দাদ্‌রা

  • সাঁঝের পাখিরা ফিরিল কুলায়

    বাণী

    সাঁঝের পাখিরা ফিরিল কুলায় তুমি ফিরিলে না ঘরে,
    আঁধার ভবন জ্বলেনি প্রদীপ মন যে কেমন করে।।
    	উঠানে শূন্য কলসির কাছে
    	সারাদিন ধরে ঝ’রে প’ড়ে আছে
    তোমার দোপাটি গাঁদা ফুলগুলি যেন অভিমান ভরে।।
    বাসন্তী রাঙা শাড়িখানি তব ধূলায় লুটায় কেঁদে,
    তোমার কেশের কাঁটাগুলি বুকে স্মৃতির সমান বেঁধে।
    	যাইনি বাহিরে আজ সারাদিন
    	ঝরিছে বাদল শ্রান্তিবিহীন
    পিয়া পিয়া ব’লে ডাকিছে পাপিয়া এ বুকের পিঞ্জরে।।
    
  • সুদূর মক্কা মদিনার পথে আমি রাহি মুসাফির

    বাণী

    সুদূর মক্কা মদিনার পথে আমি রাহি মুসাফির,
    বিরাজে রওজা মোবারক যথা মোর প্রিয় নবীজীর।।
    	বাতাসে যেখানে বাজে অবিরাম
    	তওহিদ বাণী খোদার কালাম, 
    জিয়ারতে যথা আসে ফেরেশ্‌তা শত আউলিয়া পীর।।
    মা ফাতেমা আর হাসান হোসেন খেলেছেন পথে যার, 
    কদমের ধূলি পড়েছে যথায় হাজারো আম্বিয়ার।
    	সুরমা করিয়া কবে সেই ধূলি
    	মাখিব নয়নে দুই হাতে তুলি',
    কবে এ দুনিয়া হ’তে যাবার আগে রে কা'বাতে লুটাব শির।।
    
  • সুরে ও বাণীর মালা দিয়ে

    বাণী

    সুরে ও বাণীর মালা দিয়ে তুমি আমারে ছুঁইয়াছিলে।
    অনুরাগ–কুম্কুম দিলে দেহে মনে, বুকে প্রেম কেন নাহি দিলে।।
    বাঁশি বাজাইয়া লুকালে তুমি কোথায় —
    যে ফুল ফোটালে সে ফুল শুকায়ে যায়
    কী যেন হারায়ে প্রাণ করে হায় হায় —
    কী চেয়েছিলে — কেন কেড়ে নাহি নিলে।।
    জড়ায়ে ধরিয়া কেন ফিরে গেলে বল কোন্ অভিমানে,
    কেন জাগে নাকো আর সে মাধুরী রস–আনন্দ–প্রাণে।
    	তোমারে বুঝি গো বুঝেছিনু আমি ভুল
    	এসেছিলে তুমি ফোটাতে প্রেম–মুকুল,
    কেন আঘাত করিয়া প্রিয়তম, সেই ভুল নাহি ভাঙাইলে।।
    
  • সেই মিঠে সুরে মাঠের বাঁশরি বাজে

    বাণী

    সেই মিঠে সুরে মাঠের বাঁশরি বাজে।
    নিঝুম নিশীথে ব্যথিত বুকের মাঝে॥
    	মনে প’ড়ে যায় সহসা কখন
    	জল ভরা দু’টি ডাগর নয়ন,
    পিঠ-ভরা চুল সেই চাঁপা ফুল ফেলে ছু’টে যাওয়া লাজে॥
    হারানো সে-দিন পাব না গো আর ফিরে,
    দেখিতে পাব না আর সেই কিশোরীরে।
    	তবু মাঝে মাঝে আশা জাগে কেন
    	আমি ভুলিয়াছি ভোলেনি সে যেন,
    গোমতীর তীরে পাতার কুটীরে (সে) আজও পথ চাহে সাঁঝে।
    
