দাদ্‌রা

  • তব বাঁশরি কি হরি শুনিতে পাব না

    বাণী

    তব বাঁশরি কি হরি শুনিতে পাব না পাশরিয়া আছি বলে।
    তব রাস উৎসবে ভিখারির মত বসে আছি পথ তলে।।
    		যে ডাকে, যদি তারি হও একা
    		ডাকে না যে, সে কি পাইবে না দেখা,
    কাঁদে না যে ছেলে জননী কি তারে ডাকিয়া লয় না কোলে।।
    (হরি!) পথ ভুলিয়া যে ঘোরে অরণ্যে দেখাবে না তারে পথ
    (তুমি) সেদিনো ফিরায়ে দাওনি কংস দুর্যোধনের রথ।
    		হরি! তুমি যদি নাহি ডাক আগে
    		তাহার কি কভু হরি-প্রেম জাগে?
    না শুনিয়া বাঁশি ব্রজবাসিনীরা যেত কি যমুনার জলে।।
    
  • তব মুখখানি খুঁজিয়া ফিরি গো

    বাণী

    তব মুখখানি খুঁজিয়া ফিরি গো সকল ফুলের মুখে
    ফুল ঝ'রে যায় তব স্মৃতি জাগে কাঁটার মতন বুকে।।
    	তব প্রিয় নাম ধ'রে ডাকি
    	ফুল সাড়া দেয় মেলি' আঁখি
    তোমার নয়ন ফুটিল না হায় ফুলের মতন সুখে।।
    তোমার বিরহে আমার ভুবনে ওঠে রোদনের বাণী,
    কানাকানি করে চাঁদ ও তারায় জানি গো তোমারে জানি।
    	খুঁজি বিজলি প্রদীপ জ্বেলে'
    	কাঁদি ঝঞ্ঝার পাখা মেলে'
    অন্ধ-গগনে আঁধার মেঘের ঢেউ ওঠে মোর দুখে।।
    

  • তুই কালি মেখে জ্যোতি ঢেকে

    বাণী

    তুই কালি মেখে জ্যোতি ঢেকে পারবি না মা ফাঁকি দিতে।
    ঐ অসীম আঁধার হয় যে উজল মা, তোর ঈষৎ চাহনিতে।।
    		মায়ের কালি মাখা কোলে
    		শিশু কি মা, যেতে ভোলে?
    আমি দেখেছি যে, বিপুল স্নেহের সাগর দোলে তোর আঁখিতে।।
    কেন আমায় দেখাস মা ভয় খড়গ নিয়ে, মুন্ডু নিয়ে?
    আমি কি তোর সেই সন্তান ভুলাবি মা ভয় দেখিয়ে।
    		তোর সংসার কাজে শ্যামা,
    		বাধা আমি হব না মা,
    মায়ার বাঁধন খুলে দে মা ব্রহ্মময়ী রূপ দেখিতে।।
    
  • তুই কে ছিলি তাই বল

    বাণী

    তুই কে ছিলি তাই বল?
    কোন কাননের পুষ্পরানী কোন সরসীর জল।।
    তুই কি ছিলি কবিতা আর আমি চরণ তা'রি
    তুই কি ছিলি পিয়াসি শুক আমি আতুর সারী
    তুই কি দুঃখী দুয়োরানী আমি চোখের জল।।
    	কোন বরষার সিক্ত প্রাতে
    	কোন শরতের জোছনা রাতে
    কোন জগতের অরুণ ঊষার প্রথম দেখা বল।।
    নতুন মোদের নতুন ক'রে পরিচয়ের পালা
    কন্ঠে মোদের মিলন-বাণী হাতে মিলন-মালা
    মোরা এক বিরহীর দু'টি চোখের ঝরা দু'টি মুক্তাফল।।
    
  • তুই মা হ’বি না মেয়ে হ’বি দে মা উমা ব’লে

    বাণী

    (তুই) মা হ’বি না মেয়ে হ’বি দে মা উমা ব’লে
    তুই আমারে কোল্‌ দিবি, না আমিই নেব কোলে।।
    	মা হয়ে তুই মা গো আমার,
    	নিবি কি মোর সংসার-ভার।
    দিন ফুরালে আসব ছুটে, মা তোর চরণ-তলে।
    (তুই) মুছিয়ে দিবি দুঃখ-জ্বালা, তোর স্নেহ-অঞ্চলে।।
    এক হাতে মোর পূজার থালা ভক্তি-শতদল।
    (ও মা) আর এক হাতে ক্ষীর নবনী, কি নিবি তুই বল্।
    		ওমা কি নিবি তুই বল্।
    	মেয়ে হ’য়ে মুক্ত কেশে,
    	খেল্‌বি ঘরে হেসে হেসে,
    ডাকলে মা তুই ছুটে এসে, জড়াবি মোর গলে।
    (তোরে) বক্ষে ধ’রে শিব-লোকে যাব আমি চলে।।
    
