দাদ্‌রা

  • দীনের হতে দীন দুঃখী অধম যেথা থাকে

    বাণী

    দীনের হতে দীন দুঃখী অধম যেথা থাকে
    ভিখারিনী বেশে সেথা দেখেছি মোর মাকে
    		মোর অন্নপূর্ণা মাকে॥
    অহংকারের প্রদীপ নিয়ে স্বর্গে মাকে খুঁজি
    মা ফেরেন ধূলি পথে যখন ঘটা করে পূজি
    ঘুরে ঘুরে দূর আকাশে প্রণাম আমার ফিরে আসে
    যথায় আতুর সন্তানে মা কোল বাড়ায়ে ডাকে॥
    নামতে নারি তাদের কাছে সবার নীচে যারা
    তাদের তরে আমার জগন্মাতা সর্বহারা।
    অপমানের পাতাল তলে লুকিয়ে যারা আছে
    তোর শ্রীচরণ রাজে সেথা নে মা তাদের কাছে
    আনন্দময় তোর ভুবনে আনব কবে বিশ্বজনে
    আমি দেখব জ্যোতির্ময়ী রূপে সেদিন তমসাকে
    		আমার অন্নপূর্ণা মাকে॥
    
  • দীপ নিভিয়াছে ঝড়ে জেগে আছে মোর আঁখি

    বাণী

    দীপ নিভিয়াছে ঝড়ে জেগে আছে মোর আঁখি।
    কে যেন কহিছে কেঁদে মোর বুকে মুখ রাখি’
    	‘পথিক এসেছ না কি’।।
    হারায়ে গিয়াছে চাঁদ জল-ভরা কালো মেঘে
    আঁচলে লুকায়ে ফুল বাতায়নে আছি জেগে’
    শূন্য গগনে দেয়া কহিতেছে যেন ডাকি’
    	‘পথিক এসেছ না কি’।।
    ভাঙিয়া দুয়ার মম কাড়িয়া লইতে মোরে
    এলে কি ভিখারি ওগো প্রলয়ের রূপ ধ’রে?
    ফুরাইয়া যায় বঁধু শুভ-লগনের বেলা
    আনো আনো ত্বরা করি’ ওপারে যাবার ভেলা
    ‘পিয়া পিয়া’ ব’লে বনে ঝুরিছে পাপিয়া পাখি
    	‘পথিক এসেছ না কি’।।
    
  • দুঃখ অভাব শোক দিয়েছ হে নাথ

    বাণী

    দুঃখ অভাব শোক দিয়েছ হে নাথ তাহে দুঃখ নাই
    তুমি যেন অন্তরে মোর বিরাজ করো সর্বদাই॥
    	রোগের মাঝে অশান্তিতে
    	তুমি থেকো আমার চিতে
    তোমার নামের ভজন গীতে প্রাণে যেন শান্তি পাই॥
    দুর্দিনেরি বিপদ এলে তোমায় যেন না ভুলি
    তোমার ধ্যানে পর্বত প্রায় অটল থাকি, না দুলি।
    	সুখের দিনে বিলাস ঘোরে
    	ভুলতে নাহি দিও মোরে
    আপনি ডেকে নিও কোলে দূরে যদি সরে যাই॥
    
  • দুখের সাহারা পার হয়ে আমি চলেছি

    বাণী

    		দুখের সাহারা পার হয়ে আমি চলেছি ক্বাবার পানে।
    		পড়িব নামাজ মা'রফাতের আরফাত ময়দানে।।
    		খোদার ঘরের দিদার পাইব, হজ্জের পথের জ্বালা জুড়াইব,
    (মোর)	মুর্শিদ হয়ে হজরত পথ দেখান সুদূর পানে।।
    		রোজা রাখা মোর সফল হইবে, পাবো পিয়াসার পানি;
    		আবে জম্‌জম্‌ তৌহিদ পিয়ে ঘুচাব পথের গ্লানি।
    		আল্লার ঘর তওয়াফ করিয়া কাঁদিব সেথায় পরান ভরিয়া,
    		ফিরিব না আর, কোরবানি দেবো এই জান সেইখানে।।
    