  • সেদিন বলেছিলে এই সে ফুলবনে

    বাণী

    সেদিন ব’লেছিলে এই সে ফুলবনে,
    আবার হবে দেখা ফাগুনে তব সনে॥
    ফাগুন এলো ফিরে লাগে না মন কাজে,
    আমার হিয়া ভরি, উদাসী বেণু বাজে;
    শুধাই তব কথা দখিনা সমীরণে॥
    শপথ ভুলিয়াছ বন্ধু, ভুলিলে পথ কি গো,
    বারেক দিয়ে দেখা লুকালে মায়ামৃগ।
    আঁচলে ফুল লয়ে হল’ না মালা গাঁথা,
    আসার পথ তব ঢাকিল ঝরা পাতা;
    পূজার চন্দন শুকালো অঙ্গনে॥
    
  • স্বপনে এসো নিরজনে

    বাণী

    (প্রিয়া) স্বপনে এসো নিরজনে।
    (প্রিয়া) আধো রাতে চাঁদের সনে।।
    	রহিব যখন মগন ঘুমে
    	যেয়ো নীরবে নয়ন চুমে’,
    মধুকর আসে যেমন গোপনে মল্লিকা চামেলি বনে।।
    	বাতায়নে চাঁপার ডালে
    	এসো কুসুম হয়ে নিশীথ কালে,
    ভীরু কপোতী সম এসো হৃদয়ে মম বাহুর মালা হয়ে বাসর শয়নে।।
    
  • হয়ত আমার বৃথা আশা তুমি ফিরে আসবে না

    বাণী

    হয়ত আমার বৃথা আশা তুমি ফিরে আসবে না।
    আশা-তরী ডুববে কূলে দুখের স্রোতে ভাসবে না।।
    	হয়তো তুমি এমনি ক'রে
    	পথ চাওয়াবে জনম ভ'রে
    রইবে দূরে চিরতরে সামনে এসে হাসবে না।।
    কামনা মোর রইলো মনে রূপ ধ'রে তা উঠলো না;
    বারে বারে ঝরলো মুকুল ফুল হয়ে তা ফুটলো না।
    	অবুঝ এ প্রাণ তবু কেন
    	তোমার ধ্যানেই বিভোর হেন
    তুমি চির চপল নিঠুর - জানি, ভালোবাসবে না।।
    

  • হরি হে তুমি তাই দূরে থাক স’রে

    বাণী

    হরি হে তুমি তাই দূরে থাক স’রে
    হরি প্রভু বলে মোরা দূরে রাখি
    পাষাণ দেউলে রাখিয়াছি হায় তোমারে পাষাণ করে॥
    তোমায় চেয়েছিল গোপিনীরা
    সেদিনও চেয়েছি মীরা ডেকে প্রিয়তম বলে
    তোমায় গোপাল বলিয়া ডাকিয়া পাইল যশোদা মা শচী কোলে
    অন্তরতম হতে নিশিদিন থাক তুমি অন্তরে॥
    দেবতা ভাবিয়া পূজা দিই মোরা তুমি তাহা নাহি খাও
    তুমি লুকায়ে ভিখারি সাজিয়া মোদের পাতের অন্ন চাও।
    রাখাল ছেলের আধ খাওয়া ফল
    কেড়ে খাও তুমি হে চির সজল
    মোরা ভয় করি তাই লুকাইয়া থাক তুমি অভিমান ভরে॥
    
  • হাতে হাত দিয়ে আগে চল হাতে নাই থাক হাতিয়ার

    বাণী

    হাতে হাত দিয়ে আগে চল হাতে নাই থাক হাতিয়ার।
    জমায়েত হও, আপনি আসিবে শক্তি জুলফিকার।।
    আন আলীর শৌর্য, হোসেনের ত্যাগ ওমরের মত কর্মানুরাগ;
    খালেদের মত সব অশান্ত ভেঙে কর একাকার।।
    ইসলামে নাই ছোট বড় আর আশরাফ আতরাফ
    নিষ্ঠুর হাতে এই ভেদ জ্ঞান কর মিসমার সাফ।
    চাকর সৃজিতে , চাকরি করিতে, ইসলাম আসে নাই পৃথিবীতে।
    মরিবে ক্ষুধায় কেহ নিরন্ন, কারো ঘরে রবে অঢেল অন্ন
    এ জুলুম সহেনি, ইসলাম, সহিবে না আজো আর।।
    