  • তুমি আমায় যবে জাগাও গুণী

    বাণী

    তুমি	আমায় যবে জাগাও গুণী তোমার উদার সঙ্গীতে
    মোর	হাত দু'টি হয় লীলায়িত নমস্কারের ভঙ্গিতে।।
    	সিন্ধু জলের জোয়ার সম, ছন্দ নামে অঙ্গে মম
    	রূপ হলো মোর নিরুপম তোমার প্রেমের সুরের অমৃতে।।
    	আমার আঁখির পল্লবদল উদাস অশ্রুভারে,
    	ভোরের করুণ তারা মতো কাপেঁ বারেবারে।
    	আনন্দে ধীর বসুন্ধরা, হলো চপল নৃত্যপরা
    	ঝরে রঙের পাগল ঝোরা তোমার চরণ রঞ্জিতে।।
    

  • তুমি আমার সকাল বেলার সুর

    বাণী

    তুমি আমার সকালবেলার সুর
    হৃদয় অলস–উদাস–করা অশ্রু ভারাতুর।।
    ভোরের তারার মত তোমার সজল চাওয়ায়,
    ভালোবাসার চেয়ে সে যে কান্না পাওয়ায়
    রাত্রি–শেষের চাঁদ তুমি গো বিদায়–বিধুর।।
    তুমি আমার ভোরের ঝরা ফুল
    শিশির–নাওয়া শুভ্র–শুচি পূজারিণীর তুল।
    অরুণ তুমি, তরুণ তুমি, করুণ তারো চেয়ে
    হাসির দেশে তুমি যেন বিষাদ–লোকের মেয়ে
    তুমিইন্দ্র–সভার মৌন–বীণা নীরব নূপুর।।
    
  • তুমি আমারে কাঁদাও নিজেরে আড়াল রাখি

    বাণী

    তুমি আমারে কাঁদাও নিজেরে আড়াল রাখি',
    তুমি চাও আমি নিশি-দিন যেন তব নাম ধরে ডাকি।।
    হে লীলা-বিলাসী অন্তরতম, অন্তর-মধু চাও বুঝি মম
    গোপনে করিতে পান, ওগো বঁধু, অন্তরালে সে থাকি।।
    বিরহ তোমার ছল, কেন নাহি বুঝি!
    আমাতে রহিয়া কাঁদাও আমারে তবু কেন মরি খুঁজি'।
    ভুলিয়া থাকি সুখের মোহে তাই বুঝি প্রিয় কাঁদাও বিরহে —
    বন্ধু, ওগো বন্ধু;
    তুমি অন্তরে এলে রাজ-সমারোহে নয়নেরে দিয়ে ফাঁকি।।
    
  • তুমি আরেকটি দিন থাকো

    বাণী

    তুমি		আরেকটি দিন থাকো।
    		হে চঞ্চল, যাবার আগে মোর মিনতি রাখো।।
    আমি		ভালো ছিলাম ভুলে’ একা
    		কেন নিঠুর দিলে দেখা,
    তুমি		ঝরা-ফুলে গাঁথ্‌লে মালা গলায় দিলে না কো।।
    তোমার	কাজের মাঝে আমায় ভোলা সহজ হবে, স্বামী!
    		কেমন ক’রে এক্‌লা ঘরে থাক্‌বো ভুলে আমি।
    		নিবু নিবু প্রদীপ আশার
    তুমি		জ্বালিয়ে দিলে যদি আবার —
    প্রিয়		নিভ্‌তে তারে দিও না আর আদর দিয়ে রাখো।।
    
  • তুমি কি আসিবে না

    বাণী

    তুমি কি আসিবে না
    বলেছিলে তুমি আসিবে আবার ফুটিবে যবে হেনা।।
    	সেদিন ঘুমায়ে ছিল যে মূকুল
    	আজি সে পূর্ণ বিকশিত ফুল
    সেদিনের ভীরু অচেনা হৃদয় আজি হতে চায় চেনা।।
    ঘন পল্লব গুণ্ঠন ঢাকা ছিল সেদিন যে লতা
    আজিকে পুষ্প নিবেদন ল’য়ে কহিতে চায় যে কথা।
    	প্রদীপ জ্বালায়ে আজি সন্ধ্যায়
    	পথ চেয়ে আছি তোমারি আশায়
    পূর্ণিমা-তিথি আসিল, হে চাঁদ-অতিথি আসিলে না।।
    

