দাদ্‌রা

  • পুরবের তরুণ অরুণ

    বাণী

    পুরবের তরুণ অরুণ পুরবে আস্‌লো ফিরে।
    কাঁদায়ে মহাশ্বেতায় হিমানীর শৈল-শিরে।।
    	কুহেলির পর্দা ডারি’
    	ঘুমাত রূপ-কুমারী,
    জাগালে স্বপনচারী — তাহারে নয়ন-নীরে।।
    তোমার ঐ তরুণ গলার শুনি গান সিন্ধু-পারে,
    দুলিছ মধ্যমণি সুরমার কণ্ঠ-হারে।
    	ধেয়ানী দিলে ধরা
    	হ’ল সুর স্বয়ম্বরা,
    এলে কি পাগল-ঝোরা — পাষাণের বক্ষ চিরে’।
    
  • প্রণমি তোমায় বনদেবতা

    বাণী

    প্রণমি তোমায় বনদেবতা।
    শাখে শাখে শুনি তব ফুল-বারতা — দেবতা।।
    তোমার ময়ূর তোমার হরিণ
    লীলা-সাথী রয় নিশিদিন,
    বিলায় ছায়া বাণী-বিহীন —
    		তরু ও লতা — দেবতা।।
    
  • প্রভু তোমাতে যে করে প্রাণ নিবেদন

    বাণী

    প্রভু	তোমাতে যে করে প্রাণ নিবেদন ভয় নাহি আর তার
    	শত সে বিপদে আপদে তাহার হাত ধরে কর পার॥
    		তার দুঃখে শোকে ভাবনায় ভয়ে
    		তব নাম রাজে সান্ত্বনা হয়ে
    	পার হয়ে যায় তব নাম লয়ে দুস্তর পারাবার॥
    	ঝড় ঝঞ্ঝায় প্রাণ শিখা তার শান্ত অচঞ্চল
    	টলমল করে রূপে রসে তার জীবনের শতদল।
    		যেমন পরম র্ভিরতায়
    		শিশু তার মার বক্ষে ঘুমায়
    	তোমারে যে পায় সে জন তেমনি ডরে নাহি সংসার॥
    
  • প্রাণের ঠাকুর লীলা করে আমার দেহের আঙিনাতে

    বাণী

    প্রাণের ঠাকুর লীলা করে আমার দেহের আঙিনাতে
    রসের লুকোচুরি খেলা নিত্য আমার তারই সাথে।।
    তারে নয়ন দিয়ে খুঁজি যখন
    অন্তরে সে লুকায় তখন
    অন্তরে তায় ধরতে গেলে লুকায় গিয়ে নয়ন-পাতে।।
    ঐ দেখি তার হাসির ঝিলিক আমার ধ্যানের ললাট-মাঝে
    ধরতে গেলে দেখি সে নাই কোন্ সুদূরে নূপুর বাজে।
    এত কাছে রয় সে তবু পাই না তারে হাতে হাতে।।
    
  • প্রিয় যাই যাই ব’লো না

    বাণী

    প্রিয় যাই যাই ব’লো না, না না না
    আর ক’রো না ছলনা, না না না॥
    আজো মুকুলিকা মোর হিয়া মাঝে
    না-বলা কত কথা বাজে,
    অভিমানে লাজে বলা যে হ’ল না॥
    কেন শরমে বাধিল কে জানে
    আঁখি তুলিতে নারিনু আঁখি পানে।
    প্রথম প্রণয়-ভীরু কিশোরী
    যত অনুরাগ তত লাজে মরি,
    এত আশা সাধ চরণে দ’লো না॥
    
  • প্রিয়তম এত প্রেম দিও না গো সহিতে পারি না আর

    বাণী

    প্রিয়তম, এত প্রেম দিও না গো সহিতে পারি না আর
    তটিনীর বুকে ঝাঁপায়ে পড়িলে কেন মহা- পারাবার।।
    	তোমার প্রেমের বন্যায় বঁধু, হায়!
    	দুই কুল মোর ভাঙিয়া ভাসিয়া যায়;
    আমি নিজেরে হারাতে চাহিনি, বন্ধু; দিতে চেয়েছিনু হার।।
    তুমি চাহ বুঝি তুমি ছাড়া আর রহিবে না মোর কেউ,
    তাই কি পরানে তুফান তোলে গো এত রোদনের ঢেউ।
    	দেহ ও মনের সীমা ছাড়াইয়া মোরে
    	কোথায় নিয়ে যেতে চাও মোর হাত ধরে
    বলো কোন মধু বনে শেষ হবে বঁধু আমাদের অভিসার।।
    

