দাদ্‌রা

  • ওরে রাখাল ছেলে বল্ কি রতন পেলে

    বাণী

    ওরে রাখাল ছেলে বল্ কি রতন পেলে
    দিবি হাতের বাঁশি, তোর ঐ হাতের বাঁশি।
    বাঁধা দিয়ে খাড়ু আনব ক্ষীরের নাড়ু
    অম্‌নি হেলেদুলে এক্‌বার নাচ্ রে আসি॥
    দেখ মাখাতে তোর গায়ে ফাগের গুড়া,
    আমার আঙ্গিনাতে ঝরা কৃষ্ণচূড়া।
    আমার গলার হার খুলে পরাব আয় কিশোর
    		তোর পায়ে ফাঁসি॥
    যেন কালিদহের জলে সাপের মানিক জ্বলে,
    চোখের হাসি, তোর ঐ চোখের হাসি,
    ও তুই কি চাস্ চপল মোরে বল্
    আমি মরেছি যে তোরে ভালোবাসি॥
    আসিস্ আমার বাড়ি রাখাল দিন ফুরালে
    আমার চুড়ির তালে দুলবি কদম ডালে।
    ছেড়ে গৃহ-সংসার ওর বাঁশুরিয়া,
    		হব চরণ দাসী।
    
  • ওরে শুভ্রবসনা রজনীগন্ধ্যা

    বাণী

    ওরে	শুভ্রবসনা রজনীগন্ধ্যা বনের বিধবা মেয়ে,
    	হারানো কাহারে খুঁজিস নিশীথ-আকাশের পানে চেয়ে।।
    	ক্ষীণ তনুলতা বেদনা-মলিন,
    	উদাস মূরতি ভূষণবিহীন,
    	তোরে হেরি ঝরে কুসুম-অশ্রু বনের কপোল বেয়ে।।
    	তুইলুকায়ে কাঁদিস রজনী জাগিস সবাই ঘুমায় যবে,
    	বিধাতারে যেন বলিস — দেবতা আমারে লইবে কবে।
    	করুণ শুভ্র ভালোবাসা তোর
    	সুরভি ছড়ায় সারা নিশি ভোর,
    	প্রভাত বেলায় লুটাস ধূলায় যেন-কারে নাহি পেয়ে।।
    
  • ওরে সর্বনাশী মেখে এলি

    বাণী

    ওরে	সর্বনাশী! মেখে এলি এ কোন চুলোর ছাই!
    	শ্মশান ছাড়া খেলার তোর জায়গা কি আর নাই॥
    	মুক্তকেশী, কেশ এলিয়ে
    ওমা	বেড়াস কখন কোথায় গিয়ে
    আমি	এক নিমেষ তোকে নিয়ে (আমি) শান্তি নাহি পাই॥
    ওরে	হাড়-জ্বালানী মেয়ে, হাড়ের মালা কোথায় পেলি,
    	ভুবন-মোহন গৌরী রূপে কালি মেখে এলি!
    তোর	গায়ের কালি চোখের জলে
    আমি	ধুইয়ে দেব আয় মা কোলে;
    তোরে	বুকে ধরেও মরি জ্ব’লে, আমি দিই মা গালি তাই॥
    
  • কত জনম যাবে তোমার বিরহে

    বাণী

    কত	জনম যাবে তোমার বিরহে
    	স্মৃতির জ্বালা পরান দহে।।
    	শূন্য গেহ মোর শূন্য জীবনে,
    একা	থাকারি ব্যথা কত সহে (ওগো)
    	স্মৃতির জ্বালা পরান দহে।।
    	দিয়েছি যে জ্বালা জীবন ভরি' হায়
    	গলি নয়ন -ধারায় সে ব্যথা বহে
    	স্মৃতির জ্বালা পরান দহে।।
    

  • কত যুগ যেন দেখিনি তোমারে

    বাণী

    কত যুগ যেন দেখিনি তোমারে দেখি নাই কতদিন।
    তুমি যে জীবন, তোমারে না হেরি’, হয়েছিনু প্রাণহীন।।
    তুমি যেন বায়ু, বায়ু যবে নাহি বয়
    আমি ঢুলে পড়ি আয়ু মোর নাহি রয়,
    তুমি যেন জল, বাঁচিতে পারিনা জল বিনা আমি মীন।।
    তুমি জানো নাগো তব আশ্রয় বিনা আমি কত অসহায়,
    তুমি না ধরিলে আমার এ তনু বাতাসে মিশায়ে যায়।
    তাই মোর দেহ পাগলের প্রায়
    তোমার অঙ্গ জড়াইতে চায়,
    তাই উপবাসী তনু মোর হের দিনে দিনে হয় ক্ষীণ।।
    