  • তুমি কেন এলে পথে

    বাণী

    তুমি কেন এলে পথে
    ঝরা মল্লিকা ভাসাইতেছিনু
    	একাকিনী নদী-স্রোতে।।
    কলসি আমার অলস খেলায়
    ধীর তরঙ্গে যদি ভেসে' যায়
    তীরে সে কলসি তুলে' আনো তুমি
    	কেন নদী' জল হ'তে।।
    আমার নিরালা বনে
    আমি গাঁথি হার, তুমি গান গাহি'
    	ধ্যান ভাঙো অকারণে।
    আমি মুখ হেরি' আরশিতে একা
    তুমি সে মুকুরে কেন দাও দেখা
    	বাতায়নে চাহি' তুমি কেন হাসো
    	আসিয়া চাঁদের রথে।।
    

  • তুমি দুখের বেশে এলে বলে

    বাণী

    তুমি দুখের বেশে এলে বলে ভয় করি কি হরি।
    দাও ব্যথা যতই তোমায় ততই নিবিড় করে ধরি।
    			আমি ভয় করি কি হরি।।
    	আমি শূন্য করে তোমার ঝুলি
    	দুঃখ নেব বক্ষে তুলি,
    আমি করব দুঃখের অবসান আজ সকল দুঃখ বরি।।
    	কত সে মন কত কিছুই
    	হজম করে ফেলি নিতুই,
    এক মনই তো দুঃখ দেবে তারে নাহি ডরি।।
    	তুমি তুলে দিয়ে সুখের দেয়াল,
    	ছিলে আমার প্রাণের আড়াল,
    আজ আড়াল ভেঙে দাঁড়ালে মোর সকল শূন্য হরি।।
    
  • তুমি বর্ষার ঝরা চম্পা

    বাণী

    তুমি	বর্ষার ঝরা চম্পা, তুমি যূথিকা-অশ্রুমতী।
    তুমি	কুহেলি-মলিন ঊষা, তুমি বেদনা-সরস্বতী।।
    	কদম-কেশর-কীর্ণা
    তুমি	পুষ্প-বীথিকা শীর্ণা,
    হ’লে	ধরণীতে অবতীর্ণা —
    	ক্ষীণ তারকা স্নিগ্ধ জ্যোতি।।
    	মন্দ-স্রোতা মন্দাকিনী তুমি কি অলকানন্দা,
    	আঁধারের কালো-কুন্তল-ঢাকা তুমি কি ধূসর সন্ধ্যা?
    			পাষাণ-দেবতা-চরণে
    			তুমি মরেছ অমর মরণে,
    তুমি	অঞ্জলি ঝরা কুসুমের, তুমি ব্যর্থ ব্যথা-আরতি।।
    
  • তুমি বেণুকা বাজাও কার নাম লয়ে শ্যাম

    বাণী

    তুমি বেণুকা বাজাও কার নাম লয়ে শ্যাম —
    মোর সাধ যায় হরি আমি যদি সেই কিশোরী হইতাম।।
    	সেই প্রেম মোরে দাও গো শ্রী হরি,
    	যে প্রেমে নেমে আস রূপ ধরি',
    যে প্রেমে কাঁদো যমুনার তীরে তুমি লয়ে 'রাধা রাধা' নাম।।
    সেই প্রেম দাও যে প্রেমে ভোল তুমি হে শ্রী ভগবান,
    রাধার দুয়ারে ভিক্ষা চাহিয়া নিতি সহ অপমান।
    	মোর আঁখি হয়ে উঠুক কমল,
    	দাও প্রিয় মোরে সেই আঁখিজল;
    দাও সে বিরহ যে বিরহে এই ধরা হয় ব্রজধাম।।
    
  • তুমি ভোরের শিশির রাতের নয়ন-পাতে

    বাণী

    তুমি	ভোরের শিশির রাতের নয়ন-পাতে।
    তুমি	কান্না পাওয়াও কাননকে গো ফুল-ঝরা প্রভাতে॥
    তুমি	ভৈরবী সুর উদাস বিধুর
    	অতীত দিনের স্মৃতি সুদূর,
    তুমি	ফোটার আগে ঝরা মুকুল বৈশাখী হাওয়াতে॥
    তুমি	কাশের ফুলের করুণ হাসি মরা নদীর চরে
    তুমি	শ্বেত-বসনা অশ্রুমতী উৎসব-বাসরে।
    তুমি	মরুর বুকে পথ-হারা
    	গোপন ব্যথার ফল্গুধারা,
    তুমি	নীরব বীণা বাণীহীনা সঙ্গীত-সভাতে॥
    