  • প্রিয়তম এসো ফিরে রহিবে কি দূরে দূরে

    বাণী

    প্রিয়তম এসো ফিরে রহিবে কি দূরে দূরে
    ভুলি মোরে চিরতবে ভাসাইয়া আঁখি-নীরে॥
    		আছি ব’সে পথ চেয়ে
    		আঁধার এলো যে ছেয়ে
    মনের বনের ছায়ে এসো মিলন মধুর সুরে॥
    		নয়নের মণিহারা
    		নিভে গেছে শুকতারা
    ভেসে আসে কালো মেঘ আমার গগন ঘিরে॥
    
  • ফিরে এসো ফিরে এসো প্রিয়তম

    বাণী

    ফিরে এসো ফিরে এসো প্রিয়তম
    তেমনি চাহিয়া আছে নিশীথের তারাগুলি।
    লতা-নিকুঞ্জে কাঁদে আজো বন-বুলবুলি।।
    ঘুমায়ে পড়েছে সবে, মোর ঘুম নাহি আসে
    তুমি যে ঘুমায়েছিলে সেদিন আমার পাশে
    সাজানো সে গৃহ তব, ঢেকেছে পথের ধূলি।।
    আমার চোখের জলে মুছে যায় পথ-রেখা
    রোহিনী গিয়াছে চলি' চাঁদ কাঁদে একা-একা
    কোন দূর তারালোকে কেমনে রয়েছ ভুলি'।।
    
  • ফিরে ফিরে দ্বারে আসে যায়

    বাণী

    ফিরে ফিরে দ্বারে আসে যায় কে নিতি।
    তার অধরে হাসি আর নয়নে প্রীতি।।
    দোদুল্ তাহার কায়া ঘনায় চোখে মায়া,
    জেগে ওঠে দেখে তা’য় পুরানো স্মৃতি।।
    তাহার চরণ-পাতে তাহার সাথে সাথে,
    আসে আঁধার রাতে শুক্লা চাঁদের তিথি।।
    গেলে মন দিতে চাহে না সে নিতে,
    ধরিতে গেলে চোখে সে কী তার ভীতি।।
    ডাকি প্রিয় ব’লে তবু যায় সে চ’লে,
    পায়ে পায়ে দ’লে হৃদয় ফুল-বীথি।।
    
  • ফুটলো সন্ধ্যামণির ফুল আমার মনের আঙিনায়

    বাণী

    ফুটলো সন্ধ্যামণির ফুল আমার মনের আঙিনায়
    ফুল-ফোটাতে কে এলে ফুল ঝরানো সাঁঝ-বেলায়।।
    	আজ কি মোর দিনের শেষে
    	উঠলো চাঁদ মধুর হেসে'
    কৃষ্ণা তিথির তৃষ্ণা মোর মিটলো ওই জোছনায়।।
    আজ যে আঁখি অশ্রুহীন কি দিয়ে ধোয়াই চরণ'
    সুন্দর বরের বেশে এলে কি আমার মরণ'!
    	দেখ বসন্তের পাখি
    	কোয়েলা গেছে ডাকি
    আনন্দের দূত তুমি ডাকিয়া ফুল ফোটায়।।
    