  • দুপুর বেলাতে একলা পথে

    বাণী

    দুপুর বেলাতে একলা পথে,
    	ও কে হেলিয়া দুলিয়া চলিয়া যায়।
    ক্ষ্যাপা হাওয়াতে উড়িছে আঁচলা,
    খোঁপা খুলিয়া খুলিয়া খুলিয়া যায়।।
    	ছল ক’রে জল যায় সে আনিতে
    	দেখিয়া গুরুজন ঘোমটা দিতে,
    ও সে ভুলিয়া ভুলিয়া ভুলিয়া ভুলিয়া যায়।।
    	কাহার গলার মালার তরে
    	আপন মনে আঁচল ভ’রে,
    ফুল তুলিয়া তুলিয়া তুলিয়া তুলিয়া যায়।।
    	কার বিরহে পরান দহে
    	কিসের নেশায় মদির মোহে,
    ও সে ঢুলিয়া ঢুলিয়া ঢুলিয়া ঢুলিয়া যায়।।
    
  • দুলিবি কে আয় মেঘের দোলায়

    বাণী

    দুলিবি কে আয় মেঘের দোলায়।
    কুসুম দোলে পাতার কোলে পুবালি হাওয়ায়।।
    অলকা-পরী অলক খু’লে
    কাজরি নাচে গগন-কূলে,
    বলাকা-মালার ঝুলন ঝুলায়।।
    দাদুরি বোলে, ডাহুকী ডাকে
    ময়ূরী নাচে তমাল শাখে,
    ময়ূর দোলে কদম-তলায়।।
    তটিনী দুলে ঢেউয়ের তালে,
    নিবিড় আঁধার ঝাউয়ের ডালে,
    বেণুর ছায়া ঘনায় মায়া পরান ভোলায়।।
    
  • দূর আরবের স্বপন দেখি

    বাণী

    দূর আরবের স্বপন দেখি বাংলাদেশের কুটির হ'তে।
    বেহোশ হয়ে চলেছি যেন কেঁদে কেঁদে কা'বার পথে।।
    হায় গো খোদা, কেন মোরে
    পাঠাইলে হায় কাঙ্গাল ক'রে;
    যেতে নারি প্রিয় নবীর মাজার শরীফ জিয়ারতে।।
    স্বপ্নে শুনি নিতুই রাতে - যেন কা'বার মিনার থেকে
    কাঁদছে বেলাল ঘুমন্ত সব মুসলিমেরে ডেকে ডেকে।
    ইয়া এলাহি ! বল সে কবে
    আমার স্বপন সফল হ'বে,
    গরিব ব'লে হব কি নিরাশ, মদিনা দেখার নিয়ামতে।।
    

  • দোপাটি লো লো করবী

    বাণী

    দোপাটি লো, লো করবী, নেই সুরভি রূপ আছে
    রঙের পাগল রূপ পিয়াসি সেই ভালো আমার কাছে।।
    	গন্ধ ফুলের জলসাতে তোর
    	গুণীর সভায় নেইকে আদর
    গুল্ম বনে দুল হয়ে তুই, দুলিস একা ফুল গাছে।।
    লাজুক মেয়ে পল্লী বধূ জল নিতে যায় একলাটি
    করবী নেয় কবরীতে বেণীর শেষে দোপাটি
    	গন্ধ ল'য়ে স্নিগ্ধ মিঠে
    	আলো ক'রে থাকিস ভিটে,
    নেই সুবাস, আছে গায়ে কাঁটা, সেই গরবে মন নাচে।।
    
  • দ্বীনের নবীজি শোনায় একাকী

    বাণী

    দ্বীনের নবীজি শোনায় একাকী কোরানের মধু-বাণী।
    আয়েশা খাতুন শোনেন বসিয়া, নয়নে ঝরিছে পানি।।
    	বে-দ্বীন দিওয়ানা হ’য়ে
    	কাঁদে যে কোরান ল’য়ে,
    বিশ্ববাসী আনিল ঈমান যে পাক কোরান মানি’।।
    চন্দ্র-তারকা-গ্রহ আদি ঐ তরুলতা মরু-বায়,
    কোরানের সেই আয়াত শুনিয়া লুটায় নবীর পায়।
    	কোরানে জাগাও ওরে
    	জ্ঞান-গরিমায় মোরে,
    মরিতে আমায় দিও গো ল’য়ে বক্ষে কোরানখানি।
    
  • ধানের ক্ষেতের ঢেউ লেগে আজ

    বাণী

    ধানের ক্ষেতের ঢেউ লেগে আজ প্রাণের বাঁধন ভাঙল রে!
    আমার মনের পুঞ্জিত মেঘ অরুণ-রঙে রাঙল রে।।
    	নাচ ভুলেছে বনের কেকা
    	দ্বন্দ ভুলে’ হলাম একা,
    ময়ূরকণ্ঠী শুভ্র-হংস-মালার পরশ লাগল রে।।
    মেহেদি ফুলের মঞ্জরি মোর মন কেবলি রঙ লুকায়,
    শিলায় দলি’ রূপের কলি, আল্‌তা হবো তাহার পায়।
    	জ্বাল দীপালি খোল রে দুয়ার
    	আসে শারদ-জ্যোতির জোয়ার,
    আবার আনন্দিনীর আগমনের কৃপার আশা জাগল রে।।
    