  • কত সে-জনম কত সে-লোক

    বাণী

    কত সে-জনম কত সে-লোক পার হয়ে এলে, হে প্রিয় মোর।
    নিভে গেছে কত তপন-চাঁদ তোমারে খুঁজিয়া, হে মন চোর।।
    	কত গ্রহে, প্রিয়, কত তারায়
    	তোমারে খুঁজিয়া ফিরেছি, হায়!
    চাহ এ নয়নে হেরিবে তায়, সে-দূর স্মৃতির স্বপন-ঘোর।।
    	আজো অপূর্ণ কত সে-সাধ
    	অভিমানী তাহে সেধো না বাদ!
    না মিটিতে সাধ, স্বপন-চাঁদ, মিলনের নিশি ক’রো না ভোর।।
    
  • কথা কও কও কথা থাকিও না চুপ ক'রে

    বাণী

    কথা কও, কও কথা, থাকিও না চুপ ক'রে।
    মৌন গগনে হের কথার বৃষ্টি ঝরে।।
    ধীর সমীরণ নাহি যদি কহে কথা
    ফোটে না কুসুম, নাহি দোলে বনলতা।
    কমল মেলে না দল, যদি ভ্রমর না গুঞ্জরে।।
    শোন কপোতীর কাছে কপোত কি কথা কহে,
    পাহাড়ের ধ্যান ভাঙি মুখর ঝর্ণা বহে।
    আমার কথার লঘু মেঘগুলি হায়!
    জ'মে হিম হয়ে যায় তোমার নীরবতায়;
    এসো আরো কাছে এসো কথার নূপুর প'রে।।
    

    গীতিচিত্রঃ অতনুর দেশ

  • কথার কুসুমে গাঁথা গানের মালিকা

    বাণী

    কথার কুসুমে গাঁথা গানের মালিকা কার।
    ভেসে এসে হতে চায় গো আমার গলার হার।।
    		আমি তারে নাহি জানি
    		তার সুরের সূত্রখানি,
    তবু বিজড়িত হয় কেন গো, আমার কঙ্কনে বারবার।।
    তার সুরের তুলির পরশে, ওঠে আমার ভুবন রাঙ্গি’,
    কোন বিস্মৃত জনমের যেন কত স্মৃতি ওঠে জাগি’।
    		আমার রাতের নিদে
    		তার সুর এসে প্রাণে বিঁধে,
    যার সুর এত চেনা, কবে দেখা পাবো সেই অচেনার।।
    
  • কদম কেশর পড়ল ঝরি

    বাণী

    কদম কেশর পড়ল ঝরি তখন তুমি এলে।
    বাদল মেঘে গগন ঘেরি ঝড়ের কেতন মেলে।।
    	ঝরিয়ে বন-কেয়ার রেণু
    	বজ্ররবে বাজিয়ে বেণু,
    বৃষ্টি ভেজা দুর্বা দ’লে অরুণ-চরণ ফেলে।।
    নদীর দু’কূল ভাঙল যবে অধীর স্রোতের জলে,
    তখন দেখি হে অশান্ত তোমার তরী চলে।
    	যূথীর নীরব অশ্রু ঝরে
    	শ্যামল তোমার চরণ ’পরে,
    আকাশ চাহে তোমার পথে তড়িৎ প্রদীপ জ্বেলে।।
    
  • করুণা তোর জানি মাগো আসবে শুভদিন

    বাণী

    		করুণা তোর জানি মাগো আসবে শুভদিন।
    		হোক না আমার চরম ক্ষতি থাক না অভাব ঋণ।।
    			আমায় ব্যথা দেওয়ার ছলে
    			টানিস্ মা তোর অভয় কোলে,
    		সন্তানে মা দুঃখ দিয়ে রয় কি উদাসীন।।
    (তোর)	কঠোরতার চেয়ে বেশি দয়া জানি ব’লে,
    		ভয় যত মা দেখাস্ তত লুকাই তোরই কোলে।
    			সন্তানে ক্লেশ দিস্ যে এমন
    			হয়ত মা তার আছে কারণ,
    তুই		কাঁদাস্ ব’লে বল্‌ব কি মা হ’লাম মাতৃহীন।।
    
