বাণী

মা, মা গো —
আমার অহঙ্কারের মূল কেটে দে কাঠুরিয়ার মেয়ে,
কত নিরস তরু হ'ল মঞ্জুরিত তোর চরণ-পরশ পেয়ে।।
রোদে পুড়ে জলে ভিজে মা দিয়েছি ফুল ফল
শাখায় আমার, নীড় বেঁধেছে বিহঙ্গের দল।
বটের মত সারা দেহ মাগো মায়ার জটে আছে ছেয়ে।।
ও মা মূল আছে তাই বৈতরণীর কূলে আছি পড়ি
নইলে হ'তাম খেয়াঘাটের পারাপারের তরী।
	তুই খড়গের ভয় দেখাস মিছে
	মুক্তি আছে এরি পিছে মাগো
তোর হাসির বাঁশি শুনতে পাবো অসির আঘাত খেয়ে।।

বাণী

আমি	নামের নেশায় শিশুর মতো ডাকি গো মা ব'লে
	নাই দিলি তুই সাড়া মা গো নাই নিলি তুই কোলে।।
		শুনলে 'মা' নাম জেগে উঠি
		ব্যাকুল হয়ে বাইরে ছুটি
মাগো	ঐ নামে মোর নয়ন দু'টি ভ'রে ওঠে জলে।।
	ও নাম আমার মুখের বুলি ও নাম খেলার সাথি
	ও নাম বুকে জড়িয়ে ধ'রে পোহাই দুখের রাতি।
		মা হারানো শিশুর মতো
		যপি ও নাম অবিরত
মা	ঐ নামের মন্ত্র আমার বুকে কবচ হয়ে দোলে।।

বাণী

আয় ঘুম আয়!
সাপিনীর দংশনে যেমন অবশ তনু —
তেমনি ঢলিয়া পড় মায়া-নিদ্রায়।।
সংসার অহিফেন বিষ পিয়ে হায়
যেমন অচেতন জীব অসাড়ে ঘুমায়,
যেমন পাতাল তলে ঘুমায় দৈত্যদলে
তেমনি ঘুমাও জড় পাষাণের প্রায়।।

নাট্যগীতি : ‘দেবী দুর্গা’

বাণী

আসিছেন হাবিব-এ খোদা আরশ্‌পাকে তাই উঠেছে শোর,
চাঁদ পিয়াসে ছুটে আসে আকাশ পানে যেমন চকোর।
কোকিল যেমন গেয়ে ওঠে ফাগুন আসার আভাস পেয়ে,
তেমনি ক’রে হরষিত ফেরেশ্‌তা সব উঠলো গেয়ে:
দেখ আজ আরশে আসেন মোদের নবী কম্‌লিওয়ালা।
হের সেই খুশিতে চাঁদ-সুরুজ আজ হ’ল দ্বিগুণ আলা।।
ফকির দরবেশ্‌আউলিয়া যাঁরে, ধ্যানে জ্ঞানে ধ’রতে নারে,
যাঁর মহিমা বুঝিতে পারে এক সে আল্লাহ তালা।।
বারেক মুখে নিলে যাঁহার নাম, চিরতরে হয় দোজখ্‌হারাম,
পাপীর তরে দস্তে যাঁহার কওসরের পিয়ালা।।
‘মিম্‌’ হরফ না থাকলে সে আহাদ, নামে মাখা তার শিরিন শাহাদ্,
নিখিল প্রেমাষ্পদ আমার মোহাম্মদ ত্রিভুবন উজালা।।

বাণী

আজ শেফালির গায়ে হলুদ
	উলু দেয় পিক পাপিয়া।
প্রথম প্রণয়-ভীরু বালা
	লাজে ওঠে কাঁপিয়া।।
বনভূমি বাসর সাজায়
	ফুলে পাতায় লালে নীলে,
ঝরে শিশির আশিস-বারি
	গগন-ঝারি ছাপিয়া।।
বৃষ্টি-ধোওয়া সবুজ পাতার
	শাড়ি করে ঝলমল,
ননদিনী ‘বৌ কথা কও’
	ডাকে আড়াল থাকিয়া।।
দেখতে এলো দিগ্‌বালিকা	
	সাদা মেঘের রথে ঐ,
শরৎ-শশীর মঙ্গল-দীপ
	জ্বলে গগন ব্যাপিয়া।।
অতীত্ প্রণয়-স্মৃতি স্মরি’
	কেঁদে যায় আশিন-হাওয়া,
উড়ে বেড়ায় বর সে ভ্রমর
	কমল-পরাগ মাখিয়া।।

বাণী

আজও মা তোর পাইনি প্রসাদ আজও মুক্ত নহি।
আজও অন্যে আঘাত দিলে কঠোর ভাষা কহি।।১
	মোর আচরণ, আমার কথা
	আজও অন্যে দেয় মা ব্যথা
আজও আমার দাহন দিয়ে শত জনে দহি।।
শত্রুমিত্র মন্দভালোর যায়নি আজও ভেদ
কেহ ব্যথা দিলে, প্রাণে আজও জাগে খেদ।
	আজও মাগো দুঃখে শোকে
	অশ্রু ঝরে আমার চোখে,
আমার আমার ভাব ওগো মা আজও জাগে রহি’ রহি’।।

১. আজও অন্যে কষ্ট দিলে / কষ্ট ভাষা কহি।।