  • ধীরে বহ ভোরের হাওয়া ধীরে বহ ধীরে

    বাণী

    ধীরে বহ ভোরের হাওয়া ধীরে বহ ধীরে
    ঘুমায়ে রয়েছে প্রিয়া এই পিয়াল নদীর তীরে।।
    	যে ফুল ঝরিল ভোর রাতে
    	সে ঘুমায় তাহার সাথে
    	ঝরাপাতার মন্দিরে।।
    শান্ত উদাস আকাশ নীরবে আছে চেয়ে'
    ধীরে বহ নদী সকরুণ গান গেয়ে।
    	ছলছল চোখে শুকতারা
    	হেরিছে পলক-হারা
    	তার বিদায় বেলার সঙ্গীরে।।
    

  • নতুন পাতার নূপুর বাজে দখিনা বায়ে

    বাণী

    নতুন পাতার নূপুর বাজে দখিনা বায়ে
    কে এলে গো, কে এলে গো চপল পায়ে।।
    ছায়া-ঢাকা আমের ডালে চপল আঁখি
    উঠ্‌ল ডাকি' বনের পাখি — উঠ্‌ল ডাকি'।
    নতুন চাঁদের জোছনা মাখি সোনাল শাখায় দোল দুলায়ে
    কে এলে গো, কে এলে গো চপল পায়ে।।
    সুনীল তোমার ডাগর চোখের দৃষ্টি পিয়ে
    সাগর দোলে, আকাশ ওঠে ঝিল্‌মিলিয়ে।
    পিয়াল বনে উঠল বাজি তোমার বেণু
    ছড়ায় পথে কৃষ্ণচূড়া পরাগ-রেণু।
    ময়ূর-পাখা বুলিয়ে চোখে কে দিলে গো ঘুম ভাঙায়ে।
    কে এলে গো চপল পায়ে।।
    
  • নদীর স্রোতে মালার কুসুম ভাসিয়ে দিলাম প্রিয়

    বাণী

    নদীর স্রোতে মালার কুসুম ভাসিয়ে দিলাম, প্রিয়!
    আমায় তুমি নিলে না, মোর ফুলের পূঁজা নিও।।
    	পথ-চাওয়া মোর দিনগুলিরে
    	রেখে গেলাম নদীর তীরে
    আবার যদি আস ফিরে- তুলে গলায় দিও।।
    নিভে এলো পরান -প্রদীপ পাষাণ-বেদীর তলে,
    জ্বালিয়ে তা'রে রাখব কত শুধু চোখের জলে।
    	তারা হয়ে দুর আকাশে
    	রইব জেগে' তোমার আশে
    চাঁদের পানে চেয়ে চেয়ে' আমারে স্মরিও।।
    

  • নন্দলোক হতে আমি এনেছি

    বাণী

    নন্দলোক হতে (আনন্দলোক হতে) আমি এনেছি রে মহামায়ায়।
    				এনেছি মা মহামায়ায়।
    বন্ধ যথায় বন্দী যত কংসরাজার অন্ধকারায়।।
    	বন্দী জাগো! ভাঙো আগল,
    	ফেল রে ছিঁড়ে পায়ের শিকল;
    বুকের পাষাণ ছুঁড়ে ফেলে মুক্তলোকে বেরিয়ে আয়।।
    আমার বুকের গোপালকে রে রেখে এলাম ‘নন্দালয়ে’
    সেইখানে সে বংশী বাজায় আনন্দ-গোপ-দুলাল হয়ে।
    	মা’র আদেশে বাজাবে সে
    	অভয় শঙ্খ দেশে দেশে,
    (তোরা) নারায়ণী সেনা হবি, এবার নারায়ণীর কৃপায়।।
    