  • কল-কল্লোলে ত্রিংশ কোটি-কণ্ঠে উঠেছে গান

    বাণী

    কল-কল্লোলে ত্রিংশ কোটি-কণ্ঠে উঠেছে গান
    জয় আর্যাবর্ত, জয় ভারত, জয় হিন্দুস্থান।।
    শিরে হিমালয় প্রহরী, পদ বন্দে সাগর যাঁর,
    শ্যাম বনানী কুন্তলা রানী জন্মভূমি আমার।
    	ধূসর কভু উষর মরুতে,
    	কখনো কোমল লতায় তরুতে,
    কখনো ঈশানে জলদ-মন্দ্রে বাজে-মেঘ বিষাণ।।
    সকল জাতি সকল ধর্ম পেয়েছে হেথায় টাই
    এসেছিল যারা শত্রুর রূপে, আজ সে স্বজন ভাই।।
    	বিজয়ীর বেশে আসিল যাহারা,
    	আজি মা’র কোলে সন্তান তারা,
    (তাই) মা’র কোল নিয়ে করে কাড়াকাড়ি হিন্দু মুসলমান।।
    জৈন পার্শী বৌদ্ধ শক্তি খ্রিস্টান বৈষ্ণব
    মা’র মমতায় ভুলিয়া বিরোধ এক হয়ে গেছে সব।
    	ভুলি’ বিভিন্ন ভাষা আর বেশ
    	গাহিছে সকলে আমার স্বদেশ
    শত দল মিলে’ শতদল হ’য়ে করিছে অর্ঘ্য দান।।
    
  • কলঙ্ক আর জোছনায় মেশা তুমি সুন্দর চাঁদ

    বাণী

    কলঙ্ক আর জোছনায় মেশা তুমি সুন্দর চাঁদ
    জাগালে জোয়ার ভাঙ্গিলে আবার সাগর-কুলের বাঁধ।।
    	তিথিতে তিথিতে সুদূর অতিথি
    	ভোলাও জাগাও ভুলে যাওয়া স্মৃতি
    এড়াইতে গিয়ে পরানে জড়াই তোমার রূপের ফাঁদ।।
    চাহি না তোমায় তবু তোমারেই ভাবি বাতায়নে বসি’
    আমার নিশীথে তুমি আনিয়াছ শুল্কা চতুর্দশী।
    	সুন্দর তুমি তবু হয় মনে
    	আছে কলঙ্ক জোছনার সনে
    মুখোমুখি বসে কাঁদে তাই বুকে সাধ আর অবসাদ।।
    
  • কলঙ্কে মোর সকল দেহ হলো কৃষ্ণময়

    বাণী

    	কলঙ্কে মোর সকল দেহ হলো কৃষ্ণময়
    	শ্যামের নামে হউক এবার আমার পরিচয়।।
    		কলঙ্কিনীর তিলক এঁকে
    		কলঙ্ক-চন্দন মেখে'
    আমি	শোনাব গো ডেকে ডেকে কলঙ্কেরি জয়, কৃষ্ণ-কলঙ্কেরি জয়।।
    	ভুবনে মোর ঠাঁই পেয়েছি ভবন হতে নেমে'
    হয়ে	বৈরাগিনী আমার কৃষ্ণ-প্রিয়তমের প্রেমে।
    	যারে কৃষ্ণ টানে বিপুল টানে
    	সে কি কুলের বাধা মানে
    এই	বিশ্ববৃজে ভাগ্যবতী সেই শ্রীমতী হয়।।
    
  • কাছে তুমি থাকো যখন তখন আমি দিই না ধরা

    বাণী

    কাছে তুমি থাকো যখন তখন আমি দিই না ধরা।
    দূরে থেকে কাঁদো যখন তখনি হই স্বয়ম্বরা।।
    	তখন তোমার অভিসারে
    	মন ছুটে যায় অন্ধকারে
    তখন ওঠে বিরহেরি ব্যাকুল রোদন পাগল পারা।।
    প্রিয়, তুমি যবে রহ পাশে —
    কেন এতো ভয় জাগে গো, কেন মনে দ্বিধা আসে!
    	ভিক্ষা যখন চাও ভিখারি
    	হাত কাঁপে গো দিতে নারি,
    তুমি চ'লে গেলে লুকিয়ে কাঁদি ভিক্ষা নিয়ে আঁচল ভরা।।
    
  • কাণ্ডারি গো কর কর পার

    বাণী

    কাণ্ডারি গো কর কর পার এই অকূল ভব-পারাবার।
    তোমার চরণ-তরী বিনা, প্রভু পারের আশা নাহি আর।।
    	পাপের তাপের ঝড় তুফানে
    	শান্তি নাহি আমার প্রাণে।
    আমি যেদিকে চাই দেখি কেবল নিরাশারি অন্ধকার।।
    	দিন থাকতে আমার মতো
    		কেউ নাহি সম্ভাষে,
    	হে প্রভু তোমায়
    		কেউ নাহি সম্ভাষে
    	দিন ফুরালে খাটে শুয়ে
    		এই ঘাটে সবাই আসে।
    	লয়ে তোমারি নামের কড়ি
    	সাধু পেল চরন-তরী
    সে কড়ি নাই যে কাঙ্গালের হও হে দীনবন্ধু তার॥
    
