন

    বাণী

    মেঘ-মেদুর গগন কাঁদে হুতাশ পবন
    কে বিরহী রহি’রহি’দ্বারে আঘাত হানো।
    শাওন ঘন ঘোর ঝরিছে বারি অঝোর
    কাঁপিছে কুটির মোর দীপ নেভানো।।
    বজ্রে বাজিয়া ওঠে তব সঙ্গীত,
    বিদ্যুতে ঝলকিছে আঁখি-ইঙ্গিত,
    চাঁচর চিকুরে তব ঝড় দুলানো, ওগো মন ভুলানো।।
    এক হাতে, সুন্দর, কুসুম ফোটাও!
    আর হাতে নিষ্ঠুর মুকুল ঝরাও।
    হে পথিক, তব সুর অশান্ত ব‍ায়
    জন্মান্তর হতে যেন ভেসে আসে হায়!
    বিজড়িত তব স্মৃতি চেনা অচেনায় প্রাণ কাঁদানো।।
    
  • মেঘলা নিশি ভোরে

    বাণী

    মেঘলা নিশি ভোরে মন যে কেমন করে
    তারি তরে গো মেঘ-বরণ যার কেশ।
    বুঝি তাহারি লাগি’ হয়েছে বৈরাগী
    গেরুয়া রাঙা গিরিমাটির দেশ।।
    মৌরি ফুলের ক্ষেতে, মৌমাছি ওঠে মেতে
    এলিয়েছিল কেশ কি গো তার এই পথে সে যেতে।
    তার ডাগর চোখের ঝিলিক লেগে রাত হয়েছে শেষ (গো)।।
    শিরিষ পাতায় ঝিরিঝিরি, বাজে নূপুর তারি
    সোনাল ডালে দোলে তাহার কামরাঙা রঙ শাড়ি।
    হয়েছি মন-ভিখারি কোন্‌ শিকারি আমি
    উঠি পাহাড় চূড়ায়, ঝর্না জলে নামি
    কালো পাথর দেখে জাগে কার চোখের আবেশ গো।।
    
  • মেরে শ্রীকৃষ্ণ ধরম শ্রীকৃষ্ণ করম

    বাণী

    মেরে শ্রীকৃষ্ণ ধরম শ্রীকৃষ্ণ করম শ্রীকৃষ্ণহি তন-মন-প্রাণ।
    সব্‌সে নিয়ারে পিয়ারে শ্রীকৃষ্ণজী নয়নুঁকে তারে সমান॥
    দুখ সুখ সব শ্রীকৃষ্ণ মাধব কৃষ্ণহি আত্মা জ্ঞান
    কৃষ্ণ কণ্ঠহার আঁখকে কাজর কৃষ্ণ হৃদয়মে ধ্যান
    শ্রীকৃষ্ণ ভাষা শ্রীকৃষ্ণ আশা মিটায়ে পিয়াস উয়ো নাম (মেরে)
    স্বামী-সখা-পিতা-মাতা শ্রীকৃষ্ণজী ভ্রাতা-বন্ধু-সন্তান॥
    
  • মোমের পুতুল মমীর দেশের মেয়ে নেচে যায়

    বাণী

    মোমের পুতুল মমীর দেশের মেয়ে নেচে যায়।
    	বিহবল–চঞ্চল–পায়।।
    	খর্জুর–বীথির ধারে
    	সাহারা মরুর পারে
    বাজায় ঘুমুর ঝুমুর ঝুমুর মধুর ঝঙ্কারে।
    	উড়িয়ে ওড়না ‘লু’ হাওয়ায়
    	পরী–নটিনী নেচে যায়
    	দুলে দুলে দূরে সুদূর।।
    সুর্মা–পরা আঁখি হানে আস্‌মানে,
    জ্যোৎস্না আসে নীল আকাশে তার টানে।
    	ঢেউ তুলে নীল দরিয়ায়
    	দিল–দরদী নেচে যায়
    	দুলে দুলে দূরে সুদূর।।
    
  • মোর দুখ নিশি কবে হবে ভোর

    বাণী

    মোর দুখ নিশি কবে হবে ভোর
    ভুবনে ছাড়ালো প্রভাতের আলো —
    আমারি ভবনে কেন আঁধার ঘোর ॥
    সূর্য-কিরণে সাগর শুকায় —
    সে রবি-কিরণে শুকালো না হায়
    আমার বিরহী আঁখির লোর ॥
    আশোক বনে সীতার সঙ্গিনী প্রমীলার সম
    নিশীথের আঁধার মুখ লুকায়ে কাঁদে অন্তরে মম। 
    মালা চন্দন লয়ে মন্দির মাঝে
    ফেলে নববধূ সাজ পূজারিণী-সাজে
    শূন্য মন্দিরে আমি একা কাঁদি জড়ায়ে ছিন্ন মালার ডোর ॥
    

