জননী মোর জন্মভূমি
বাণী
জননী মোর জন্মভূমি, তোমার পায়ে নোয়াই মাথা। স্বর্গাদপি গরীয়সী স্বদেশ আমার ভারত-মাতা।। তোমার স্নেহ যায় ব’য়ে মা শত ধারায় নদীর স্রোতে ঘরে ঘরে সোনার ফসল ছড়িয়ে পড়ে আঁচল হ’তে, স্নিগ্ধ-ছায়া মাটির বুকে তোমার শীতল পাঁটী পাতা।। স্বর্গের ঐশ্বর্য লুটায় তোমার ধূলি-মাখা পথে তোমার ঘরে নাই যাহা মা, নাইক তাহা ভূ-ভারতে, ঊর্ধ্বে আকাশ নিম্নে সাগর গাহে তোমার বিজয়-গাথা।। আদি জগদ্ধাত্রী তুমি জগতেরে প্রথম প্রাতে শিক্ষা দিলে দীক্ষা দিলে, করলে মানুষ আপন হাতে, তোমার কোলের লোভে মা গো রূপ ধ’রে আসেন বিধাতা।। ছেলের মুখের অন্ন কেড়ে খাওয়ালি মা যাদের ডেকে তারাই দিল তোর ললাটে চির-দাসীর তিলক এঁকে, দেখে শুনে হয় মা মনে, নেইক বিচার, নেই বিধাতা।।
জানি জানি প্রিয় এ জীবনে মিটিবে না সাধ
বাণী
জানি জানি প্রিয়, এ জীবনে মিটিবে না সাধ আমি জলের কুমুদিনী ঝরিব জলে তুমি দূর গগনে থাকি’ কাঁদিবে চাঁদ।। আমাদের মাঝে বঁধু বিরহ বাতাস চিরদিন ফেলে যাবে দীরঘ শ্বাস পায় না বুকে কভু পায় না বুকে তবু মুখে মুখে চাঁদ কুমুদীর নামে রটে অপবাদ।। তুমি কত দূরে বঁধু, তবু বুকে এত মধু কেন উথলায়? হাতের কাছে রহো রাতের চাঁদ গো ধরা নাহি যায় তবু ছোঁওয়া নাহি যায়। মরু-তৃষা ল’য়ে কাঁদে শূন্য হিয়া সকলে বলে আমি তোমারি প্রিয়া সেই কলঙ্ক-গৌরব সৌরভ দিল গো মধুর হ’ল মোর বিরহ-বিষাদ।।
জাগে না সে জোশ ল'য়ে আর মুসলমান
বাণী
জাগে না সে জোশ ল'য়ে আর মুসলমান। হায় করিল জয় যে তেজ ল'য়ে দুনিয়া জাহান।। যাহার তক্বির-ধ্বনি, তক্দির বদলালো দুনিয়ার না-ফরমানের জামানায় আনিল ফরমান খোদার, হায় পড়িয়া বিরান আজি সে গুল্-গুলিস্তান।। নাহি সাচ্চাই সিদ্দিকের, উমরের নাহি সে ত্যাগ আর নাহি আর বেলালের ঈমান, নাহি আলীর জুল্ফিকার, হায় নাহি আর সে জেহাদ-লাগি' বীর শহীদান।। নাহি আর বাজুতে কুওত, নাহি খালেদ, মুসা, তারেক নাহি বাদ্শাহি তখ্তে তাউস, ফকির আজ দুনিয়ার মালেক হায় ইসলাম কিতাবে শুধু মুসলিম গোরস্তান।।
জ্যোতির্ময়ী মা এসেছে আঁধার আঙিনায়
বাণী
জ্যোতির্ময়ী মা এসেছে আঁধার আঙিনায়। ভুবনবাসী ছেলেমেয়ে আয় রে ছুটে আয়॥ আনন্দ আজ লুট হতেছে কে কুড়াবি আয়, আনন্দিনী দশভূজা দশ হাতে ছড়ায়, মা অভয় দিতে এলো ভয়ের অসুর’ দ’লে পায়॥ বুকের মাঝে টইটম্বুর ভরা নদীর জল, ওরে দুলছে টলমল, ওরে করছে ঝলমল। ঝিলের জলে ফুটল কত রঙের শতদল ছুঁতে মায়ের পদতল। দেব সেনারা বাইচ্ খেলে রে আকাশ গাঙের স্রোতে, সেই আনন্দে যোগ দিবি কে? আয় রে বাহির পথে, আর দেব না যেতে মাকে রাখব ধ’রে পায় মাতৃহারা মা পেলে কি ছাড়তে কভু চায়॥
জাতের নামে বজ্জাতি সব
বাণী
জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া! ছুঁলেই তোর জাত যাবে? জাত ছেলের হাতের নয়তো মোয়া।। হুঁকোর জল আর ভাতের হাঁড়ি — ভাব্লি এতেই জাতির জান, তাইত বেকুব, করলি তোরা এক জাতিকে একশ’-খান। এখন দেখিস ভারত জোড়া পঁচে আছিস বাসি মড়া, মানুষ নাই আজ, আছে শুধু জাত-শেয়ালের হুক্কাহুয়া।। জানিস নাকি ধর্ম সে যে বর্ম সম সহন-শীল, তাকে কি ভাই ভাঙ্তে পারে ছোঁয়া ছুঁয়ির ছোট্ট ঢিল! যে জাত-ধর্ম ঠুন্কো এত, আজ নয় কা’ল ভাঙবে সে ত, যাক্ না সে জাত জাহান্নামে, রইবে মানুষ, নাই পরোয়া।। বলতে পারিস, বিশ্ব-পিতা ভগবানের কোন সে জাত? কোন্ ছেলের তার লাগলে ছোঁয়া অশুচি হন জগন্নাথ? ভগবানের জাত যদি নাই তোদের কেন জাতের বালাই? ছেলের মুখে থুথু দিয়ে মার মুখে দিস ধূপের ধোঁয়া।।