  • ফুলে পুছিনু বল বল ওরে ফুল

    বাণী

    ফুলে পুছিনু, বল, বল ওরে ফুল!
    কোথা পেলি এ সুরভি, রূপ এ অতুল?
    ‌'যার রূপে উজালা দুনিয়া, কহে গুল,
    দিল সেই মোরে এই রূপ এই খোশবু।
    		আল্লাহু আল্লাহু।।
    'ওরে কোকিল, কে তোরে দিল এ সুর,
    কোথা পেলি পাপিয়া এ কন্ঠ মধুর?
    কহে কোকিল পাপিয়া, আল্লাহ গফুর,
    তাঁরি নাম গাহি 'পিউ পিউ' কুহু কুহু —
    		আল্লাহু আল্লাহু।।
    'ওরে রবি-শশী, ওরে গ্রহ-তারা
    কোথা পেলি এ রওশনী জ্যোতি ধারা?'
    কহে, আমরা তাহারি রূপের ইশারা
    মুসা, বেহুঁশ হলো হেরি' যে খুবরু
    		আল্লাহু আল্লাহু।।
    যারে আউলিয়া আম্বিয়া ধ্যানে না পায়
    কূল-মখলুক যাঁহার মহিমা গায়,
    যে নাম নিয়ে এসেছি এইদুনিয়ায়,
    নাম নিতে নিতে মরি এই আরজু
    		আল্লাহু আল্লাহু।।
    
  • ব'লো বঁধুয়ারে নিরজনে

    বাণী

    (সখি) ব'লো বঁধুয়ারে নিরজনে
    দেখা হ'লে রাতে ফুল-বনে।।
    কে করে ফুল চুরি জেনেছে ফুলমালী
    কে দেয় গহীন রাতে ফুলের কুলে কালি
    জেনেছে ফুলমালী গোপনে।।
    ও-পথে চোর-কাঁটা, সখি, তায় বলে দিও
    বেঁধে না বেঁধে না লো যেন তার উত্তরীয়।
    এ বনফুল লাগি' না আসে কাঁটা' দলি'
    আপনি যাব চলি' বঁধুয়ার কুঞ্জ-গলি
    বিনা মূলে বিকাইব ও-চরণে।।
    
  • বঁধু আমি ছিনু বুঝি বৃন্দাবনের

    বাণী

    বঁধু	আমি ছিনু বুঝি বৃন্দাবনের রাধিকার আঁখি-জলে।
    	বাদল সাঁঝের যুঁই ফুল হয়ে আসিয়াছি ধরাতলে।।
    তাই	যেমনি মিলন সাধ ওঠে জেগে
    তুমি	লুকাও হে চাঁদ বিরহের মেঘে,
    আমি	পূবালী পবনে ঝরে যাই বনে দলগুলি যেই খোলে।।
    বঁধু	এই বুঝি হায় নিয়তির লেখা মিলন আমার নহে —
    	ক্ষনিকের শুভ-দৃষ্টি লভিয়া কাঁদিব পরম বিরহে।
    			বুঝি মিলন আমার নহে —
    		আসিব না আমি মাধবী নিশীথে
    		বরষায় শুধু আসিব ঝুরিতে,
    	অসহায় ধারা-স্রোতে ভেসে যাব, মালা হব নাকো গলে।।
    
  • বঁধু তোমার আমার এই যে বিরহ এক জনমের নহে

    বাণী

    বঁধু, তোমার আমার এই যে বিরহ এক জনমের নহে।
    তাই যত কাছে পাই তত এ হিয়ায় কি যেন অভাব রহে।।
    	বারে বারে মোরা কত সে ভুবনে আসি
    	দেখিয়া নিমেষে দুইজনে ভালোবাসি,
    দলিয়া সহসা মিলনের সেই মালা (কেন) চলিয়া গিয়াছি দোঁহে।।
    আমরা বুঝি গো বাঁধিব না ঘর, অভিশাপ বিধাতার।
    শুধু চেয়ে থাকি, কেঁদে কেঁদে ডাকি, চাঁদ আর পারাবার
    		যেন চাঁদ আর পারাবার।
    	মোদের জীবন-মঞ্জরি দুটি হায়!
    	শতবার ফোটে শতবার ঝ'রে যায়;
    আমি কাদি ব্রজে (বঁধু), তুমি কাঁদ মথুরায়, মাঝে অপার যমুনা বহে।।
    

  • বন-মল্লিকা ফুটিবে যখন গিরি-ঝর্নার তীরে

    বাণী

    বন-মল্লিকা ফুটিবে যখন গিরি-ঝর্নার তীরে।
    সেই চৈতালি গোধূলি-লগনে এসো তুমি ধীরে ধীরে — 
    				গিরি-ঝর্নার তীরে।।
    বনের কিশোর এসো সেথা হেসে হেসে
    সাজায়ো আমায় বন-লক্ষ্মীর বেশে,
    ধোওয়াব তোমার চরণ-কমল বিরহ-অশ্রু নীরে।।
    ঘনায়ে গহন সন্ধ্যার মায়া আসিও সোনার রথে,
    অতি সুকোমল শিঁরিশ, কুসুম বিছায়ে রাখিব পথে।
    মালতী-কুঞ্জে ডাকিবে পাপিয়া পাখি
    তুমি এসে বেঁধো আলোক-লতার রাখি,
    ভ্রমরের সম পিপাসিত মোর আঁখি কাঁদিবে তোমারে ঘিরে।।
    