  • মোর বুক ভরা ছিল আশা

    বাণী

    মোর বুক ভরা ছিল আশা প্রাণ ভরা ভালোবাসা।
    হায় আসিল সে যবে কাছে মুখে সরিল না ভাষা।।
    	আমি পেয়েছিলাম তায় একা
    	ছিল চোখে তাহার প্রেম-লেখা,
    তবু বলিতে পারিনি তারে কাঁদে প্রাণে কি দুরাশা।।
    	এসে ভরা নদীর তীরে
    	পান না করিয়া বারি
    	আমি আসিলাম ফিরে — 
    ছিল তৃষ্ণা-কাতর এ প্রাণে মরুভূমির পিয়াসা।।
    
  • মোর বেদনার কারাগারে জাগো

    বাণী

    মোর  বেদনার কারাগারে জাগো, জাগো- বেদনাহারী হে মুরারি।
    	অসীম দুঃখ ঘেরা কৃষ্ণা তিথিতে এসো এসো হে কৃষ্ণ গিরিধারী।।
    	ব‍্যথিত এ চিত দেবকীর সম মূর্ছিত পাষাণেরি ভারে
    	ডাকে প্রাণ-যাদব, এসো এসো মাধব উথলিছে প্রেম আঁখিবারি
    		মুরারি উথলিছে প্রেম আঁখিবারি।।
    	হৃদয়-ব্রজে মম ভক্তি প্রীতি জাগিয়া আছে আশায়,
    কদম্ব ফুল সম উঠিছে শিহরি’ মম শ‍্যাম-বরষায়।
    ওগো বনশীওয়ালা, তব না শোনা বাঁশি
    	শোনে অনুরাগ রাধা প্রণয় পিয়াসি,
    গোপন ধ‍্যানের মধুবনে তব নুপুর শুনি, হে কিশোর বনচারী।।
    
  • মোরা আর জনমে হংস-মিথুন ছিলাম

    বাণী

    মোরা আর জনমে হংস–মিথুন ছিলাম নদীর চরে
    যুগলরূপে এসেছি গো আবার মাটির ঘরে।।
    তমাল তরু চাঁপা–লতার মত
    জড়িয়ে কত জনম হ’ল গত,
    সেই বাঁধনের চিহ্ন আজো জাগে হিয়ার থরে থরে।।
    বাহুর ডোরে বেঁধে আজো ঘুমের ঘোরে যেন
    ঝড়ের বন–লতার মত লুটিয়ে কাঁদ কেন।
    বনের কপোত কপোতাক্ষীর তীরে
    পাখায় পাখায় বাঁধা ছিলাম নীড়ে
    চিরতরে হ’ল ছাড়াছাড়ি নিঠুর ব্যাধের শরে।।
    
  • মোরা এক বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু-মুসলমান

    বাণী

    মোরা এক বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু-মুসলমান।
    মুসলিম তার নয়ন-মণি, হিন্দু তাহার প্রাণ।।
    	এক সে আকাশ মায়ের কোলে
    	যেন রবি শশী দোলে,
    এক রক্ত বুকের তলে, এক সে নাড়ির টান।।
    এক সে দেশের খাই গো হাওয়া, এক সে দেশের জল,
    এক সে মায়ের বক্ষে ফলাই একই ফুল ও ফল।
    	এক সে দেশের মাটিতে পাই
    	কেউ গোরে কেউ শ্মাশানে ঠাঁই
    এক ভাষাতে মা’কে ডাকি, এক সুরে গাই গান।। 
    

    নাটিকাঃ‘পুতুলের বিয়ে’

  • মোরা কুসুম হয়ে কাঁদি কুঞ্জবনে

    বাণী

    মোরা	কুসুম হয়ে কাঁদি কুঞ্জবনে
    		সুন্দর শ্যাম হে
    আমি	মরিতে চাহি ঝরি' তব চরণে
    		সুন্দর শ্যাম হে।
    	ওগো সুন্দর শ্যাম হে।।
    মোর	ক্ষণিক এ জীবন নিশি শেষে
    প্রিয়	ঝ'রে যাব গো স্রোতে ভেসে
    বঁধু	কাছে এসে ছুয়ো ভালবেসে
    	জাগায়ো প্রেম-মধু গোপন মনে
    		সুন্দর শ্যাম হে।।
    তব	সরস পরশ দিয়ে মনোহর
    মোর	এ তনু রঙে রসে পূর্ণ করো
    আমি	তোমার বুকে রবো পরম সুখে
    	ঝরিব প্রিয়, চাহি' তব নয়নে
    		সুন্দর শ্যাম হে।।
    মোর	বিদায় বেলা ঘনায়ে আসে
    মোর	প্রাণ কাদেঁ মিলন-পিয়াসে
    এই	বিরহ মম ওগো প্রিয়তম,
    	মিটিবে সে কোন শুভ লগনে,
    		সুন্দর শ্যাম হে।।
    
  • মোরা ছিলাম একা আজি মিলিনু দুজন

    বাণী

    উভয়	:	মোরা ছিলাম একা আজি মিলিনু দুজন।
    		পাপিয়ার পিয়া বোল্ কপোত-কূজন।।
    বর	:	তুমি সবুজের স্রোত এলে ঊষর দেশে
    বধূ	:	তুমি বিধাতার-বর এলে বরের বেশে,
    বর	:	তুমি গৃহে কল্যাণ
    বধূ	:	তুমি প্রভু মম ধ্যান,
    উভয়	:	সুন্দরতর হ’ল সুন্দর ত্রিভুবন।।
    