  • হায় আঙিনায় সখি আজো সেই চাঁপা ফোটে

    বাণী

    হায় আঙিনায় সখি আজো সেই চাঁপা ফোটে।
    হায় আকাশে সখি আজো কি সেই চাঁদ ওঠে।।
    	সখি তাহার হাতের হেনা গাছে
    	বুঝি প্রথম মুকুল ধরিয়াছে।
    হায় যমুনায়, বাঁশি বাজে কি আর ছায়ানটে।।
    শিয়রে জানালা খুলে দে বাহিরে চাহিয়া দেখি
    আমার বাগানে আবার বসন্ত আসিয়াছে কি?
    দেখি সে ডালিম ফুলে হায় আছে কি সে রঙ আগেকার।
    ও-বাড়ির ছাদের টবে সই বেলফুল ফুটলো কি আবার?
    	আজি আসিবে সে মনে লাগে
    	তারি আসার আভাস মনে জাগে
    হায় বুঝি তাই, মোর মরণ মধুর হয়ে ওঠে।।
    
  • হায় ভিখারি কাহার কাছে হাত পাতিলে হায়

    বাণী

    হায় ভিখারি কাহার কাছে হাত পাতিলে হায়।
    তোমার চেয়েও আমি যে দীন কাঙাল অসহায়।।
    	আমার হয়ত কিছু ছিল কভু
    	সব নিয়েছেন কেড়ে প্রভু
    আমায় তিনি নেননি তবু তাঁহার রাঙা পায়।।
    তোমায় তিনি পথ দেখালেন ভাবনা কিসের ভাই
    তোমার আছে ভিক্ষা ঝুলি আমার তাহাও নাই।
    	চাইনে তবু আছি পড়ে
    	সংসারে জড়িয়ে ধরে
    কবে তোমার মতন পথের ধূলি মাখব সারা গায়।।
    
  • হুল ফুটিয়ে গেলে শুধু পারলে না হায়

    বাণী

    হুল ফুটিয়ে গেলে শুধু পারলে না হায় ফুল ফোটাতে।
    মৌমাছি যে ফুলও ফোটায় হুল ফোটানোর সাথে সাথে।।
    	আঘাত দিলে, দিলে বেদন
    	রাঙাতে হায়, পারলে না মন,
    প্রেমের কুঁড়ি ফুটল না তাই পড়ল ঝ’রে নিরাশাতে।।
    আমায় তুমি দেখলে নাকো, দেখলে আমার রূপের মেলা,
    হায় রে দেহের শ্মশান-চারী, শব নিয়ে মোর করলে খেলা।
    শয়ন-সাথি হলে আমার, রইলে নাকো নয়ন-পাতে।।
    ফুল তুলে হায় ঘর সাজালে, করলে নাকো গলার মালা
    ত্যাজি’ সুধা পিয়ে সুরা হলে তুমি মাতোয়ালা,
    নিশাস ফেলে নিভাইলে যে-দীপ আলো দিত রাতে।।
    
  • হৃদয় কেন চাহে হৃদয় আমি জানি মন জানে

    বাণী

    হৃদয় কেন চাহে হৃদয়, আমি জানি মন জানে
    জানে নদী কেন যে সে, যায় ছুটে সাগর পানে।।
    কেহ বারি কেন চাহে, জানে চাতক, জানে মেঘ,
    জানে চকোর সুদূর নভে, চাঁদ কেন তারে টানে।।
    কুসুম কেন চাহে শিশির, জানে শিশির, জানে ফুল,
    জানে বুলবুল আছে কাঁটা, তবু যায় গুল-বাগানে।
    আঁখি চাহে আঁখি-বারি , মন চাহে মনোব্যথা
    প্রাণ আছে যার সেই জানে, কেন চাহে প্রাণে প্রাণে।।
    
