অ-মা! তোমার বাবার নাকে
বাণী
অ-মা! তোমার বাবার নাকে কে মেরেছে ল্যাং? খাঁদা নাকে নাচ্ছে ন্যাদা-নাক ডেঙাডেং-ড্যাং! ওঁর নাক্টাকে কে করল খ্যাঁদা র্যাঁদা বুলিয়ে? চাম্চিকে-ছা ব’সে যেন ন্যাজুড় ঝুলিয়ে! বুড়ো গুরুর টিকে যেন শুয়ে কোলা ব্যাং! অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং! ওঁর খ্যাঁদা নাকের ছেঁদা দিয়ে টুকিকে দেয় ‘টু’! ছোড়্দি’ বলে সর্দি ওটা, এ রাম! ওয়াক্! থুঃ কাছিম যেন উপুড় হয়ে ছড়িয়ে আছেন ঠ্যাং! অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং! দাদু বুঝি চীনাম্যান মা, নাম বুঝি চ্যাংচু? তাই বুঝি ওঁর মুখ্টা অমন চ্যাপ্টা সুধাংশু! জাপান দেশের নোটিশ উনি নাকে এঁটেছেন! অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং! দাদুর নাকি ছিল না মা অমন বাদুড়-নাক, ঘুম দিলে ঐ চ্যাপ্টা নাকেই বাজ্তো সাতটা শাঁখ, দিদিমা তাই থ্যাবড়া মেরে ধ্যাব্ড়া করেছেন! অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং! লম্ফানন্দে লাফ দিয়ে মা চ’লতে বেঁজির ছা, দাড়ির জালে প’ড়ে যাদুর আটকে গেছে গা, বিল্লি-বাচ্চা দিল্লি যেতে নাসিক এসেছেন! অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং! দিদিমা কি দাদুর নাকে টাঙতে ‘আল্মানক্’ গজাল ঠুঁকে দেছেন ভেঙে বাঁকা নাকের কাঁখ? মুচি এসে দাদুর আমার নাক ক’রেছে ‘ট্যান’! অ-মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং! বাঁশির মতন নাসিকা মা মেলে নাসিকে, সেথায় নিয়ে চল দাদু দেখন-হাসিকে। সেথায় গিয়ে করুন দাদু গরুড় দেবের ধ্যান, খাঁদু-দাদু নাকু হবেন, নাক ডেঙাডেং-ড্যাং!
‘খাঁদু-দাদু’
[সঞ্চিতা, কাজী নজরুল ইসলাম, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা, ২০০৫]
হে মোর স্বামী অন্তর্যামী
বাণী
হে মোর স্বামী, অন্তর্যামী, লহ সকলি আমার। লহ প্রীতি-প্রেম-পূজা লহ পায়ে গলার হার।। হে প্রিয়তম, সকলি লহ; মান-অভিমান ব্যথা-বিরহ। দুঃখের দাহ, সুখের মোহ লহ হে অশ্রু-ধার।। যাহা কিছু আপন, দিতে যা বাকি যাহা কিছু গোপন, লুকায়ে রাখি যাহা কিছু প্রিয় অঞ্চলে ঢাকি; লহ হে বঁধূ এবার।। তোমায় চাওয়ার পাওয়ার আশা, তোমায় না-পাওয়ার ব্যথা-নিরাশা, তোমারে দিলাম মোর ভালোবাসা বিফলতা হাহাকার।।
আমার হৃদয় অধিক রাঙা
বাণী
আমার হৃদয় অধিক রাঙা মা গো রাঙা জবাব চেয়ে, আমি সেই জবাতে ভবানী তোর চরণ দিলাম ছেয়ে॥ মোর বেদনার বেদির ‘পরে বিগ্রহ তোর রাখবো ধ‘রে পাষাণ দেউল সাজে না — তোর আদরিণী মেয়ে॥ স্নেহ পূজার ভোগ দেবো মা, অশ্রু-পূজাঞ্জলি, অনুরাগের থালায় দেবো ভক্তি-কুসুম-কলি। অনিমেষ আঁখির বাতি রাখবো জ্বেলে দিবস রাতি, তোর রূপ হবে মা আরও শ্যামা (আমার) অশ্রুজলে নেয়ে॥
আমার মা ত্বং হি তারা
বাণী
আমার মা ত্বং হি তারা তুমি ত্রিগুণধরা পরাৎপরা মা ত্বং হি তারা। আমি জানি মা ও দীনদয়াময়ী তুমি দুর্গমেতে দুঃখহরা, মা ত্বং হি তারা। তুমি জলে তুমি স্থলে তুমি আদ্যমূলে গো মা, আছ সর্বঘটে অর্ঘ্যপুটে সাকার আকার নিরাকারা মা ত্বং হি তারা। তুমি সন্ধ্যা তুমি গায়ত্রী তুমি জগদ্ধাত্রী গো মা অকুলের প্রাণকর্ত্রী সদা শিবের মনোহরা। মা ত্বং হি তারা।।
নিশীথ রাতে ডাক্লে আমায়
বাণী
নিশীথ রাতে ডাক্লে আমায়, কে গো তুমি কে? কাঁদিয়ে গেলে আমার মনের বনভূমিকে, কে গো তুমি কে।। তোমার আকুল করুণ স্বরে আজকে তা’রেই মনে পড়ে, এম্নি রাতে হারিয়েছি যে হৃদয়-মণিকে।। দুয়ার খু’লে চেয়ে আছি১ তারার পানে দূরে, আর একটিবার ডাকো ডাকো তেম্নি করুণ সুরে। একটি কথা শুন্ব ব’লে রাত কেটে যায় চোখের জলে, দাও সাড়া দাও, জাগিয়ে তোলো আঁধার পুরীকে।।
১. থাকি