বাণী

থির হয়ে তুই ব’স দেখি মা খানিক আমার আঁখির আগে
দেখব নিত্য লীলাময়ী থির হলে তুই কেমন লাগে।।
	শান্ত হ’লে ডাকাত মেয়ে
	কেমন দেখায় দেখব চেয়ে (মা গো)
চিন্ময় শিব শম্ভু কেন চরণ-তলে শরণ মাগে।।
দেখব চেয়ে জননী তুই সাকারা না নিরাকারা
কেমন করে কালি হয়ে নামে ব্রক্ষ্মজ্যোতিধারা।
	কোলে নিতে কোলের ছেলে
	শ্মশান জাগিস বাহু মেলে
কেমন ক’রে মহামায়া তোর বুকে মায়া জাগে।।

বাণী

স্বপন যখন ভাঙবে তোমার দেখবে আমি নাই।
মোরে শূন্য তোমার বুকেরি কাছে খুজবে গো বৃথাই।।
	দেখবে জেগে বাহুর পরে
	আছে নীরব অশ্রু ঝ'রে
কাছ থেকেও ছিলাম দূরে যাই গো চলে যাই।।
কাঁটার মতো ছিলাম বিধে আমি তোমার বুকে,
বিদায় নিলাম চিরতরে ঘুমাও তুমি সুখে (ওগো)।
	একলা ঘরে জেগে ভোরে
	হয়তো মনে পড়বে মোরে,
দূরে স'রে হয়তো পাব অন্তরেতে ঠাঁই।।

বাণী

শাওন আসিল ফিরে সে ফিরে এল না
বরষা ফুরায়ে গেল আশা তবু গেল না।
ধানী রং ঘাগরি, মেঘ–রং ওড়না
পরিতে আমারে মাগো, অনুরোধ ক’রো না
কাজরির কাজল মেঘ পথ পেল খুঁজিয়া
সে কি ফেরার পথ পেল না মা, পেল না।।
আমার বিদেশিরে খুঁজিতে অনুক্ষণ
বুনো হাঁসের পাখার মত উড়ু উড়ু করে মন।
অথৈ জলে মাগো, মাঠ–ঘাট থৈ থৈ
আমার হিয়ার আগুন নিভিল কই?
কদম–কেশর বলে, ‘কোথা তোর কিশোর’,
চম্পাডালে ঝুলে শূন্য দোলনা।।

বাণী

আর্শিতে তোর নিজের রূপই দেখিস চেয়ে' চেয়ে'
আমায় চেয়ে দেখিস না তাই রূপ-গরবী মেয়ে।
		ওলো রূপ-গরবী মেয়ে।।
	নাইতে গিয়ে নদীর জলে
	দেরি করিস নানান ছলে
ওরে	ভাবিস তোরে দেখতে কখন আসবে জোয়ার ধেয়ে।।
	চাদেঁর সাথে মিলিয়ে দেখিস চাঁদপানা মুখ তোর
	ভাবিস তুই-ই আসল শশী চাঁদ যেন চকোর
		ওলো চাঁদ যেন চকোর।
	বনের পথে আনমনে
	দাঁড়িয়ে থাকিস অকারণে
ওরে	ভাবিস তোরে দেখেই বুঝি বিহগ ওঠে গেয়ে'।

বাণী

নৃত্যময়ী নৃত্যকালী নিত্য নাচে হেলে দুলে।
তার রূপের ছটায়, নাচের ঘটায় শম্ভু লুটায় চরণ-মূলে।।
	সেই নাচেরি ছন্দ-ধারা,
	চন্দ্র, রবি, গ্রহ, তারা,
সেই, নাচনের ঢেউ খেলে যায় সিন্ধু জলে পত্রে ফুলে।।
	সে মুখ ফিরায়ে নাচে যখন
	ধরায় দিবা হয় রে তখন,
এ বিশ্ব হয় তিমির-মগন মুক্তকেশীর এলোচুলে।।
	শক্তি যথায়, যথায় গতি;
	মা সেথাই নাচে মূর্তিমতী
কবে দেখব সে নাচ অগ্নি-শিখায় আমার শবে চিতার কূলে।।

বাণী

আমি	অলস উদাস আন্‌মনা।
আমি	সাঁঝ-আকাশে শান্ত নিথর রঙীন্ মেঘের আল্‌পনা।।
		অলস যেমন বনের ছায়া
		নীড়ের পাখি শ্রান্ত-কায়া,
	যেমন অলস তৃণের মুখে ভোরের শিশির হিম-কণা।।
	নদীর তীরে অলস রাখাল একলা ব’সে রয় যেমন,
	তেমনি অলস উদাস আমি রই ব’সে রই অকারণ।
		যেমন অলস দীঘির জলে
		থির হ’য়ে রয় কমল-দলে,
	নিতল ঘুমে স্বপন সম অলস আমি কল্পনা।।