  • বনমালার ফুল জোগালি বৃথাই বন-লতা

    বাণী

    বনমালার ফুল জোগালি বৃথাই বন-লতা
    বনের ডালায় কুসুম শুকায়, বনমালি কোথা।।
    	শুকনো পাতার গুনে নূপুর
    	চমকে ওঠে বনে ময়ূর,
    রাস নাই আজ নিরাশ ব্রজে গভীর নীরবতা।।
    যমুনা-জল উজান বেয়ে কদম-তলে আসি’
    ভাটিতে যায় ফিরে, নাহি শু’নে শ্যামের বাঁশি।
    	তমাল-ডালে ঝুলনা আর
    	গোপীরা বাঁধেনি এবার,
    শ্রাবণ এসে কেঁদে শুধায় ঘনশ্যামের কথা।।
    
  • বনে বনে দোলা লাগে

    বাণী

    বনে বনে দোলা লাগে।
    মনে মনে দোলা লাগে
    	দখিনা-সমীর জাগে।।
    একি এ বেদনা লয়ে
    ফুটিল কুসুম হৃদয়ে
    আবেশে পুলকে ভয়ে
    	না-জানা পরশ মাগে।।
    কিশোর হৃদয় পুটে
    অশোক রঙিন ফোটে
    কপোল রাঙিয়া ওঠে
    	অতনুর অনুরাগে।।
    

  • বনের তাপস কুমারী আমি গো

    বাণী

    বনের তাপস কুমারী আমি গো, সখি মোর বনলতা।
    নীরবে গোপনে দুইজনে কই আপন মনের কথা।।
    যবে 	গিরিপথে ফিরি সিনান করিয়া,
    	লতা টানে মোর আঁচল ধরিয়া,
    হেসে বলি, ওরে ছেড়ে দে, আসিছে তোদের বন-দেবতা।।
    ডাকি যদি তারে আদর করিয়া — ওরে বন বল্লরি,
    আনন্দে তার ফোটা ফুলগুলি অঞ্চলে পড়ে ঝরি'।
    	লুকায়ে যখন মোর দেবতায়
    	আবরিয়া রাখে কুসুমে পাতায়,
    চরণে আমার (ও সে) আসিয়া জড়ায় যবে হই ধ্যানরতা।।
    
  • বন্ধু পথ চেয়ে চেয়ে

    বাণী

    বন্ধু	পথ চেয়ে চেয়ে
    	আকাশের তারা পৃথিবীর ফুল গণি
    বন্ধু	ফুল পড়ে ঝরে,তারা যায় মরে
    	(ফিরে) এলো না হৃদয়-মণি।।
    	কত নদী পেল খুঁজিয়া সাগর
    	আমিই পাই না তোমার খবর
    বন্ধু	সকলেরি চাঁদ ওঠে রে আমারি চির আঁধার রজনী।।
    		যমুনার জলও শুকায় রে বন্ধু
    		আমার শুকায় না আঁখি-বারি
    	এত কান্দন কাঁদিলে গোকূলে হতাম-ব্রজ-কুমারী
    		বন্ধু হতাম রাধা প্যারী।
    	মহা পারাবার তারও আছে পার
    	আমার দুখের পার নাহি আর
    বন্ধু	মণি না পাইনু বৃথায় পুষিনু কাল-বিরহের ফণি
    		পুষিনু কাল-বিরহের ফণি।।
    
  • বরণ করেছি তারে সই

    বাণী

    বরণ করেছি তারে সই বারণ ক’রো না
    মরম সঁপেছি তারে নিতে মরণ যাতনা।।
    	গোপনে সঁপেছি মন
    	গোপনে করি যতন,
    কাঁদে প্রাণ তারি তরে, মিলিতে বাসনা।।