  • তুমি যে আমার আধখানি চাঁদ

    বাণী

    তুমি যে আমার আধখানি চাঁদ, আধখানি ঐ আকাশে।
    তুমি হাস যবে মোর বুকে থাকি’ ঝলকে জোছনা হাসে।।
    	কত বেদনায় মোর হিয়াতল
    	ঘন হয়ে আসে যেন দীঘিজল,
    তারি বুকে তুমি অমল কমল — দুলিছ দখিনা বাতাসে।।
    আমি যে বাঁধিনু খেলাঘরখানি, তুমি যে পুতুল তারি,
    বাহিব সেথায় তরণী আমার — তুমি যে অসীম বারি।
    	পথগুলি মোর মিশিল যেথায়
    	আসিনু ফিরিয়া সেই মোহনায়,
    ভালোবাসা তব জীবনে আমার সৌরভ হ’য়ে ভাসে।।
    
  • তুমি শুনিতে চেয়ো না আমার মনের কথা

    বাণী

    তুমি	শুনিতে চেয়ো না আমার মনের কথা
    	দখিনা বাতাস ইঙ্গিতে বোঝে
    			কহে যাহা বনলতা।।
    	চুপ ক'রে চাঁদ সুদুর গগনে
    	মহা-সাগরের ক্রন্দন শোনে,
    	ভ্রমর কাদিঁয়া ভাঙিতে পারে না
    			কুসুমের নীরবতা।।
    	মনের কথা কি মুখে সব বলা যায়?
    	রাতের আঁধারে যত তারা ফোটে
    			আঁখি কি দেখিতে পায়?
    	পাখায় পাখায় বাঁধা যবে রয়
    	বিহগ-মিথুন কথা নাহি কয়,
    	মধুকর যবে ফুলে মধু পায়
    			রহে না চঞ্চলতা।।
    

    গীতিচিত্রঃ ‌‘অতনুর দেশ’

  • তুমি সুন্দর কপট হে নাথ

    বাণী

    তুমি সুন্দর কপট হে নাথ! মায়াতে রাখ বিভোর।
    তোমার ছলনা যে বোঝে না নাথ সেই সে দুঃখী ঘোর।।
    	কত শত রূপে নিঠুর আঘাতে
    	তুমি চাও নাথ তোমারে ভোলাতে
    তবু যে তোমারে ভুলিতে পারে না ধরা দাও তারে চোর।।
    কাঁদাও তাহারে নিশিদিন তুমি যপে যে তোমার নাম
    তোমারে যে চাহে শত বন্ধনে বাঁধ তারে অবিরাম।
    	সাগরে মিশাতে চায় বলে নদী
    	জনম গোঁয়ায় কেঁদে নিরবধি
    ভক্তে তেমনি দিয়াছ যে নাথ অসীম আঁখি - লোর।।
    
  • তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়

    বাণী

    তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়, সে কি মোর অপরাধ?
    চাঁদেরে হেরিয়া কাঁদে চকোরিণী বলে না তো কিছু চাঁদ।।
    	চেয়ে’ চেয়ে’ দেখি ফোটে যবে ফুল
    	ফুল বলে না তো সে আমার ভুল
    মেঘ হেরি’ ঝুরে’ চাতকিনী, মেঘ করে না তো প্রতিবাদ।।
    জানে সূর্যেরে পাবে না তবু অবুঝ সূর্যমুখী
    চেয়ে’ চেয়ে’ দেখে তার দেবতারে দেখিয়াই সে যে সুখী।
    	হেরিতে তোমার রূপ–মনোহর
    	পেয়েছি এ আঁখি, ওগো সুন্দর।
    মিটিতে দাও হে প্রিয়তম মোর নয়নের সেই সাধ।।
    
  • তেপান্তরের মাঠে বঁধু হে একা বসে থাকি

    বাণী

    		তেপান্তরের মাঠে বঁধু হে একা বসে থাকি।
    		তুমি যে পথ দিয়ে গেছ চলে তারি ধূলা মাখি’ হে।।
    যেমন		পা ফেলেছ গিরিমাটির রাঙা পথের ধূলাতে,
    		অমনি করে আমার বুকে চরণ যদি বুলাতে,
    আমি		খানিক জ্বালা ভুলতাম ঐ মানিক বুকে রাখি’ হে।।
    আমার	খাওয়া পরার নাই রুচি, আর ঘুম আসে না চোখে হে,
    আমি		আউরী হয়ে বেড়াই পথে, হাসে পাড়ার লোকে
    					দেখে হাসে পাড়ার লোকে।
    আমি		তাল পুকুরে যেতে নারি — একি তোমার মায়া হে,
    আমি		কালো জলে দেখি তোমার কালো রূপের ছায়া হে;
    আমার	কলঙ্কিনী নাম রটিয়ে তুমি দিলে ফাঁকি হে।।