বাণী

দ্বৈত	:	ঝুমুর নাচে ডুমুর গাছে ঘুঙুর বেঁধে গায় (লো)।
		নাচন দুজন মাদল, বাঁশি, নূপুর নিয়ে আয় (লো)।।
স্ত্রী	:	আর জনমে চোরকাঁটা তুই ছিলি (রে)
		এই জনমে আঁচল ছিঁড়ে হৃদয়ে বিঁধিলি।
পুরুষ	:	চোরকাঁটা নয় ছিলাম পানের খিলি লো
		গয়না ছিলাম গায় (লো)।।
স্ত্রী	:	ঝিলমিলয়ে ঝিলের জল নাচায় শালুক ফুল —
পুরুষ	:	শালুক যেন মুখাখানি তোর লো ঝিলের ঢেউ যেন এলোচুল।
স্ত্রী	:	কুহু কুহু ডেকে কোকিল কাহার কথা কহে
পুরুষ	:	সেই কথা কয় কোয়েলা আর জনমে করেছি যা তোরই বিরহে।
দ্বৈত	:	সে জনমের দু’টি হৃদয় এ জনমে হায়
		এক হতে যে চায় লো এক হতে যে চায়।।

বাণী

	জাগো কৃষ্ণকলি, জাগো কৃষ্ণকলি।
	মধুকরের মিনতি মানো, ডাকে জাগো বলি’,
					বিহগ-কাকলি।।
	তব দ্বারে বারে বারে মন-উদাসী
	ভোরের হাওয়া এসে বাজায় বাঁশি,
	ফিরে গেল ভ্রমরা মউ-পিয়াসি — 
	অযথা বিতানে কানে কথা বলি।।
হের	হাতের তার ফুলঝুরি ফেলে’ ধূলায়
	উদাসী বসন্ত মাগে বিদায়,
	দীরঘ-শ্বাস ফেলি’ ঝরা পাতায়।
চাহে	রঙিন ঊষা তব রঙের আভাস
তব	লাল আভায় লজ্জা পায় হিঙুল পলাশ।
এলো	কোকিল তোমার রঙে খেল্‌তে হোলি।।

বাণী

	বল্লরি-ভুজ-বন্ধন খোলো।
	অভিসার-নিশি অবসান হ’ল।।
	পান্ডুর চাঁদ হের অস্তাচলে
	জাগিয়া শ্রান্ত-তনু পড়েছে ঢ’লে,
তার 	মল্লিকা১ মালা ম্লান বক্ষতলে — 
	অভিমান-অবনত আঁখি তোলো।।
	উতল সমীর আমি নিমেষের২ ভুল,
	কুসুম ঝরাই কভু৩ ফোটাই মুকুল।
	আলোকে শুকায় মোর প্রেমের শিশির
	দিনের বিরহ আমি মিলন নিশির,
	হে প্রিয়, ভীরু এ স্বপন-বিলাসীর — 
	অকরুণ প্রণয় ভোলো ভোলো।।

১. মিলনের, ২. ক্ষণিকের, ৩. আমি

বাণী

জগতে আজিকে যারা
আগে চলে ভয়-হারা
ডেকে যায় আজি তারা,
		চল্‌ রে সুমুখে চল।
পিছু পানে চেয়ে’ মিছে
প’ড়ে আছি সব নীচে,
চাস্‌নে রে তোরা পিছে
		অগ্র-পথিক দল।।
চলার বেগে উঠবে জেগে বনে নূতন পথ
বর্তমানের পানে মোদের চল্‌বে অরুণ-রথ,
অতীত আজি পতিত রে ভাই, রচ্‌ব ভবিষ্যৎ।
স্বর্গ মোরা আন্‌ব, না হয় যাব রসাতল।।
	রইব না পিছে প’ড়ে
	অতীতের কঙ্কাল ধ’রে,
বইবে নব জীবন-স্রোত যৌবন-চঞ্চল।
বিশ্ব-সভাঙ্গনে সকল জাতির সনে
বসিব সম-আসনে গৌরব-উজ্জ্বল।।

বাণী

আমি কলহেরি তরে কলহ করেছি বোঝনি কি রসিক বঁধূ।
তুমি মন বোঝ মনোচোর মান বোঝ নাকি হে —
তুমি ফুল চেন, চেন নাকি মধু?
তুমি যে মধুবনের মধুকর,
তুমি মধুরম মধুরম মধুময় মনোহর
কলহেরি কূলে রহে অভিমান-মধু যে, চেন নাকি বঁধু হে —
রাগের মাঝে রহে অনুরাগ-মধু যে, দেখ নাকি বঁধু হে —
কলঙ্কী বলে গগনের চাঁদ প্রতি দিন ক্ষয় হয়
তুমি নিত্য পূর্ণ চাঁদ সম প্রিয়তম চির অক্ষয়
এ চাঁদে একাদশী নাই হে —
শুধু রাধা একা দোষী হলো নিত্য কেন পায় না
মোর কৃষ্ণ চাঁদে যে একাদশী নাই হে —
সেই ব্রজগোপীদের ঘর আছে পর আছে
কৃষ্ণ বিনা নাই রাধার কেহ
আমিও জানি যেন আমাও শ্রীকৃষ্ণ কেবল রাধাময় দেহ।
সে রাধা প্রেমে বাঁধা সে রাধা ছাড়া জানে না, রাধাময় দেহ
সে রাধা প্রেমে বাঁধা।

বাণী

মোর শ্যাম সুন্দর এসো।
প্রেমের বৃন্দাবনে এসো হে ব্রজধাম-সুন্দর এসো।।
এসো হৃদয়ে হৃদয়েশ মোর নয়নের আগে এসো হে।
মোর নব-অনুরাগে এসো শ্যাম কোটি-কাম-সুন্দর এসো।।
রস মানস গঙ্গার কূলে রসরাজ এসো এসো হে।
এসো মুরলী বাজায়ে এসো হে, এসো ময়ূর নাচায়ে এসো হে মধাব,
মধু-বনমাঝে, এসো এসো হে।।
মোর মুখের ভাষায় এসো, মোর প্রাণের আশায় এসো।
নবীন নীরদ ঘনশ্যাম রূপে রূপ-পিপাসায় এসো
এসো মদন-মোহন শোভন অভিরাম-সুন্দর এসো।।