  • নয়ন ভরা জল গো তোমার

    বাণী

    নয়ন ভরা জল গো তোমার আঁচল ভরা ফুল
    ফুল নেব না, অশ্রু নেব ভেবে হই আকুল।।
    	ফুল যদি নিই তোমার হাতে
    	জল রবে না১ নয়ন পাতে
    অশ্রু নিলে ফুটবে না আর প্রেমের মুকুল।।
    মালা যখন গাঁথ তখন পাওয়ার সাধ যে জাগে
    মোর বিরহে কাঁদ যখন আরও ভালো লাগে।
    	পেয়ে তোমায় যদি হারাই
    	দূরে দূরে থাকি গো তাই
    ফুল ফোটায়ে যায় গো চলে চঞ্চল বুলবুল।।
    

    ১. গো

  • নয়ন যে মোর বারণ মানে না

    বাণী

    নয়ন যে মোর বারণ মানে না।
    বারণ মানে না মন কাঁদন মানে না।।
    	নিশিদিন তব আশে
    	আছি চেয়ে পথ পাশে
    দুকূল বেয়ে সলিল আসে কাজল মানে না।।
    	সবার মাঝে থেকেও একা
    আমি	তাই তো তোমার চাই গো দেখা,
    মরম যে গো, তোমায় ছাড়া কারেও জানে না।।
    
  • নয়নে নিদ নাহি

    বাণী

    নয়নে নিদ নাহি।
    নিশীথ-প্রহর জাগি, একাকিনী গান গাহি।।
    কোথা তুমি কোন দূরে, ফিরিয়া কি আসিবে না,
    তোমার সাজানো বনে ফুটিয়া ঝরিল হেনা —
    কত মালা গাঁথি, কত আর পথ চাহি।।
    কত আশা অনুরাগে হৃদয় দেউলে রেখে
    পূজিনু তোমারে পাষাণ, কাঁদিলাম ডেকে ডেকে।
    এস অভিনামি ফিরে, নিরাশায় এ তিমিরে
    			চাঁদের তরণী বাহি’।।
    
  • না-ই পরিলে নোটন-খোঁপায় ঝুমকো জবার ফুল

    বাণী

    না-ই পরিলে নোটন-খোঁপায় ঝুমকো জবার ফুল (রানী)
    এমনি এসো (ওগো) লুটিয়ে পিঠে আকুল এলোচুল।।
    	সজ্জা-বিহীন লজ্জা নিয়ে
    	এমনি তুমি এসো প্রিয়ে
    গোলাপ ফুলের রঙ মাখাতে হয় যদি হোক ভুল।।
    গৌর দেহে নাই জড়ালে গৌরী চাঁপার শাড়ি
    ওগা ভূষণ পরে না-ই বা দিলে রূপের সাথে আড়ি।
    	যেমন আছ তেমনি এসো
    	নয়ন তুলে একটু হেসো
    সেই খুশিতে উঠবে দুলে আমার হৃদয় কুল।।
    
  • নাচে নাচে রে মোর কালো মেয়ে নৃত্যকালী

    বাণী

    নাচে	নাচে রে মোর কালো মেয়ে নৃত্যকালী শ্যামা নাচে।
    	নাচ হেরে তার নটরাজও প'ড়ে আছে পায়ের কাছে।।
    		মুক্তকেশী আদুল গায়ে
    		নেচে বেড়ায় চপল পায়ে
    	মা'র চরণে গ্রহতারা নূপুর হয়ে জড়িয়ে আছে।।
    	ছন্দ-সরস্বতী দোলে পুতুল হয়ে মায়ের কোলে রে
    	সৃষ্টি নাচে, নাচে প্রলয় মায়ের আমার পায়ের তলে রে।
    		আকাশ কাঁপে নাচের ঘোরে
    		ঢেউ খেলে যায় সাত সাগরে
    	সেই নাচনের পুলক জাগে ফুল হয়ে রে লতায় গাছে।।
    
  • নাচে সুনীল দরিয়া আজি

    বাণী

    নাচে	সুনীল দরিয়া আজি দিল্-দরিয়া পূর্ণিমা চাঁদেরে পেয়ে।
    	কূলে তার ঝুমুর ঝুমুর ঘুঙুর বাজে মিঠে আওয়াজে
    				নাচে জল্-পরীর মেয়ে।।
    	তার জল-ছলছল্ কূলে কূলে
    	ফেনিল যৌবন ওঠে দু’লে,
    	চাঁদিনী উজল্ তনু ঝলমল্
    		পরানে উছল জাগে জোয়ার —
    		আধো ঘুমে আসে তার নয়ন ছেয়ে।।
    	জল-বালা মুক্তা-মালা গাঁথে নিরালা চাঁদের তরে,
    	কাজল-বরণী তরুণী তটিনী চলেছে ধেয়ে।।