  • হে গোবিন্দ রাখ চরণে

    বাণী

    হে গোবিন্দ রাখ চরণে।
    মোরা তব চরণে শরণাগত আশ্রয় দাও আশ্রিত জনে হে॥
    	গঙ্গা ঝরে যে শ্রীচরণ বেয়ে
    	কেন দুখ পাই সে চরণ চেয়ে
    এ ত্রিতাপ জ্বালা হর হে শ্রীহরি, চাহ করুণা সিক্ত নয়নে॥
    হরি ভিক্ষা চাহিলে মানুষ নাহি ফিরায়
    তোমারি দুয়ারে হাত পাতিল যে, ফিরাবে কি তুমি তায়।
    	হরি সব তরী ডুবে যায়
    	তোমার চরণ তরী ত’ ডোবে না হায়,
    তব চরণ ধরিয়া ডুবে মরি যদি রবে কলঙ্ক নিখিল ভুবনে॥
    
  • হে গোবিন্দ হে গোবিন্দ

    বাণী

    হে গোবিন্দ, হে গোবিন্দ
    ও রাঙা চরণ কমল ঘেরি
    গুঞ্জরে কোটি ভক্তবৃন্দ।।
    শত দুখ দিয়ে ভক্তের সাথ,
    একি অনন্ত-লীলা তব নাথ
    যোগী মুনি ঋষি বুঝিতে পারে না
    তুমি অচিন্ত্য তুমি অনিন্দ্য
    লীলা-রসিক হে গোবিন্দ।।
    

    নাটিকা: ‘নরমেধ’

  • হে পাষাণ দেবতা

    বাণী

    হে পাষাণ দেবতা!
    মন্দির দুয়ার খোল কও কথা।।
    দুয়ারে দাঁড়ায়ে শ্রান্তি-হীন দীর্ঘ দিন,
    অঞ্চলের পূষ্পাঞ্জলি শুকায়ে যায় উষ্ণ বায়;
    আঁখি দীপ নিভিছে হায়, কাঁপিছে তনুলতা।
    শুভ্রবাসে পূজারিণী, দিন শেষে —
    গোধুলির গেরুয়া রঙ হের প্রিয় লাগে এসে;
    খোল দ্বার শরণ দাও, সহে না আর নীরবতা।।
    
  • হে প্রিয়! তোমার আমার মাঝে

    বাণী

    হে প্রিয়! তোমার আমার মাঝে এ বিরহের পারাবার
    				কেমনে হইব পার।।
    	নিশীথের চখা-চখির মতন
    	দুই কূলে থাকি’ কাঁদি দুই জন
    আসিল না দিন মোদের জীবনে অন্তহীন আঁধার।।
    সেধেছিনু বুঝি বাদ
    কাহার মিলনে সে কোন্‌ জনমে তাই মিটিল না সাধ।
    	স্মৃতি তব ঝরা পালকের প্রায়
    	লুটায় মনের বালুচরে, হায়।
    সে কোন্‌ প্রভাতে কোন্‌ নবলোকে মিলিব মোরা আবার।।
    

  • হোক প্রবুদ্ধ সঙ্ঘবন্ধ মোদের মহাভারত

    বাণী

    হোক প্রবুদ্ধ সঙ্ঘবন্ধ মোদের মহাভারত হোক সার্থক নাম।
    হোক এই জাতি ধর্মে এক, কর্মে এক, মর্মে এক — 
    এক লক্ষ্যে মধুর সখ্যে,
    পূর্ণ হউক পূর্ণ হউক আর্যাবর্তধাম।।
    

    নাটিকাঃ ‘সুরথ উদ্ধার’