  • কাঁদবো না আর শচীদুলাল তোমায় ডেকে ডেকে

    বাণী

    কাঁদবো না আর শচীদুলাল তোমায় ডেকে ডেকে
    		মোরা কাঁদবো না —
    (প্রিয়) তুমি গেছ চলে তোমার প্রেম গিয়েছ রেখে 
    		তাই কাঁদব না॥
    	ত্যাগ যেখানে প্রেম যেখানে
    	তোমার মধু-রূপ সেখানে
    ওগো জগন্নাথের দেউল তোমায় রাখবে কোথায় ঢেকে॥
    হল বৈরাগিনী ধরা তোমার চরণ ধূলি মেখে
    তোমার মন্ত্র নিল অসীম আকাশ চাঁদের তিলক এঁকে।
    	সুন্দর যা কিছু হেরি
    	ওগো রূপ সে শচী-নন্দনেরি
    তোমার ডাক শুনি যে আজো হৃদয়পুরীর সাগর থেকে।
    তোমার ডাক শুনি যে ওহে প্রিয়
    ডাক শুনি যে আজো হৃদয়পুরীর সাগর থেকে॥
    
  • কানন গিরি সিন্ধু পার ফিরনু পথিক দেশ-বিদেশ

    বাণী

    কানন গিরি সিন্ধু–পার ফির্‌নু পথিক দেশ–বিদেশ।
    ভ্রমিনু কতই রূপে এই সৃজন ভুবন অশেষ।।
    তীর্থ–পথিক এই পথের ফিরিয়া এলো না কেউ,
    আজ এ পথে যাত্রা যার, কা’ল নাহি তার চিহ্ন লেশ।।
    রাত্রি দিবার রঙমহল চিত্রিত এ চন্দ্রতাপ
    দু’দিনের এ পান্থবাস এই ভুবন – এ সুখ–আবেশ।।
    ভোগ–বিলাসী ‘জমশেদের জল্‌সা ছিল এই সে দেশ,
    আজ শ্মশান, ছিল যেথায় “বাহ্‌রামের” আরাম আয়েশ।।
    
  • কালো জল ঢালিতে সই

    বাণী

    		কালো জল ঢালিতে সই চিকন কালারে পড়ে মনে।
    		কালো মেঘ দেখে শাওনে সই পড়্ল মনে কালো বরণে॥
    			কালো জলে দীঘির বুকে
    			কালায় দেখি নীল-শালুকে
    (আমি)	চম্‌কে উঠি, ডাকে যখন কালো কোকিল বনে॥
    		কল্‌মিলতার চিকন পাতায় দেখি আমার শ্যামে লো
    		পিয়া ভেবে দাঁড়াই গিয়ে পিয়াল গাছের বামে লো।
    			উড়ে গেলে দোয়েল পাখি
    			ভাবি কালার কালো আঁখি
    		আমি নীল শাড়ি পরিতে নারি কালারি কারণে লো কালারি কারণে॥
    
  • কালো মেয়ের পায়ের তলায়

    বাণী

    		কালো মেয়ের পায়ের তলায় দেখে যা আলোর নাচন।
    (তার)		রূপ দেখে দেয় বুক পেতে শিব যার হাতে মরণ বাঁচন।।
    			কালো মায়ের আঁধার কোলে
    			শিশু রবি শশী দোলে
    (মায়ের)	একটুখানি রূপের ঝলক স্নিগ্ধ বিরাট নীল–গগন।।
    		পাগলী মেয়ে এলোকেশী নিশীথিনীর দুলিয়ে কেশ
    		নেচে বেড়ায় দিনের চিতায় লীলার রে তার নাই কো শেষ।
    			সিন্ধুতে মা’র বিন্দুখানিক
    			ঠিকরে পড়ে রূপের মানিক
    		বিশ্বে মায়ের রূপ ধরে না মা আমার তাই দিগ্‌–বসন।।
    

  • কি নাম ধ'রে ডাকবো তোরে মা

    বাণী

    	কি নাম ধ'রে ডাকবো তোরে মা তুই দে ব'লে
    ওমা	কি নাম ধ'রে কাঁদলে পরে ধ'রে তুলিস কোলে (মাগো)।।
    	বনে খুঁজি মনে খুঁজি পটে দেখি ঘটে পূজি
    	মন্দিরে যাই কেঁদে লুটাই মাগো —
    	পাষাণ প্রতিমা মা তোর একটুও না টলে।।
    	কোল যদি না দিবি মাগো, আনলি কেন ভবে,
    আমি	জনম নিয়ে এসেছি যে তোর কোলেরই লোভে।
    আমি	রইতে নারি মা না পেয়ে, মরণ দে মা তাহার চেয়ে
    	এ-ছার জীবনে কোন প্রয়োজন মাগো
    	আমি কোটি বার মা মরতে পারি মা যদি পাই ম'লে।।