বাণী

আমার বিদায়-রথের চাকার ধ্বনি ঐ গো এবার কানে আসে।
পুবের হাওয়া তাই কেঁদে যায় ঝাউ-এর বনে দীঘল শ্বাসে।।
	ব্যথায়-বিবশ গুলঞ্চ ফুল
	মালঞ্চে আজ তাই শোকাকুল,
মাটির মায়ের কোলের মায়া ওগো আমার প্রাণ উদাসে।।
অঙ্গ আসে অলস হ’য়ে নেতিয়ে-পড়া অলস ঘুমে,
স্বপন-পারের বিদেশিনীর হিম-ছোঁওয়া যায় নয়ন চুমে।
	হাতছানি দেয় অনাগতা
	আকাশ ডোবা বিদায়-ব্যথা,
লুটায় আমার ভুবন ভরি’ বাঁধন-ছেঁড়ার কাঁদন-ত্রাসে।।
মোর বেদনার কর্পূর-বাস ভরপুর আজ দিগ্বলয়ে,
বনের আঁধার লুটিয়ে কাঁদে হরিণটি তার হারার ভয়ে।
	হারিয়ে-যাওয়া মানসী হায়
	নয়ন-জলে শয়ন তিতায়,
ওগো, এ কোন্ যাদুর মায়ায় দু’চোখ আমার জলে ভাসে।।
আজ আকাশ-সীমায় শব্দ শুনি অচিন পায়ের আসা-যাওয়ার,
তাই মনে হয় এই যেন শেষ আমার অনেক দাবিদাওয়ার।
	আজ কেহ নাই পথের সাথি
	সামনে শুধু নিবিড় রাতি,
আমায় দূরের বাঁশি ডাক দিয়েছে, রাখ্‌বে কে আর বাঁধন-পাশে।।

বাণী

আহ্‌মদের ঐ মিমের পর্দা উঠিয়ে দেখ্ মন।
(আহা) আহাদ সেথা বিরাজ করেন হেরে গুণীজন।।
যে চিন্‌তে পারে রয় না ঘরে হয় সে উদাসী,
সে সকল ত্যজে ভজে শুধু নবীজীর চরণ।।
ঐ রূপ দেখে পাগল হ’ল মনসুর হল্লাজ,
সে ‌‘আনল্ হক্‌’ ‌‘আনল্ হক্‌’ ব’লে ত্যজিল জীবন।।
তুই খোদ্‌কে যদি চিন্‌তে পারিস্‌ চিন্‌বি খোদাকে,
তুই দেখ্‌রে তাই তোরই চোখে সেই নূরী রওশন।।

বাণী

কুসুম ফুলের মালা গেঁথে দুলিয়ে দিছি গলে।
অশ্রু দিয়ে গাঁথা মালা রইলো বুকের তলে।।
বন্ধু আমার আস্‌বে যখন ফিরে’ বিজয় রথে
মরা ফুলের সাথে আমি রইবো প’ড়ে পথে,
যাবার বেলা চরণ দিয়ে যাবে আমায় দ’লে।।
তাহার প্রিয়ার মুখে দেবো আমার হাসি ল’য়ে
রইব না গো তাহার সুখে পথের কাঁটা হ’য়ে,
তা’র বাসরে আলো দেবো প্রদীপ হ’য়ে জ্ব’লে।।

বাণী

গাও কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ নাম।
গাও দেহমন শুক সারি, গাও রে ব্রজের নরনারী
গাহ কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ নাম।।
গাও তাঁরি নাম যমুনার বারি
গাও কুহু কেকা ধেনু বন-চারী,
গাহরে শ্রীদাম গাহ সুদাম।।
গাহ রে সজল শ্যামল গগন
কদম্ব-তরু তমাল কানন,
গাহ রে ভ্রমর মাধবী-লতা কৃষ্ণ-কথা, শ্রবণ অভিরাম।।
গাহ লো বিশাখা, গাহ লো ললিতা
গাহ শ্যাম-দায়িতা চন্দ্রাবলী (শ্যাম নাম),
গাহ লো চন্দ্রাবলী,
ভুবন ছাপিয়া গগন ব্যাপিয়া উঠুক কাঁপিয়া নাম-কাকলি।
(শ্যাম-নাম কাকলি।) তোরা গেয়ে যা গেয়ে যা।
হয়ে শ্যাম-নামে বিবাগী পথে পথে ধেয়ে যা।
ঘনশ্যাম পল্লবে মনো-বন ছেয়ে যা।
বহিয়া যাক শ্যাম-নাম সুরধুনী
মধুর হোক মৃত্যু শ্যাম নাম শুনি’।।

নাটক : ‘চক্রব্যুহ’

বাণী

রুম্ ঝুম্ ঝুম্ বাদল নূপুর বোলে বোলে,
তমাল বরণী কে নাচে, কে নাচে গগন কোলে।।
তার অঙ্গের লাবনি যেন ঝরে অবিরল
হয়ে শীতল মেঘলা মতির ধারা জল।
কদম ফুলের পীত উত্তরী তার পূব হাওয়াতে দোলে।।
বিজলি ঝিলিকে কার বনমালার আভাস জাগে
বন কুন্তলা ধরা হলো শ্যাম মনোহরা তাহারি অনুরাগে।
কারে হেরি পাপিয়া পিয়া পিয়া কহে
সাগর কাঁদে নদী জল বহে
ময়ূর-ময়ূরী বন-শবরী নাচে ট’লে ট’লে।।

বেতার গীতিকা: ‌‘বর্ষা মোদের প্রাণ’

বাণী

হেড মাস্টারের ছড়ি, সেকেন্ড মাস্টারের দাড়ি
থার্ড মাস্টারের টেড়ি, কারে দেখি কারে ছাড়ি।
হেড-পণ্ডিতের টিকির সাথে ওদের যেন আড়ি।
	দাঁড়াইয়া ঐ হাই বেঞ্চে
	হাসি রে মুখ ভেংচে ভেংচে,
খোঁড়া সেকেন্ড পণ্ডিত যায় লেংচে হুঁকো হাতে বাড়ি
তার মুখ নয় তেলো হাড়ি, মোর হেসে ছিড়ে যায় নাড়ি।

নাটিকাঃ ‘পুতুলের বিয়ে’