    নাটিকাঃ ‘প্রীতি-উপহার’

  • মোরা বিহান-বেলা উঠে রে ভাই চাষ করি এই মাটি

    বাণী

    		মোরা বিহান-বেলা উঠে রে ভাই চাষ করি এই মাটি।
    		যে মাটির বুকে আছে পাকা ধানের সোনার কাঠি॥
    		ফসল বুনে রোদের তাতে উঠি যখন ঘেমে
    		সদয় হয়ে আকাশ বেয়ে বৃষ্টি আসে নেমে
    (ওরে)		মুচকি হেসে বৌ এনে দেয় পান্তা ভাতের বাটি॥
    		আশ মেটে না চারা ধানের পানে চেয়ে চেয়ে
    		মরাই ভ’রে থাকবে ওরাই আমার ছেলে মেয়ে।
    (আমি)	চাই না স্বর্গ, পাই যদি এই পাকা ধানের আটি (রে ভাই)॥
    		জল নিতে যায় আড়চোখে চায় বৌ-ঝি নদীর কূলে
    		খুশিতে বুক ভ’রে ওঠে, খাটুনি যাই ভুলে।
    		এ মাঠ নয় ভাই বৌ পেতেছে ঠান্ডা শীতল পাটি॥
    

  • মোরে পূজারি কর তোমার

    বাণী

    মোরে পূজারি কর তোমার ঠাকুর ঘরে হে ত্রিজগতের নাথ।
    মোর সকল দেহ লুটাক তোমার পায়ে (হয়ে) একটি প্রণিপাত।।
    	নিত্য যেন তোমারি মন্দিরে
    	চিত্ত আমার ব্যাকুল হয়ে ফিরে
    গ্রহ যেমন সূর্যলোক ঘিরে ঘুরে দিবস রাত।।
    মোর নয়ন যেন তোমারি রূপ হেরে সকল দেখার মাঝে
    যেন এ রসনা জপে তোমারি নাম হে নাথ সকল কাজে।
    	তোমার চরণ রয় যে শতদলে
    	তারি পানে মোর মন যেন চলে
    নিত্য তোমায় নমস্কারের ছলে (যেন) যুক্ত থাকে হাত।।
    
  • মোরে ভালোবাসায় ভুলিয়ো না

    বাণী

    মোরে	ভালোবাসায় ভুলিয়ো না
    			পাওয়ার আশায় ভুলিয়ো
    মোরে	আদর দিয়ে দুলিয়ো না
    			আঘাত দিয়ে দুলিয়ো।।
    		হে প্রিয় মোর একি মোহ
    		এ প্রাণ শুধু চায় বিরহ
    তুমি	কঠিন সুরে বেঁধে আমায়
    			সুরের লহর তুলিয়ো।।
    প্রভু	শান্তি চাহে জুড়াতে সব
    			আমি চাহি পুড়িতে
    		সুখের ঘরে আগুন জ্বেলে’
    		পথে পথে ঝুরিতে;
    		বঁধু	পথে পথে ঝুরিতে।
    			নগ্ন দিনের আলোকেতে
    			চাহি না তোমায় ব’ক্ষে পেতে
    তুমি	ঘুমের মাঝে স্বপনেতে
    			হৃদয়–দুয়ার খুলিয়ো।।
    
  • মোহররমের চাঁদ এলো ঐ

    বাণী

    মোহররমের চাঁদ এলো ঐ কাঁদাতে ফের দুনিয়ায়।
    ওয়া হোসেনা ওয়া হোসেনা তারি মাতম শোনা যায়।।
    কাঁদিয়া জয়নাল আবেদীন বেহোশ হল কারবালায়
    বেহেশ্‌তে লুটিয়ে কাঁদে আলী ও মা ফাতেমায়।।
    কাশেমের ঐ লাশ লয়ে কাঁদে বিবি সাকিনা।
    আস্‌গরের ঐ কচি বুকে তীর দেখে কাঁদে খোদায়।।
    কাঁদে বিশ্বের মুসলিম আজি গাহে তারি মর্সিয়া।
    ঝরে হাজার বছর ধরে অশ্রু তারি শোকে হায়।।
    
  • মোহাম্মদ নাম যত জপি

    বাণী

    মোহাম্মদ নাম যত জপি, তত মধুর লাগে।
    নামে এত মধু থাকে, কে জানিত আগে।।
    ঐ নামেরি মধু চাহি' মন-ভ্রমরা বেড়ায় গাহি',
    আমার ক্ষুধা তৃষ্ণা নাহি ঐ নামের অনুরাগে।।
    ও নাম প্রাণের প্রিয়তম, ও নাম জপি মজনু সম,
    ঐ নামে পাপিয়া গাহে প্রাণের কুসুম-বাগে।।
    ঐ নামে মুসাফির রাহী চাই না তখত শাহানশাহী,
    নিত্য ও নাম ইয়া ইলাহী, যেন হৃদে জাগে।।