ওরে দেখে যা তোরা নদীয়ায়
বাণী
ওরে দেখে যা তোরা নদীয়ায় গোরার রূপে এলো ব্রজের শ্যামরায়॥ মুখে হরি হরি বলে হেলে দুলে নেচে চলে নরনারী প্রেমে গলে ঢলে পড়ে রাঙা পায়॥ ব্রজে নূপুর পরি নাচিত এমনি হরি কূল ভুলিয়া সবে ছুটিত এমন করি শচীমাতার রূপে কাঁদিছে মা যশোদা বিষ্ণু প্রিয়ার চোখে কাঁদে কিশোরী রাধা নহে নিমাই নিতাই ও যে কানাই বলাই শ্রীদাম সুদাম এলো জগাই মাধাই-এ হায়॥ আজ এসেছে ভূবন ভুলাতে অসি নাই বাঁশি নাই ও ভাই এবারে শূন্য হাতে এসেছে ভুবন ভুলাতে। ও ভাই লীলা পাগল এলো প্রেমে মাতাতে ডুবু ডুবু নদীয়া বিশ্ব ভাসিয়া যায়॥
বনে যায় আনন্দ-দুলাল
বাণী
বনে যায় আনন্দ-দুলাল বাজে চরণে নূপুরের রুনুঝুনু তাল বনে যায় গোঠে যায়। ও কি নন্দ-দুলাল, ও কি ছন্দ-দুলাল ও কি নন্দন-পথ, ভোলা নৃত্য-গোপাল।। বেণু-রবে ধেনুগণ আগে যেতে পিছে চায় ভক্তের প্রাণ গ'লে উজান বহিয়া যায় লুকিয়ে দেখিতে এলো দেবতারি দল (তায়) হয়ে কদম তমাল- ব্রজ-গোপিকার প্রাণ তার চরণে নূপুর শ্রীমতী রাধিকা তার বাশরির সুর। সে যে ত্রিলোকের স্বামী তাই ত্রিভঙ্গ-রূপ করে বিশ্বের রাখালি সে চির-রাখাল।।
ওলো বিন্দে গোবিন্দে আর দিস্নে
বাণী
শ্রীরাধা : ওলো বিন্দে! গোবিন্দে আর দিস্নে ব্যথা, দিস্নে। ওর দু নয়নে লো অঝোর ধারে বারি ঝরে, চোখে কি দেখিস্ নে? চোখের মাথা খেলি নাকি? [ঐ সজল কাজল চোখ দেখে তুই ঐ ডাগর চোখের চাওয়া দেখে তুই] ওর অশ্রুত নিবেদন অশ্রুতে ঝরে, ওরে কাঁদিতে দেখিলে মন কেমন করে। আমি রেইতে নারি — [হ’য়ে নারী সইতে নারি ওর নয়ন-বারি]। মোর পায়ে ধরার সাধে পদে-পদে অপরাধে আপনারে বাঁধে, কলঙ্ক হতে, সখি অধিক জোছনা দেয় কলঙ্কী-চাঁদে। ওরে তাই ভালোবাসি গো — [ত্রিভুবন ভালোবাসে ওরে]। এ-কুলে ও-কুলে যত নারী আছে, বৃন্দে, গোবিন্দে সকলে চায় — ও সকলের প্রিয় তবু কারো সে নয় কভু, প্রেমময় প্রেম দিয়ে কেবলি কাঁদায়, ওরে কে ধ’রে রাখবে? [ঐ দুরন্তরে বল্ ঐ উড়ন্ত পাখির] আমারি প্রিয়তমে সকলে বাসে ভালো গরবিনী আমি সেই গরব-ভরে। নিন্দা করি’, ‘বৃন্দা, বৃন্দাবনে লো — মনে মনে ক্ষমা চাই চরণ ধ’রে। ওর মন যে জানি লো, [ও চন্দ্রা’র বুকে কাঁদে ‘রাধা, রাধা’ ব’লে] ওর মনে যদি থাকত কিছু আবেশে, এ বেশে কি আসত? [চোর কি নিজে দেয় ধরা সই? অ-ধরা, ধরায়, ধরা পড়ত না সই] ও অত মুখ্যু নয় লো’ [কোটি কোটি মুমুক্ষেরে মোক্ষ দেয় যে, সে অত মুখ্যু নয় লো] প্রাণ গোবিন্দে, আন্ লো বৃন্দে — জুড়াক এ বুকের জ্বালা। বনমালী-কণ্ঠে নাহি জড়ালে সখি, প্রাণ-হীন আমি বনমালা! মোর কৃষ্ণ প্রাণ লো কৃষ্ণ ধ্যান, কৃষ্ণ জ্ঞান, কৃষ্ণ অভিমান — কৃষ্ণ প্রাণ লো! মোর কৃষ্ণ বিরহ, কৃষ্ণ কলহ, কৃষ্ণ প্রাণ লো!
‘কলহ-কলহান্তরিতা’
অঝোর ধারায় বর্ষা ঝরে সঘন তিমির রাতে
বাণী
অঝোর ধারায় বর্ষা ঝরে সঘন তিমির রাতে। নিদ্রা নাহি তোমায় চাহি’ আমার নয়ন-পাতে॥ ভেজা মাটির গন্ধ সনে তোমার স্মৃতি আনে মনে, বাদ্লী হাওয়া লুটিয়ে কাঁদে আঁধার আঙিনাতে॥ হঠাৎ বনে আস্ল ফুলের বন্যা পল্লবেরই কূলে, নাগকেশরের সাথে কদম কেয়া ফুট্ল দুলে দুলে। নবীন আমন ধানের ক্ষেতে হতাশ বায়ু ওঠে মেতে, মন উড়ে যায় তোমার দেশে পূব-হাওয়ারই সাথে॥