বাণী

আমার গানের মালা আমি করব কারে দান
মালার ফুলে জড়িয়ে আছে করূণ অভিমান।
		মালা করব কারে দান।।
	চোখে মলিন কাজল লেখা
	কণ্ঠে কাঁদে কুহু কেকা,
কপোলে যার অশ্রু-রেখা একা যাহার প্রাণ
		মালা করব কারে দান।।
কাথায় আমার কাঁটার বেদন মালায় সূচির জ্বালা,
কণ্ঠে দিতে সাহস না পাই অভিশাপের মালা (ঐ)।
	বিরহে যার প্রেম-আরতি
	আঁধার লোকের অরুন্ধতী
নাম না জানা সেই তপতী তারি তরে গান
		মালা করব তারে দান।।

বাণী

(মা)	ওমা তুই আমারে ছেড়ে আছিস আমি তাই হয়েছি লক্ষ্মীছাড়া
	ও তোর কৃপা বিনা শক্তিময়ী শুকিয়ে গেল ভক্তিচারা॥
	ওমা তুই আশ্রয় দিলি না তাই, আমি যা পাই তা পথে হারাই
	তোর রসময় ভুবন আমার শ্মশান হল ওমা তারা।
	আজ আনন্দ যমুনা ফেলে এসেছি তাই যমের দ্বারে
	ওমা জীবনে যা পেলাম না তা মরণ যদি দিতে পারে।
মাগো	ওমা তত বাড়ে বুকের জ্বালা, পাই যত যশ খ্যাতির মালা
	রাজপ্রসাদে শুয়ে মাগো শান্তি কি পায় মাতৃহারা॥

বাণী

নারায়ণী উমা খেলে হেসে হেসে
হিম-গিরির বুকে পাহাড়ি বালিকা বেশে॥
গিরি-গুহা হতে জ্যোতির ঝরনা ছুটে চলে যেন চল ঝরনা,
তুষার-সায়রে সোনার কমল যেন বেড়া ভেসে।
			— খেলে হেসে হেসে।
মাধবী চাঁদ ওঠে কৈলাস-চূড়ে,
খেলা ভুলিয়া যায়, অনিমেষ চোখে চায়
পাষাণ প্রতিমা প্রায় সেই সুদূরে।
সতী-হারা যোগী পাগল শঙ্করে
মনে পড়িয়া তার নয়নে বারি ঝরে,
শিব-সীমন্তনী পাগলিনী প্রায় ‘শিব শিব’ বলে ধায় মুক্তকেশে॥

বাণী

নৃত্যকালী শঙ্কর সঙ্গে নাচে অতি রুদ্র-বিহঙ্গে।
ছন্দ ঝরে ঝর্ঝর ধারায় মন্দাকিনী গঙ্গা তরঙ্গে।।
মুক্তবেণী ধূর্জটি-জটা বিধূনিত অম্বরে দোলে
সসাগরা ভীতা পৃথ্বী কাঁপে মহাবিষ্ণুর কোলে,
বাজে ঘোর ডম্বরু শিঙ্গা উল্কা ছোটে ভ্রুকুটি ভঙ্গে।।
মৃত্যু-ক্ষুধা জাগিল একি রে, সৃষ্টি-স্থিতি সংহার মানসে।
পঞ্চভূত চিত্ত অহঙ্কার ব্রহ্মা-হরি লয় হ’ল ব্রহ্মে
উগ্র তারা রুদ্রেরে আবরি’ নাচে একা উন্মাদ দম্ভে,
একি হেরি মূর্ছিতা শক্তি সোহম্ শিব আমারি অঙ্গে।।

বাণী

আমারে চোখ ইশারায় ডাক দিলে হায় কে গো দরদি।
খুলে দাও রং মহলার তিমির-দুয়ার ডাকিলে যদি।।
গোপনে চৈতী হাওয়ায় গুল্‌-বাগিচায় পাঠালে লিপি,
দেখে তাই ডাক্‌ছে ডালে কু কু ব’লে কোয়েলা ননদী।।
পাঠালে ঘূর্ণি-দূতী ঝড়-কপোতী বৈশাখে সখি
বরষায় সেই ভরসায় মোর পানে চায় জল-ভরা নদী।।
তোমারি অশ্রু ঝলে শিউলি তলে সিক্ত শরতে,
হিমানীর পরশ বুলাও ঘুম ভেঙে দাও দ্বার যদি রোধি।।
পউষের শূন্য মাঠে একলা বাটে চাও বিরহিণী,
দুঁহু হায় চাই বিষাদে, মধ্যে কাঁদে তৃষ্ণা-জলধি।।
ভিড়ে যা ভোর-বাতাসে ফুল-সুবাসে রে ভোমর কবি
ঊষসীর শিশ্‌-মহলে আস্‌তে যদি চাস্‌ নিরবধি।।

বাণী

চুরি ক’রে এনো গিরি, আমার উমার দুই কুমারে।
দেখ্‌ব তখন ভোলা মেয়ে কেমন ভু’লে থাকতে পারে॥
তার ছেলেরে আনলে হেথা, বুঝবে মেয়ে মায়ের ব্যথা;
(বিনা) সাধনাতে গৌরী তখন, আসবে ছুটে আমার দ্বারে॥
জামাই আমার শিব ভোলানাথ, ডাকিলেই সে আসিবে জানি
চাইবে নাকো আসতে শুধু, তোমার মেয়ে ঐ পাষাণী।
কুমার গণেশ তুমি আমি, শিব পূজিব দিবস যামী;
শৈব হ’লে শিবাণী মোর, রইতে নারে ছেড়ে তারে॥