বাণী

আঁধারের এলোকেশ ছড়িয়ে এলে
			তুমি ধূসর সন্ধ্যা।
তোমারে অর্ঘ্য দিতে বনে ফুটিল কি তাই
			রজনীগন্ধা?
গোধূলির রং সম তব মুখ, হায়!
তরুণ হাসি কেন চকিতে মিলায়?
সহসা মহুয়া বনে চঞ্চল বায়
			হ’ল নিথর সুমন্দা।।
বিষাদ-গভীর তব নয়ন যেন নিশীথের সিন্ধু;
মুদিত কমলের দলিত দলে তুমি শিশিরের বিন্দু।
তুমি সকরুণ প্রার্থনা বেলাশেষের,
পথ-হারা পাখি তুমি দূর বিদেশের,
স্নিগ্ধ-স্রোত তুমি দূর অমরার অলকানন্দা।।

বাণী

আমার	প্রাণের দ্বারে ডাক দিয়ে কে যায় বারে বারে।
তাঁর		নূপুর-ধ্বনি রিনি ঝিনি বাজে বন-পারে।।
			নিঝুম রাতে ঘুমাই যবে
			সে ডাকে আমায় বেণুর রবে,
		স্বপন কুমার আসে স্বপন-অভিসারে।।
আমি		জল নিতে যাই নদী তটে এক্‌লা নাম ধ’রে সে ডাকে
		ধরতে গেলে পালিয়ে সে যায় বন-পথের বাঁকে।
			বিশ্ব-বধূর মনোচোরা
			ধরতে সে চায়, দেয় না ধরা,
আমি		তা’রি স্বয়ম্বরা, আমি সঁপেছি প্রাণ তারে।।

বাণী

আমার যাবার সময় হলো, দাও বিদায়।
মোছ আঁখি, দুয়ার খোলো, দাও বিদায়।।
ফোটে যে ফুল আঁধার রাতে
ঝরে ধূলায় ভোর বেলাতে
আমায় তারা ডাকে সাথে - আয় রে আয়।
সজল করুণ নয়ন তোলো, দাও বিদায়।।
অন্ধকারে এসেছিলাম থাকতে আঁধার যাই চ’লে;
ক্ষণিক ভালোবেসেছিলেম চিরকালের না-ই হ’লে।
হ’লো চেনা হ’লো দেখা
নয়ন-জলে রইলো লেখা
দূর বিরহের ডাকে কেকা বরষায়
ফাগুন স্বপন ভোলো ভোলো,দাও বিদায়।।

বাণী

আমি মদিনা মহারাজার মেয়ে সকলের জানা আছে।
নৌজোয়ান! তুমি কার ছেলে তুমি কেন এলে মোর কাছে।।
	আমি গান গাইতে জানি
	তুমি কি গান লিখতে জান?
তাহলে তুমি বাড়ি গিয়ে আমার তরে অনেক গান লিখে আন।
তাহলে তোমায় মালা গেঁথে দিব —
মোর গুল বাগানে অনেক ফুল ফুটেছে ফুলের গাছে।।
	তুমি মহারাজার, বাদশার ছেলে হও
	তাহলে আমার ঘরে এসে কথা কও,
	তব ভালো নাম কি হে কবি
	তাহলে আঁকব আমি তোমার ছবি,
আমি পর্দানশীন কুমারী, মোরে এখনো কেউ নাহি যাচে।।

নাট্যগীতি: ‌‘মদিনা’

বাণী

আধো ধরণী আলো আধো আঁধার।
কে জানে দুখ-নিশি পোহাল কার।।
আধো কঠিন ধরা আধেক জল,
আধো মৃণাল-কাঁটা আধো কমল।
আধো সুর, আধো সুরা — বিরহ, বিহার।।
আধো ব্যথিত বুকের আধেক আশা,
আধেক গোপন আধেক ভাষা!
আধো ভালোবাসা আধেক হেলা
আধেক সাঁঝ আধো প্রভাত-বেলা
আধো রবির আলো — আধো নীহার।।

বাণী

আমি পূরব দেশের পুরনারী (গো)।
গাগরি ভরিয়া এনেছি গো অমৃত-বারি।।
পদ্মকুলের আমি পদ্মিনী-বধূ
এনেছি শাপলা-পদ্মের মধু
ঘন বন ছায়ায় শ্যামলী মায়ায়
শান্তি আনিয়াছি ভরি’ হেমঝারি।।
আমি শঙ্খ-নগর হতে আনিয়াছি শাখা, অভয়শঙ্খ,
ঝিল্‌ ছেনে এনেছি সুনীল কাজল গো —
বিল্‌ ছেনে অনাবিল চন্দন-পঙ্ক (এনেছি)।
এনেছি, শত ব্রত-পার্বণ-উৎসব
এনেছি, সারস হংসের কলরব
এনেছি, নব আশা-ঊষার সিন্দুর
মেঘ-ডম্বরু সাথে মেঘ-ডুমুর শাড়ি।।