বাণী

আমি বুকের ভিতর থাকি তবু ওরা ডাকে দেখা দাও ব’লে।
ওরা চিনিতে পারে না কত রূপে আমি দেখা দিই কত ছলে।।
চোর চোর খেলি মনে বসে, ওরা বনে যায় খুঁজিতে;
কোলে থাকি আমি খোকা হয়ে, ওরা মন্দিরে যায় পূজিতে।
মোরে পাষাণ করিয়া ফেলে রাখে, ওরা আঁধার দেউল তলে।।
(ওরা ডাকিয়া লয় না কোলে গো আমি কোল্ যে বড় ভালবাসি।)
			কেশবে ডাকিয়া লয় না কোলে।।
ওরা দেবতা ভাবিয়া পূজা দেয় যাহা, আমি তাহা নাহি খাই;
লুকায়ে ভিখারি সাজিয়া ওদের পাতের অন্ন চাই।
ওরা প্রভু ব’লে মোরে দূরে রাখে, তাই কেঁদে দূরে যাই চ’লে।
(ওরা গোপাল বলিয়া ডাকে না মোরে, কেন বুকে বেঁধে রাখে না।)
আমি তাই দূরে যাই চ’লে, কেশবে ডাকিয়া লয় না কোলে।।

নাটক : ‌‘অন্নপূর্ণা’

বাণী

আমি		সূর্যমুখী ফুলের মত দেখি তোমায় দূরে থেকে
		দলগুলি মোর রেঙে ওঠে তোমার হাসির কিরণ মেখে’।।
			নিত্য জানাই পেম-আরতি
			যে পথে, নাথ, তোমার গতি
		ওগো আমার ধ্রুব-জ্যোতি সাধ মেটে না তোমায় দেখে’।।
		জানি, তুমি আমার পাওয়ার বহু দূরে, হে দেবতা!
		আমি মাটির পূজারিণী, কেমন ক’রে জানাই ব্যথা।
			সারা জীবন তবু, স্বামী,
			তোমার ধ্যানেই কাঁদি আমি
		সন্ধ্যাবেলায় ঝরি যেন তোমার পানে নয়ন রেখে’।।

বাণী

আমার	প্রাণের দ্বারে ডাক দিয়ে কে যায় বারে বারে।
তাঁর		নূপুর-ধ্বনি রিনি ঝিনি বাজে বন-পারে।।
			নিঝুম রাতে ঘুমাই যবে
			সে ডাকে আমায় বেণুর রবে,
		স্বপন কুমার আসে স্বপন-অভিসারে।।
আমি		জল নিতে যাই নদী তটে এক্‌লা নাম ধ’রে সে ডাকে
		ধরতে গেলে পালিয়ে সে যায় বন-পথের বাঁকে।
			বিশ্ব-বধূর মনোচোরা
			ধরতে সে চায়, দেয় না ধরা,
আমি		তা’রি স্বয়ম্বরা, আমি সঁপেছি প্রাণ তারে।।

বাণী

আমার নয়নে নয়ন রাখি' পান করিতে চাও কোন অমিয়।
আছে এ আঁখিতে উষ্ণ আঁখি-জল মধুর সুধা নাই পরান-প্রিয়।।
	ওগো ও শিল্পী, গলাইয়া মোরে
	গড়িতে চাহ কোন মানস-প্রতিমারে,
ওগো ও পূজারি, কেন এ আরতি জাগাতে পাষাণ- প্রণয়-দেবতারে।
এ দেহ-ভৃঙ্গারে থাকে যদি মদ ওগো প্রেমাষ্পদ, পিও গো পিও।।
	আমারে কর গুণী, তোমার বীণা
	কাঁদিব সুরে সুরে, কণ্ঠ-লীনা
	আমার মুখের মুকুরে কবি
হেরিতে চাহ মোরে কর গো চন্দন তপ্ত তনু তব শীতল করিও ।। ১

১. এই অনুচ্ছেদটি গ্রামোফোন রেকর্ডে গাওয়া হয়নি।

বাণী

আঁচলে হংস-মিথুন আঁকা
		বলাকা-পে’ড়ে শাড়ি দুলায়ে।
চলিছে কিশোরী শ্যামা একা
		রুমুঝুমু বাজে নূপুর মৃদু পায়ে।।
ভয়ে ভয়ে চলে আধো-আঁধারে
বিরহী বন্ধুর দূর অভিসারে,
পথ কাঁদে যেয়ো না যেয়ো না যেয়ো না ওগো
		থামো ক্ষণেক এ ঠাঁয়ে।।

বাণী

	আদরিণী মোর কালো মেয়ে রে কেমনে কোথায় রাখি।
তারে	রাখিলে চোখে বাজে ব্যথা বুকে বুকে রাখিলে দুখে ঝুরে আঁখি।।
	কাঙাল যেমন পাইলে রতন লুকাতে ঠাঁই নাহি পায়;
	তেমনি আমার শ্যামা মেয়েরে জানি না রাখিব কোথায়।
			দুরন্ত মোর এই মেয়েরে
			বাঁধব আমি কি দিয়ে রে,
(তাই)পালিয়ে যেতে চায় সে যবে আমি অমনি মা ব’লে ডাকি।।